
User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ লেখনী। হাস্যরসের মাধ্যমে বাস্তব সত্যকে ফুটিয়ে তুলেছেন।
Was this review helpful to you?
or
বইটা বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের উপহার দিতে চাই!
Was this review helpful to you?
or
ভাল বই।
Was this review helpful to you?
or
উঁচুমানের ভাষাশৈলী। রসিকতার ছলে একজন ভার্সিটির ভিসি কেন্দ্রিক ন্যায় অন্যায় অনেক ঘটনার তথ্য এখানে প্রকাশ করা হয়েছে। তবু কোথায় যেনো একটি বিরক্তি অনুভব করছিলাম বইটি শেষ করতে গিয়ে। হয়তো এই জন্যই যে মানুষকে নিয়ে কটাক্ষ করা আমি বিশেষ পছন্দ করি না।
Was this review helpful to you?
or
জীবনের পড়া সেরা একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
গুড
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ লেখনী এবং ক্ষুরধার প্রতিবাদ। এদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠেও কিভাবে অবিদ্যা এবং কদ বিদ্যার জন্ম নেয়, তা লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে।
Was this review helpful to you?
or
পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ গাভী বিত্তান্ত---আহমদ ছফা "গাভী বিত্তান্ত" নাম শুনেই মনে হবে হরেক রকম গাভী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।কোন জাতের গাভী কত বেশি দুধ দেয় কিংবা কতো বেশি মাংশ দেয়। কিন্তু, পড়ার পর একটি বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে চলছে সেটার বাস্তবচিত্র কিছুটা হলেও জানা যাবা।লেখক হাস্য রসাত্মক কাহিনি দিয়ে মূলত বাস্তবতাকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। ★বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্তব্য কী? পাঠদান,গবেষনা কিংবা এমন উৎপাদনমুখী কোনো কাজে জড়িত থাকা।অথচ বাস্তবতা হলো তারা নোংরা রাজনীতির সাথে জড়িত।তারা স্বার্থের নিমিত্তে অযোগ্য ব্যক্তিকেও দায়িত্ব বসাতে পারেন।যা আবু জুনাঈদের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। আরো দেখা যায়,দলীয় অন্ধ রাজনীতির কারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ভালো কাজ করলেও বিরোধী দলীয় সদস্যরা সেটার নেতিবাচক ব্যাখ্যা প্রচার করতে বিন্দু মাত্র কসুর করেন না। অন্যদিকে নেতিবাচক দিকগুলো দলীয় সদস্যরা ইতিবাচক প্রচারণা করতে ভালোবাসেন। লেখক অত্যন্ত তীক্ষ্ণতার সাথে এগুলো দেখিয়েছেন। ★তোষামুদে কিছু মানুষ জীবনের প্রতিক্ষেত্রে দেখা যায়।যারা ব্যক্তিসুবিধা অর্জনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির তেলবাজিতে মগ্ন থাকেন।হয়তো দলীয় স্বার্থের কারণে সবার সামনে নেতিবাচক সমালোচনা করেন। কিন্তু একান্তে নিভৃতে তেলবাজিতে কম যান না তারা। লেখক চতুরতার সাথে এসব মানুষের ও পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আমাদের। ★বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে উপন্যাসে।তুচ্ছ কারণে আন্দোলন করা,ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা কিংবা গ্যাস বিদ্যুতের জন্য উপাচার্যের বাসভবন ভাংচুর করা প্রভৃতি ও উল্লেখ করেছেন লেখক। রাজনীতির শিকার গ্রামের ছেলেমেয়ে গুলোর অবস্থা দেখিয়েছেন।কীভাবে নষ্ট হয় তাদের স্বপ্ন গুলো,তারা কীভাবে বলির পাঠা হয় সেগুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। সর্বোপরি,উপন্যাসটি পড়ার সময় যেমন আনন্দ পাওয়া যাবে তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ার হাঁড়ির খবর ও জানা যাবে।পড়ার সময় মনে হবে লেখক বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়েই লিখেছেন। সচেতন এবং ভাবুক ধরণের পাঠক অবশ্যই পড়তে পারেন বইটি।
Was this review helpful to you?
or
সহজ সরল গল্পের মধ্যে জীবনের নানা জটিল বিষয়গুলোকে তুলে এনে এখানে সাজানো হয়েছে সুনিপুনভাবে।উন্মোচিত হয়েছে এমন অনেক সত্যি যা কেউ সাহস করেন না সহসা কলমের আচরে তুলে আনতে। বই টা খুবই ভালো,এবং আমি মনে করি সকলেরই বইটা পড়া উচিৎ।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের সবার জন্য, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য 'গাভী বিত্তান্ত'-কে আমি একটি অবশ্যপাঠ্য মনে করি। জীবনে একবার হলেও এই বইটি পড়া উচিৎ।
Was this review helpful to you?
or
আহমদ ছফার অনন্য লেখনীর একটি অংশ 'গাভী বিত্তান্ত'। একটি গাভীর রুপকে একটি আশু পরিস্থিতিকে অনেকটা ব্যাঙ্গ করেই উপস্থাপন করেছেন তিনি। পাঠক প্রিয়তার অন্যতম কারণ লেখকের শব্দচয়ন এবং কৌতুক মন্ডিত লেখার মাধ্যমে বাস্তবিক চিত্রের প্রকাশ। একজন মানুষের দূর্ঘটনা বসত উপাচার্য হওয়া এবং এতে তার থেকে বেশি তার স্ত্রীর আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়াটাই এর শুরুর দিকের গল্প। এরপর সময়ের পরিক্রমায় তাঁদের পরিণতি নিয়েই পুরো বই। পাঠকদের পড়ে ভালো লাগবে আশা করি।
Was this review helpful to you?
or
আহমদ ছফার ব্যঙ্গধর্মী উপন্যাস "গাভী বিত্তান্ত"।আমাদের চোখের সামনে অনেক কিছু ঘটে যা আমরা অকপটে বলতে বা লিখতে পারি না। গভীর পর্যবেক্ষণক্ষমতা থাকলেই এ ধরনের বিষয় নিয়ে সাহিত্য রচনা করা যায়। আহমদ ছফার ‘গাভী বিত্তান্ত’ উপন্যাসটি তেমনই এক বিষয়ের ওপর লেখা, যা নিয়ে সচরাচর সাহিত্য হয় না।উপন্যাসের মূল কেন্দ্র একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং মূল চরিত্র সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত উপাচার্য মিঞা মোহাম্মদ আবু জুনায়েদ ।বিশ্ববিদ্যালয়টির কোনো নাম উচ্চারণ না করলেও বর্ণনার মাধ্যমে তিনি পাঠকের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিষ্কার করে তুলেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের সবচাইতে প্রাচীন এবং সম্ভ্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়’। বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদে আবু জুনায়েদের আরোহন এবং এর সামান্য পূবর্বর্তী এবং পরবর্তী ঘটনাচক্র উপন্যাসটির বিষয়বস্তু।
Was this review helpful to you?
or
একটি গাভীর সাথে একজন উপাচার্যের জীবনের সুখ-দুঃখ, উত্থান-পতন মিশিয়ে আহমদ ছফা যে উপন্যাস রচনা করেছেন, তা যে শুধুমাত্র একটা কাহিনীমাত্র তা কিন্তু নয়। উনার উপন্যাসে ফুটে উঠেছে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুরাবস্থার কথা,ফুটে উঠেছে তৎকালীন ছাত্র রাজনীতির দুরাবস্থার চিত্র।বর্তমানের সাথে যে অবস্থার বিন্দুমাত্র তফাৎ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সম্বন্ধে আহমদ ছফা কি মনোভাব পোষণ করতেন তা বুঝার জন্য নিম্নে উপন্যাস থেকে হুবহু কিছু লাইন তুলে ধরছি-- "অতীতের গৌরব মহিমার ভার বইবার ক্ষমতা বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই।সাম্প্রতিককালে নানা রোগ-ব্যাধি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কাবু করে ফেলেছে।মাছের পচন যেমন মস্তক থেকে শুরু হয়,তেমনি যাবতীয় অসুখের জীবাণু শিক্ষকদের চিন্তা-চেতনায় সুন্দরভাবে স্থান করে নিয়েছে।" আরো কয়েকলাইন পরে তিনি বলেছেন- "মাঠ এবং রাস্তা ছাত্ররা দখল করে রেখেছে বলে শিক্ষকদের লড়াইটা স্নায়ুতে আশ্রয় করে নিয়েছে।" তিনি আরো লিখেছেন - "কোন শিক্ষক যখন অবসর নেন,তার বাসাটি দখল করার জন্য শিক্ষকদের মধ্যে যে চেষ্টা তদবির চলতে থাকে,কে কাকে ল্যাঙ মেরে আগে তালা খুলবে, সেটাও একটা গবেষণার বিষয় হয়ে উঠতে পারে।" এখন একটু কাহিনী নিয়ে আলোচনা করা যাক- তার উপন্যাসের নায়ক আবু জুনায়েদ। তিনি নির্ঝঞ্ঝাট ও নিরীহ ধরনের মানুষ।তিনি কোন দলও করেন না। হঠাৎ করে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়ে যান।এতে তিনি স্বয়ং সহ সকল শিক্ষক আশ্চর্যান্বিত হয়ে পড়েন। তিনি উপাচার্য হওয়ার পর সব দলই তার বিরুদ্ধ পক্ষ হয়ে যায়।এমতাঅবস্থায় তার এক দুঃসম্পর্কের চাচা শ্বশুর তার অত্যন্ত শখের একটা গাভী উপহার দিলেন।তিনি গাভীটিকে খুবই ভালোবাসতে শুরু করেন।এই গাভীকে কেন্দ্র করে তার নিজের বাড়িতে একটা আড্ডাখানা তৈরী হয়।যে শিক্ষকরা কোন দলে ভিড়তেন না তারা এখানে আসতেন।এই প্রথম তার পক্ষে বলার মতো কিছু শিক্ষক তৈরী হলো। এক পর্যায়ে গাভীকে কেন্দ্র করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনেক কুৎসা ও হাস্যরসাত্মক রটনার জন্ম হয়।(এখানে আহমদ ছফার রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়।) এই রটনার বিরুদ্ধে দাঁড়ান তার শিক্ষকেরা।ফলে বিশ্ববিদ্যালয় মহলে গাভী খুবই পরিচিতি লাভ করে। গাভীর পরিচর্যায় সময় দিতে গিয়ে উপাচার্য ও তার স্ত্রীর মধ্যে একটা দুরত্ব তৈরী হয়।তার স্ত্রী গাভীকে তার সতীন স্থানীয় ভেবে গাভীকে বিষ খাওয়ালেন।তাতে উপাচার্য সাহেব ভেঙে পড়েন।(ততক্ষণে পাঠকমনেও গাভীর প্রতি ভালোবাসা জন্মে যায়।) ঠিক সেই সময় তার আমেরিকার একান্নটা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বক্তৃতা দেওয়া ও প্রচুর অর্থ প্রাপ্তির সুযোগ আসে। সেই আনন্দে তিনি গাভীর কথা ভুলে যান।এবং স্ত্রীকে গিয়ে আনন্দ সংবাদ জানান।তার স্ত্রী প্রত্যুত্তরে গাভী মৃত্যুর রহস্য জানিয়ে দেন।তার পরে উপাচার্যের কি রিয়্যাকশন হয়েছিল লেখক হয়তো ইচ্ছে করেই তা বর্ণনা করেন নি।
Was this review helpful to you?
or
গাভী বিত্তান্ত বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিন্তাবিদ ও লেখক আহমদ ছফা রচিত একটি উপন্যাস। এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপট আবর্তিত হয়েছে আমাদের দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একজন উপাচার্যের জীবন প্রবাহ নিয়ে।এখানে মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ আবু জুনায়েদ এই গল্পের প্রধান চরিত্র। খুবই সাধারন তার জীবন যাত্রা,তার চিন্তা বা স্বপ্ন। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি আর অতিরাজনীতির ঘেরাটোপে এক সময় হঠাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিযুক্ত হন তিনি।এই উপাচার্যের পদে অধিষ্ঠিত হওয়াটাই তার নিজস্ব জীবন যাপন প্রক্রিয়ায় এবং দৃষ্টিভঙ্গীতে নিয়ে আসে আমূল পরিবর্তন।পারিবারিক, সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা নিরসন করতে গিয়ে,বিশ্ববিদ্যালয়ে মিটিং মিছিল দুর্ঘটনা,নিজ দলীয় কর্মীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি সামলে উঠতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন এ দেশে একজন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যক্ষ কখনো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন না,বিভিন্ন মহলকে ব্যালেন্স করে তাকে নিজ পদে টিকে থাকতে হয়।তার উপর তার স্ত্রী নুরুন্নাহার বানুর বিভিন্ন সন্দেহের শিকার হয়েও তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েন।তার এসব কষ্ট দেখে এক পর্যায়ে ভিসির বাংলোতে একটা গোয়ালঘর বানিয়ে দুর্লভ জাতের একটা গাভী উপহার দেন তার চাচা শ্বশুর ঠিকাদার তবারক আলী।সেই গোয়ালে ঠাঁই হয় ‘তরণী’ নামে একটি গাভীর। উপাচার্যের এই গাভীর বংশপরিচয় সম্পর্কে আহমদ ছফা লিখেছেন, ‘সুইডিশ গাভী এবং অস্ট্রেলিয়ান ষাঁড়ের মধ্যে ক্রস ঘটিয়ে এই বাচ্চা জন্মানো হয়েছে’। আবু জুনায়েদ মনে করেন এই প্রাণীটিই বরং তার জন্য মঙ্গলকর। এই প্রাণীটির কোন চাওয়া নেই,দাবি নেই,নেই কোন ষড়যন্ত্র। তখন থেকেই তার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে গাভীটি। তার সমস্ত কার্যক্রম ওই গোয়ালঘর থেকেই পরিচালিত হতে থাকে।এদিকে জুনায়েদ সাহেবের স্ত্রী গাভীটাকে মনে করতে থাকেন তার সতীন। তিনি ষড়যন্ত্র করতে থাকেন, কিভাবে গাভীকে হত্যা করা যায় এবং অবশেষে বিষ খাইয়ে গাভীটাকে হত্যা করার মাধ্যমে উপন্যাসের সমাপ্তি ঘটে। মূলত এই গোয়ালঘরকে কেন্দ্র করেই আহমদ ছফা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্দরমহলের নোংরা চিত্রটি তুলে ধরেছেন,তুলে ধরেছেন গৌরবজ্জল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতি, শিক্ষকদের অভ্যন্তরীন কোন্দল ও অসুস্থ প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সামগ্রিক অবস্থান আর জ্ঞানচর্চার মোড়কের আড়ালে ভেতরকার নোংরা চিত্র এত নিখুঁতভাবে এর আগে কেউ ফুটিয়ে তুলতে পারেন নি।লেখক আহমদ ছফা সেসময়কার আর্থ-সামাজিক, পারিবারিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক পরিবেশকে অত্যন্ত চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন বলে মনে করি।এজন্য উপন্যাসের অনেক চরিত্রই পাঠকদের খুব পরিচিত লাগবে।প্রায় দুই যুগ আগে লেখা হলেও এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপট এবং ঘটনাবলি এখনকার পাঠকের কাছেও খুবই প্রাসঙ্গিক মনে হবে। তাই দেরি না করে অাজই পড়ে ফেলুন বাস্তবতার সাথে সম্পর্কিত চমৎকার এ বইটি।
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যে এমন লেখার খুব অভাব। আহমদ ছফার মত এমন শক্তিশালী লেখক খুব কম দেখা যায়। বইটি অনেকদিন আগে লেখা হলেও তার গুরুত্ব এখনো হারায়নি। এখনো মনে হয় এটি সমসাময়িক। বিশ্ববিদ্যালের ভেতর যে নোংরা রাজনীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরমহলের গোপন খবর একজন গোবাচারা উপচার্যের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই উপন্যাসের কেন্দ্রীর চরিত্র মিয়া মুহম্মদ আবু জুনায়েদ। তিনি বেশ গোবাচারা ধরনের। সব সময় তিনি নিজেকে আড়াল করে রাখেন। এক কথায় তিনি কারো সাথেও নেই, কারো পাচেও নেই। নিজেকে নিয়েই তিনি ব্যস্ত থাকেন। তো সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দলাদলির মধ্যে তিনি হঠাৎ উপচার্য হয়েযান। তিনি কিভাবে উপচার্য বনে যান তা মুলত গবেষণার বিষয় এবং সেখান থেকে এই উপন্যাসের কাহিনী আগাতে থাকে। ছফা এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গোপন বিষয় তুলে ধরেছেন। শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি, ক্ষমতার লোভ, আত্মীয়দের শিক্ষকপদে নিয়োগের মত অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে। এতে করে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রধান উদ্দেশ্য তা ব্যহত হচ্ছে। এই বিষয় গুলো তিনি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এক পর্যায়ে মিয়া মুহম্মদ আবু জুনায়েদ সাহেবের একটি গাভী পালন করার ইচ্ছা জাগলো। গাভী পালনকে কেন্দ্র করে তার পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হল। আবু জুনায়েদ এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালের যাবতীয় কাজ সেই গোয়াল ঘর থেকে করা শুরু করলো। মূলত এই গাভী এখানে প্রতীকি অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। শেষের দিকে এসে উপন্যাসটিকে একটু এলোমেলো মনে হয়েছে। তবে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে বললে বলবো, অসাধারণ একটি লেখা। একবার বইটা নিয়ে বসলে শেষ করা না পর্যন্ত উঠতে ইচ্ছা করবে না।
Was this review helpful to you?
or
#বুক_রিভিউ উপন্যাস : গাভী বৃত্তান্ত লেখক : আহমদ ছফা ধরন : সামাজিক উপন্যাস ব্যক্তিগত রেটিং : ৮/১০ আবু জুনায়েদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক । গোবেচারা টাইপের একজন নিরীহ মানুষ। তার কোনো বন্ধু নেই কোনো শত্রুও নেই। যিনি বউ নুরুন্নাহার বানুর কথা মতো চলেন, ডানে বললে ডানে বামে বললে বামে চলেন। ব্যক্তিত্বহীন মানুষ হিসেবেই তাকে বলা যায়! এই আবু জুনায়েদ ই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঘা বাঘা শিক্ষকদের নাকের উপর দিয়ে উপাচার্য হয়ে গেলেন! এটি ভার্সিটির অত্যাশ্চর্য ঘটনার একটি। যে আবু জুনায়েদ ভার্সিটির শিক্ষক রাজনীতিতে কখনোই যুক্ত হননি তিনিই কিনা ভার্সিটির ঝানু ঝানু শিক্ষকে পাশ কেটে উপাচার্য হয়ে গেলেন তা তো সবাইকে অবাক করবেই! উপন্যাসটার কাহিনীর সূচনা সেখান থেকেই। উপাচার্য হয়ে প্রচন্ড খুশি হয়েছিলেন আবু জুনায়েদ, যিনি কিনা খুশিতে আন্ডা পারা মুরগির মতোই ডাকছিলেন! কিন্তু কদিন দায়িত্ব পালন করেই বুঝতে পারলেন এটা তার জন্য উপযুক্ত না, তিনি শুধু এখানে পুতুলের মতো, নিজের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহনেরই সুযোগ নেই সব কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এর রাজনীতি নির্ধারণ করে! এদিকে উপাচার্য হওয়ার পর থাকার জন্য নতুন ভবনে উঠলেন আবু জুনায়েদ। বাড়ির চারপাশে প্রচুর জায়গা আছে, যা এত বছর ছিল না। এখানে এসে তিনি তাঁর একটা অনেক দিনের শখ, একটা দুধেল গাভী পালবেন সেই শখ পূরণ করলেন।..... এই গাভীকে কেন্দ্র করেই উপন্যাসের ঘটনাগুলো আবর্তিত হয়। একের পর এক মজার ঘটনা ঘটতে থাকে। এক দিকে পারিবারিক সমস্যা অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা, রীতিমতো আবু জুনায়েদ হাঁপিয়ে উঠছিলেন এমন সময় গাভীটা তার কাছে অনেক বড় কিছু হয়ে উঠল। গাভীর কাছে আসলে তিনি যাবতীয় সমস্যা, কষ্ট ভুলে অন্য আরেক জগতের বাসিন্দা হয়ে যান।...... আস্তে আস্তে আবু জুনায়েদ যখনি সময় পান তখনি গাভীর সাথে কাটাতে শুরু করলেন এমনকি অনেক রাত পর্যন্তও থাকেন।.......... একসময় আবু জুনায়েদ এক শিক্ষকের পরামর্শে গোয়ালঘরে থেকেই তাঁর যাবতীয় কাজ করতে শুরু কলেন। গোয়ালঘর ই তার অফিস হয়ে গেল। তার সাথে কোনো শিক্ষাক দেখা করতে আসলে এই গোয়ালঘরেই দেখা করে। এক সময় এই গাভীটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাড়ায়। আবু জুনায়েদের এই গাভীপ্রীতি অনেকেই দেখতে পারেন না, বিশেষত বিপক্ষ শিক্ষক দলের শিক্ষকরা। আবার আবু জুনায়েদের স্ত্রীও সহ্য কতে পারেন না তিনি মনে করেন এই গাভীর কারণেই আবু জুনায়েদের কাছে তাঁর মূল্য কমে গেছে তিনি গাভীকে নিজের সতীনের মতো ভাবতে শুরু করলেন!...... একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকলও, সবগুলোর সমাধানই এই গোয়ালঘরেই হয় । কিন্তু উপন্যাসটা এখানেই শেষ নয়, লেখক আহমদ ছফা তাঁর শক্তিশালী কলম দিয়ে অত্যন্ত নিপুণহাতে ব্যঙ্গার্থকভাবে তুলে ধরলেন আমাদের বাংলাদেশের অহংকার প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দুর্নীতি, নির্লজ্জ শিক্ষক রাজনীতি আর কাদা ছুড়াছুড়ি। ছাত্ররাজনীতির ভয়াবহ রূপও তিনি তুলে ধরলেন।...... উপন্যাসটা খুব ভালো লেগেছে। আহমদ ছফার সাবলীল লিখা আপনাকে পূর্ণ মগ্ন করবে উপন্যাসে। ডুবে যাবেন সাধারণ উপন্যাসের অসাধারণ লেখনশৈলীতে। আমি হলফ করে বলতে পারি কেউ উপন্যাসটি পড়ে হতাশ হবেন না। ভালো লাগবেই।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ লেখনী। কতদিন আগের লেখা কিন্তু বই এর ঘটনাবলী আজ ও বিদ্যমান
Was this review helpful to you?
or
valo
Was this review helpful to you?
or
Gavi Bittanto --- Fine Eat That Frog ---- Very Poor Translation, Need Huge Improvement, Emotional Marketing ---- Reading. So far, good
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই
Was this review helpful to you?
or
hilarious having critical mindset of married woman especially those who has no son as well as an introvert husband who is failed to unveil his love towards own wife
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃগাভী বিত্তান্ত লেখকঃআহমদ ছফা প্রকাশনীঃখান ব্রাদার্স মূল্যঃ১৭৬টাকা আহমদ ছফার এ উপন্যাসটিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কিছু ঘটনা, কিছু দ্বি-মুখী আচরণ এবং পুরো সমাজকে ব্যাঙ্গ করেছেন।উপন্যাসটি কাহিনী হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য উপাচার্য্য পদে নিযুক্ত আবু জুনায়েদের জীবন কাহিনী নিয়ে। গোবেচারা টাইপ একটা মানুষ কিভাবে সকল ক্ষমতার উৎস হয়ে উঠে এবং তাকে ঘিরে থাকা মানুষদের কার্যক্রম বইটাতে উঠে আসে। বৃহৎ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে জুনায়েদ সাহেব নানাবিধ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। এর কোনটা ছিল পরম আনন্দের, আবার কোনটা ছিল বিষাদের। ছোট বয়স থেকে তার একটা গাভী লালনপালনের যে ইচ্ছে ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইজাদার এবং মিয়া মুহাম্মদ আবু জুনায়েদের স্ত্রীর পূর্বপরিচিত তবারক আলী পূরণ করে দেওয়ার পরে এই উপন্যাসে নতুন মাত্রা যোগ পায়। এদিকে জুনায়েদ সাহেবের স্ত্রী গাভীটাকে মনে করতে থাকেন তার 'সতীন' বা 'শত্রু' । তিনি ষড়যন্ত্র করতে থাকেন, কিভাবে গাভীটাকে হত্যা করা যায়। অবশেষে বিষ খাইয়ে যখন গাভীটাকে হত্যা করা হলো, জুনায়েদ সাহেব বাকরোধ হয়ে পরেন। কিন্তু একই সময়ে উনি আমেরিকায় বক্তৃতা দেয়ার জন্যে দারুণ একটা অফার পান এবং স্ত্রীকে তা বলতে গেলে তার স্ত্রী সরল স্বীকারোত্তিতে বলে দেয়, সেইই খুন করে গাভীটাকে, উপন্যাসের শেষে ঠিক কি হলো, তা আমার কাছে অস্পষ্ট। লেখক আসলে পাঠকদের কি বুঝাতে চেয়েছেন, শেষে এসে তা বোধগম্য হয় গভীরভাবে। সব মিলিয়ে সমাজের পরিপ্রেক্ষিতে অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
আমাদের চোখের সামনে অনেক কিছু ঘটে যা আমরা অকপটে বলতে বা লিখতে পারি না। সমাজে বিষয়গুলোকে বলা হয় ‘ওপেন সিক্রেট’। আমাদের সাহিত্যেও এ ধরনের বিষয় কদাচিৎ আসে। শুধুমাত্র গভীর পর্যবেক্ষণক্ষমতা থাকলেই এ ধরনের বিষয় নিয়ে সাহিত্য রচনা করা যায়। আহমদ ছফার ‘গাভী বিত্তান্ত’ উপন্যাসটি তেমনই এক বিষয়ের ওপর লেখা, যা নিয়ে সচরাচর সাহিত্য হয় না। উপন্যাসের মূল কেন্দ্র একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং মূল চরিত্র সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত উপাচার্য মিঞা মোহাম্মদ আবু জুনায়েদ। বিশ্ববিদ্যালয়টির কোনো নাম উচ্চারণ না করলেও বর্ণনার মাধ্যমে তিনি পাঠকের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিষ্কার করে তুলেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের সবচাইতে প্রাচীন এবং সম্ভ্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়’। বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদে আবু জুনায়েদের আরোহন এবং এর সামান্য পূবর্বর্তী এবং পরবর্তী ঘটনাচক্র উপন্যাসটির বিষয়বস্তু। আবু জুনায়েদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ ব্যক্তি হলেও নিজের ঘরে বেগম নুরুন্নাহার বানুর কাছে তিনি বড় অসহায়। শ্বশুরের টাকায় আবু জুনায়েদ লেখাপড়া করেছেন, এই খোটা নুরুন্নাহার বানু উঠতে বসতে তাঁকে দেন। আবু জুনায়েদ রসায়নশাস্ত্রের অধ্যাপক। একমাত্র বাজারের তরকারি এবং মাছওয়ালা ছাড়া আর কারো সঙ্গে কোনোদিন হম্বিতম্বি করেননি তিনি। নিতান্ত গোবেচারা এবং সহজ-সরল মানুষ। এই মানুষটিকে উপাচার্য প্যানেলের নির্বাচনে নিয়ে আসেন তাঁর ডিপার্টমেন্টের অনুজ শিক্ষক দিলরুবা খানম। পূবর্বর্তী উপাচার্যের প্রতি ক্ষোভ থেকেই তিনি শিক্ষক রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন এবং ডোরাকাটা দলের হয়ে উপাচার্য প্যানেল ঘোষণা করেন। এই প্যানেলের তিন শিক্ষকের মধ্যে ভাগ্যক্রমে আবু জুনায়েদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেন। নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া তিন শিক্ষকের মধ্যে থেকে একজনকে উপাচার্য নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি আবু জুনায়েদকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিলে শুরু হয় তাঁর নতুন জীবন, উপাচার্য জীবন। উপাচার্য ভবনে উঠে আসেন তিনি। বেগম নুরুন্নাহার বানুও বুঝতে শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্ট লেডি হিসেবে তাঁর কী করা উচিত, কীভাবে চলা উচিত। এরই মধ্যে ঘটনাচক্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকাদার শেখ তবারক আলীর সঙ্গে পরিচয় ঘটে আবু জুনায়েদের। বর্তমান উপাচার্য সাহেব যে শ্বশুরের পয়সায় লেখাপড়া করেছেন সেটি খুব ভালোমতো জানতেন তবারক আলী। কারণ আবু জুনায়েদের শ্বশুর ছিলেন একজন ঠিকাদার আর তাঁর হাত ধরেই তবারক আলীর সব উন্নতি। সে কারণে তিনি আজও কৃতজ্ঞ। কৃষক পরিবারের সন্তান আবু জুনায়েদের জমির প্রতি প্রচণ্ড লোভ। তিনি ঢাকা শহরের আশপাশে জমির দালালের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান স্বস্তায় বিপুল পরিমাণ জমিলাভের সুযোগের আশায়। আরেকটা শখ অবশ্য আবু জুনায়েদ মনে মনে পোষণ করেন, বলা যায় তাঁর আজন্ম লালিত সাধ। সেটি হলো একটি গাভী পুষবেন তিনি। আগে যেসব কোয়ার্টারে থেকেছেন তিনি, সেখানে গরু রাখার জায়গা ছিল না। কিন্তু উপাচার্য ভবনের বিশাল আঙিনায় সে সমস্যা নেই। ঘটনাক্রমে শেখ তবারক আলীর বাড়িতে সপরিবারে দাওয়াতে যান আবু জুনায়েদ। সেখানে তিনি তবারক আলীর অঢেল সম্পদের নমুনা দেখতে পান এবং সুযোগ পেয়ে নিজের আজন্ম লালিত সাধের কথা চাচাশ্বশুরকে জানান। উপাচার্য জামাইয়ের এই সাধ পূরণ করা শেখ তবারক আলীর জন্য কোনো বিষয়ই ছিল না। তাই তিনি সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন এবং উপাচার্য ভবনের আঙিনায় একটি সুদৃশ্য গোয়ালঘর তৈরি করে দেন। সেই গোয়ালে ঠাঁই হয় ‘তরণী’ নামে একটি গাভীর। উপাচার্যের এই গাভীর বংশপরিচয় সম্পর্কে আহমদ ছফা লিখেছেন, ‘সুইডিশ গাভী এবং অস্ট্রেলিয়ান ষাঁড়ের মধ্যে ক্রস ঘটিয়ে এই বাচ্চা জন্মানো হয়েছে’। সাভার ডেইরি ফার্ম থেকে নগদ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন শেখ তবারক আলী। ছিপ নৌকোর মতো আকৃতি বলে এই প্রজাতির গরুর নামকরণ করা হয়েছে ‘তরণী’। উপাচার্য আবু জুনায়েদের জীবনে বিশাল পরিবর্তন নিয়ে এলো তরণী। তাঁর মন এখন পড়ে থাকে গোয়ালঘরে। দিনরাত সেখানেই কাটান তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মিটিং বা কাগজপত্র সই করেন সেখানে বসে। তাঁর কাছে যেসব শিক্ষক আসেন, তাঁদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলাপও তিনি সারেন গোয়ালঘরে। এই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ঔপন্যাসিক আহমদ ছফা লিখেছেন, ‘মোগল সম্রাটেরা যেমন যেখানে যেতেন রাজধানী দিল্লিকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন, তেমনি আবু জুনায়েদও দিনে একবেলার জন্য গোটা বিশ্ববিদ্যালয়কে গোয়ালঘরে ঢুকিয়ে ফেলতেন। দিনে দিনে গোয়ালঘরটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃৎপিণ্ড হয়ে উঠল। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে এটাই পৃথিবীর একমাত্র গোয়ালঘর, যেখান থেকে আস্ত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মপদ্ধতি পরিচালিত হয়’। উপাচার্য আবু জুনায়েদের জীবন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ সবটাই হয়ে পড়ে গোয়ালঘরকেন্দ্রিক। এই গোয়ালঘরকে রঙ্গমঞ্চ বানিয়ে আহমদ ছফা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দৈন্যদশা এবং শিক্ষক রাজনীতির নোংরা দিকটি তুলে ধরেছেন। উপন্যাসের অনেক চরিত্রই পাঠকদের তাই চেনা-পরিচিত মনে হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়টিও সবার কাছে জীবন্ত হয়ে উঠবে আহমদ ছফার প্রাণবন্ত লেখনীর কারণে। তাই ২০ বছর আগে লেখা হলেও এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপট এবং ঘটনাবলি এখনকার পাঠকের কাছেও খুবই প্রাসঙ্গিক মনে হবে
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন সারকাজম, স্যাটায়ার। আহমেদ ছফা আমার খুবই অপ্রিয় লেখক!!!টাশকি খাবার দরকার নাই ওনার একটা বইয়ের ১০পেজের মত পড়েছিলাম যখন ক্লাস ৫-৬ এ পড়ি, সেইসময়ে অপছন্দ করাটা খুবই স্বাভাবিক । অসম্ভব শক্তিমান লেখক, এবং বাস্তব ঘটনাগুলোকে যেভাবে তুলে ধরছেন সেটা অসাধারন।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতাbr বইয়ের নামঃ গাভী বিত্তান্তbr লেখকঃ আহমেদ ছফাbr ধরনঃ সমকালীন উপন্যাসbr মূল্যঃ ২০০ টাকা ( রকমারি মূল্যঃ ১৭৬ টাকা) br br .br #আবু জুনায়েদ এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। br বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য উপাচার্য্য পদে নিযুক্ত আবু জুনায়েদের জীবন কাহিনী নিয়ে মূলত বইটা। গোবেচারা টাইপ একটা মানুষ কিভাবে সকল ক্ষমতার উৎস হয়ে উঠে এবং তাকে ঘিরে থাকা মানুষদের কার্যক্রম বইটাতে উঠে আসে। বৃহৎ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে জুনায়েদ সাহেব নানাবিধ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। এর কোনটা ছিল পরম আনন্দের, আবার কোনটা ছিল বিষাদের। br .br আবু জুনায়েদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ ব্যক্তি হলেও নিজের ঘরে বেগম নুরুন্নাহার বানুর কাছে তিনি বড় অসহায়। শ্বশুরের টাকায় আবু জুনায়েদ লেখাপড়া করেছেন, এই খোটা নুরুন্নাহার বানু উঠতে বসতে তাঁকে দেন। আবু জুনায়েদ রসায়নশাস্ত্রের অধ্যাপক। একমাত্র বাজারের তরকারি এবং মাছওয়ালা ছাড়া আর কারো সঙ্গে কোনোদিন হম্বিতম্বি করেননি তিনি। নিতান্ত গোবেচারা এবং সহজ-সরল মানুষ।br .br এই সহজ-সরল গোবেচারা মানুষটিকে উপাচার্য প্যানেলের নির্বাচনে নিয়ে আসেন তাঁর ডিপার্টমেন্টের অনুজ শিক্ষক দিলরুবা খানম। উপাচার্য প্যানেল ঘোষণা করা হলে দেখা যায় যে এই প্যানেলের তিন শিক্ষকের মধ্যে ভাগ্যক্রমে আবু জুনায়েদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেন। নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া তিন শিক্ষকের মধ্যে থেকে একজনকে উপাচার্য নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি আবু জুনায়েদকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিলে শুরু হয় তাঁর নতুন জীবন, উপাচার্য জীবন।br .br কৃষক পরিবারের সন্তান আবু জুনায়েদ। ছোট বয়স থেকে তার একটা গাভী লালনপালনের যে ইচ্ছে ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইজাদার এবং মিয়া মুহাম্মদ আবু জুনায়েদের স্ত্রীর পূর্বপরিচিত তবারক আলী পূরণ করে দেওয়ার পরে এই উপন্যাসে নতুন মাত্রা যোগ পায়। br সাভার ডেইরি ফার্ম থেকে নগদ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন শেখ তবারক আলী। ছিপ নৌকোর মতো আকৃতি এই প্রজাতির গরু ছিল এটি।আবু জুনায়েদ এর মেয়ে দিলু এর নামকরণ করে ‘তরণী’। উপাচার্য আবু জুনায়েদের জীবনে বিশাল পরিবর্তন নিয়ে এলো তরণী। তাঁর মন এখন পড়ে থাকে গোয়ালঘরে। দিনরাত সেখানেই কাটান তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মিটিং বা কাগজপত্র সই করেন সেখানে বসে। উপাচার্য আবু জুনায়েদের জীবন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ সবটাই হয়ে পড়ে গোয়ালঘরকেন্দ্রিক।br .br এদিকে জুনায়েদ সাহেবের স্ত্রী গাভীটাকে মনে করতে থাকেন তার 'সতীন' বা 'শত্রু' । তিনি ষড়যন্ত্র করতে থাকেন, কিভাবে গাভীটাকে হত্যা করা যায়। শেষমেষ নুরুননাহার বানু গাভীটাকে বিষ খাইয়ে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।শেষ পর্যন্ত তিনি তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন কি না বইটি পড়লেই বুঝা যাবে।br br .br #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ আহমদ ছফা’র লেখা আগে কখনো পড়া হয়নি।প্রথম পড়া বই। পড়ে বুঝলাম যে তিনি খুবই রসিক মানুষ ছিলেন, তা না হলে ‘গাভী বিত্তান্ত’ নামের আড়ালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অসঙ্গতিকে এতো চমৎকারভাবে ব্যাঙ্গ করা সম্ভব হতো না। বেশ ভালো লেগেছে বইটি।
Was this review helpful to you?
or
আহমদ ছফা সেই ১৯৯৪-৯৫ সালে মাত্র ২ মাস ১০ দিনে ৬ মাসের গর্ভবতী একটি গাভীর, যার বাবা অস্ট্রেলীয় আর মা সুইডিশ আর মালিক এদেশীয় অক্সফোর্ড এর ১ নম্বর ব্যক্তি, বিত্তান্ত লিখে গেছেন। কিন্তু তার রেশ মানে গাভীটির মালিকের কল্পনার রাজ্যে স্থাপিত তাজমহলের ভর যেন আমাদের অক্সফোর্ডে রয়েই গেছে। প্রকৃতপক্ষে তিনি তথাকথিত ক্ষমতাবান ও তাদের দোসরদের কাছা খুলে দিয়েছেন। আবু জুনায়েদের বউ নুরুন্নাহার বানু গাভীটিকে সাক্ষাত সতীন ভাবতো। তাই পরিকল্পনামত বিষ খাইয়ে সতীনকে মারার বন্দোবস্ত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে দৃশ্য-অদৃশ্য হাজারো আবু জুনায়েদের লাভের গাভীগুলোতো বিশ্ববিদ্যালয়েরও সতীন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তো নিজে নিজেই বানুর মত অসহনীয় অপমান, লাঞ্ছনা, অবজ্ঞা, অবহেলার কারনে সেই সব আবু জুনায়েদদের গাভীগুলোর মুখে প্রতিবাদ স্বরূপ বিষ ঢেলে দিতে পারে না। ডোরাকাটা, নীল, বেগুনি দলের ছাত্র ও শিক্ষকরাও একেকটা আবু জুনায়েদের পাতানো চাচা শ্বশুর তবারক আর পাতানো ভায়রা আবেদর প্রতিরূপ যারা সাধারণ ছাত্রদেরকে দিলুর মত ভোগ করে তবারকের কন্যা ও বানুর মত শোষণ করে। ছফা একজন আবু জুনায়েদের গল্প শুরু করে অসংখ্য আবু জুনায়েদ, তাদের চরিত্র, লোভ, হিংসা, পরশ্রীকাতরতা, পড়ানোর অনিহা, দ্বিচারিতা, দুর্নীতি তুলে এনেছেন তার উপন্যাস "গাভী বিত্তান্ত" এ। আমাদের অক্সফোর্ড এর কর্তাদের কর্ম, ছাত্র শিক্ষকদের ধর্ম, রাজনীতিকদের আচরণ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, এমনকি শিক্ষক কর্মচারীদের আবাসিক এলাকার গৃহিণীদের কথাও আছে উপন্যাসটিতে। পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল এটা আমার বিশ্ববিদ্যালয়েরই কথা। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়গুলোর স্মৃতি মনে পড়ছিল আর জলজ্যান্ত আবু জুনায়েদদের চোখের সামনে দেখছিলাম। মনে হচ্ছিল আমার সামনেই হচ্ছে এসব কিছু। এখনো পত্রিকার পাতায় তাই দেখি যা আমাদের সময় দেখেছিলাম আর গাভী বিত্তান্ত পরতে পরতে কল্পনায় ভাসছিল। হয়ত আমাদের অক্সফোর্ড একদিন সত্যিকারের অক্সফোর্ডকেও ছাড়িয়ে যাবে। সেদিন এই উপন্যাসের পাঠকরা ভাববে ছফা হয়তো কল্পনার রঙ মিশিয়ে মঙ্গল গ্রহের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু জুনয়াদদের গল্প বলছেন।
Was this review helpful to you?
or
বই : গাভী বিত্তান্ত। লেখক : আহমদ ছফা। মূল্য : ২০০টাকা। পৃষ্ঠা : ১২০। প্রচ্ছদ : মোবারক হোসেন লিটন। প্রকাশক : খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি। #লেখক_পরিচিতি আসলে আহমদ ছফার নাম শোনেনি বা উনাকে চেনে না এমন কোনো পাঠকই হয়ত বাংলাদেশে নেই। আহমদ ছফা ১৯৪৩ সালের ৩০ জুন চট্টগ্রাম জেলার চান্দনাইশ থানাধীন গাছবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। একাধারে তিনি ছিলেন একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন লেখক,ঔপন্যাসিক,কবি,চিন্তাবিদ ও গণবুদ্ধিজীবী। জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক ও সলিমুল্লাহ খানসহ আরো অনেকের মতে, মীর মশাররফ হোসেন ও কাজী নজরুল ইসলামের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি মুসলমান লেখক হলেন আহমদ ছফা। কীর্তিমান এ বাঙ্গালী ২৮ জুলাই ২০০১ পরলোক গমন করেন। #কাহিনী_সংক্ষেপ শিক্ষক হিসেবে আবু জুনায়েদ ছিলেন গোবেচারা ধরনের মানুষ। কিন্তু হঠাৎ করে তার উপাচার্য পদে নিয়োগপ্রাপ্তির ঘটনা সারা বিশ্ববিদ্যালয় হৈ চৈ ফেলে দেয়। নানা ফ্যাকাল্টির সদস্যবৃন্দ আবু জুনায়েদের উপাচার্য পদে নিয়োগের ব্যাপারকে সপ্তাশ্চর্য হিসেবে বিস্মিয় প্রকাশ করেন। তবে সবচেয়ে বেশি বিস্মৃত হয়েছেন আবু জুনায়েদ সাহেব নিজেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কাজ অত সহজে হওয়ার কথা নয়। সহজে ভর্তি হবার উপায় নেই, সহজে পাশ কপ্রে ছাত্ররা বেরিয়ে যাবে সে পথ একরকম বন্ধ। একজন তরুণ শিক্ষককে ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষকের রদ্দি মার্কা কাজটা পেতে হলেও কয়েয় জোড়া জুতার জীবন বিসর্জন না দিয়ে উপায় নেই। এছাড়াও কত প্রকার আর কি কি সমস্যা থাকতে পারে তা না হয় বই পড়েই জেনে নেয়া ভালো হবে। এমন এক অবস্থা যেখানে, " বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচ্যগ্র মেদনী " একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে মিয়া মুহম্মদ আবু জুনায়েদের বিনা প্রয়াসে উপাচার্য বনে যাওয়ার ঘটনাটা সকলকে বিস্ময়াবিষ্ট করে বৈকি! আর ঐদিকে তো আছেই নুরুন্নাহার বানুর পাঁচকাহন। তার ভাগ্যের জোরেই নাকি কোনো দেন-দরবার না করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে উঁচু পদে নিয়োগ পেয়েছেন আবু জুনায়েদ। বিশ্ববিদ্যালয়, কোয়াটার, ক্লাব, ক্লাস সর্বত্র কানাঘুষা, হৈ চৈ এক দিকে যেমন তিনি অস্থির, তেমন বউয়ের জ্বালায় পাগল প্রায়। এত তামঝামের মধ্যেও পালটে গেল আবু জুনায়েদের জীবন ধারা। আগে যেখানে সে ক্লাস নিতে গেলেও শার্ট আর প্যান্ট পড়েই চলে যেতেন, এখন বাসাতেও তাকে সুট আর টাই পড়ে থাকতে হয়। তার রয়েছে বিশাল বড় কোয়াটার সাথে গাড়ি, ড্রাইভার, রাঁধুনি, মালি আর কোয়াটারের পেছনে অনেকটা ফাঁকা জায়গা! সেই সাথে অনেকের আগের চেয়ে বেশি আদর আপ্যায়নও। কিন্তু বউ বেগম নুরুন্নাহার বানুর কাছে তিনি আগের মতই অপদার্থ স্বামী রয়ে গেলেন। ঘটনাক্রমে আবু জুনায়েদ তার স্ত্রীর দুঃসম্পর্কের চাচা শেখ তবার আলির সাথে পরিচিয় হয়। তবারক আলি নুরুন্নাহার বানুর বাবার বন্ধু সেই সুবাদে তিনি জুনায়েদ ও বানুর চাচা। আবু জুনায়েদের গুনে তিনি ভীষণ খুশি। তবারক আলিই একদিন গল্পের ছলে জানতে পারেন তার ভাইঝি জামাই গরু খুব পছন্দ করেন। আর তাই তিনি কিছু দিন পরে, তবারক আলি অদ্ভুত সুন্দর বিশেষ প্রজাতির এক গরু উপহার হিসেবে পাঠান। শুধু তাই নয় , তিনি নিজে হাতে নকশা এঁকে তার মেয়ে জামাইকে দিয়ে সে গোয়াল ঘর করে দেয়ার ব্যবস্থা।করেন। সাথে গরুর রাখালেরও। এ ঘটনায় সারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা জুরে সৃষ্টি হয় ব্যাপক হৈচৈ। আর একের পর এক ঘটতে থাকে নানা মজার অদ্ভুত সব ঘটনা। এমন কি এই গাভীকে কেন্দ্র করেই নিরীহ প্রকৃতির মানুষ আবু জুনায়েদর জীবনেরও ঘটে যায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। #পাঠ_প্রতিক্রিয়া ইংরেজি শব্দ স্যাটায়ার বা Satire এর অর্থ হল, ব্যাঙ্গ বিদ্রূপের মাধ্যমে কাউকে সমালোচনা করা। আহমদ ছফা তার গাভী বিত্তান্ত উপন্যাসটা মূলত একটি স্যাটায়ার। আহমদ ছফা তার সুদীপ্ত প্রাঞ্জল লেখনী দ্বারা সমাজব্যবস্থার বিরাজমান অসংগতি তুলে ধরেছেন খুব সাবলীলভাবে। তার সমালোচনার তীব্র তীরে ক্ষতবিক্ষত করেছে, প্রশ্নবাণে জর্জরিত করছে প্রচলিত সমাজব্যবস্থাকে! আহমদ ছফার সাহসীকতা সত্যি প্রশংসার দাবিদার। তিনি দেখিয়েছেন ক্ষমতার প্রতি মানুষের লোভ কিভাবে মানুষকে বদলে দেয়। নির্ভেজাল প্রকৃতির মানুষ আবু জুনায়েদ ক্ষমতা লাভের পরের তার স্বভাব পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু তার স্ত্রী নুরুন্নাহার বানুর আচরণের আমূল পরিবর্তন দেখে বোঝা যায় যে, ক্ষমতা মানুষকে নীতিবান করলেও চরম ক্ষমতা মানুষকে দুর্নীতিপরায়ণ করে তোলে। সহজসরল ভাষায় রচিত এই উপন্যাসটি সমাজসংস্কারের প্রতি গভীর ইঙ্গিত প্রদান করে। আহমদ ছফার গাভী বিত্তান্ত আমার পড়া প্রথম বই। আর দ্বিতীয় হলো অলাতচক্র। আমি দুইটা বই মুগ্ধতা নিয়ে শেষ করেছি, আর বনে গেছি ছফা ভক্তদের একজন। আর এই সবটুকুন কৃতিত্বই হুমায়ূন আহমেদ স্যারের। কেননা স্যারের মাধ্যমেই আমি আহমদ ছাফার খোঁজ পাই, যার পরিপূর্ণতা পায় বই দুটি পড়ার মধ্যদিয়ে। বই হোক ভালোবাসার প্রতীক।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নাম: গাভী বিত্তান্ত লেখক: আহমদ ছফা গভীর অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন খুরধার লেখক আহমদ ছফার বহুল আলোচিত-সমালোচিত "গাভী বিত্তান্ত" পড়লাম কয়েকদিন আগে। না। এখানে পৌরুষের জৌলুশে, আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্বে "চিরাচরিত অসাধারন" কোন নায়ক নেই।নেই শিরায় শিরায় শিহরন জাগানো কোন তন্বী তরুনীর চপল-চঞ্চল রোমাঞ্চকর কাহিনী। নেই বুক ঢিপ-ঢিপ করা কোন অতিনাটকীয় সিকোয়েন্স। আর এসব "নেই" স্বত্বেও একটা বই কীভাবে এতটা হৃদয়গ্রাহী হয়ে উঠতে পারে সেটাই আশ্চর্যের বিষয়, শুধুমাত্র আহমদ ছফার কলমেই বোধ হয় সেটা সম্ভব। ১৯৯৫ সালে প্রথম প্রকাশিত "গাভী বিত্তান্ত"তে যে গাভীর বৃত্তান্ত আছে সেটি সাভার ডেইরী ফার্মে অস্ট্রেলিয়ান ষাঁঢ় ও সুইডিশ গাভীর ক্রসে উৎপাদিত; ছিপনৌকার মত গড়ন, সুন্দর চোখ, উন্নত গ্রীবাবিশিষ্ঠ এদেশের নবআবিষ্কৃত প্রথম গাভী "তরনী"। "নায়িকার স্থানে গাভী-প্রেমিকা!" -এমন করে ভেবে যদি কোন পাঠকের গা-ঘিনঘিনে ঘৃনাভাব জন্মায়, সেটা পাঠকের রসবোধহীন-নির্বুদ্ধিতা ছাড়া কিছু নয়। আসলে লেখকের মূল উদ্দেশ্যটি হচ্ছে তৎকালীন ঢাবি তথা সমসাময়িক সমাজের রাজনৈতিক সংকট, অবদমিত নৈতিকতা, উচ্চপদস্থ কর্তা ব্যক্তিবর্গের কপটতা-দ্বিচারিতা একথায় ব্যক্তিক-সামাজিক-পারিবারিক-রাজনৈতিক নোংরামি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া। আর সেটাতে তিনি সফল হয়েছেন। আর এই কাজটি করতে গিয়েই জন্ম হয়েছে "আবু জুনায়েদ" চরিত্র, যে গোবেচারা টাইপ নির্ঝঞ্ঝাট মানুষটি চাষার ছেলে হয়ে শ্বশুরের পয়সায় শহরে পড়াশুনা করে ঢাবির শিক্ষক হয়েছেন এবং পরে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঢাবি-র ভিসি হয়ে গিয়েছেন, সাধ-সাধ্য আর দায়িত্বের অসামঞ্জস্যে, পড়েছেন চরম বিপাকে। ধীরে ধীরে এই সৎ মানুষটি বুঝতে পারলেন ক্ষমতা থাকলেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তার নেই; সে নিষ্ক্রীয় পুতুল মাত্র। তার চোখে ধরা পড়ল সামাজিক অসঙ্গতি আর নোংরামি, যে ত্রুটিপূর্ন সিষ্টেমের বাইরে সে নিজেও নয়। আবু জুনায়েদের স্ত্রী "নুরুন্নাহার বেগম" ঠিকাদার গোফরান সাহেবের গর্বিতা কন্যার প্রধান কাজ গোবেচারা স্বামীকে সন্দেহ আর গ্রাম্য ভাষায় তীব্র গালিগালাজ করা, যদিও সে জুনায়েদকে ভালবাসতো। ভিসি হওয়ার পর কৃষক-পুত্র জুনায়েদের লালিত-স্বপ্ন গাভী পোষার শখ পূরন হয়, প্রাসাদোপম সরকারি বাসভবনের প্রাঙ্গনে গাভী "তরনী"র জন্য গোয়াল তৈরী হয়। বিভিন্ন ঘটনার ঘনঘটায় জুনায়েদ ঘর-বাইরে বিভিন্ন চাপে-বিপাকে পড়ে যখন হাঁপিয়ে উঠতেন, গাভী সন্দর্শনে-স্পর্শনে স্বস্তি পেতেন। এদিকে স্বামীকে গভীর রাতে একদিন গোয়ালঘরে গাভীর ওলানে হাত দিতে দেখায় স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগমের সন্দেহের তীর "তরনী"কেও ছাড়ে না, সে গাভীকে সতীন ভাবতে শুরু করে, অবশেষে বিষ খাইয়ে হত্যা করে অবলা-অসহায় তরনীকে। সারকথা- নুরুন্নাহারের অকর্মন্য মস্তিষ্কজাত চিন্তার অসঙ্গতিতে যেমন অবলা গাভীটি প্রান হারিয়েছে, ভুল সিস্টেমে আর সিচুয়েশনের শিকার জুনায়েদের প্রানও ওষ্টাগত। ঠিক একইভাবে দন্ডমুন্ডের কর্তাব্যক্তিগুলোর অন্যায়-অবহেলা-অদক্ষতায় সমাজ-রাষ্ট্র আজ বিধ্বস্ত। তাই আমি বলব, ১৯৯৫ এর "গাভী বিত্তান্ত" শুধু একটা গাভীর বৃত্তান্ত নয়; এটা এদেশের বিশ্ববিদ্যালয় তথা আমাদের সমাজ-রাষ্ট্রের বৃত্তান্ত যা আজও প্রচন্ডভাবে প্রাসঙ্গিক।




