
User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
একটি অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপির হারানো শেষ অধ্যায় খুঁজতে গিয়ে একজন সম্পাদকের ব্যক্তিগত জীবন কাল্পনিক খু'নের রহস্যের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যায়, আর শুরু হয় এক অভাবনীয় বুদ্ধিবৃত্তিক খেলা। প্রথাগত গোয়েন্দা গল্পের ছক ভেঙে হরোউইটয এখানে গল্পের ভেতর গল্পের এমন এক সুনিপুণ বুনন তৈরি করেছেন, যা ক্ল্যাসিক গোল্ডেন এজ ঘরানার এক অনন্য ও আধুনিক মিশ্রণ। স্রেফ অপরাধী শনাক্ত করা নয়, বরং লেখকের মনস্তত্ত্ব আর প্রকাশনা জগতের অন্ধকার চোরাগলিগুলো বইটিতে এমন নির্মোহভাবে উঠে এসেছে যা সচরাচর থ্রিলার উপন্যাসে দেখা যায় না। শেষ মুহূর্তের অকল্পনীয় মোচড়টি মগজে এমন এক তীব্র ঝাঁকুনি দেবে যে, রহস্যসাহিত্যের পাঠক হিসেবে অবাক হতে বাধ্য!
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
কিছুক্ষণ আগে বইটা পড়া শেষ করলাম। অনুভূতিগুলো গুছিয়ে নিচ্ছি। মেইন গল্পের উপস্থাপনা ভালো লেগেছে। টুইস্টও ভালো লেগেছে। তবে মনের ভিতরে তবুও কিছু অপ্রাপ্তি রয়ে গেছে। বিশেষ করে অ্যালান কনওয়ে চরিত্রের বাল্যকালের কিছু কিছু বিষয়ে হিন্টস দেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেটা বিস্তারিত বলা হয়নি। অবশ্য আমি যেহেতু অনুবাদ পড়েছি, তাই সেটা মূল বইয়ে আছে কি না সেটাও আমি জানি না। যাহোক এই দিকটার জন্য মনটা পূর্ণ হচ্ছে না। আমি সাধারণত কিছু ভালো লাগলেই ৫ স্টার দেই। তবে উপন্যাসটা পড়ে সামান্য অতৃপ্তি অনুভব করছি। একইভাবে আন্দ্রিয়াসের বিবাদের বিষয়টাও বিশদ হলে ভালো হতো। রেটিং - ৪/৫
Was this review helpful to you?
or
========= কাহিনী সংক্ষেপ ========== সুয্যান রাইল্যান্ড। বইয়ের সম্পাদক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামের কাছেই অবস্থিত এক প্রকাশনী সংস্থা ক্লোভারলিফ বুকস এ। এখন পর্যন্ত ক্লোভারলিফ বুকস খুব বিখ্যাত হয়ে না উঠলেও কয়েকজন নামী-দামী লেখকের লেখা প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে। অ্যালান কনওয়ে তার মধ্যেই একজন রহস্য-গোয়েন্দা উপন্যাসিক; অ্যাটিকাস পান্ড তারই সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র। কিন্তু অ্যালান কনওয়ের লেখা ম্যাগপাই মার্ডার্স পড়তে গিয়ে সুয্যান দেখেন শেষ কয়েকটি চ্যাপ্টার নেই এবং খবর বেরিয়ে পড়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। অর্থাৎ এটি তার শেষ উপন্যাস। ক্লোভারলিফ বুকস এর স্বত্ত্বাধিকারী চার্লস হতাশ হয়ে বলে শেষ চ্যাপ্টার নাকি লেখক তাকে দেয়ই নি আর সুইসাইডের একটি চিঠিও তাকে লেখক পাঠিয়েছে। তবে ম্যাগপাই মর্ডার্স এর কাহিনী এবং বাস্তবে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার তথ্যানুসন্ধানে সুয্যানের অ্যালানের আত্মহত্যা নিয়ে মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে। একসময় আস্তে আস্তে রহস্যের জট ঘন হয় এবং তিক্ত সত্যের কারণে পরিচিত আর চিরচেনা মানুষটির খুনি রূপ উন্মোচিত হয়ে পড়ে তার সামনে। ========= পাঠ প্রতিক্রিয়া ========== মার্ডার্স সিরিজের প্রথম বই এটি। আমার পড়া এটিই প্রথম বই যার গল্পের ভিতরে রয়েছে আরেক গল্প! অর্থাৎ একবই পড়েই দুই বইয়ের স্বাদ পাওয়া যায়; পাওয়া গেছে দুটি রহস্যেরই সমাধান। আর এতেই বইটির কাহিনী বেশ জমে যায়। লেখক অত্যন্ত সূচারুভাবে প্রতিটি চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন দক্ষ লেখনীর মাধ্যমে। আর ডিটেইলিং এর কথা বলতে গেলে খুব সুন্দর একটি সমন্বয় ছিলো। কোথাও অতিরিক্ত বর্ণনা মনে হয়নি; যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকু। লন্ডনের গ্রাম বা কান্ট্রি-সাইড অঞ্চলের বর্ণনাগুলো আমার কাছে ভালোই লেগেছে। কখনো কখনো সেই বর্ণনার কারণে গল্পের গতি ধীর হলেও পড়তে খারাপ লাগেনি। তবে সকল চরিত্রের লম্বা বর্ণনা একবারে গল্পের শুরুতে না দিয়ে ধীরে ধীরে দিলে আরেকটু ভালো লাগতো। আর অনুবাদের কথা বলতে সায়েম সোলায়মানের এরকম ঝরঝরে অনুবাদ বইটিকে ভালোই উপভোগ্য করেছে। রহস্য-রোমঞ্চপ্রিয় পাঠকেরা বইটি পড়ে দারুণ মজা পাবেন একথা নিঃসন্দেহে বলাই যায়। প্রোডাকশনঃ কভার ডিজাইন ভালো লেগেছে। আর চিরকুটের প্রোডাকশন বরাবরই ভালো। দক্ষ সম্পাদনার কারণে বানান ভুল প্রায় নেই বললেই চলে। বইয়ের কোয়ালিটির ক্ষেত্রে চিরকুট প্রকাশনীর কাছ থেকে এখন পর্যন্ত আশাহত হইনি। আাশা করি তাদের এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৯/১০।
Was this review helpful to you?
or
Good Enough...
Was this review helpful to you?
or
স্লো বার্ন বাট খুব ই এঞ্জয়েবল একেবারে টপ লেভেলের বই নাহ বাট ভালো লাগার মত একটি বই।অনুবাদ ও ভালোই খারাপ নাহ বাট সায়েম ভাই এর অনুবাদ এরো একটু সাবলীল করা দরকার।
Was this review helpful to you?
or
#Book_Mortem 06 #ম্যাগপাই_মার্ডার্স "বইয়ের ভিতরে বই 😳"!! বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকেই জানতে পেরেছিলাম বিষয়টা। যে এটা একটা উপন্যাসের ভিতরের উপন্যাস!! যেখানে একই সাথে দুইটা আলাদা রহস্যের অবতারণা করা হয়েছে। তবে জিনিসটা এমন সুন্দর করে ২টা সম্পূর্ন আলাদা উপন্যাসের ফীল দিবে তা ভাবিনি। বিষয়টা বেশ মজার লেগেছে আমার কাছে৷ শুরুর দুই পৃষ্টার পরে এমনভাবে ১ম উপন্যাসটা শুরু হয়েছে যেনো মনে হচ্ছিলো আসলেই এটা একটা আলাদা গোয়েন্দা উপন্যাস সিরিজ। লেখকের বর্ণনা, আটিকাস পান্ড নামক ইমাজিনারি গোয়েন্দার ইমাজিনারি কিছু বইয়ের লিস্ট, বিভিন্ন প্রশংসা সূচক উক্তি দিয়ে বেশ গুছানো একটা বইয়ের শুরু করছি এমন একটা অনুভূতি দিচ্ছিলো বইটা। অথচ সেগুলা সবই স্রেফ আলাদা এই গল্পের জন্যই সৃষ্টি!! প্রথম রহস্য আবির্ভূত হয়ে ১৯৫৫ সালের পটভূমিতে। যেখানে স্যাক্সভি-অফ-এইভন নামক গ্রামে একটা অন্তেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু ওই ঘটনার সাথে সাথেই সেই ছিমছাম নির্বিরোধী গ্রামটা একের পর এক অনিষ্টকর ঘটনা ঘটতে থাকে। যে কারনে এক সময় গ্রামে আসতে বাধ্য হন, এই আলাদা বইয়ের আলাদা সৃষ্টির প্রখ্যাত গোয়েন্দা আটিকাস পান্ড। এরপর স্বাভাবিক রহস্য উপন্যাসের মতোই এগিয়েছি এই পর্বের বাকী অংশটুকু। পুরো গ্রামের বেশ কিছু চরিত্রের বর্ণনা দিয়ে শুরু হয়েছে বইয়ের প্রথম কয়েকটা চ্যাপ্টার। যেখানে এক পর্যায়ে সকল চরিত্রকেই সন্দেহজনক মনে হয়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু ক্লু পুরো বইতে ছড়িয়ে দিয়েছেন লেখক। যেনো পাঠক দ্বিধায় পড়ে যায়। এবং বলতেই হবে তাতে পুরোপুরি সফল তিনি। এরপর রহস্যের একদম শেষ চ্যাপ্টারে এসে হুট করেই শেষ হয়ে যায় গল্পের ভিতরের গল্পটা। যেখানে মূল রহস্যটার সমাধাণ হওয়ার কথা সেখানে এসেই হুট করে থেমে যায়!! আর সেটা থেমে যাওয়ার কারন হলো, আমাদের শুরুর ২ পৃষ্টা যার প্রসপেক্টস থেকে দেখানো হয়েছে তিনি হলেন সুজ্যান রাইল্যান্ড। যিনি মূলত উপরের উপন্যাসের পান্ডুলিপিটি পড়ছিলেন। এবং শেষে এসে তিনি আবিষ্কার করেন বইয়ের শেষ চ্যাপ্টারটি নেই পান্ডুলিপির সাথে!! এখান থেকে শুরু হয় বইয়ের দ্বিতীয় রহস্য কোথায় গেলো শেষ চ্যাপ্টারটি?? খুঁজতে গিয়ে আরো গোলকধাঁধা!! বইয়ের কাল্পনিক লেখক নিজেই মারা গিয়েছেন, আর তার সাথে গায়েব হয়ে গিয়েছে সেই শেষ চ্যাপ্টারটি!! অতএব এক রহস্যের শেষ প্রান্তে এনে থামিয়ে লেখক এন্টনি হরোউইটয আমাদেরকে এনে ফেলে দিলেন আরেক রহস্যের সামনে। এবার আবার এই রহস্য উদঘাটনে নেমে পড়তে হলো আমাদেরকে, ওইদিকে মাথায় কিলবিল করছে আগের রহস্য 🥴!! #পর্যালোচনাঃ বই পড়ার লম্বা গ্যাপের আগে আমি বেশ অনেক বিদেশী রহস্যোপন্যাস পড়েছি। যার মধ্যে আগাথা ক্রিস্টির কিছু বই আর শার্লক হোমস সমগ্রও ছিলো। কিন্তু সত্যি বলতে এমন অদ্ভুত রহস্যোপন্যাস আমি এর আগে কখনো পড়িনি। এক কথায় বলতে গেলে চমৎকার এক উপন্যাস। বইয়ের ভিতরের বইটা আমার কাছে একটু বেশীই ভালো লেগেছে। স্যাক্সবি-অফ-এইভন গ্রামের বর্ণনা, প্রতিটা চরিত্রের বিভিন্ন খুঁটিনাটির বর্ণনা এই সবগুলা জিনিস আমি প্রচুর আগ্রহ নিয়েই পড়েছি। একবারও মনে হয়নি খুব বেশী বাহুল্যতা করা হয়েছে৷ একই সাথে পাল্লা দিয়ে সমান গতিতে এগিয়েছে গল্পের কাহিনী। চরিত্রগুলোর বর্ণনা এতো সুন্দর আর নিঁখুত ছিলো যে আমার মনে হচ্ছিলো আমি তাদেরকে দেখতে পাচ্ছি চোখের সামনে!! আর রহস্যটাও বেশ জমজমাট মনে হয়েছে আমার কাছে। মোটকথা পারফেক্ট মার্ডার মিস্ট্রি। পরের অংশ মানে সুজ্যান এর রহস্যটা প্রথমটার মতো জমজমাট মনে না হলেও খারাপ ছিলো না। তবে আসলে কি আগের রহস্য মাথায় নিয়ে পরের রহস্যতে পুরোপুরি ডুব দিতে পারছিলাম না। বারবার ইচ্ছা করছিলো, ধুর!! লাস্টে গিয়ে আগে ১ম রহস্যের সমাধান পড়ে আসি 😬!! যদিও শেষ পর্যন্ত সেটা না করে স্বাভাবিকভাবেই পুরোটা শেষ করেছি। এবং শেষ করার পর যে শব্দটা মাথায় এসেছে তা হলো "পারফেক্ট"। আমি মাত্র ২ দিনেই বইটা পড়ে শেষ করেছি, এটা থেকেই বুঝতে পারবেন কতোটা আকৃষ্ট করে রেখেছিলো বইটা আমাকে। আর বইয়ের চরিত্রগুলো নিয়ে আলাদা কিছু আসলে বলার নেই। সবাইই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ভালো লাগার মতো কাউকে খুঁজে পাইনি আমি! #অসংগতিঃ বইয়ের ১৪তম পৃষ্টায় মেরি ব্ল্যাকিস্টনের মৃত্যুর তারিখ দেয়া ১৫ই জুলাই, কিন্তু যখন পুলিশ অফিসার চাব মেরির ডায়েরি পড়ছলেন তখন সেখানে ডায়েরির লাস্ট এন্ট্রি দেয়া ২৮শে জুলাই 🙄!! তারিখের এই সামান্য গড়মিল ছাড়া আর তেমন কোনো অসংগতি আমার চোখে পড়েনি। আরেকটা ব্যাপার যেটা একটু অড লেগেছে। আমি লেখকের এই বইয়ের আগেই দ্য ওয়ার্ড ইয মার্ডার পড়ে ফেলেছি। দুইটা গল্পের কিছু কিছু বিষয়ে প্রবল মিল লক্ষ্য করা যায়!! #প্রোডাকশন_অনুবাদঃ আচ্ছা চিরকুটের পৃষ্টা গুলা উল্টাতে এতো মায়া লাগে কেনো!! এতো মসৃন পৃষ্টা, অতি শক্ত কিন্তু নমনীয় বাইন্ডিংস, সাথে ফন্ট সাইজ এর সাথে পৃষ্টার কালার মিলে একটা পারফেক্ট প্রোডাকশন চিরকুটের। আমি তাদের আর কিছু হোক না হোক প্রোডাকশনের ফ্যান হয়ে গেছি। আর অনুবাদক সায়েম সোলায়মান ভাই নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। মূল লেখক কতোটা প্রাঞ্জল আর সাবলীল ছিলেন আমি জানি না। তবে সায়েম সোলায়মান ভাই আমাকে একবারও এটা বুঝতে দেন নি যে আমি কোনো অনুবাদ পড়তেছি। কোনো কাটখোট্টা শব্দের বালাই নেই, নেই তেমন কোনো বানান ভুল। শুধু ওই একটাই আক্ষেপ "জ" এর জায়গায় "য" লেখা। যদিও সেটা এই বইতে খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি করেনি। কারন ওই রকম শব্দ কমই ছিলো বইয়ে। তবুও অনুরোধ করি সায়েম ভাই আপনি কি পারেন না আমাদের জন্য এটা বাদ দিতে প্লিজ 😑😑!!
Was this review helpful to you?
or
grt service. timely delivered. nice packaging.
Was this review helpful to you?
or
Very good book.
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
চিরকুট প্রকাশনী
Was this review helpful to you?
or
Excellent service!
Was this review helpful to you?
or
📚বুক রিভিউ 📚 বইয়ের নাম :- ম্যাগপাই মার্ডার্স লেখক :- অ্যান্টনি হরোউইট্য্ অনুবাদ :- সায়েম সোলায়মান ধরন :- মার্ডার মিস্ট্রি প্রকাশনী :- চিরকুট প্রচ্ছদ :- সজল চৌধুরী পৃষ্ঠা সংখ্যা :- ৪৬৪ মুদ্রিত মূল্য :- ৫০০ টাকা 📝ভূমিকা :- বইটা হাতে পেয়েছিলাম আগস্টে। কিন্তু বড় আকারের হওয়ায় পড়া শুরু করতে ইচ্ছাকৃত ভাবেই কিছুটা দেরি করা। ব্যস্ততার কারণে শেষ করতেও কিছুটা বেশিই সময় নিয়ে ফেলছি। পরপর দুইবার রুম চেঞ্জ করার কারণে প্রায় পাঁচদিন সময় বেশি লেগে গেছে শেষ হতে। এই ঝামেলায় না পড়লে বইটা পড়ার মজা আরো বহুগুনে বেড়ে যেত বলেই আমার বিশ্বাস। 📖 কাহিনী সংক্ষেপ :- 'অ্যালান কনওয়ে' একজন বিখ্যাত রহস্য-সাহিত্যিক। তার লেখা বিখ্যাত গোয়েন্দা সিরিজ 'অ্যাটিকাস পান্ড' এর নবম উপন্যাস 'ম্যাগপাই মার্ডার্স' এর সম্পাদনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে "ক্লোভারলিফ বুকস" এর এডিটর 'সুয্যান রাইল্যান্ড'কে। পড়তে শুরু করলেন তিনি সেই পান্ডুলিপি,,,,, ∆ ম্যাগপাই মার্ডার্স ∆ ~~অ্যালান কনওয়ে~~ 'স্যাক্সবি-অন-এইভন' নামের এক ছোট গ্রামে হঠাৎ করেই এক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন 'মেরি ব্ল্যাকিস্টেন' নামের এক হাউজকিপার। তিনি কাজ করতেন পাই হলে 'স্যার ম্যাগনাস পাই' এর অধিনে। 'পাই হল' এর দোতলার সিড়ি দিয়ে পড়ে গিয়েই ঘাড় ভেঙে মারা যান মেরি ব্ল্যাকিস্টেন এবং সে সময় কেউ ছিল না পাই হলে,সব দরজা জানালা ছিল ভিতর থেকে লক করা। সেই গ্রামের ডাক্তার 'এমিলিয়া রেডউইং' সহ পুলিশের কর্মকর্তারা জানান সাধারণ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন মেরি। কিন্তু এর ঠিক দুই সপ্তাহ পরেই খুন হলেন 'স্যার ম্যাগনাস পাই'! একই বাড়িতে দুই সপ্তাহের মধ্যে দুটো অস্বাভাবিক মৃত্যু! এই মৃত্যুই টেনে নিয়ে আসলো সময়ের সেরা গোয়েন্দা 'অ্যাটিকাস পান্ড'কে। ধিরে ধিরে জমে উঠতে থাকল রহস্য। যাকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়,দেখা যায় তারই কোন না কোন ভাবে খুন করার মোটিভ আছে। এদিকে দুর্ঘটনা হিসেবে মনে করা মেরি ব্ল্যাকিস্টেন এর মৃত্যু নিয়েও দানা বেঁধে উঠতে শুরু করল সন্দেহ! অনুসন্ধান করতে করতে যখন রহস্যের প্রায় সমাধান করে ফেলেছেন 'অ্যাটিকাস পান্ড' তখনই মোড় নিল কাহিনী। অ্যালান কনওয়ে রচিত ম্যাগপাই মার্ডার্স এর শেষ অধ্যায় মিশিং!!! চরম বিরক্তি নিয়ে ফোন করলেন সুয্যান তার প্রকাশক 'চার্লস ক্লোভার'কে। আর তখনই জানতে পারলেন আত্মহত্যা করেছে 'অ্যালান কনওয়ে'। তার বাড়ির সাথে লাগানো টাওয়ার থেকে লাফিয়ে নিজের জীবনের ইতি টেনেছেন লেখক। কিন্তু শেষ অধ্যায় না লিখেই কেন আত্মহত্যা করলেন লেখক? নাকি ভুল করে শেষ অধ্যায় রেখেই পাঠিয়ে দিয়েছেন পান্ডুলিপি? এই পান্ডুলিপির শেষ অধ্যায় খুঁজতে শুরু করলেন সুয্যান। আর তা খুঁজতে গিয়েই জড়িয়ে পরলেন আরেক রহস্যের মাঝে। সত্যি কি আত্মহত্যা করেছে অ্যালান কনওয়ে? নাকি এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড? লেখকের পরিচিত কাছের মানুষদের সাথে কথা বলে, লেখকের এ্যাপয়েন্টমেন্ট লেখার ডায়রি দেখে কিন্তু মনে হচ্ছে না আত্মহত্যা করার কোন পরিকল্পনা ছিল তার। এদিকে তাকে অপছন্দ করত এবং তাকে হত্যা করার জোড়ালো মোটিভ আছে একাধিক মানুষের। তাহলে কি এটা সত্যি আত্মহত্যা নাকি হত্যা? কিন্তু এই হত্যার সাথে ম্যাগপাই মার্ডার্স এর পান্ডুলিপির শেষ অধ্যায়ের সম্পর্ক কী? এমন কী হতে পারে, শেষ অধ্যায়ের সাথেই জড়িয়ে আছে লেখকের হত্যার বা আত্মহত্যার রহস্য? এখন সুয্যানকে খুঁজে পেতেই হবে পান্ডুলিপির শেষ অধ্যায়। তাহলেই জানা যাবে কে খুন করলো স্যার ম্যাগনাস পাইকে? মেরি ব্ল্যাকিস্টেনের মৃত্যু কি শুধুই দুর্ঘটনা নাকি সেটাও হত্যা? এবং কেন আত্মহত্যা করলেন অ্যালান কনওয়ে? নাকি এটাও আসলে পরিকল্পিত খুন? প্রশ্ন অনেক,আর সব প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে "ম্যাগপাই মার্ডার্সে",,,,,,, ❤️পাঠ প্রতিক্রিয়া :- বইয়ের ভেতরে বই! রহস্যের ভেতরে রহস্য! যারা 'আগাথা ক্রিস্টি'র ভক্ত তাদের জন্য নিঃসন্দেহে অসাধারণ একটি বই 'অ্যান্টনি হরোউইট্য্' রচিত এই "ম্যাগপাই মার্ডার্স"। লেখক বইয়ের ভেতরের বইটি রচনা করেছেন অনেকটা আগাথা ক্রিস্টির স্টাইলে। শুরুতে এক এক করে চরিত্র গুলো আসতে থাকে এবং গল্পের প্লট ধীরে ধীরে এগিয়ে যায়। তাই প্রথম প্রায় ১০০ পৃষ্ঠা কিছুটা ধীরগতির। এই সময়ে ক্যারেক্টার ডেভলপ এবং কাহিনী বিন্যাসেই মনযোগ দিয়েছেন লেখক। এরপর থেকেই উপন্যাসের গতি বেড়ে গেছে। শুরু হয়েছে একে একে রহস্য সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পালা। এই উপন্যাসের বিশেষত্ব হচ্ছে, বইয়ের ভেতরের আরেক বই এবং তার রচনার স্টাইলের ভিন্নতা। পান্ডুলিপি যেখানে আগাথা স্টাইলে রচিত, এবং প্রধান চরিত্র 'অ্যাটিকাস পান্ড' এরকুল পোয়ারো এবং শার্লক হোমস এর মতোই অভিজ্ঞ গোয়েন্দা, সেখানে পরবর্তী লেখার স্টাইল চেঞ্জ হয়ে গেছে পুরোপুরি। পান্ডুলিপির বাইরের প্রধান চরিত্র এডিটর সুয্যান রাইল্যান্ড আমাদের মতোই সাধারণ দশজনের একজন, যিনি কোন অভিজ্ঞতা ছাড়াই তদন্ত করতে শুরু করে এবং পান্ডুলিপির শেষ অধ্যায় খুঁজতে গিয়ে জড়িয়ে পড়ে খুনের রহস্য সমাধানে। সেই সাথে পাঠকদেরো মাথা খাটানোর পুরো সুযোগ দেওয়া হয়েছে বইতে। তাই গোয়েন্দা পাঠক হিসেবে আমি অন্তত অনেক মজা পাইছি। খুনি কে? এই উত্তর খুঁজতে গিয়ে মাথা নষ্ট হইছে বারবার। অনেকগুলো চরিত্রের উপর সন্দেহের তীর চালাইছি, কিন্তু শেষে দেখা গেল বরাবরের মতোই আমি ভুল,,,,,,! অনুবাদক 'সায়েম সোলায়মান' এর অনুবাদ নিয়ে মনে হয় নতুন করে বলার কিছু নাই। পাঠক মাত্রই জানে উনি বর্তমান সময়ের সেরা অনুবাদকদের মধ্যে একজন। একদম সাবলীল অনুবাদ। তবে বইয়ের ২নং প্যারায় আছে, 'আজ রবিবার, সেদিন মেরি ব্ল্যাকিস্টেন এর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ছিল'। আবার ৩ নং প্যারায় আছে, 'সাধারণত প্রতি শনিবার সকালে খোলা থাকে সার্জারি,মানে ডাক্তারখানা। কিন্তু আজ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কারণে বন্ধ থাকবে।' এখানে একই দিনটাকে শনিবার এবং রবিবার বলা হইছে। এটা লেখকের মিস্টেক হলে তাকে বলার কোন উপায় নাই, কিন্তু অনুবাদক এর মিস্টেক হলে আশাকরি ঠিক করে নেওয়া হবে। এছাড়া ছোট ছোট টাইপিং মিস্টেক ছিল অনেক কয়টা, সেগুলোও ঠিক করে নেওয়া হবে আশাকরি। আরেকটা জায়গায় একটু খটকা লাগছে আমার। এতো দিন সব জায়গায় "সিরিজ (Series)" পড়ে আসছি এবং নিজেও লিখছি। কিন্তু এই বইতে সব জায়গায় বানানটা লেখা হইছে "সিরিয"। এটা ভুল কিনা আমার জানা নাই, ইংরেজি শব্দকে বাংলা অক্ষরে লেখাটা এমনিতেও ঝামেলা। কিন্তু এর আগে সব জায়গায় যেহেতু "সিরিজ" দেখে আসছি তাই উল্লেখ করলাম। চিরকুট এর প্রোডাকশন নিয়ে ছোট করে বলতে গেলে বলতে হয়, এই বই দিয়ে ইচ্ছা করলেই যে কাউকে পিটিয়ে আহত করা যাবে {দূর্বল কেউ হলে পটোলও তুলেতে পারে}, কিন্তু বইয়ের কিছুই হবে না এতোটাই শক্তপোক্ত বাইন্ডিং এবং হার্ডকাভার। সজল ভাইয়ের প্রচ্ছদ নিয়েও নতুন করে বলার কিছু নাই। অসাধারণ একটা প্রচ্ছদ। এককথায় বলতে গেলে উনার ভাষাতেই বলি, "প্রচ্ছদও বলে গল্প,হোক না সেটা অল্প"। সবকিছু মিলিয়ে এমন দারুন একটা বই উপহার দেওয়ার জন্য চিরকুট কে অনেক ধন্যবাদ। যারা মার্ডার মিস্ট্রি এবং গোয়েন্দা উপন্যাস পড়তে পছন্দ করেন এবং মাথা খাটানোর মতো বই খুঁজছেন তাদের জন্য অবশ্যই এই বই সাজেস্ট করবো আমি। সুস্থ থাকুন, বেশি বেশি বই পড়ুন❤️❤️ Stay Home, Be Safe❤️❤️ বই হোক সব সময়ের সঙ্গী ❤️❤️ Happy Reading ❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।এমন একটি গল্পের বই প্রথম পড়লাম, কাহিনীর ভিতর কাহিনী কি অসম্ভব সুন্দর করে সাজিয়ে লেখা, ধৈর্য্য ধরে পড়ুন মজা পাবেন শুধু এটুকুই বলবো
Was this review helpful to you?
or
ম্যাগপাই মার্ডার্স বই টা ভালো আনুবাত করেছেন তবে অনেক জায়গাতে ভুল আছে ,যেমনঃসব 'টা' গুলা 'তা' হয়ে গেছে। আনেক শদ্ব শ্রুতিমধুর হয় নাই যেমনঃ বচসা কথা টা অনেকেই বুঝবে না ।আর অনেক আছে এমন ভুল। যাই হোক বই টা পড়ে ভালো লেগেছে ।
Was this review helpful to you?
or
অনেক দিন পর একটি পারফেক্ট রহস্যপ্যনাস পড়লাম।তাও আবার একটির ভিতর দুইটি উপন্যাস।।।বইটি পড়ার পর এখনো মাঝে মাঝে এর কাহিনী টা মনে পড়ে।এতো সুন্দর একটি বই
Was this review helpful to you?
or
ম্যাগপাই মার্ডাস অ্যান্টনি হরোউইটয্ রূপান্তরঃ সায়েম সোলায়মান প্রকাশনীঃ চিরকুট প্রকাশনী মুদ্রিত মূল্যঃ ৪৮০ টাকা সার সংক্ষেপঃ যেখানে এক রহস্যের শেষের দিকে এগিয়ে যাবেন তখন আরেক রহস্য ডালপালা গজিয়ে উঠবে। "ম্যাগপাই মার্ডাস" পান্ডলিপির লেখকের মৃত্যকে স্রেফ আত্মহত্যা মনে হলেও সুয্যান রাইল্যান্ড মনে করেন তাকে খুন করা হয়েছে। স্যাক্সবি-অন-এইভন ইংল্যান্ডের সাফোক শহরের একটি গ্রাম। সেখানকার পাই হলের হাউসকিপার মিসেস মেরি ব্ল্যাকিস্টেন বেশ অদ্ভুত দূর্ঘটনায় মারা গেলেন। তবে এই দূর্ঘটানাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের মধ্যে বেশ অস্বস্তি দেখা দিলো। সবাই মনে করতে থাকে তার ছেলে রবার্টের তার মাকে খুন করে। রবার্টের প্রেমিকা এই অভিযোগকে ভুল প্রমাণ করতে সাহায্য চায় বিখ্যাত গোয়েন্দা অ্যাটিকাস পান্ডের কাছে। কিন্তু যেখানে খুন হয় নি সেখানে এক গোয়েন্দা কিছু করার এখতিয়ার থাকে না। তবে পান্ডকে স্যাক্সবি-অন-এইভন-এ যেতে হলো। কিছুদিনের ব্যবধানে শিরচ্ছেদ করে খুন করা হয় পাই হলের মালিক স্যার ম্যাগনাস পাই-কে। মেরি ব্ল্যাকিস্টেন কি দেখেছিলেন ভিকার রবিন অযবর্ন-এর টেবিলে, কেনেই বা তিনি গভীর রাতে সাইকেল নিয়ে বের হয়েছিলেন, ছেলে কি তার মাকে খুন করতে পারে, ম্যাগনাস পাই-এর বোন ক্ল্যারিসা পাই-এর এতো নির্লিপ্তাতা কেন, লেডি পাই-এর অভিসন্ধি কি, কে খুন করেছে ম্যাগনাস পাই কে...উত্তর খুজছেন গোয়েন্দা পান্ড এক মরণব্যাধি শরীরে নিয়ে। লেখক অ্যালান কনওয়ে-র উপন্যাসের শেষের কয়েক অধ্যায় খোয়া গেছে। তিনি কেন অসমাপ্ত পান্ডলিপি জমা দিলেন? নাকি কেউ সেটা চুরি করেছে? ক্লোভারলিফ বুকসের চিফ এডিটর সুয্যান রাইল্যান্ড পান্ডলিপির শেষ কয়েক অধ্যায় উদ্ধার করতে গিয়ে জড়িয়ে পরেন মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে। পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ নিখুত গতিশীল রহস্য উপন্যাস। "কে খুনি" গল্পগুলো কার না ভালো লাগে, বিশেষ করে যখন আগাথা ক্রিস্টির ধরণের একটা স্বাদ সেই সাথে বর্তমান সময়ের পটভূমিতে লেখা এক মলাটের ভিতর থাকে। এটা একাধিক স্তরের গল্প না বরং দুইটা আলাদা গল্প যা কিনা একটার ভিতর আরেকটা। এক গল্পের রহস্য সমাধান করা গেলে আরেকটার পারা যাবে। বেশ তৃপ্তিকর গল্প। আনাগ্রামের বিষয়টি ভালো লেগেছে। শেষটা চমকে দেবার মতো এবং মোটিভটাও। রূপান্তর অনেক ভালো। কোথাও থামতে হয় নি। কোথাও কোনো খুত খুজে পাই নি। আর যদি বাইন্ডিং, পেইজ আর প্রচ্ছদের কথায় আসি তাহলেও বলবো অসাধারণ কাজ দেখিয়েছে চিরকুট প্রকাশনী। এটা আটিকাস পান্ড সিরিজের শেষ বই। তবে অন্য বই পড়া না থাকলেও এটা পড়তে সমস্যা হবে না।
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসের ভিতর আরেকটা উপন্যাস পড়েছেন কখনো? অনেকটা ইনসেপশন মুভির স্বপ্নের ভিতর স্বপ্নের মতো। না, এখানে উপন্যাসের চারটা স্তর নেই, দুটোতেই সীমাবদ্ধ। আর একের ভিতর দুই উপন্যাসের মধ্যেই দারুণ রহস্যের উন্মোচন করা হয়েছে। একই সাথে কোনান ডয়েল ও আগাথা ক্রিস্টির ফ্লেভার পাওয়া যাবে অ্যান্টনি হরোউইটয রচিত 'ম্যাগপাই মার্ডার্স' বইয়ে। অনুবাদ করেছেন সায়েম সোলায়মান। রহস্য উপন্যাস লেখক অ্যালান কনওয়ে তার 'ম্যাগপাই মার্ডার্স' বইয়ের পাণ্ডুলিপি পড়তে দেন সম্পাদক সুয্যান রাইল্যান্ডকে। বই সম্পাদনা করার মাধ্যমে পাঠকদের সেই উপন্যাসের সাথে পরিচয় করান সুয্যান। সম্পাদনা করতে গিয়ে দেখেন শেষের একটা অধ্যায় নেই। সেই অধ্যায়ের খোঁজ করতে দেখেন উপন্যাসের কাহিনীর মতোই বাস্তব জীবনেও সেগুলো ঘটছে! এভাবে একসাথে দুটি উপন্যাসের গল্প সমান্তরালভাবে চলতে থাকে। 'কে খুনী' জাতীয় গল্প পাঠকদের কাছে একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপনের জন্য সাধুবাদ পেতেই পারেন লেখক। বর্তমানে অনুবাদ বইগুলো পড়ার একটা সমস্যা হলো, পড়লে বোঝাই যায় এটা অনুবাদ করা হয়েছে। তবে সায়েম সোলায়মান অভিজ্ঞ অনুবাদক, তার অনুবাদ সাবলীল ছিল। পড়ে মনে হয়নি যে অনুবাদ পড়ছি। বানান ভুল ছিল না বললেই চলে। থ্রিলার পাঠকদের জন্য মাস্ট রিড একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের শেষটা আসলেই চমকে যাওয়ার মত। বইটির আরো একটা জিনিস অবাক লেগেছে অ্যানাগ্রাম এবং বইটির ভিতরের গল্প এবং বইয়ের মূল গল্পের যোগসূত্র দেখে।অনুবাদ নিয়ে কোন সমস্যা আগেও ছিল না। তবে বেশ কিছু সহজ বানান ভুল চোখে পড়েছে, আশা তা পরবর্তীতে প্রকাশক ঠিক করে নিবে। বইয়ের প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, পেইজ নিয়ে অভিযোগ করার অবকাশ রাখে নি চিরকুট।
Was this review helpful to you?
or
আমার মতো রহস্য উপন্যাস পড়তে ভালোবাসেন? কিন্তু এমন যদি হয়, পড়তে পড়তে দেখলেন আপনার চেনা জগতটাই পালটে যাচ্ছে একটা জটিল রহস্য গল্পে? যেখানে মৃত্যু আছে, খুনী আছে আর সব সূত্র আছে হাতের বইটিতে! তেমনটাই ঘটেছে লন্ডনের বই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ক্লোভারলিফ বুকসের সম্পাদক সুয্যান রাইল্যান্ডের সাথে। প্রতিষ্ঠানটি এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাজারে দাঁড়িয়েই আছে বিখ্যাত রহস্য-উপন্যাস লেখক অ্যালান কনওয়ের অ্যাটিকাস পান্ড সিরিজের প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানের মালিক চার্লস ক্লোভার সুয্যানের হাতে তুলে দিয়েছেন কনওয়ের নবম বইয়ের পান্ডুলিপি, নাম 'ম্যাগপাই মার্ডার্স'। পড়তে শুরু করলো সুয্যান। স্যাক্সবি-অন-এইভন শান্ত, ছিমছাম, ছোট একটি গ্রাম। দ্বাদশ শতাব্দীর একটি গির্জা, টাটকা পাউরুটির সুঘ্রাণ ভাসানো বেকারি, পাব, অ্যান্টিক শপ, ধ্বংসপ্রাপ্ত স্যাক্সবি ক্যাসল, গ্রামের এককোনায় ওক গাছে ছাওয়া ছোট্ট বনভূমি ডিঙ্গেল ডেল আর তার প্রান্তে কয়েকশো বছরের পুরনো পাই হল - সবমিলিয়ে ততটাই সুন্দর যেমন ইংল্যান্ডের গ্রামগুলোকে কল্পনা করা যায়। গ্রামে প্রথম ধাক্কার ঢেউটা এলো, যখন পাই হলের হাউসকিপার মেরি ব্ল্যাকিস্টেন মারা গেলেন। হলের সিঁড়ি থেকে গড়িয়ে পড়ে ঘাড় মটকে গেছে তার। লাশ আবিষ্কার করেছে বাগানের মালি ব্রেন্ট, সে ফোন করলো গ্রামের ডাক্তার মিসেস এমিলিয়া রেডউইংকে। দুজনেই সাক্ষ্য দিলেন, হলের সব দরজা-জানালা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। সুতরাং মৃত্যুটা দুর্ঘটনা হওয়াই স্বাভাবিক, পুলিশও মেনে নিল। ভেজাল বাঁধালো গ্রামের লোক, ফিসফিসানি উঠলো মিসেস ব্ল্যাকিস্টেনের ছেলে রবার্ট আগের দিনই মা'কে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তাদের প্রকাশ্য ঝগড়াটা শুনেছিল যে অনেকেই। রবার্টের বাগদত্তা জয় স্যান্ডারলিং ছুটল লন্ডনে, বিখ্যাত গোয়েন্দা অ্যাটিকাস পান্ডের কাছে। কেসটা নিলেন না পান্ড, যেখানে পুলিশই নির্লিপ্ত সেখানে স্রেফ গুজবের পেছনে ছোটার মানে হয় না। কিন্তু পরেরদিন পত্রিকায় প্রকাশ পাওয়া খবরটা পেয়ে আর বসে থাকতে পারলেন না অ্যাটিকাস পান্ড। আরেকটা মৃত্য ঘটেছে পাই হল, এবার আর খুন কি না সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই, একেবারে তরবারির কোপে কল্লা নামিয়ে দেওয়া হয়েছে! পাওয়া গেছে একটি হুমকি চিঠিও। পুরনো বন্ধু ইন্সপেক্টর চাব রয়েছেন তদন্তে, তাই পান্ড হাজির হলেন স্যাক্সবি-অন-এইভনে। দুটো মৃত্যুর মধ্যে কি কোন যোগসাজশ রয়েছে? খুনি একজন না দুজন? রবার্ট তো বটেই, পাই হলের মালি ব্রেন্ট, গির্জার ভিকার রবিন অসবর্ন বা পাই হলের মালিকের বোন ক্ল্যারিসা পাই - অপরাধ করার মোটিভ রয়েছে অনেকেরই, আচরণটাও তাদের খটকা লাগার মতন। কিন্তু ঠিকই রহস্যের সমাধান করে ফেললেন অ্যাটিকাস পান্ড! এইটুকু পড়ে আপনার নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে কে খুনী? একই সমস্যায় পড়েছে সুয্যানও। ম্যাগপাই মার্ডার্সের শেষ অধ্যায়টি, যেখানে থাকার কথা সব সমাধান - সেটিই দেখে নেই পান্ডুলিপিতে। তবে কি অ্যালান কনওয়ে শেষ চ্যাপটারটা লেখেননি? নাকি প্রকাশকের কাছে দিতে ভুলে গেছেন? লেখকের সন্ধানে যাবার আগেই রেডিওতে জানতে পারলো সুয্যান - মারা গেছেন অ্যালান কনওয়ে, আত্মহত্যা করেছেন তিনি! পান্ডুলিপির শেষটা না পেলে তো চলছে না। সুয্যানের ক্রমশই মনে হতে লাগলো, এটি আত্মহত্যা নয় - খুন! অ্যালান কনওয়ে ছিলেন আগাথা ক্রিস্টির ভক্ত, ওনার গল্পেও তাই ব্যবহার করেছেন নার্সারি রাইম, যার প্রতিটি লাইনের শেষ শব্দ দিয়ে সাজিয়েছেন ম্যাগপাই মার্ডার্সের এক একটি অধ্যায়। সে হিসেবে হারানো অধ্যায়টির নাম হওয়ার কথা ছিল - 'এ সিক্রেট নেভার টু বি টোল্ড!' কী সেই সিক্রেট? সেই না বলা কথাকে যেন কনওয়ে প্রকাশ করতে না পারেন - সে জন্যই কি প্রাণ গেল তার! রহস্যের শেষ দেখেই ছাড়বে সুয্যান রাইল্যান্ড। দৃশ্যপট, চরিত্র - সবকিছু কেমন যেন মিলে যাচ্ছে কনওয়ের লেখা শেষ উপন্যাসটির সাথে, মনে হচ্ছে ম্যাগপাই মার্ডার্সের শেষ অধ্যায়টির সমাধান করতে পারলেই সুয্যান পেয়ে যাবে অ্যালান কনওয়ের মৃত্যুরহস্যের সমাধান। ব্রিটিশ রহস্য উপন্যাস লেখক অ্যান্টনি হরোউইটযের দারুণ জটিল একটি মার্ডার মিস্ট্রি 'ম্যাগপাই মার্ডার্স'। শব্দের খেলা বা অ্যানাগ্রাম, গল্পের ভেতর গল্প, আবার একটির সাথে আরেকটির প্যাঁচালো সম্পর্ক মিলিয়ে পাঠকদের মগজ গুলিয়ে দিতে পারেন লেখক। যারা আগাথা ক্রিস্টির ভক্ত, রাইম মেলানো আর বেশ ক'জন সন্দেহজনক চরিত্রের কর্মকাণ্ড থেকে একজনকে সনাক্ত করার সাথে পরিচিত, তারা ক্রিস্টির ধাঁচে গল্প বলা পড়ে বাড়তি মজা পাবেন। অ্যাটিকাস পান্ডকে মেলানো যায় এরকুল পোয়েরোর সাথে সহজেই। লেখক উপন্যাসে প্রতিটি দৃশ্যের খুব নিখুঁত এবং বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। ছবির মতো সাজানো গ্রাম বা কান্ট্রি-সাইড লন্ডনের বর্ণনাগুলো খুবই ভালো লাগার মতো। কখনো কখনো সেই বর্ণনার কারণে গল্পের গতি ধীর হয়ে এসেছিল। গল্প এগিয়েছে বিভিন্ন চরিত্রের লম্বা বয়ানে, সেসময় কিছুক্ষেত্রে মনে হচ্ছিল একই তথ্য বারবার পাচ্ছি। সেবা প্রকাশনীর অনুবাদ পড়েছি যারা, তাদের অনুবাদক সায়েম সোলায়মানের কলমের প্রতি নিশ্চিত আস্থা রয়েছে। সেই সুনাম অক্ষুণ্ন রেখেছেন লেখক এবারও, ঝরঝরে অনুবাদের মাধ্যমে। নস্টালজিক একটা অনুভূতি হচ্ছিল পড়ার সময়। তবে, অ্যালান কনওয়ে যেহেতু তার বইয়ের চ্যাপ্টারগুলোর নাম রেখেছিলেন একটি ইংরেজি ছড়া থেকে, তাই সেগুলোকে বাংলা না করে হুবুহু রাখলেই বেশ হতো। আরো কিছু শব্দের রূপান্তর চোখে লেগেছে, যেমন 'ফিশ অ্যান্ড চিপস' নামক খাদ্যটিকে বাংলা করে 'মাছ আর চিপস' লেখাটা কেমন জানি লাগলো। কনওয়ের বোনের স্মৃতিচারণেও একটু খটকা ছিল, সেটা লেখকের ভুল নাকি অনুবাদকের শব্দের ভাষান্তরের সমস্যা জানি না। বইয়ের বাঁধাই বা পাতার মান যথারীতি চিরকুট প্রকাশনীর মানদণ্ড ছুঁতে পেরেছে। প্রচ্ছদ করেছেন সজল চৌধুরী। সেটি কেবল দেখতে চমৎকারই নয়, বই অর্ধেক পড়ে প্রচ্ছদটির দিকে আবার তাকালাম - প্রতিটি খুঁটিনাটির অর্থ খুঁজে পেলাম!
Was this review helpful to you?
or
কাহিনী সংক্ষেপ: 'অ্যালান কনওয়ে' নামক এক গোয়েন্দা-লেখক তার সৃষ্ট এক বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্রের বই প্রকাশ করে আসছেন 'ক্লোভারলিফ বুকস' প্রকাশনী থেকে। আর, বিখ্যাত সেই গোয়েন্দা চরিত্রের নাম "অ্যাটিকাস পান্ড"। এই প্রকাশনী যা সফলতা পেয়েছে তা অ্যালান-কনওয়ের এই আটিকাস-পান্ড seriesএর জন্যই পেয়েছে। আসলে একটা ব্যাপার কি জানেন, সব গোয়েন্দা লেখকের কিন্তু একসময় তার সৃষ্ট গোয়েন্দা-চরিত্রের উপর বিরক্তি চলে আসে। যে চরিত্রের জন্য সে এত বিখ্যাত সেই চরিত্রকেই একসময় গিয়ে প্রচন্ড ঘৃণা করতে থাকে। যেমন: আগাথা ক্রিস্টি তার Hecule-Poirot চরিত্রের উপর একসময় বিরক্ত হয়ে পড়েন। ডয়েল সাহেবও কিন্তু Sherlock-Homesকে এক পর্যায়ে এসে মেরে ফেলেন(যদি লেখক তাকে মেরে না ফেলতেন তাহলে হয়ত আমরা আরো কিছু বই পেতাম)। ঠিক তেমনিভাবে এই বিখ্যাত/best-selling এক গোয়েন্দা চরিত্র 'পান্ড'কে রোগে ভুগিয়ে মেরে ফেলতে চাইছেন তার লেখক। So, এই চরিত্রের শেষ বইয়ের পান্ডুলিপি জমা দেন "ক্লোভারলিফ" প্রকাশনীকে। কিন্তু যে কর্মচারী এই পান্ডুলিপি যাচাই-বাচাই করেন তিনি লক্ষ্য করেন এই বইটি শেষ ই হয়নি!! সাত অধ্যায়ের এই পান্ডুলিপিতে এক অধ্যায় missing!! পরে ঐ প্রকাশনীর যে পরিচালক তার থেকে জানতে পারে এই লেখক suicide করেছেন এবং একটি শেষ চিঠি পাঠিয়েছেন এই পান্ডুলিপির সাথে!! হারিয়ে যাওয়া পান্ডুলিপি, আর লেখকের মৃত্যু থেকে এমন কিছু বের হয়ে আসবে যা আপনি কল্পনাই করতে পারেন না। লুখিয়ে থাকা কোন এক জটিল রহস্যের দেখা মিলবে এই বইটির দুইটি part. **প্রথম partএ লেখকের পান্ডুলিপি/বইটির বর্ণনা দেওয়া হয়, অর্থাৎ বইটিতে যে গোয়েন্দা-কাহিনী তা তোলে ধরা হয় ['স্যাক্রবি অন এইভন' নামের এক ছোট একটি গ্রামে এক খুনের রহস্য ভেদ করতে যান জনপ্রিয় গোয়েন্দা 'এটিকাস পান্ড'] **দ্বিতীয় partএ লেখকের মৃত্যু, পান্ডুলিপির হারিয়ে যাওয়া অধ্যায় এসব নিয়ে গল্প এগিয়ে যায় পাঠ প্রতিক্রিয়া: প্রথমত এই 430 পৃষ্টার বই তার উপর নাকি গোয়েন্দা গল্প, "আরে গোয়েন্দা গল্প এত বড় হয় নাকি" প্রথমে এই চিন্তাটা মাথায় আসে 😐 কিন্তু পড়া শেষ হলে আমার মত আপনিও বলবেন "গোয়েন্দা গল্পে এটা একটা masterpiece"... প্রথম part পড়ার সময় আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন 'হরোউইটয' সাহেব Agatha-Christi(the GOAT)-এর কত বড় ব্যক্ত। বেশ কিছু গোয়েন্দা বই পড়েছি কিন্তু এই levelএর গোয়েন্দা বই প্রথম পড়লাম। Agathaএর পর কোন গোয়েন্দা লেখকের বই এত ভাল লাগল।
Was this review helpful to you?
or
ইংল্যান্ডের সাফোকের এক ছোট্ট গ্রাম স্যাক্সবি-অন-এইভন। এই গ্রামের বিখ্যাত পাই হলের হাউজকিপার মিসেস মেরি ব্ল্যাকিস্টেন এক অদ্ভুত দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মারা গেলেন। সেই সময়ে পাই হলের মালিক স্যার ম্যাগনাস পাই ও তাঁর স্ত্রী লেডি ফ্রান্সিস পাই ফ্লান্সে ছুটি কাটাচ্ছিলেন। মিসেস ব্ল্যাকিস্টেনের এই অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে স্যাক্সবি-অন-এইভনের অধিবাসীরা কানাঘুষা শুরু করে দিলো। কারণ, কিছুদিন আগেই মৃত মহিলার ছেলে রবার্টের সাথে ভরা বাজারে তাঁর তুমুল কথা কাটাকাটি হয়েছিলো। অনেকেই সন্দেহের তীর তাক করতে লাগলো মিসেস ব্ল্যাকিস্টেনের ছেলে রবার্টের দিকে। রবার্টের প্রেমিকা জয় স্যান্ডারলিং তার প্রেমিকের দিকে তাক করা নানা লোকের অভিযোগ খণ্ডাতে সাহায্য চাইলো বিখ্যাত গোয়েন্দা অ্যাটিকাস পান্ডের কাছে। এদিকে জাতিতে জার্মান অ্যাটিকাস পান্ডেরও সময় প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। তাঁর শরীরে ধরা পড়েছে এক দুরারোধ্য ব্যাধি। শেষমেষ কেসটা তাঁকে নিতেই হলো। কিন্তু অন্য এক পরিস্থিতিতে। কিছুদিনের মাঝেই পাই হলে খুন হলেন এর মালিক স্যার ম্যাগনাস পাই। ধারালো একটা তরবারি দিয়ে খুনি একেবারে শিরোচ্ছেদ করে হত্যা করেছে তাঁকে। অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে পাই হলে ঘটে যাওয়া দুটো অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত করতে স্যাক্সবি-অন-এইভনে নিজের সহকারী জেমস ফ্রেজারকে নিয়ে পা রাখলেন গোয়েন্দা অ্যাটিকাস পান্ড। গ্রামের ভিকারেজের ভিকার রবিন অযবর্ন কেন গভীর রাতে সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছিলেন, মিসেস ব্ল্যাকিস্টেনের ছেলে রবার্টের কোন সুপ্ত রাগ আছে কি-না পাই হলের ওপর, ছোটবেলা থেকে পাই হলের বাগানে মালি হিসেবে কাজ করা ব্রেন্টের চাকরি কেন খেয়েছিলেন স্যার ম্যাগনাস, ডক্টর রেডউইংয়ের দেরাজ থেকে কে চুরি করলো বিষের বোতল, হোয়াইটহেড দম্পতির অস্বাভাবিক আচরণ ও স্যার ম্যাগনাসের বোন ক্ল্যারিসা পাইয়ের নির্লিপ্ততা সহ আরো অনেক ব্যাপারের মধ্যেই লুকিয়ে আছে পাই হলে ঘটে যাওয়া দুটো মৃত্যুর ঘটনার উত্তর। আর সেই উত্তরটা জানা হলোনা ক্লোভারলিফ বুকসের চিফ এডিটর সুয্যান রাইল্যান্ডের। কারণ, অবাক হয়ে সে আবিস্কার করলো অ্যালান কনওয়ের নবম 'অ্যাটিকাস পান্ড' কাহিনি'র পান্ডুলিপির শেষ কয়েকটা অধ্যায় বেমালুম গায়েব! এবার শুরু হলো আরেক রহস্য৷ গায়েব হয়ে যাওয়া 'ম্যাগপাই মার্ডার্স'-এর পান্ডুলিপির অধ্যায়গুলো খুঁজতে গিয়ে সুয্যান জানতে পারলো আত্মহত্যা করেছেন লেখক অ্যালান কনওয়ে। অবস্থাদৃষ্টে কেন যেন ব্যাপারটাকে ও আত্মহত্যা হিসেবে মেনে নিতে পারলোনা। বরং অ্যালান কনওয়েকে কেউ খুন করেছে বলে সন্দেহ হলো সুয্যানের। আর এই কারণেই একরকম স্বেচ্ছাতদন্ত শুরু করলো সে। আর এই অংশে এসে ওকে কথা বলতে হলো লেখক অ্যালান কনওয়ের বোন ক্লেয়ার জেনকিন্স, প্রকাশক চার্লস ক্লোভার, জেমস টেইলর, প্রাক্তন স্ত্রী মেলিসা সহ অনেকের সাথেই৷ চিফ এডিটর সুয্যান যেন এক নতুন অ্যালান কনওয়েকে আবিস্কার করতে লাগলো প্রতিনিয়ত; যার সাথে তার চেনা লেখক কনওয়ের অনেক অমিল। ব্যাপারটা এমন দাঁড়ালো যে, 'আত্মহত্যাকারী' লেখক অ্যালান কনওয়ের মৃত্যুরহস্যের সমাধান করতে পারলেই তাঁর সর্বশেষ উপন্যাস 'ম্যাগপাই মার্ডার্স'-এর ক্লাইম্যাক্স উন্মোচিত হবে। শেষমেষ অভিনব যে সত্যিটা সুয্যানের সামনে এসে দাঁড়ালো সেটা একেবারে হকচকিয়ে দিলো তাকে।
Was this review helpful to you?
or
বইটার কয়েক পাতা উল্টিয়েই ধাক্কার মতো খেয়েছিলাম। রাগ হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল আমাকে ঠকানো হয়েছে। প্রকাশনি আমাকে ঠকিয়েছে। কারণ সেখানে লেখা ছিল অ্যাটিকাস পান্ডের নবম রহস্যোপন্যাস! তার মানে এই দাড়াচ্ছে আগে আরো আটটি বই আছে। এটা ঠকানো হয়ে গেল না? খুজ নিয়ে জানলাম এটাই অনুবাদ হয়েছে। আর কোন বই নেই। তখন মনে হলো অনুবাদক এতোও বোকা হবে না। বুঝতে পারলাম ডাল মে কুচ ত কালা হে। কালা বস্তুটা কি সেটা দেখতেই পড়া শুরু করলাম। তখন বুঝলাম উপন্যাসের ভেতরের উপন্যাস এটা। অ্যাটিকাস পান্ড সিরিজের লেখকের নবম বই সম্পাদকের হাতে। তিনিই গল্পটা শুরু করছেন প্রথমে। আর তিনিই বইটার পুরোটাই তুলে ধরা হয়েছে আমাদের (পাঠকদের)। হুবহু ভাবে। যার ফলে আমি ধাক্কাটা খেয়েছি। গল্পটি নিয়ে কিছু বলার নাই। যারা কে খুনি ধরণের উপন্যাস পছন্দ করেন তাদের জন্য ভালো খাদ্য এটা। শার্লক আর পোয়ারো মতো যদি গল্প খুজে থাকেন তবে এটা আপনার জন্য। একই সাথে দুইটি গল্প চলেছে এখানে। একটা উপন্যাসের ভেতরের উপন্যাসে। যেখানে খুন হয়েছে দুটি সেটার তদন্ত করছে গোয়েন্দা অ্যাটিকাস পান্ডে। আর সেটার বাইরে খুন হয়ে গেছে লেখক নিজেই। কে খুনি খুজার চেষ্টা করছে সম্পাদক। কে খুনি? ধীর্ঘ চার দিন নিয়ে অবশেষে শেষ করতে পারলাম বইটি। এবং অনুভব করলাম কে খুনি ধরণের উপন্যাস আমার তেমন একটা পছন্দ না। বড় সাইজের গুলো তো একদমই না। আমি খুবই স্লো রিডার। আর এই ধরণের বই গুলো এক বসায় পড়ে ফেলতে পারলেই মজা বেশি। কিন্তু আমার পড়তে সময় লাগে তাই মজাটা নষ্ট হয়ে যায়। অনেকটা খোলা জায়গায় ফেলে রাখার পর সেই মুড়ি খাওয়ার মতো হয়ে যায়। মচমচে আর থাকে না। বার বার মনে হচ্ছিল বইটি যদি আরেকটু ছোট হতো তবে ভালো হতো। বেশ কিছু পাতা চোখ ভুলিয়ে গেছি। তবে এসব গল্পের শেষ ভালো হলে সব ভালো। কথাটা তো শুনা আছে সবার,'শেষ ভালো যার, সব ভালো তার।' শেষের দিকে যখন আস্থে আস্থে খুনি কে? কেন? কিভাবে করেছিল এগুলো বলছিল তখন আমার মুখে তৃপ্তির রস জমা হচ্ছিল আর আমি গিলছিলাম। সব শেষে মনে হয়েছে ৪দিন সার্থক। তবে সিনেমা হলে ২ ঘন্টায় শেষ করতে পারতাম! আরেকটা তবে বলি? তবে আমি যেমনটা আশা করেছিলাম তেমনটা হয়নি। মানে আরো ভালো কিছু আশা করেছিলাম। অনুবাদ ভালো। চিরকুট প্রকাশনীর বই প্রথম কিনলাম এবং পড়লাম। বই এর মান ভালো। পাতা গুলোতে হাত ভুলিয়ে দিতে মন চায় সারাদিন। গন্ধটাও পছন্দ হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
☆☆☆☆☆
Was this review helpful to you?
or
চিরকুটের বইয়ের কোয়ালিটি নিয়ে নতুন করে কিছু বলবার নেই। নতুন প্রকাশনী হয়েও এই দামে যে তারা এত সুন্দর কোয়ালিটির বই দিচ্ছে সেজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। যেমন বইয়ের বাইন্ডিং তেমনি কাগজের মান এবং তেমনি এর প্রচ্ছদ। দৃষ্টিনন্দন এই প্রচ্ছদের জন্য সজল চৌধুরীকেও ধন্যবাদ দিতে হয়। সবথেকে শান্তির ব্যাপার হলো বইয়ে ভুল বানান একদম নেই। তবে কয়েকটা টাইপিং মিস্টেক রয়েছে। প্রত্যেক পৃষ্ঠায়, পৃষ্ঠা নাম্বারের সাথে বইয়ের যে নাম দেয়া হয়েছে সেখানে টাইপিং মিস্টেক রয়েছে। আশা করব শীঘ্রই পরবর্তী মুদ্রণে এগুলো ঠিক হয়ে যাবে। প্রিয় পাঠক, এই বইটা পড়লে আপনারা একই সাথে দুটা বই পড়তে পারবেন। ম্যাগপাই মার্ডার্স এবং ম্যাগপাই মার্ডার্স। একটা অ্যালান কনওয়ের লেখা হলেও লিখেছেন আদতে অ্যান্থনি হরোউইটয্ই। সুতরাং এক টিকেটে দুই ছবি দেখতে থুরি এক বইয়ের টাকা দিয়েই দুই পড়তে চাইলে শীঘ্রই চলে আসুন স্যাক্সবি-অন-এইভন এ।
Was this review helpful to you?
or
চিরকুট প্রকাশনী.... খুবই অল্প সময়ে আমাদের মন জয় করে নিয়েছে। বাধাই,পেইজ সর্বোপরি বইয়ের কুয়ালিটি। এত ভাল একটা বই এত সুন্দরভাবে বাহ্যিক এবং ভেতরের কুয়ালিটি ঠিক রেখে আমাদের উপহার দেয়ার জন্য চিরকুট প্রকাশনীকে ধন্যবাদ। সায়েম সোলায়মান ভাইকেও ধন্যবাদ এত সুন্দর অনুবাদের জন্য।
Was this review helpful to you?
or
highly recommended for the people who love thrill
Was this review helpful to you?
or
'ম্যাগপাই মার্ডার্স'-এর মধ্যে ডুবে গিয়েও আমাকে কোন কোন সময় অস্থিরতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। যেখানে টুইস্ট একটা না, বরং দুটো - সেখানে এমন অস্থিরতায় পেয়ে বসা অবশ্য স্বাভাবিক। এতো কিছুর পরেও বইটা শেষ করতে আমাকে বেশ লম্বা একটা সময় নিতে হয়েছে। ব্যক্তিগত ও পেশাগত নানা কারণই এর জন্য দায়ী। তবে এন্ডিংটা আসলেই চমৎকার ছিলো। অ্যান্টনি হরোউইটয-কে মাস্টার স্টোরিটেলার বলতে আমার কোন আপত্তিই নেই।
Was this review helpful to you?
or
রহস্যপ্রেমীরা কোনো একটা রহস্যের বইয়ে ডুবে গেলে সেটা না শেষ করা পর্যন্ত দুনিয়ার সবকিছু ভুলে যায়। টানটান উত্তেজনার শেষ মুহূর্তে যদি দেখা যায় পৃষ্ঠা গায়েব তাহলে কেমন লাগবে? অস্থিরতা ভর করাটা বিচিত্র না। এমনটাই ঘটেছে ক্লোভারলিফ বুকসের সম্পাদক সুয্যান রাইল্যান্ডের সাথে। দীর্ঘদিন যাবত লেখক অ্যালান কনওয়ের বই সম্পাদনা করে সে নিজেও তার সৃষ্ট চরিত্রের অনুরাগী হয়ে গেছে। কিন্তু এই পৃষ্ঠাগুলো ফিরে পাবারও কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ মারা গেছেন কনওয়ে। সোজাসুজি বললে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু কেন? এই অসমাপ্ত পান্ডুলিপির ভবিষ্যত কি? অ্যালান কনওয়ে একজন সফল রহস্য লেখক। তার অ্যাটিকাস পান্ড সিরিজের নবম বই এটা। ক্লোভারলিফসের সাফল্যের পেছনেও তার অবদান কম নয়। নিজেও পৌঁছেছিলেন খ্যাতির শীর্ষে। কিন্তু শেষ বইটা অসমাপ্ত রয়ে যাওয়ায় অ্যাটিকাস পান্ডের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে গেল। কি ছিল সেই উপন্যাসে? একবার দেখে আসা যাক। ঘটনার শুরু একটা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান দিয়ে। স্থান স্যাক্সবি-অন-এইভন। দূর্ঘটনা কবলিত হয়ে মারা গেছেন পাই হলের হাউসকিপার মেরি ব্ল্যাকিস্টেন। তার মৃত্যুতে সত্যিকারের শোক করার মত আদৌ কেউ নাই। আর পরচর্চার কারণে কারো সাথে খুব গভীর সম্পর্ক ছিল না। তবে অনেকের সাথে ভালো যোগাযোগ ছিল। লোকের হাঁড়ির খবর বের করতে তার জুড়ি ছিল না। নিজের ছেলে রবার্টের সাথেও সম্পর্ক সহজ ছিল না। তার মৃত্যুর দিন কয়েক আগেই বাকবিতণ্ডাও হয় তাদের মধ্যে। আর রাগের মাথায় মায়ের মৃত্যু কামনা করে রবার্ট। তাই সন্দেহের তীর এখন রবার্টের দিকে। যদিও তদন্তে খুনের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। রবার্টের বাগদত্তা জয় স্যান্ডারলিং এই অপবাদ থেকে মুক্তি চাইছিল। তাই সে শরণাপন্ন হল গোয়েন্দা অ্যাটিকাস পান্ডের। ওদিকে পান্ডের জীবনেও ঘটে গেছে বিপর্যয়। সে চাইছিল সবকিছু গুছিয়ে আনতে। হাতে সময় কম। আর যেখানে পুলিশের তদন্তে খুন নয় এটা প্রমাণ হয়ে গেছে সেখানে তার কিই বা করার থাকতে পারে! ব্যর্থ মনে ফিরে গেল জয়। কিন্তু এরপরই এমন ঘটনা ঘটল যাতে নড়েচড়ে বসতে হল পান্ডের। আরেকটা মৃত্যু ঘটেছে পাই হলে। আর এবারেরটা স্পষ্ট খুন। শিকার মালিক ম্যাগনাস পাই। ধড় থেকে মুন্ড আলাদা করা। সিদ্ধান্ত বদলানেন পান্ড। রওনা হলেন সাক্সবি-অন-এইভনে। সাথে চলল সহকারী জেমস ফ্রেযার। গ্রামটা মনোরম। পাশে জঙ্গল ডিঙ্গেল-ডেল। আর সেটা পেরিয়ে পাই হল। গ্রামের চরিত্ররাও বেশ ইন্টারেস্টিং। যেমন- ভিকার রবিন অযবর্ন আর তার স্ত্রীর সাথে কথা বলে বোঝা গেল ম্যাগনাস পাইয়ের উপর তারা তেমন সন্তুষ্ট ছিলেন না। কারণ ম্যাগনাস ডিঙ্গেল-ডেল ডেভেলপারের কাছে দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। অথচ বনটা ছিল তাদের সাদামাটা জীবনের একমাত্র প্রশান্তির কারণ। পাই হলের মালি ব্রেন্টকেও নাকি ছাঁটাই করার কথা ছিল। কিন্তু কেন? কি এমন করেছিল ব্রেন্ট? গ্রামের হোয়াইটহেড দম্পতিও বেশ রহস্যময়। এই অজপাঁড়াগায়ে এ্যান্টিকের দোকান খুলে বসেছে কি মনে করে? ওদিকে ম্যাগনাসের নিজের বোন ক্ল্যারিসা পাইয়ের এই বিশাল সাম্রাজ্যে কোনো অধিকার নেই। গাঁয়ে আছে সে আর দশটা মানুষের মত। ডক্টর রেডউইংয়ের চেম্বার থেকে খোয়া গেছে বিষের বোতল। লেডি পাই জড়িয়ে পড়েছে অন্য কারো সাথে। রবার্টের উপর বেশ প্রভাব ছিল ম্যাগনাস পাইয়ের। যদিও তার সাথে সম্পর্ক ভালোই ছিল। দ্বন্দ্ব ছিল মায়ের সাথে। আবার মেরি ব্ল্যাকিস্টেনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় কিছুক্ষণের জন্য আবির্ভাব ঘটেছিল এক রহস্যময় হ্যাটপরা লোকের। এদের মধ্যে কে খুন করতে পারে স্যার ম্যাগনাসকে? আর মেরি কি আসলেই দূর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন নাকি ওটাও খুন ছিল? তাই যদি হয় তবে এই দু'টো খুন কি আলাদা লোকের কাজ না একজনেরই? মেরি ব্ল্যাকিস্টেন সম্পর্কে খোঁজখবর করতে গিয়ে বেশকিছু চমকপ্রদ তথ্য পেলেন পান্ড। আগে তার পুরো পরিবার থাকত পাই হল লাগোয়া লজ হাউসে। একটা দূর্ঘটনায় সব এলোমেলো হয়ে যায়। ছোট ছেলে টম মারা যায় লেকের পানিতে ডুবে। ঘটনাটা ঘটে যায় খেলার ছলে ধাঁধার সমাধান করতে গিয়ে। সেই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় স্বামীর সাথে সম্পর্ক। রবার্টকে একরকম আলাদা করে রাখে বাইরের পৃথিবী থেকে। পান্ডের মনে হচ্ছিল সব ঘটনাগুলো যেন তাকে বারবার বিশেষ কোনো কিছুর প্রতি আকর্ষণ করছে। কিন্তু সেটা কি? খুঁজে বের করেন মেরির স্বামী ম্যাথিউ ব্ল্যাকিস্টেনকে। অবশেষে আস্তে আস্তে জোড়া লাগতে শুরু করে সবকিছু। রহস্যের সমাধানে পৌঁছে গেছেন পান্ড। এরপরের অধ্যায়টাই গায়েব! কোনো মানে হয়? সুয্যান ঠিক করল খুঁজে বের করবে সেই হারানো পাতাগুলো। নিশ্চয়ই আছে ওগুলো কোথাও না কোথাও। রওনা হয়ে গেল সে অ্যালানের বাড়িতে। আর এরপরই সে টের পেল অস্বাভাবিকতা। সবকিছু দে যা ভ্যু -র মত লাগছে। অ্যালানের বাড়ি, আশ-পাশ প্রতিবেশি সব যেন তার চেনা। অথচ কাউকেই সে চেনে না। ধীরে ধীরে বুঝতে পারল উপন্যাসটাকেই সে চোখের সামনে দেখছে। শুধু চরিত্রদের নামগুলো বদলে গেছে। উপন্যাসের মত এখানেও ধাঁধার খেলা। অ্যানাগ্রাম আর হেঁয়ালির ছড়াছড়ি। বাচ্চাদের ছড়া দিয়ে অধ্যায়ের নামকরণ, উপন্যাসের চরিত্রের ধাঁধার সমাধান সবকিছু যেন অ্যালানকে একটু একটু করে তুলে ধরছিল। আগাথা ক্রিস্টি ভক্ত অ্যালান নিজেও কম হেঁয়ালি জানত না। আশেপাশের চরিত্রগুলোকে উল্টে-পাল্টে বসিয়ে দিত উপন্যাসে। পান্ডের সহকারীর চরিত্রটাও সে তৈরি করেছিল বয়ফ্রেন্ড জেমসের আদলে। একই ভাবে রবসন হয়ে গেছে অযবর্ন, জন হোয়াইট থেকে জনি হোয়ইটহেড, ক্লেয়ার থেকে ক্ল্যারিসা এমনকি গাঁয়ের নামটাতেও অস্বাভাবিক মিল। তার ছেলেবেলা, বন্ধুবান্ধব আর ঘটনাপ্রবাহও প্রভাবিত করেছে উপন্যাসকে। এখন আর অ্যালানের মৃত্যুটাকে আত্মহত্যা হিসেবে মেনে নেয়া যাচ্ছে না। বরং খুন হিসেবেই ধীরে ধীরে প্রকট হয়ে ধরা দিচ্ছে। অ্যালানের সঙ্গী জেমসের কাছ থেকে ইন্টারেস্টিং কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। অ্যালান ঠিক করেছিল সে পান্ডকে নিয়ে ঠিক নয়টা বই লিখবে। জনপ্রিয় এই চরিত্রের প্রতি সে নিজেই বিরক্ত ছিল। কি কারণ সেটার? এই বিশেষ সংখ্যাও কি উদ্দেশ্য প্রণোদিত? সেই সাথে যোগ হয়েছে আরো অনেক টুকরো ঘটনা। এই অস্বাভাবিক সম্পর্কে জড়ানোর আগে একটা সুন্দর পরিবার ছিল তার। স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ির কারণ ছিল জেমস। এমনটা কি হতে পারে খুনের কারণ? আবার প্রতিবেশির সাথেও তার ভালোরকম ঝামেলা চলছিল। তার বই থেকে টিভি সিরিজ হওয়ার কথা ছিল। সেটা নিয়েও প্রোডিউসারের সাথে বচসা হয়েছে। বোনের সাথে আর্থিক লেনদেনজনিত সমস্যা, উপন্যাসের নামবদল নিয়ে "ক্লোভারলিফ বুকস"-এর চার্লসের সাথে ঝগড়া, প্লট চুরি নানা জটিলতায় জড়িয়ে ছিল সে। মোটিভ থাকতে পারে অনেকেরই। সুয্যানের বারবার মনে হচ্ছে হারানো সেই অধ্যায়ে লুকিয়ে আছে সব জবাব। রাইমের শেষ লাইন- "আ সিক্রেট নেভার টু বি টোল্ড" নিশ্চয়ই কোনো নিগূঢ় তথ্য নিয়ে অপেক্ষা করছে। আদৌ কি সমাধান হবে এ রহস্যের? ম্যাগপাই মার্ডার্সের অনুবাদ আসছে এ কথা শোনার পর থেকেই উদগ্রীব ছিলাম পড়ার জন্য। প্রিভিউ, আলোচনা আর প্রকাশিত হবার পর পাঠকের উচ্ছ্বাস সেটাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। যাই হোক অবশেষে শেষ করতে পারলাম বহুল আলোচিত ম্যাগপাই মার্ডার্স। দু'টো অংশ বইয়ের। অ্যান্টোনি হরোউইটযের বইয়ের ভিতর হাজির হয়েছে আরেকজন রহস্যলেখক। অ্যালান কনওয়ে। মজার ব্যাপার হচ্ছে দু'জনের বইয়ের নামই ম্যাগপাই মার্ডার্স। বইয়ের ভেতর বই। বই খুলেই সুয্যানের বক্তব্য। আর এরপর শুরু অ্যালানের রহস্য উপন্যাসের। অ্যাটিকাস পান্ড নিয়ে রচিত বইয়ের তালিকা, বিভিন্নজনের প্রশংসা এসব দেখে কিছু সময়ের জন্য কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম। সত্যি ভেবে নিয়েছিলাম। আবার উল্টেপাল্টে দেখেছি লেখকের নাম। মেরি ব্ল্যাকিস্টেনের মৃত্যু দিয়ে সূত্রপাত হওয়া ঘটনা, বিভিন্ন চরিত্রের বর্ণনা, পরের ঘটনাপ্রবাহ সবকিছু প্রথমদিকে ধীরগতিতে চলার কারণে কেন যেন ঠিক আগ্রহটা জমছিল না। তবে ম্যাগনাস পাইয়ের মৃত্যুর পর অ্যাটিকাস পান্ডের আগমন ও অতীত উন্মোচন হওয়া শুরু হতেই আর থেমে থাকতে হয়নি। বিচিত্র সব চরিত্র,সাক্সবি-অন-এইভন, ডিঙ্গেল ডেল, রহস্য, ধাঁধা, খুন সবকিছু ধীরে ধীরে আলাদা করে ফেলছিল বাইরের পৃথিবী থেকে। যদিও পান্ডের কর্মপদ্ধতি আর নির্লিপ্ততা ভালো লাগে নি। তবে শেষদিকের চমক আগের সেই খেদ ঘুচিয়ে দিয়েছে। আমি যে বইয়ের ভেতর বই পড়ছি সে কথা ভুলেই গেছিলাম। হুঁশ হয়েছে ছয় নম্বর চ্যাপ্টারে এসে। ম্যাগনাস পাইয়ের খুনের রহস্য জানার জন্য তর সইছিল না। পেছনে খুঁজে সেই হারানো অধ্যায়টা তখনই পড়ে ফেলার ইচ্ছেটা বহু কষ্টে দমন করেছি। এরপর কেন যেন সুয্যানের উপর রাগ হচ্ছিল। নতুন করে অ্যালানের রহস্য শুরু হওয়ার পর বারবার মনে হচ্ছিল কখন এই রহস্য সমাধান হবে আর আমি শেষ অধ্যায়ের খোঁজ পাব? আদৌ কি পাওয়া যাবে? মজা শুরু হল তখনই যখন সুয্যানের আশেপাশে চরিত্র আর অ্যালানের পরিচিতজনদের সাথে পরিচয়ের সুযোগ হল। যেন ম্যাগপাইয়ের চরিত্রদের লাইভ টেলিকাস্ট। শুধু নামগুলো অদল-বদল। অ্যালান তাহলে চরিত্র তৈরি করত তার পরিচিত পৃথিবী থেকে। আর তাদের প্রতি গোপন বিদ্বেষও উঠে আসত বইয়ের পাতায়। খ্যাতির শীর্ষে এসেও সুখী হতে পারেনি। পাঠকনন্দিত চরিত্রের নামকরণেও প্রকাশ পেয়েছে ঘৃণা। কিসের এত ক্ষোভ ছিল তার? আর কার উপরই বা ছিল? ঘটনার ঘোরপ্যাঁচে দিশেহারা হবার অবস্থা। অ্যালানের বই না অ্যান্টনির কারটা বেশি ভালো লেগেছে সেটা বলতে বললে নির্দ্বিধায় আমি অ্যালানের কথাই বলব। যদিও বা বইয়ের ভেতরের এই বইয়ের রূপকার অ্যান্টনি হরোউইটয নিজেই। ভেতরের বইটা পড়ার পরই ম্যাগপাই মার্ডার্সকে ভালোবেসে ফেলেছি। লেখকের আরো বই পড়ার ইচ্ছে রাখি। অনুবাদ সুখপাঠ্য। তবে কিছু শব্দ খুবই উইয়ার্ড লেগেছে। শব্দ নির্বাচনে আরেকটু সতর্ক হলে ভালো হত। এছাড়া সম্বোধনে গোলামাল, টুকিটাকি অসামঞ্জস্যতা ছিল। আশা করি সামনে এগুলো থাকবে না।
Was this review helpful to you?
or
আমার মতো রহস্য উপন্যাস পড়তে ভালোবাসেন? কিন্তু এমন যদি হয়, পড়তে পড়তে দেখলেন আপনার চেনা জগতটাই পালটে যাচ্ছে একটা জটিল রহস্য গল্পে? যেখানে মৃত্যু আছে, খুনী আছে আর সব সূত্র আছে হাতের বইটিতে! তেমনটাই ঘটেছে লন্ডনের বই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ক্লোভারলিফ বুকসের সম্পাদক সুয্যান রাইল্যান্ডের সাথে। প্রতিষ্ঠানটি এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাজারে দাঁড়িয়েই আছে বিখ্যাত রহস্য-উপন্যাস লেখক অ্যালান কনওয়ের অ্যাটিকাস পান্ড সিরিজের প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানের মালিক চার্লস ক্লোভার সুয্যানের হাতে তুলে দিয়েছেন কনওয়ের নবম বইয়ের পান্ডুলিপি, নাম 'ম্যাগপাই মার্ডার্স'। পড়তে শুরু করলো সুয্যান। স্যাক্সবি-অন-এইভন শান্ত, ছিমছাম, ছোট একটি গ্রাম। দ্বাদশ শতাব্দীর একটি গির্জা, টাটকা পাউরুটির সুঘ্রাণ ভাসানো বেকারি, পাব, অ্যান্টিক শপ, ধ্বংসপ্রাপ্ত স্যাক্সবি ক্যাসল, গ্রামের এককোনায় ওক গাছে ছাওয়া ছোট্ট বনভূমি ডিঙ্গেল ডেল আর তার প্রান্তে কয়েকশো বছরের পুরনো পাই হল - সবমিলিয়ে ততটাই সুন্দর যেমন ইংল্যান্ডের গ্রামগুলোকে কল্পনা করা যায়। গ্রামে প্রথম ধাক্কার ঢেউটা এলো, যখন পাই হলের হাউসকিপার মেরি ব্ল্যাকিস্টেন মারা গেলেন। হলের সিঁড়ি থেকে গড়িয়ে পড়ে ঘাড় মটকে গেছে তার। লাশ আবিষ্কার করেছে বাগানের মালি ব্রেন্ট, সে ফোন করলো গ্রামের ডাক্তার মিসেস এমিলিয়া রেডউইংকে। দুজনেই সাক্ষ্য দিলেন, হলের সব দরজা-জানালা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। সুতরাং মৃত্যুটা দুর্ঘটনা হওয়াই স্বাভাবিক, পুলিশও মেনে নিল। ভেজাল বাঁধালো গ্রামের লোক, ফিসফিসানি উঠলো মিসেস ব্ল্যাকিস্টেনের ছেলে রবার্ট আগের দিনই মা'কে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তাদের প্রকাশ্য ঝগড়াটা শুনেছিল যে অনেকেই। রবার্টের বাগদত্তা জয় স্যান্ডারলিং ছুটল লন্ডনে, বিখ্যাত গোয়েন্দা অ্যাটিকাস পান্ডের কাছে। কেসটা নিলেন না পান্ড, যেখানে পুলিশই নির্লিপ্ত সেখানে স্রেফ গুজবের পেছনে ছোটার মানে হয় না। কিন্তু পরেরদিন পত্রিকায় প্রকাশ পাওয়া খবরটা পেয়ে আর বসে থাকতে পারলেন না অ্যাটিকাস পান্ড। আরেকটা মৃত্য ঘটেছে পাই হল, এবার আর খুন কি না সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই, একেবারে তরবারির কোপে কল্লা নামিয়ে দেওয়া হয়েছে! পাওয়া গেছে একটি হুমকি চিঠিও। পুরনো বন্ধু ইন্সপেক্টর চাব রয়েছেন তদন্তে, তাই পান্ড হাজির হলেন স্যাক্সবি-অন-এইভনে। দুটো মৃত্যুর মধ্যে কি কোন যোগসাজশ রয়েছে? খুনি একজন না দুজন? রবার্ট তো বটেই, পাই হলের মালি ব্রেন্ট, গির্জার ভিকার রবিন অসবর্ন বা পাই হলের মালিকের বোন ক্ল্যারিসা পাই - অপরাধ করার মোটিভ রয়েছে অনেকেরই, আচরণটাও তাদের খটকা লাগার মতন। কিন্তু ঠিকই রহস্যের সমাধান করে ফেললেন অ্যাটিকাস পান্ড! এইটুকু পড়ে আপনার নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে কে খুনী? একই সমস্যায় পড়েছে সুয্যানও। ম্যাগপাই মার্ডার্সের শেষ অধ্যায়টি, যেখানে থাকার কথা সব সমাধান - সেটিই দেখে নেই পান্ডুলিপিতে। তবে কি অ্যালান কনওয়ে শেষ চ্যাপটারটা লেখেননি? নাকি প্রকাশকের কাছে দিতে ভুলে গেছেন? লেখকের সন্ধানে যাবার আগেই রেডিওতে জানতে পারলো সুয্যান - মারা গেছেন অ্যালান কনওয়ে, আত্মহত্যা করেছেন তিনি! পান্ডুলিপির শেষটা না পেলে তো চলছে না। সুয্যানের ক্রমশই মনে হতে লাগলো, এটি আত্মহত্যা নয় - খুন! অ্যালান কনওয়ে ছিলেন আগাথা ক্রিস্টির ভক্ত, ওনার গল্পেও তাই ব্যবহার করেছেন নার্সারি রাইম, যার প্রতিটি লাইনের শেষ শব্দ দিয়ে সাজিয়েছেন ম্যাগপাই মার্ডার্সের এক একটি অধ্যায়। সে হিসেবে হারানো অধ্যায়টির নাম হওয়ার কথা ছিল - 'এ সিক্রেট নেভার টু বি টোল্ড!' কী সেই সিক্রেট? সেই না বলা কথাকে যেন কনওয়ে প্রকাশ করতে না পারেন - সে জন্যই কি প্রাণ গেল তার! রহস্যের শেষ দেখেই ছাড়বে সুয্যান রাইল্যান্ড। দৃশ্যপট, চরিত্র - সবকিছু কেমন যেন মিলে যাচ্ছে কনওয়ের লেখা শেষ উপন্যাসটির সাথে, মনে হচ্ছে ম্যাগপাই মার্ডার্সের শেষ অধ্যায়টির সমাধান করতে পারলেই সুয্যান পেয়ে যাবে অ্যালান কনওয়ের মৃত্যুরহস্যের সমাধান। ব্রিটিশ রহস্য উপন্যাস লেখক অ্যান্টনি হরোউইটযের দারুণ জটিল একটি মার্ডার মিস্ট্রি 'ম্যাগপাই মার্ডার্স'। শব্দের খেলা বা অ্যানাগ্রাম, গল্পের ভেতর গল্প, আবার একটির সাথে আরেকটির প্যাঁচালো সম্পর্ক মিলিয়ে পাঠকদের মগজ গুলিয়ে দিতে পারেন লেখক। যারা আগাথা ক্রিস্টির ভক্ত, রাইম মেলানো আর বেশ ক'জন সন্দেহজনক চরিত্রের কর্মকাণ্ড থেকে একজনকে সনাক্ত করার সাথে পরিচিত, তারা ক্রিস্টির ধাঁচে গল্প বলা পড়ে বাড়তি মজা পাবেন। অ্যাটিকাস পান্ডকে মেলানো যায় এরকুল পোয়েরোর সাথে সহজেই। লেখক উপন্যাসে প্রতিটি দৃশ্যের খুব নিখুঁত এবং বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। ছবির মতো সাজানো গ্রাম বা কান্ট্রি-সাইড লন্ডনের বর্ণনাগুলো খুবই ভালো লাগার মতো। কখনো কখনো সেই বর্ণনার কারণে গল্পের গতি ধীর হয়ে এসেছিল। গল্প এগিয়েছে বিভিন্ন চরিত্রের লম্বা বয়ানে, সেসময় কিছুক্ষেত্রে মনে হচ্ছিল একই তথ্য বারবার পাচ্ছি। সেবা প্রকাশনীর অনুবাদ পড়েছি যারা, তাদের অনুবাদক সায়েম সোলায়মানের কলমের প্রতি নিশ্চিত আস্থা রয়েছে। সেই সুনাম অক্ষুণ্ন রেখেছেন লেখক এবারও, ঝরঝরে অনুবাদের মাধ্যমে। নস্টালজিক একটা অনুভূতি হচ্ছিল পড়ার সময়। তবে, অ্যালান কনওয়ে যেহেতু তার বইয়ের চ্যাপ্টারগুলোর নাম রেখেছিলেন একটি ইংরেজি ছড়া থেকে, তাই সেগুলোকে বাংলা না করে হুবুহু রাখলেই বেশ হতো। আরো কিছু শব্দের রূপান্তর চোখে লেগেছে, যেমন 'ফিশ অ্যান্ড চিপস' নামক খাদ্যটিকে বাংলা করে 'মাছ আর চিপস' লেখাটা কেমন জানি লাগলো। কনওয়ের বোনের স্মৃতিচারণেও একটু খটকা ছিল, সেটা লেখকের ভুল নাকি অনুবাদকের শব্দের ভাষান্তরের সমস্যা জানি না। বইয়ের বাঁধাই বা পাতার মান যথারীতি চিরকুট প্রকাশনীর মানদণ্ড ছুঁতে পেরেছে। প্রচ্ছদ করেছেন সজল চৌধুরী। সেটি কেবল দেখতে চমৎকারই নয়, বই অর্ধেক পড়ে প্রচ্ছদটির দিকে আবার তাকালাম - প্রতিটি খুঁটিনাটির অর্থ খুঁজে পেলাম! বইঃ ম্যাগপাই মার্ডার্স লেখকঃ অ্যান্টনি হরোউইটয রূপান্তরঃ সায়েম সোলায়মান প্রচ্ছদঃ সজল চৌধুরী প্রকাশনায়ঃ চিরকুট প্রকাশনী প্রকাশকালঃ জুলাই, ২০১৯ পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৪৩১ মুল্যঃ ৪৮০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
অনেক অপেক্ষার পর হাতে পেলাম বই দুইটি। হাতে নিয়েই ভক্তি চলে আসলো। যেমন বাঁধাই, তেমনই পেইজ। প্রচ্ছদের কথা নিজেই দেখে বুঝে নিন। অনুবাদকও আমাদের সবারই চেনা। চিরকুট প্রকাশনীর মাস্টারপিস নি:সন্দেহে। পুরো বই পড়ার পর হবে রিভিউ।
Was this review helpful to you?
or
কিশোর বয়সে বেশ কিছু রহস্যোপন্যাস পড়া হলেও, বড় হওয়ার পর সাহিত্যের ওই অঙ্গনে আমার ঢু মারা কমে যায়। দীর্ঘদিন পর আমাজনিয়া পড়ে আমি আবার রহস্যের দিকে ঝুঁকি এবং টুকটাক বই পড়া শুরু করি। এরপর যখন চিরকুটের সন্ধান পাই ততদিনে আমি পুরোপুরি রহস্যের দিকে ঝুঁকে পড়েছি এবং তাদের সবগুলো বই অনেক আগ্রহ নিয়ে পড়েছি। দুইদিন আগে হাতে পাই তাদের সর্বশেষ বই ম্যাগপাই মার্ডার্স। প্রকাশক স্বয়ং এই বইটাকে তাদের অন্যান্য বইয়ের চেয়ে আলাদা বলেছেন। আমার প্রতিক্রিয়া নাহয় শেষে বলি। বইটার মূলত দুটি অংশ। একটা বইয়ের ভেতরে আরেকটা বইয়ের বাইরে। এবং এই দুটো রহস্যকে আবার এক মলাটে করেছেন লেখক অ্যান্টনি হরোউইটয্। পাঠকের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া অ্যাটিকাস পান্ড সিরিযের নতুন বই ম্যাগপাই মার্ডার্সের পান্ডুলিপি হাতে পেয়ে পড়া শুরু করেন ক্লোভারলিফ বুকসের সম্পাদক সুয্যান রাইল্যান্ড। বইয়ের কাহিনী গড়ে উঠেছে লন্ডনের এক শান্তিপূর্ণ গ্রাম স্যাক্সবি-অন-এইভন থেকে। হঠাৎই একদিন পাই হলে কাজ করার সময় সিড়ির থেকে পরে গিয়ে ভয়ংকরভাবে ঘাড় মটকে মারা গেলেন বাড়ির পরিচারিকা মেরি ব্ল্যাকিস্টেন। ছোট্ট গ্রামে গুজব ছড়াতে সময় লাগেনা। সকলেই এই ঘটনার জন্য দুষতে লাগলেন মৃতার সন্তান রবার্টকে। নিজের বাগদত্তার উপর এই ভিত্তিহীন দোষারোপ সইতে না পেরে জয় স্যান্ডারলিং শরনাপন্ন হন বিখ্যাত গোয়েন্দা অ্যাটিকাস পান্ডের। তখন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে নিজের শেষ দিনগুলোর জন্য পরিকল্পনা আঁটছিলেন অ্যাটিকাস পান্ড। তাই নিতান্তই স্বাভাবিক একটা দুর্ঘটনার পেছনে নিজের শেষ দিনগুলো ব্যয় করতে চাননি মিস্টার পান্ড। এরই সাতদিন পরে একই বাড়িতে ভয়ংকরভাবে খুন হলে মেরি ব্ল্যাকিস্টোনের কর্তা ম্যাগনাস পাই। খবরের পাতায় সংবাদটা জানার পর আর দেরি করেননি অ্যাটিকাস পান্ড। নিজের সহকারী জেমস ফ্রেযারকে নিয়ে তিনি উপস্থিত হন স্যাক্সবি-অন-এইভন এ। কিন্তু রহস্যের জাল কোনোমতেই পরিষ্কার হবার নয়। তদন্তে বেড়িয়ে এল অনেক বছর আগের একটি রহস্য। আর সন্দেহজনক মুখেরও অভাব নেই। পাই হলের মালি ব্রেন্ট দুটো মৃত্যুর সময়ই আশেপাশে ছিলেন। এটা কি নিতান্তই কাকতালীয়? মেরির মৃত্যুর দুদিন আগে সকলের সামনে তার ছেলে রবার্ট তাকে মরতে বলে। শুধুমাত্রই ঝগড়ার প্রেক্ষিতে? পাই হলের উত্তরাধিকার হওয়ার পরও নিজের বোন ক্ল্যারিসা পাইকে যে ঠকিয়েছেন মিস্টার পাই, সেটার জের ধরেই কি এই মৃত্যু? নাকি লেডি পাইয়ের পরকিয়ার বলি সে? হ্যাট পরিহিত লোকটিই বা কে? ভিকার অযবর্নের শার্টে রক্তের দাগ, মিস্টার পাই এর টেবিলে হুমকি দেওয়া চিঠি, ডক্টর রেনার্ডের ডিসপেনসারি থেকে বিষাক্ত ওষুধ চুরি। ঘটনাগুলো কি পৃথক পৃথক দুর্ঘটনা নাকি একই সুতোয় বাধা? সমাধানটা যখন অ্যাটিকাস পান্ড প্রায় ধরে ফেলেছেন এমন সময়ে এসে পান্ডুলিপি শেষ। শেষ অধ্যায়টা মিসিং। খবর পাওয়া গেল সুইসাইড করেছেন অ্যাটিকাস পান্ড সিরিযের লেখক অ্যালান কনওয়ে। প্রকাশক চার্লস ক্লোভার সেই না পাওয়া পান্ডুলিপিটা খোঁজার দায়িত্ব দেন সুয্যানকে। কারন ম্যাগপাই মার্ডার্স না ছাপাতে পারলে প্রকাশনী প্রায় পথে বসবে। হারানো সেই পান্ডুলিপি খুঁজতে গিয়েই সুয্যান আবিষ্কার করে এক রহস্যের সমাধান জানার আগেই আরেক রহস্যে জড়িয়ে পরছে সে। তবে এবারের রহস্যটা বইয়ে নয়, বাস্তবে। আপাত দৃষ্টিতে আত্মহত্যা মনে হলেও আসলেই কি আত্মহত্যা করেছেন অ্যালান কনওয়ে? ম্যাগপাই মার্ডার্স বইটির সব চরিত্রগুলো যেন জীবন্ত হয়ে ধরা দিল সুয্যানের কাছে। তবে কি পান্ডুলিপির শেষ পৃষ্ঠাগুলোতেই রয়েছে অ্যালানের মৃত্যুর রহস্যেরও সমাধান? সেটার জন্যই কি খুন হয়েছেন তিনি? নাকি আসলে বইটি শেষই হয়নি? মাত্র চব্বিশঘন্টার জন্য কয়েক মিলিয়ন পাউন্ড হারানো থেকে বেঁচে গেল অ্যালান কনওয়ের বয়ফ্রেন্ড জেমস টেইলর। তবে কি সম্পত্তির লোভের বলি হয়েছিলেন লেখক? নাকি বোনের প্রতিহিংসাই তার মৃত্যুর কারন? ভিকার টম রবসন বা সুযানের বয়ফ্রেন্ড আন্দ্রিয়াসেরই বা অ্যালানের প্রতি এত ক্ষোভ কেন? জন হোয়াইটহেডের সঙ্গে ঝগড়া বা প্রডিউসারের মিথ্যা বলার সাথে কি কোনো সম্পর্ক আছে এই খুনের? শেষটা, বিশ্বাস করুন, হতবাক করে রেখে দেবে আপনাকে। আর একটা রহস্যোপন্যাসের সার্থকতা এখানেই। বইটা আমি টানা পড়ে শেষ করেছি। যখন পান্ডুলিপির শেষ অংশটা পড়তে পারলাম না তখন যেন সুয্যানের মত আমিও পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। যেভাবেই হোক এটার শেষটা জানতেই হবে। টানটান উত্তেজনা আর চমৎকার সব টুইস্টে ভরা বই। বিশ্বাস করুন, আমি আর কখনো এমন বই পড়িনি। লেখক প্লটটাকে এত চমৎকারভাবে বানিয়েছেন!! গল্পের ভেতরের গল্প আমাদের জন্য অনেক নতুন। শেষ অংশটা যখন সুয্যান পাচ্ছিল না, তখন সুয্যানের মত আমিও চেষ্টা করেছিলাম খুনি কে সেটা ধারনা করার। কিন্তু শেষে গিয়ে সুয্যানের সাথে আমিও ধাক্কা খেয়েছি। বলতে গেলে একটা নয়,দুটো পারফেক্ট রহস্য একসাথে শেষ হয়েছে। বই পড়ে আর যাই হন, হতাশ হবেন না। একদম পয়সা উসুল। এবার বলি প্রচ্ছদ, প্রকাশক এবং অনুবাদক সম্পর্কে প্রচ্ছদটা আপনি দেখলেই বুঝবেন কতটা চমৎকার হয়েছে। কিন্তু বইটা পড়ার পরে বুঝবেন কত সুন্দর করে কাহিনীটা দেখানো হয়েছে প্রচ্ছদে। নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। বইয়ের বাইন্ডিং, পৃষ্ঠা এত দারুন! ৪৩১ পৃষ্ঠার একটা বই, টাইপিং মিস্টেকের সংখ্যা নগন্য। বইটা এত দারুনভাবে বানানো অথচ দাম সেটার তুলনায় এত কম, আমি শুধু ভাবছি কিভাবে!! অনুবাদকের কথা বলবো, পুরো বইটার কোথাও আমার মনে হয়নি অনুবাদটা আমাকে বাধা দিচ্ছে। আমার তো মনে হয় অনুবাদকের এটাই স্বার্থকতা যে তার বইটা পড়ে মনেই হবেনা এটা অনুবাদ করা। সেদিক দিয়ে সায়েম সুলায়মান ভাই স্বার্থক। ম্যাগপাই মার্ডার্সের প্লটটাই অনেক অসাধারন। তাই সেটাকে অনুবাদ করতে গেলে প্রকাশক আর অনুবাদকের উপর বড় একটা দায়িত্ব পরে যায় যেন বইটার মর্যাদা ক্ষুন্ন না হয়ে যায়। চিরকুট ও সায়েম সোলায়মান ভাই এদিক দিয়ে সার্থক।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জুলাই অনেকদিন হলো কোনো বই ভাল লাগার স্থানে জায়গা পেলেও মন ছুঁয়ে যাচ্ছিল না। কথায় আছে প্রকৃতিতে শূন্যস্থান বেশিদিন থাকেনা, হলোও তাই। শুরু করে দিলাম 'ম্যাগপাই মার্ডার্স' আর পরে গেলাম গোলকধাঁধার ফাদে। রাতে ঘুমাতে পারিনা, কোনো কাজে শান্তি পাইনা, এদিকে গল্পও আর শেষ হয়না। যেখানে গল্প শেষ হবার কথা। সেখানে দেখি, আবার গল্পের শুরু। নতুন নতুন চরিত্রের খেলা। হুম, বইটিই এমন, গল্পের ভেতরে গল্প, রহস্যের ভেতরে রহস্য। পুরো বইয়ের নাম ম্যাগপাই মার্ডার্স হলেও, ম্যাগপাই মার্ডার্স মূলত একটি পাণ্ডুলিপি। আর সেই পাণ্ডুলিপি ঘিরে একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। এই দুই গল্প মিলে অ্যান্টনি হরোউইটয লিখেছেন এখন পর্যন্ত প্রকাশিত তার সেরা রহস্যোপন্যাস ম্যাগপাই মার্ডার্স। বইয়ের শুরুতে ম্যাগপাই মার্ডার্সের সম্পাদক সুয্যান রাইল্যান্ড সাবধান করে দিয়েছেন বইটির ব্যাপারে। এই সেই বই যা বদলে দিয়েছে তার পুরো জীবন। সাবধানী বাণীটা দেখে আমারো সাবধান হওয়া উচিত ছিল, হইনি বলে আমার জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। কিন্তু রাতগুলো কেটেছে নির্ঘুম, ব্যয় হয়েছে এই বইয়ের পিছনে। . . আগেই বলেছি বই একটি, কিন্তু গল্প দুটি। প্রথম গল্পে দেখা যায় সুয্যান একটি পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা করার জন্য পান। পাণ্ডুলিপিটি বিখ্যাত রহস্য লেখক অ্যালান কনওয়ের অ্যাটিকাস পান্ড সিরিজের নবম বই 'ম্যাগপাই মার্ডার্স'। শান্ত এক গ্রাম, সেখানে মারা গিয়েছেন মেরি ব্ল্যাকিস্টেন। তার শেষকৃত্য চলছে। স্বাভাবিক মৃত্যু, সিঁড়ি থেকে পরে গিয়ে মাথা ফেটে গিয়েছে তার। কিন্তু প্রতিটি গ্রাম বেচে থাকে কুসংস্কারে নিয়ে, গল্পের স্যাক্সবি-অন-এইভন'ও ব্যতিক্রম নয়। গ্রামের মানুষদের কানাঘুষা এই মৃত্যুর পেছনে হাত আছে মেরি'র ছেলে রবার্ট-এর। কেননা মৃত্যুর দুদিন আগে রবার্ট সবার সামনে বলেছে, মায়ের মৃত্যুতে শান্তি পাবে সে। এদিকে রবার্টের বিয়ে ঠিক হয়েছে জয়ের সাথে। খুব শীঘ্রই বিয়ের পিড়িতে বসতে যাচ্ছে ওরা। কিন্তু গ্রামের লোকদের বিদ্রূপ মন্তব্য বাধা হয়ে দাঁড়াল তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে। উপায় না পেয়ে জয় দ্বারস্থ হলো বিখ্যাত গোয়েন্দা অ্যাটিকাস পান্ডের। বড়বেশি দেরী করে ফেলেছে জয়। আর কোনো কেস নিচ্ছেন না পান্ড। ফুরিয়ে এসেছে তার জীবনের অবশিষ্ট সময়। বাকি যে কটা দিন বেচে আছেন, একটি বই লিখে কাটিয়ে দিতে চান। কিন্তু বইটি লেখার সময়ও হাতে নেই তার। এমন ঘনিয়ে আসা সময়ে খুনি ধরার ইচ্ছে নেই বিখ্যাত গোয়েন্দার, বাধ্য হয়ে ফিরিয়ে দিলেন জয়কে। কথায় আছে...সময় যখন যেমন। অনেক স্থির সিদ্ধান্তও পাল্টিয়ে যায় সময়ের দাবীতে। সংবাদ পত্রের সদ্য প্রকাশিত খবরটি তেমন করেই পাল্টিয়ে দিল পান্ডের সিদ্ধান্ত। নৃশংসভাবে খুন হয়েছে মেরি ব্ল্যাকিস্টেনের কর্তা স্যর ম্যাগনাস পাই। গোয়েন্দা মাত্রই জানেন, একই স্থানে কাছাকাছি সময়ে দুটি মৃত্যু কখনো কাকতালীয় ঘটনা হতে পারে না। নিশ্চয় এরমধ্যে কোনো 'কিন্তু' লুকিয়ে আছে। তাই আর দেরী না করে সহকারী জেমস ফ্রেযারকে নিয়ে তিনি ছুটলেন ঘটনাস্থলে। পড়তে গিয়ে বিখ্যাত গোয়েন্দা পান্ড এবং গোয়েন্দা সহকারী ফ্রেযারকে মনে হতে পারে এরকুল পোয়ারোর আদলে গড়া। কথাটা একবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। কেননা রহস্য উপন্যাসিক অ্যালান কনওয়ে রহস্যরানি আগাথা ক্রিস্টির একনিষ্ঠ ভক্ত। অবশেষে শেষ হতে চলল ম্যাগপাই মার্ডার্স। পান্ড ধরে ফেলল খুনি। কিন্তু খুনি কে? কিভাবে ধরল ?.... নেই কোথাও। দেয়া হয়নি পান্ডুলিপির শেষ চ্যাপ্টারটা। বইটির সম্পাদক সুয্যান পরদিন গেল হারানো পাতাগুলোর খোঁজে। কিন্তু সেখানেই ঘটলো বিপত্তি। আত্মহত্যা করেছেন পান্ডুলিপির লেখক কনওয়ে। পাঠক মাত্রই জানেন, কেস গুটিয়ে এনে খুনির নাম না জানতে পারলে কেমন পাগল-পাগল অবস্থা হয়ে দাঁড়ায়। মাথার চুল ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। সুয্যানের অবস্থাটা একবার ভাবুন ! বেচারি হন্য হয়ে খুঁজতে লাগলেন হারানো পাতাগুলো। আর গোয়েন্দা কাহিনীর সম্পাদক বলেই কি না, নিজে অনুভব করলো আত্মহত্যা করেননি অ্যালান কনওয়ে, খুন করা হয়েছে তাকে। শুরু হলো গল্পের ভেতরে গল্প। আবারো ইঁদুর-বিড়াল দৌড়। সুয্যান পান্ডের মতো গোয়েন্দা না হলেও গুটিয়ে ফেলল কেস। বের করে ফেলল পুরো কাহিনীর মূল হোতা অর্থাৎ আসল খুনিকে। . . আমি দৌড় গতির বই পছন্দ করি। আমার জন্য বেস্ট অপশন রলিন্স আর রাইলী। আগাথা ক্রিস্টি টাইপ কাহিনী সাধারণত এড়িয়ে যাই। কিন্তু আমার কাছে ম্যাগপাই মার্ডার্স ছিল অন্য কিছু আবিষ্কার করার মত। যা আবিষ্কার শেষে হতে হয়েছে নির্বাক। পড়তে গিয়ে মনের পর্দায় বারবার বেজে উঠছিল পান্ডের নির্মম স্বীকারোক্তি... 'মানুষের জীবন যেমন সত্যি, তেমনি তার মৃত্যুও সত্যি। সুতরাং মনে হয়না, মেকি শোকের কোনো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কারো মৃত্যু অলংকৃত করার দরকার আছে। মৃত্যু আসলে কী? জীবনের একটা পর্যায় হয়তো। কেউ একজন একসময় বেচে ছিল, এখন সে নেই। পৃথিবী থেকে মুছে গেছে কোনো একজনের ইতিহাস। এছাড়া মৃত্যু আর কী?' অ্যান্টনি হরোইটয এর সাথে এই বই দিয়েই প্রথম পরিচয়। আর সেই পরিচয়েই প্রণয়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দুর্দান্ত। গল্পের বর্ণনাভঙ্গি, শব্দচয়ন আহা! বইটাকে শুধু একটি গোয়েন্দা কাহিনী বা মার্ডার-মিস্টি বললে অবিচার করা হয় আসলে। কি নেই বইয়ে?..... জীবনের গল্প, প্রেম- ভালবাসা, কষ্ট, সবশেষে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস।




