
User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
সুখপাঠ্য
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম দেখেই হয়তো অনেকে ভাবতে পারেন সব গল্পই বোধহয় তান্ত্রিক বা তান্ত্রিকতা নির্ভর নানা ক্রিয়াকলাপ সংক্রান্ত গল্পের এক সংকলন। আসলে বইয়ের প্রথম গল্পের নামানুসারে বইটির নামকরণ। তবে সবগুলো গল্পই অতিপ্রাকৃত ভয় আর রহস্যমাখা। মোট ১৫ জন লেখকের ১৬ টি গল্প সংকলন রয়েছে বইটিতে। এর মধ্যে হাতকাটা তান্ত্রিক, বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন, শিকার, আগমন গল্পগুলো বেশ লেগেছে। অতিপ্রাকৃত রহস্যমাখা গল্প যাদের পছন্দ তাদের বইটি ভালোই লাগবে আশা করি। ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৭/১০।
Was this review helpful to you?
or
রূপংরূপ বিবর্জিতস্য ভবতো ধ্যানেন যদবর্ণিতং। অর্থাৎ, হে রূপহীন ঈশ্বর! ধ্যানে তোমার রূপ বর্ণনা করেছি। তনোতি ত্রায়তী তন্ত্র – ধারণা করা হয়, তন্ত্র শব্দের আক্ষরিক উৎপত্তি উক্ত শব্দগুলো হতে। তবে ব্যাকরণ শাস্ত্র বলে, তন্ত্র শব্দটি তন্ ধাতু নিষ্পন্ন যার অর্থ বিস্তার লাভ করা। তাহলে এক কথায় বললে বলা যায় যে, যেই শাস্ত্র দ্বারা জ্ঞানের বিস্তার লাভ হয় তাই তন্ত্র শাস্ত্র। আর যে এই তন্ত্রশাস্ত্রে পান্ডিত্য অর্জন করে সাধারণত তাকে তান্ত্রিক বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তন্ত্রশাস্ত্র মূলত ঈশ্বর উপাসনার একটি বিশেষ পথ হলেও বেশীরভার ক্ষেত্রেই তা অপদেবতা বা শয়তানের আরাধনা বলেই প্রসিদ্ধ। প্রাচীনকালে মুনিঋষিদের দ্বারা উৎপন্ন এই জ্ঞানের সাধনাটা ক্রমেই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে লোভ, ক্ষতি আর খারাপ কাজের জন্য প্রসিদ্ধ লাভ করেছে। ক্রীং হূং হ্রীং গুহ্যে কালিকে হূং হূং হ্রীং হ্রীং স্বাহা। উপরোক্ত বাক্যসমূহ একটি মন্ত্র বিশেষ যা নির্দিষ্ট নিয়ম নীতি মেনে জপলে সিদ্ধতা অর্জনের মধ্যে সাধণা পূর্ণ হয়। তান্ত্রিকরা পঞ্চ ম-কারের (মদ্য, মাংস, মৎস্য, মুদ্রা ও মৈথুন) সাধনা করে। পঞ্চ ম-কার হচ্ছে পঞ্চগব্যের (দধি, দুগ্ধ, ঘৃত, গোমূত্র ও গোময় গরু– থেকে প্রাপ্ত এ পাঁচটি দ্রব্য) বিপরীত। এই বিপরীত বিশ্বাস বলে তান্ত্রিকরা কেবল মুক্তিই লাভ করে না, জাদুকরি ক্ষমতা বা সিদ্ধিও লাভ করে। যাই হোক, এখন মূলকথা হচ্ছে, উপরোক্ত আলোচনার ব্যপ্তি আর বিশালতা বলে শেষ করার মতো নয় তাই খানিকটা ধারণা দেয়া হলো; তবে যেহেতু বই নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি সেটাই আগে করি। সেবা প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত তৌফির-হাসান-উর-রাকিব সম্পাদিত হাতকাটা তান্ত্রিক বইটাই আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু। আসলে মানুষ যখন ভুল করে, যুক্তি-বুদ্ধির ধার ধারে না বলেই করে। – অরুণ কুমার বিশ্বাস মূহাম্মদ আলমগীর তৈমূর এর হাতকাটা তান্ত্রিক এবং বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন, অরণ্য সরওয়ার এর আছে ও নেই, তানজীম রহমান এর পিপাসার্ত, সোহানা রহমান এর সাদা চোখ, রতন চক্রবর্তী এর অন্য কিছু, রাজীব চৌধুরী এর নিশি মিয়া, রুমানা বৈশাখী এর নিতল, নাজনীন রহমান এর আগমন, আফজাল হোসেন এর পঞ্চবক্র তান্ত্রিক, নাশমান শরীফ এর গোরস্থানের কাছে, অরুণ কুমার বিশ্বাস এর ছায়াশরীর, প্রিন্স আশরাফ এর হরর ক্লাব, রাকিব হাসান এর জটা পাগল ও জিনের বাদশা, মিজানুর রহমান কল্লোল এর শিকার এবং মুহাম্মদ শাহেদুজ্জামান এর সেই আংটি; সবমিলিয়ে মোট ১৫ জন লেখকের ১৬ টা গল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে এই গল্প সংকলনটি। বইটার নাম হাতকাটা তান্ত্রিক হলেও সবগুলো গল্পই তান্ত্রিকতা নির্ভর নয়। তবে হ্যাঁ, সবগুলো গল্পই ভয়ের। এত গল্পের বিবরণ দেয়া এবং আপনাদের পক্ষে পড়াটা একটা যন্ত্রণার শামিল। তাই, ২/৩ টা গল্পের থেকে খানিকটা তুলে ধরলাম। পিপাসার্ত – তানজীম রহমান এখলাস মুয়াজ্জিন বসে আছে শহরের নামকরা শিল্পপরির ঘরে। এখলাসকে ডেকে আনা হয়েছে একটা বিশেষ কাজে। বাড়ির বর্তমান কর্তা জামিল সামাদ কিচ্ছুক্ষণ পর এসে ঘরে ঢুকে। নিজের অতীত কাহিনী শোনায় এখলাসকে, বাবার মৃত্যুর ঘটনা বলে, এমনকি বাবার আত্মার সাথে যোগাযোগ করার ঘটনাও এড়িয়ে যায় না সামাদ। কিন্তু কোন একটা কারণ বশত সেটা আর সম্ভব হয়নি আর ঘটনার সূত্রপাত সেখান থেকেই। সামাদ বাসার প্রত্যেকটা কলের পানি থেকে ভেজা, স্যাঁতস্যাঁতে আর মৃতের একটা গন্ধ পায়। এই কারণেই এখলাস মুয়াজ্জিনকে ঢাকা। এখলাস মুয়াজ্জিন আগামীকাল সকালবেলা আসার কথা বলে বিদায় নেয়। রাতে নিজের ঘরে আচমকা ঘুম ভেঙ্গে গেলে এখলাস মুয়াজ্জিন সেই তীব্র গন্ধটা পায় আর নিজের খাটের উপর কাকে যেন দেখতে পায়। গল্প এগিয়ে চলে। সাদা চোখ – সোহানা রহমান গল্পকথক তার বড় ভাইয়ের সাথে মফস্বলের এক সরকারী বাংলোতে এসে উঠে। নতুন ভবন তৈরি করতে আরো একমাসের দরকার ততদিন এই বাংলোতেই থাকতে হবে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত টিএনও অফিসার এবং তার বোনকে। তবে সমস্যা হচ্ছে, মূল শহর থেকে অনেক দূরে অবস্থিত এই বাংলোটা। আশেপাশে একদম নির্জন। শহরের বাইরের বিচ্ছিন্ন এক বাংলো। দুপুরে শুয়ে শুয়ে প্রকৃতি দেখতে দেখতে কখন চোখ লেগে গেছে গল্পকথকের তা টেরও পাইনি। ঘুম ভাঙে ভাইয়ের ফেরার আওয়াজে। চোখে মেলে তাকিয়ে দেখে ওটা ওর ভাইয়্যাই তবে চোখদুটো একদম সাদা। কোনো মণি সেখানে। গল্প এগিয়ে চলে। নিতল – রুমানা বৈশাখী শহরের জংলাময় এক নির্জন কুটিরে এক বুড়ি আর তার নাতির বসবাস। তাদের মধ্যে কোন রক্তের সম্পর্কে নেই। বুড়ির দুনিয়াতে কেউ নেই তাই এই ছেলেটাকে কুড়িয়ে পেয়ে নিজের ঘরে আশ্রয় দিয়েছিল। তবে ছেলেটা যে তলে তলে নেশা-টেশা করে সে খবর বুড়ির জানা ছিল না। কেননা, চোখে ছানি পড়া বুড়িটার সারাটাদিন কাটতো বাড়ি লাগোয়া একটা পুকুরের কাছে বসে থেকে। ছোট থাকতে বুড়িকে কেউ একজন ধাক্কা মেরে পানিতে ফেলে দিয়েছিল কিন্তু দুই ঘন্টা পানির তলে পার হবার পরও বুড়ি বেঁচে গিয়েছিল কিভাবে যেন। এই গল্পটা বলতে বলতেই নাতির দেয়া দুধটুকু খেয়ে শেষ করে বুড়ি। কিন্তু কে জানতো নাতি সেখানে প্রতিদিনের ঘুমের ওষুধকে একদিনে রূপান্তর করেছে? বুড়ি মারা যায়। নাতি বাড়িটাকে ডেভেলোপার্সের কাছে দিয়ে শহরের হোটেলের উঠার জন্য গোছগাছ শুরু করে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। বাইরে পানিতে চুপসে থাকা কারো পদধ্বনি শোনা যায়। ধীরে ধীরে ঘরটা পানিতে পূর্ণ হতে থাকে। গল্প এগিয়ে চলে। মনের কাছে কোনও সমস্যাই সমস্যা নয়। ইচ্ছা কখনো যুক্তি তর্ক মানে না। মানে না কোনও সমস্যা। – রাকিব হাসান লেখকদের অনেককেই চিনি না। চেনার মধ্যে আছে- মুহাম্মদ আলমগীর তৈমূর, তানজীম রহমান, রাজীব চৌধুরী, রুমানা বৈশাখী এবং প্রিন্স আশরাফ। হয়তো বাকিরা নিয়মিত রহস্য পত্রিকা কিংবা সেবা প্রকাশনী অথবা ফ্রিল্যান্সার রাইটার; তবে তাদের সম্পর্কে আমার জানা নেই। যাই হোক, যাদের কথা বললাম এরা মোটামুটি বেশ জনপ্রিয়। তাই উনাদের সম্পর্কে নতুন করে কিছুই বলার নেই। রাস্তাঘাটে খুব বড় উপকার যারা করে, সাধারণত তাদের সাথে এ জীবনে দেখা খুব কমই হয়। হলেও সেই উপকারের এক কণাও ফেরত দেয়া হয় না কখনও। বরং উল্টো এক ধরণের অস্বস্তি হয়। – মুহাম্মদ আলমগীর তৈমূর ১৫ জন লেখকের ১৬টা গল্প নিয়ে সাজানো হাতকাটা তান্ত্রিক গল্প সংকলনের সবকয়টা গল্পই যে আমার ভালো লেগেছে এমন নয়। কিছু গল্প পড়ার পরের অনুভূতি ছিল দুর্দান্ত আর কিছু গল্প শেষে কোন অনুভূতিই ছিল না। ভালো লাগার গল্পগুলোর মধ্যে মুহাম্মদ আলমগীর তৈমূরের লেখা হাতকাটা তান্ত্রিক আর বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন বেশ ভালো লেগেছে। আর তার কারণ হচ্ছে- বেশ তথ্যবহুল গল্প। গল্পের ভাজে ইতিহাস জানাটা আমার সবসময়ই ভালো লাগে। এরপরে তানজীম রহমানের পিপাসার্ত, রাজীব চৌধুরীর নিশিমিয়া, রুমানা বৈশাখীর নিতল এবং সোহানা রহমানের সাদা চোখ। উল্লেখিত গল্পগুলো খানিকটা ভিন্ন ধারার বলেই হয়তো ভালো লেগেছে। বাদ বাকি গল্পের মধ্যে কিছু গল্প মোটামুটি ধরণের হলেও কেবল লেখার জন্যই লেখা হয়েছে বলে মনে হয়। আর কিছু গল্প মুখে বর্ণিত গল্প-বিশেষ ধরনের হয়ে গেছে। সর্বোপরি, বইটা পড়ে ভিন্ন ধারার কিছু হরর গল্পের স্বাদ পাওয়া যাবে। আপনার পড়ে দেখা উচিত সবগুলোই। কেননা বলা তো যায় না আপনার ভালো লাগতেও পারে। বই: হাতকাটা তান্ত্রিক স্পম্পাদনা: তৌফির হাসান উর রাকিব প্রকাশক: সেবা প্রকাশনী পৃষ্ঠা: ২৭৯ মুদ্রিত মূল্য: ১০৮/- টাকা মাত্র বিস্তারিত রিভিউ - https://thewazed.wordpress.com/2020/11/07/hatkata-tantrik-book-review/
Was this review helpful to you?
or
faltu




