
User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ওবায়েদ হকের লিখার কথা আর নতুন করে কি বলবো। অসাধারণ অসাধারণ এবং অসাধারণ। তার সব লেখাই আমার মুগ্ধ করে।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই। সামাজিক গল্প পড়তে যারা পছন্দ করেন অবশ্যই বইটি পড়বেন। কিছু জায়গায় নিজে নিজেই হাসলাম আবার কিছু জায়গায় অনেক কাদলাম।
Was this review helpful to you?
or
কি একটা বই পড়লাম,অসাধারণ।৫*ও যেন কম হয়ে যায়❤️
Was this review helpful to you?
or
ভীষন ভালো লাগার মতো একটা বই।সেরা।
Was this review helpful to you?
or
এক ফ্রেন্ড রেকমেন্ড করেছিলো পড়ার জন্য।অবশেষে নিজেই নিজেকে গিফট করে দিলাম বইটা।আলহামদুলিল্লাহ আশাহত হইনি।
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারন ……অনেক অনেক প্রশংসা শুনেছিলাম বইটার।তাই উইশলিস্টে ছিলো,আলহামদুলিল্লাহ কালেক্ট করেই পড়া শুরু করে দিয়েছি।আশাহত হইনি………যারা এখনো পড়েননি খুব মিস করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
পাহাড়কে উপজীব্য করে বাস্তবতা নিরিখে অনেকগুলো অব্যক্ত অনুভূতিকে এক মলাটে নিয়ে আসার যে মুন্সিয়ানা লেখক দেখিয়েছেন তা এক কথায় দারুণ, চমৎকার। একবসায় পাহাড়কে মানসপটে দেখার সুযোগ করে দেয় বইখানা।
Was this review helpful to you?
or
এই লেখকটা একটা ভালোবাসা।ফেসবুকে তার বইয়ের রিভিউ পড়ে তার গল্পের হাফ ফ্যান হয়ে গেছিলাম।এরপর একটি শাড়ী এবং কামরাঙা বোমা ও অন্যান্য এবং নীল পাহাড় পড়ে তার ফুল ফ্যান হয়ে গেছি।পাহাড় দেখার হালকা অভিজ্ঞতা আছে বলে নীল পাহাড় পড়তে গিয়ে পাহাড়কে নিজের মনে গেথে নিতে পেরেছি।এই উপন্যাসটা পড়ে আবার পাহাড়ী এলাকায় যাওয়ার ইচ্ছা চলে আসছে।গল্পটা অনেক চমৎকার ছিলো।
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণ। বহুদিনপর নতুন কিছুর স্বাদ পেলাম। এ যেন বহুরূপী অনুভূতির জন্মদাতা। লেখকের লেখার মান আর ঘটনাবলির উপস্থাপনা সত্যি প্রশংসনীয়।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ!
Was this review helpful to you?
or
এই বইটা পড়ে মনে হলো সব ছেড়ে ছুড়ে মুভি বানানো শুরু করি
Was this review helpful to you?
or
ভালো
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া সবচেয়ে অসাধারণ বইটি। বইটি আমার কাছে এতই ভালো লেগেছে যে সে অনুভূতিটা বলে বঝানর না। এটি পরার পর আমি এই লেখকের আরও কিছু বই অর্ডার করবো।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
কি দারুণ একটা বই। এইভাবে লেখকের কলম চলতে থাকুক।
Was this review helpful to you?
or
আমার শোনা সবচেয়ে বড় সান্ত্বনার কথা হল- " পৃথিবী যেহেতু গোল, আবার দেখা হবে" কিন্তু সবার জন্যে পৃথিবী গোল হয় না। সমান্তরাল সরলরেখাও হয় যেগুলো পরস্পরকে ছুঁয়ে যায় না- যাবে না। আমি মাত্র যে অসাধারণ লেখাটা শেষ করেছি সে বইয়ের নায়ক মানিক মিত্র কিংবা পাহাড়ের মেয়ে ক্রাসিমারও সম্ভবত একই অনুভূতি হয়েছিল। আমি প্রায়ই একটা কথা শুনি-একটা ভাল বইয়ের নাম বলেন। আমি #ওবায়েদ_হক এর #জলেশ্বরী পড়েছি আগে। সেই আগ্রহে #নীল_পাহাড় হাতে নিয়েছিলাম। আমার বইসংগ্রহে মুখ লুকিয়ে ছিল সে অনেকদিন। আমি টেনে বার করলাম আর সাগরকন্যার শহর ছেড়ে কিছুক্ষণের জন্যে হারিয়ে গেলাম নীল পাহাড়ে। সেখানের নীলাতা ফুলের পাঁপড়িতে প্রেম ছিল-পাহাড়ি চড়াই-উৎরাইয়ের মত উত্তেজনার রেশ ছিল-পাহাড়ে হঠাৎ দেখা সর্পিল সরীসৃপের মত নাটকীয়তা ছিল। পাহাড়ে হুট করে মেঘ জড়ো হয়। পরদেশী মেঘগুলো পাহাড়ের প্রেমে পড়ে বৃষ্টি নামায়- নামায় সেখানকার মানুষগুলোর মনেও। আমিও অনুভব করেছি সে প্রেম। মেঘ যেমন ছুঁয়ে দেয়া যায় না-তেমনি ছুঁতে না পারা অনুভূতিগুলোও আবার মেঘের মত পাড়ি দিয়েছে অন্য পৃথিবীতে। আমি সে পৃথিবীর খোঁজ পেতে হলেও লেখকের লেখায় সে মায়া খুঁজে বেড়াব... লেখক এবং বায়ান্ন প্রকাশনীকে অনেক ধন্যবাদ এক সমুদ্র অনুভূতিকে মলাটে জড়াবার জন্যে... যারা আসলেই ভাবেন বাংলাদেশে লেখক নেই তাদের অবশ্যই বইটা পড়া উচিত... যারা ভাবেন পাঠকের চেয়ে লেখক বেশি তাদের অনেকবার পড়া উচিত...
Was this review helpful to you?
or
বিশিষ্টজনদের মতে, একটা ভালো বইয়ের কখনো শেষ বলতে কিছু থাকে না। 'নীল পাহাড়' পড়ার পর আমার উপলব্ধিটা ঠিক সেরকমই হয়েছিলো । কিসের যেনো একটা ঘোর কাজ করছিলো,কদিন নতুন কোনো বই শুরু করতে ইচ্ছা করছিলো না, পাছে নীল পাহাড়ের রেশ টা কেটে যায়! লেখকের লেখনীর সঙ্গে পরিচয় নীল পাহাড় দিয়েই। বারবার মনে হচ্ছিলো এই বইটি না পড়া হলে হয়তো আমার পাঠক হৃদয়ের একটা অপূর্ণতা থেকেই যেতো। বইটা কয়েকবার পড়ার পরও বইটি নিয়ে কিছু লিখতে সাহস হচ্ছিলো না।মনে হচ্ছিলো যাই লিখবো কম হয়ে যাবে। সেই রহস্যে ঘেরা নীল পাহাড়, পাহাড়ি জীবন, দ্বন্দ্ব-হিংসা-রেষারেষির মাঝেও কুড়িয়ে পাওয়া সেই ভালোবাসাগুলোকে কিভাবে কয়েকটা শব্দ দিয়ে আমি বুঝাবো? শুধু বলবো কাহিনী, চরিত্রের উপস্থাপন, ঘটনাপ্রবাহ , সমাপ্তি সবকিছুর অপূর্ব এক সংমিশ্রণ 'নীল পাহাড়'। লেখকের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই। ওবায়েদ হক না পড়লে অসাধারণ অভিজ্ঞতা মিস করবে পাঠক।
Was this review helpful to you?
or
আমরা পাহাড় দেখি। পাহাড়ের ভেতর যে কতকিছু লুকানো আছে সেগুলো আমরা দেখিনা। পাহাড়ের কান্না, ভালোবাসা, হিংস্রতা, দুঃখ, কুসংস্কার, উৎসব সবকিছু আমাদের দৃষ্টির অগোচরে থেকে যায়৷ শুধুমাত্র বাইরের দিকটাই আমরা দেখে থাকি, যা দেখে আমরা আকর্ষণ বোধ করি। পাহাড়ের ভেতরের ঘটনাগুলো নিয়েই লেখা হয়েছে নীল পাহাড়। বইটি পড়তে পড়তে একজন শহুরে ডাক্তারের সাথে দেখে নিতে পারবেন পাহাড়ের না দেখা বেশকিছু দিক। সেইসাথে একসময় নীল পাহাড়ের রহস্যও পেয়ে যাবেন।
Was this review helpful to you?
or
#বুকরিভিউ বইয়ের নামঃ নীল পাহাড় লেখকঃওবায়েদ হক রেটিংঃ 🍁🍁🍁🍁🍁 "বয়স্ক লোক দেখলেই তোমার বাবার মতো মনে হয়। আমাকে কি তোমার বাবার মতো মনে হয়? মানিক বলল— না স্যার, অনাথদের বাবা হয় মৃত,দরিদ্র, অসহায় অথবা অপরাধী। আপনি তার কোনটা না। " —নীল পাহাড়, ওবায়েদ হক সারসংক্ষেপঃ ——————— শহরের ব্যস্ততম সময় গুলোতে বিভিন্ন সময় অবচেতন মন দূরের কোনো জায়গায় চলে যেতে চায়। দূরের সে পাহাড় -পর্বত, নদনদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে কার না মন চায়। তাই সময় পেলে শহরের সব কিছু এক পাশে রেখে দলবল নিয়ে চলে যাই ঐ দূরের পাহাড়ের সৌন্দর্য কে ছুঁয়ে দিতে। কিন্তু কয়জন জানি সেখানকার পরিবেশ, ইতিহাস, সংস্কৃতির কথা? সাধারণত স্কুলের সাধারণ জ্ঞান বই য়ে হালকা পাতলা পাহাড়িদের সংস্কৃতি সম্পর্কে লিখা হয়। কিন্তু তাদের ইতিহাস সম্পর্কে কয়জন ই বা গভীর ভাবে জানতে চায়। বর্তমানে হাল ফ্যাশনের লেখার যুগে লেখক ঐ ইতিহাসের এক টুকরো গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। তা হলো নীল পাহাড়। উপন্যাসটি আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ের। যখন প্রায়ই বাঙালি আর পাহাড়িদের মধ্যে যুদ্ধ চলত। কখন ও রাতের আধারে, তো কখন ও দিনের আলো তে। তখন শহরের অবস্থা ভালো হলেও পাহাড়ের অবস্থা ছিল করুণ। প্রায় প্রতিদিন ই সেখানে কিছু না কিছু হতো। সেখানে সাপ, শূকর, জংলী জানোয়ারের হামলার ভয় থেকে বেশি ভয় ছিল উগ্রবাদী সংগঠন গুলোর যারা পাহাড়ের স্বাধীনতা আনার নাম করে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ যেমন খুন,ধর্ষণ করেই যেত।আর আছে নীল পাহাড়,যে পাহাড় দূর থেকে দেখতেও আকর্ষণীয় ঠিকই, কিন্তু আকর্ষণের পিছে লুকিয়ে আছে অসুন্দর অনেক কিছু। অন্যদিকে শহরের অনাথ আশ্রমে বেড়ে ওঠা একজন সৎ,নিষ্ঠাবান ডাক্তার মানিক মিত্র। তার জীবনে অনেক কিছু থেকেও কিছুই নেই। সে নিজেকে খোঁজায় ব্যস্ত, কিন্তু কখন নিজের কাজের সাথে, সততার সমঝোতা করতে নারাজ। যার বদৌলতে তিনি চোখে পড়ে সরকারি বড় কর্মকর্তার। নিজের সততার আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী গহওয়ার জন্য তাকে বদলি করা হয় সে ভয়ংকর বান্দরবান জেলার বুলিপাড়া গ্রামে। হ্যাঁ সে ভয়ংকর পাহাড়ে। তখন কার সময়ে মৃত্যুদন্ড থেকে বড় শাস্তি ছিল পাহাড়ে বদলি হওয়া। মানিক মিত্রও শাস্তি সরূপ পাহাড়ে বদলি হলো। কিন্তু কথা হলো পাহাড় কে তো সবাই আপন করতে চায়, কিন্তু কয়জন পাহাড়ের আপন হতে পারে? কয়জনকে ই বা পাহাড় সাদরে গ্রহণ করতে পারে? মানিক কি পারবে এই পাহাড়কে আপন করে নিতে? সেখানে নিজের জ্ঞান আর সততার বীজ বুনতে পারবে? নাকি বাকি শহরীদের মতো ছিটকে যাবে? পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ ———————— জীবনে অনেক গুলো ইচ্ছার মধ্যে একটা ইচ্ছা হলো পাহাড় দেখা। যা এখন পর্যন্ত হয় নি। নিজের দেশ টা আমার জন্য বিদেশের সমান, কারণ এখানে ভ্রমণ করা এখন ও হয়ে উঠে নি। পাহাড় কে সিনেমা, বই আর ছবি আঁকার সময় দেখেছি। না পাহাড় সম্পর্কে বিস্তর ধারণা আছে আর না পাহাড়ীদের ইতিহাস জানা আছে। দূর থেকে যে জীবনের গল্প শুনতে ভালো লাগে, যে জীবনকে একদিনের জন্য হলেও নিজের বানাতে ইচ্ছা করে। ঐ জীবন টা সত্যিকারি কেমন তা লেখক তুলে ধরেছেন অনেক সুন্দর ভাবে। আমাদের চারপাশে অনেক মানুষ আছে যারা আমাদের আপন সেজে আমাদের ই ক্ষতি করে বেড়ায়। লেকখ লিখার মাধ্যমে তা ফুটিয়েছেন। আর পাহড়িদের সহজ, সরল জীবন যাপন তো আছে ই। ও হ্যাঁ। মানিক মিত্র। তার অনাথ জীবনের কথার মাধ্যমে লেখক খুব সুন্দর ভাবে মা বাবা গুরুত্ব ফুটিয়ে উঠেছেন। আর সেই ন্যায় নিষ্ঠাবান, সৎ মানুষ এর সাথে পরিচয় করিয়েছেন। যা বর্তমান সমাজে বিরল। অনেক বেশি ভালো লাগল। এই ধাচের উপন্যাস কখন ও পড়া হয় নি। এই প্রথম। ভালো লাগা লাইনঃ ★ডাক্তার মানেই নিষ্ঠুর। আমরা মৃত্যু দেখে বিচলিত হই না। তাই আমরা পাষাণ। নিষ্ঠুর শব্দটাই আপেক্ষিক। ★তুমি বলেছিলে,মানুষের মৃত্যুতে ডাক্তাররা বিচলিত হয় না। কথাটা ঠিক নয়। আমরা বিচলিত হই কিন্তু প্রকাশ করতে পারি না। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখের খবর আমরাই দেই, মানুষের জন্মের সময়। আবার সবচেয়ে কষ্টের কথা আমাদেরই শুনাতে হয়। মানুষের মৃত্যুর খবর। ★মেয়ে বলে, সবাই নিজেকে সাজায়, আমি মনকে সাজাই। ★মা এসেছিল একদিন কালো শ্লেটে। ম এর সাথে "আ" কার দিয়ে মা হয়েছিল।সাদা শব্দটি জ্বলজ্বল করছিল। ★ভোরের আলো আর জোৎস্নার আলোর মধ্যে মিল আছে। দুটোই স্নিগ্ধ কোমল।কিন্তু ভোরবেলা যত পাখির ডাক শোনা যায়, জোছনায় ততটা শোনা যায় না। ★কেউ মানিককে প্রয়োজনে স্মরণ করলে তার ভালো লাগে। কারণ প্রয়োজনে প্রিয়জনের কথাই মানুষ মনে করে। ★পাহাড়ের নিজস্ব ভাষা আছে। নিঃশব্দে ডাকতে পারে। সবাই সে ডাক শুনতে পায় না। ★চাঁদ ফিরে আসে কিন্তু কিছু জোৎস্না কখনই ফিরে আসে না। happy reading ❤️
Was this review helpful to you?
or
Good book
Was this review helpful to you?
or
দারুণ বই। দারুণ দারুণ দারুণ।
Was this review helpful to you?
or
বই রিভিউঃ নীল পাহাড়। লেখকঃ ওবায়েদ হক। ধরনঃ উপন্যাস। প্রকাশনীঃ বায়ান্ন ('৫২)। মুদ্রিত মূল্যঃ ২৫২ টাকা। প্রচ্ছদঃ রাজিব দত্ত। ডাঃ মানিক মিত্র। অনাথ আশ্রমে বেড়ে ওঠা এক সৎ নিষ্ঠাবান ডাক্তার। এই দুনিয়ায় তার কেউ নেই। তাই হয়তো তার আশেপাশের সবাইকেই আপন মনে করে ভালোবাসে। সে জানে না তার বাবা মা কে। নিজের পরিচয় জানার আকুতি নিয়ে সর্বদা ঘুরে বেড়ায়। নীতি আর আদর্শে পরিপূর্ণ এই মানুষটি অন্যায়ের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদী। সিনিয়র এক রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী কর্মকর্তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে তার সর্বোচ্চ শাস্তি স্বরূপ বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার বলীপুর নামক এক প্রত্যন্ত, নির্জন পাহাড়ি অঞ্চলে বদলী করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় তখন পাহাড়ি আর বাঙালীদের দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে। প্রায়ই তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুদলেরই মানুষ মারা যায় সেই সংঘর্ষ গুলোতে। কখনো বাঙালিরা রাতের অন্ধকারে নিরীহ জুম চাষী পাহাড়িদের ওপর আক্রমণ করে ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে যায়,লুটপাট, ধর্ষণ চালায় তো কখনো পাহাড়িরা সরকারি অফিসার দের অপহরণ করে নিয়ে যায়। আর কিছুদিন পর তাদের মস্তক বিহীন লাশ ভেসে উঠে সাঙ্গু নদীতে।খুন,ধর্ষণ, গুম তখন পাহাড়ের নিত্যদিনের ঘটনা।পাহাড়ি উগ্রপন্থী সংগঠন গুলিও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। বিডিআর দের সাথে প্রায়ই তাদের বন্দুকযুদ্ধ হয়। সেসময় পাহাড়ে বদলী হয়ে এসে এসব প্রতিকূলতার মাঝখানে পরে যায় মানিক। সেখানে সে দেখে বাঙালীদের ওপর অবিশ্বাসী আর হিংস্রাত্বক কিছু পাহাড়িদের। তার সাথে দেখা মেলে বাঙালি উগ্র সাম্প্রদায়িকতা সম্পন্ন নিম্নমানের চিন্তাভাবনা সম্পন্ন মানুষের। এসব প্রতিকুলতার মাঝেও মানিকের মন পাগল হয়ে খুঁজে বেড়ায় তার পরিচয়! তার নিজের মায়ের অস্তিত্ব। এতোকিছুর মাঝেও মানিকের জীবনে প্রেম হয়ে আসে পাহাড়ি কন্যা ক্রাসিমা। ক্রাসিমা হঠাৎ করে যেমন মানিকের জীবনে উদয় হয়েছিল ঠিক তেমনই হঠাৎ করেই হারিয়ে যায়। কিন্তু মানিকের মনের মধ্যে দাগ কেটে দিয়ে যায় সে। এভাবেই নিত্যনতুন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়তে থাকা মানিকের কাছে হঠাৎই ঢাকা থেকে এক চিঠি এসে পৌছায়। চিঠি পড়ার সাথে সাথেই সেখানে ছুটি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যেতে চায় মানিক। কিন্তু বাসে ওঠার আগ মুহূর্তেই অপহৃত হয়ে যায় ডাঃ মানিক মিত্র। এই অপহরনকারীদের কাছ থেকে কিভাবে উদ্ধার পাবে মানিক? তারা কি চায় মানিকের কাছে? আর সেই চিঠিতেই বা কি ছিলো যা পড়েই মানিক ঢাকা যাবার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছিলো? পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ গ্রুপে অনেকদিন ধরেই ওবায়েদ হককে নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। সেই আলোচনা দেখেই উনার বইগুলো পড়ার ইচ্ছা জাগে। নীল পাহাড় আমার পড়া ওবায়েদ হকের দ্বিতীয় বই। বইটা পড়ে এতোটাই মুগ্ধ হয়েছি যে বলে বোঝানো যাবে না। বইটির প্রথম অধ্যায় পড়েই কুপোকাত হয়ে গেছিলাম। শেষ না করে আর উঠতেই পারিনি। ছোট্টো একটা বইয়ে লেখক মুক্তিযুদ্ধের কথা,সেসময়ের পরের অস্থির রাজনৈতিক অবস্থা, পাহাড়ি বাঙালী দাঙ্গা সুনিপুণ ভাবে বর্ণনা করে গেছেন।গল্পটি পড়ার সময় মনে হচ্ছিলো কোনো সত্য ঘটনাই যেনো পড়ছি আমি। নীল পাহাড় ডাঃ মানিক মিত্র চরিত্রকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠলেও এই উপন্যাসের কাহিনী আরো পরিপূর্ণ করেছে ক্রাসিমা, বাচ্চাহারা এক পাগল মা উথাই,খাংচাই এবং আরেক পাহাড়ি সৎ বিপ্লবী মংতো। বইটা পড়তে গিয়ে কোথাও হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে গেছে তো আবার কোথাও নিজের অজান্তেই চোখের কোণে জল এসে ভীড় জমিয়েছে। সবশেষে বলবো অসাধারন একটা বই। যারা এখনো পড়েন নি তারা বইটা সংগ্রহ করে হাতে ২/৩ ঘন্টা সময় নিয়ে বসে পড়ুন। ভালো লাগবে আশাকরি।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে খুব ভাল লেগেছে। সমকালীন উপন্যাস হিসেবে সেরা একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
“খুব ছোটবেলায় মানিকের মনে মায়ের কোনো অস্তিত্ব ছিলো না, প্রয়োজনও না। সে বুঝতে শেখার পর থেকেই নিজেকে আশ্রমে আবিষ্কার করেছে। সেখানে নিয়ম ছিলো, শৃঙ্খলা ছিলো কিন্তু মায়ের আদর সেখানে দেয়াল ডিঙ্গিয়ে অনুপ্রবেশ করতে পারতো না। সেখানে আবদার ছিলো না, অভিমান ছিলো না। তাদেরকে কৃতজ্ঞ হওয়া শেখাতো মাসীদের চোখ আর আয়াদের কটু কথা। সেখানে কেউ মা কে ডেকে কাঁদতে শিখেনি, বাবার কাঁধে চড়ে খিলখিল হাসির অস্তিত্ব কেউ জানতও না। মা এসেছিল একদিন কালো স্লেটে। ‘ম’ এর সাথে ‘আ’ কার দিয়ে মা হয়েছিলো। সাদা শব্দটি জ্বলজ্বল করছিলো। সে মাসী কে গিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলো, মাসী আমার মা কোথায়?” বিশ্বাস করবেন কী না জানি না, এই লাইনগুলো পড়ার সময় চোখ ভিজে এসেছিল। শুধুমাত্র এই ক’টা লাইন বা বাক্যের জন্য বললে ভুল হবে। বইয়ের শুরু থেকেই গল্প যেভাবে এগিয়ে গেছে, যেভাবে গড়ে তোলা হয়েছে মানিকের চরিত্র, আমি পুরোপুরি গল্প-চরিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলাম। ফলস্বরূপ ওবায়েদ হকের লেখা নীল পাহাড় উপন্যাসটি পড়ার পুরোটা সময়জুড়ে অনুভূতির ঝড় সামলাতে হয়েছে। কোনো বই খুব বেশি ভালো লাগলে আমি হতবিহ্বল অবস্থায় পড়ে যাই। গুছিয়ে বা সাজিয়ে লেখার মতো শব্দ খুঁজে পাই না। এই মুহূর্তে ঠিক এমন অবস্থার মাঝেই আছি। কী লিখব, কোত্থেকে শুরু করব, ভেবে পাচ্ছি না। জীবনে খুব কমই এমন হয়েছে যে কোনো বইয়ের রিভিউ লিখতে গিয়ে হাত কাঁপছে, শঙ্কা বোধ হচ্ছে, ঠিক সাহস জুগিয়ে উঠতে পারছি না। এর কারণটাও অজানা নয়। লেখকের অসাধারণ অসামান্য লেখনশৈলীর বিপরীতে তার লেখার যথাযথ বর্ণনা, প্রশংসা বা মানবিচারের ক্ষমতা আমার মতো তুচ্ছ পাঠকের পক্ষে সম্ভব না। তারচেয়ে বরং একটা কাজ করা যাক। কিছু বিষয় এড়িয়ে যাই। যেমন বইয়ের মূল কাহিনি। এর বদলে ভিন্ন দুটি বিষয় নিয়ে আলাপ করি। নীল পাহাড় বইয়ের জনরা কী? রকমারিতে দেখলাম এটাকে বলা হয়েছে সমকালীন উপন্যাস। কিন্তু আমার পক্ষে বইটাকে শুধুমাত্র সমকালীন জনরায় ফেলা সম্ভব না। প্রথম দুই পাতায় ক্লাইম্যাক্স থেকে তুলে আনা যে দৃশ্যটির বর্ণনা পাওয়া যায়, তাতে রহস্য ও আতঙ্ক বিদ্যমান। শুরুটা মিস্ট্রি-সাসপেন্স দিয়ে হলেও পরবর্তী ধাপে লেখকের দারুণ রসবোধ আপনাকে হাসতে বাধ্য করবে। একটু রম্যের স্বাদ পেতে না পেতেই ঘটনা মোড় নেয় নিদারুণ বাস্তবতা, অন্যায়, অসহায়ত্ব এবং নির্মমতার দিকে। কাহিনি এগিয়ে যায়, যোগ হয়- রহস্য, রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, ভয়, দুঃসাহসিক অভিযানসহ অসংখ্য ঘটনা। এক হিসেবে দেখা গেলে, উপন্যাসটিকে নির্দিষ্ট কোনো জনরায় না ফেলা গেলেও এতে একাধিক জনরার উপস্থিতি মেলে। অবশ্য মোটা দাগে এটাকে ট্রাজেডী উপন্যাস বলা যেতে পারে। সহজ সাবলীল গতিতে গল্প এগুলেও শেষের দিকে বড় ধরনের টুইস্ট রয়েছে যা পাঠককে রীতিমতো চমকে দেবে। নীল পাহাড় উপন্যাসের সবচাইতে চমকপ্রদ বিষয় কোনটি? ভুল প্রশ্ন করে ফেললাম কী না বুঝতে পারছি না। এই উপন্যাসের সবকিছুই সুন্দর। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি একটি ব্যাপারে ভীষণরকম অবাক হয়েছি। বইয়ে চমৎকার এবং বিস্ময়কর মন্তাজ ব্যবহৃত হয়েছে। সাধারণত সিনেমা-সিরিজে এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু আমি এই প্রথম কোনো বইয়ে মন্তাজের বিষয়টি এত স্পষ্টভাবে দেখতে পেলাম। বোঝার সুবিধার্তে মন্তাজ কী সেটার একটু ধারণা দেই। ধরুন একটা ছবি, ঘটনা দৃশ্য বা বর্ণনা দেখে মনে নির্দিষ্ট কোনো ধারণা জাগলো। পাশাপাশি আরেকটা ছবি, ঘটনা দৃশ্য বা বর্ণনা দেখে মনে আরেকটা ধারণা জাগলো। এই দুটি ছবি, ঘটনা দৃশ্য বা বর্ণনা একত্রে জুড়ে দেওয়ার পর দেখা যায় মনে অন্য আরেকটা অর্থাৎ তৃতীয় ধারণা সৃষ্টি হয়, এটাই মন্তাজ। তৃতীয় ধারণাটি লেখক কোথাও উল্লেখ করেননি। কিন্তু ঠিকই অদৃশ্য অক্ষরে লেখা হয়েছে। আপনি সেটা ভাবনার দৃষ্টি দিয়ে পড়তে পারবেন। বদরুল সাহেবকে নিয়ে কেরামত হোটেলে খেতে যাওয়া, প্রায় নিঃস্ব মানুষ ডাঃ সুধীর দত্তের পরিত্যাক্ত বাড়িতে মানিকের আশ্রয়, কার্তিকের সঙ্গে পরিচয়সহ গোটা উপন্যাসে অসংখ্য দৃশ্যে লেখক চমৎকারভাবে মন্তাজ ফুটিয়ে তুলেছেন। যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। লেখার ইতি টানার পূর্বে বইয়ের একমাত্র নেগেটিভ পয়েন্টের কথা বলতে চাই! মনোমুগ্ধকর এই বইটি মাত্র ১২৮ পৃষ্ঠায় শেষ হয়ে যায়। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। এটিই একমাত্র নেগেটিভ পয়েন্ট! যা আমার পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। লেখক চাইলে বইটির কলেবর দ্বিগুণ-তিনগুণ বাড়াতে পারতেন। তাতে উপন্যাসের আমেজ বিন্দুমাত্র হের-ফের হতো না। জোর দিয়ে এ কথাটি বলার কারণ- আপনি যখন পড়বেন, তখন উপলব্ধি করতে পারবেন চরিত্র বা কাহিনি নয়, বইটির বিশেষত্ব প্রতিটি শব্দ এবং বাক্যে। এতটাই প্রাঞ্জল, নিখুঁত এবং মোহনীয় উপস্থাপন যে প্রতিটি ঘটনা চোখের সামনে ভাসতে থাকে। মাপা শব্দে এমন গভীর অনুভূতির প্রকাশ বাংলা সাহিত্যে খুব কমই রয়েছে। দু-একটা জায়গায় ঘটনা যেখানে নাটকীয়তা রূপ ধারণ করেছিল, সেটাকেও ভীষণ বাস্তবিক লাগে। আর এখানেই লেখকের সার্থকতা। ‘নীল পাহাড়’ উপন্যাসটিকে কালজয়ী সাহিত্য বলা যাবে কী না এমন তর্কে যাবো না। কিন্তু হলফ করে বলতে পারি, ওবায়েদ হকের কাছ থেকে কালজয়ী সাহিত্য আশা করা যায়। হতেও পারে ইতোমধ্যে তিনি তা রচনা করে ফেলেছেন। আগামী দিনগুলোতে সেটা আরও বেশি স্পষ্ট হবে। এর মাঝে সময় করে পড়ে নিতে পারেন ‘নীল পাহাড়’ বইটি। একরাশ মুগ্ধতা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। হ্যাপি রিডিং। যেহেতু আমি বইয়ের কাহিনি বর্ণনা করিনি, ফ্ল্যাপের অংশটি তুলে দিচ্ছি- “আশির দশকের মাঝামাঝি সময়। দেশ রাজনৈতিক উত্তেজনার ঝড় উঠার আগে ঝিমিয়ে পড়েছে, কিন্তু পাহাড়ে অবস্থা বিপরীত। ভয়, আতঙ্ক, উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে সেখানে। খুন, হত্যা, অপহরণ, ধর্ষন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। পাহাড়ী বাঙ্গালিদের দ্বন্দ্ব তখন চরমে। সরকারি কর্মকর্তাদের শাস্তি দেয়া হতো পাহাড়ে পোস্টিং দিয়ে। সে শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের চেয়ে কম ছিলো না। ম্যালেরিয়া কিংবা সাপের দংশন থেকে বেঁচে গেলেও উগ্রপন্থী সংগঠনগুলো থেকে বাঁচার উপায় ছিলো না। অনেকে চাকরিই ছেড়ে দিত। ঠিক সেসময় অনাথ আশ্রমে বড় হওয়া ডাক্তার মানিক মিত্রের পোস্টিং হয় বান্দরবানের দুর্গম এলাকায়। তার জীবনে আবর্তিত হতে থাকে অনেক কাঙ্খিত এবং অনাকাঙ্খিত ঘটনা। সে মুখোমুখি হয় সত্যের, হিংসার, ঘৃণার, ভালোবাসার, মৃত্যুর এবং নীল পাহাড়ের।” . বই: নীল পাহাড় লেখক: ওবায়েদ হক প্রচ্ছদ: রাজীব দত্ত ধরন: সমকালীন উপন্যাস প্রকাশনী: বায়ান্ন পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১২৮ মলাট মূল্য: ২৫২ টাকা . জামসেদুর রহমান সজীব ১১ অক্টোবর ২০২২
Was this review helpful to you?
or
লেখক ওবায়েদ হক এর বই আমি এর আগে পড়িনি, যদিও ওনার নাম ডাক শুনেছি। নীল পাহাড় উপন্যাসের রেটিং দেয়ার যোগ্যতা সম্ভবত আমার নেই। তাও গুডরিডস কোন একটা বইয়ের জন্য হাইয়েস্ট যে রেটিং নির্ধারিত করে রেখেছে, সেটাই দিলাম। কিন্তু সেটা কোনভাবেই আমার মুগ্ধতাকে প্রকাশ করতে পারছে না। 'নীল পাহাড়' পাহাড়ের গল্প, মায়ের মমতার আঁচল খুঁজে বেড়ানো অনাথ ডাঃ মানিকের গল্প, পাহাড়ের বুকে অসহায় পাহাড়ীদের গল্প। এই পাহাড়ই তার সন্তানদের দেয় বেঁচে থাকার রসদ, কিন্তু সেই পাহাড়কেই কাজে লাগিয়ে মানুষ নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে মানুষকে। সাধাসিধে সৎ ডাঃ মানিককে হাসপাতালের অনেকেই ভালোবাসলেও তার সততার কারণেই তার শত্রু আছে। সে কারণেই তার জায়গা হয় না ঢাকার হাসপাতালে, বদলি হয়ে যেতে হয় বান্দরবানের দূর্গম পাহাড়ের হাসপাতালে। যেখানে উপজাতি পাহাড়ীদের মনে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, সরকারী হাসপাতালের ডাক্তাররা বাঙালী, তাদের মূল কাজ হলো পাহাড়ীদের ওষুধ খাইয়ে তাদের বংশবৃদ্ধিতে বাধা দেয়া, যাতে তারা সংখ্যায় কমে যায় আর পাহাড় বাঙালীদের দখলে চলে যায়। সে কারণে পাহাড়ীদের রোগে শোকে ডাক্তারের ডাক পড়ে না, ডাক পড়ে কবিরাজের। আর এই দূর্গম এ পাহাড়ে থাকতে চায় না কোন ডাক্তার। কিন্তু ডাঃ মানিকের কাছে এটা কোন সমস্যা না, কারণ পিছুটানহীন অনাথ একটা মানুষের কাছে পাহাড়ও যা, সমতলও তা। সে উদ্দেশ্যেই পরিত্যক্ত হাসপাতালকে ঝেড়ে পুছে রোগীর অপেক্ষায় থাকে মানিক। কিন্তু পাহাড়ীরা ভুলেও এই হাসপাতালের দিকে আসে না। কিন্তু ঘটনাক্রমে এক উপজাতি ছেলেকে ম্যালেরিয়া থেকে বাঁচিয়ে সবার ভুল ভাঙিয়ে দেয় মানিক। এখন অনেকেই তার হাসপাতালে আসে আর তাদের চিকিৎসার যথাসাধ্য ব্যবস্থা করে মানিক। এরইমধ্যে একটা গূরুত্বপূর্ণ চিঠিতে ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় মানিক। যে চিঠির বক্তব্য সঠিক হলে হয়তো তার জীবনটাই পাল্টে যাবে। কিন্তু ঢাকা যাওয়া আর হয় না মানিকের, পথিমধ্যেই কিডন্যাপ হয় সে। না, খারাপ কোন দলের হাতে না, মানিককে ধরে নিয়ে যায় পাহাড়ী মানুষদের অধিকার আদায়ের একটি সংগঠন, তাদের নেতার চিকিৎসার জন্য। আর সেখানে গিয়েই মানিক পরিচিত হয় এক নতুন অনূভুতির সাথে, সেই সাথে জানে আরো না জানা অনেক কিছু। যেটা শুধু তার জীবন না, পাল্টে দেয় পাহাড়ীদের জীবনও। স্পয়লার দিয়ে দিলাম? মোটেও না, এমনকি আমি যদি পুরো ঘটনা বলেও দেই, তাও স্পয়লার হবে না। কারণটা লেখক নিজেই। এমনি শক্তিশালী লেখনী তার। বইয়ের প্রতিটা শব্দ যেন কথা বলছে, একটি শব্দও অতিরিক্ত মনে হয়নি আমার। যেখানে যতটুকু লেখা দরকার ঠিক ততটুকুই লিখেছেন। কিছু কিছু জায়গায় পেট ফেটে হাসি এসেছে, কিন্তু সেটা অতিরঞ্জিত কিছু নয়৷ অনেক জায়গায় স্রেফ কয়েকটা শব্দের বুননে আমার মনের গহীনে প্রবেশ করেছেন, চোখের কোনে জল এনেছেন। আমি জানিনা কতদিন পর আমি একটা জীবনধর্মী উপন্যাস পড়ে কাঁদলাম, মুগ্ধতায় অভিভূত হলাম। মুগ্ধতা শেয়ার করতে যারা বইটা পড়তে চাচ্ছেন তাদের জন্য নিচের প্যারাটা দিলাম- "অনাথদের বাবা-মা ভূতের মত তাদের ঘাড়ে চেপে বসে, তাদের কোন অস্তিত্ব নেই কিন্তু অস্বীকারও করা যায় না। তারা নেই কিন্তু তাদের নাম লেগে যায় আঠার মত। স্কুলে নিজের নাম লিখতে শেখানোর পরই বাবা-মায়ের নাম লেখা শেখানো হয়। মানিক খুব যত্ন করে রুল টানা খাতায় নিজের মাকে ফুটিয়ে তুললো, বাবাকেও অক্ষর দিয়ে এঁকে দিল খাতায়। বেশ কিছুক্ষণ স্পর্শ করলো আঙুল দিয়ে। রুল টানা খাতা থেকে কৃষ্ণ কুমার মিত্র এবং লক্ষীরাণী মিত্র যেন তার দিকে মায়া ভরা দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে। মানিকের নিজের কিছুই ছিলো না, কোন এক ধনীর নাদুসনুদুস পুত্রের ঢিলেঢালা জামা আর দড়ি দিয়ে বেঁধে হাফ প্যান্ট পড়ত, তার সবকিছুই ছিলো অন্য কারো উচ্ছিষ্ট। এই প্রথম তার নিজের কিছু হলো, তার বাবা-মা হলো।" অল্প কিছু কথায় কি সুন্দর অনূভুতির প্রকাশ! ওবায়েদ হক, সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া রইলো, আপনি যেন আরও হাজার বছর এই পৃথিবীর বুকে বাঁচেন। ইতিহাসের পাতার যেন আপনার নাম একজন কালজয়ী সাহিত্যিক হিসেবে ভেসে থাকে।
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো বই। আর দারুন সব বর্ণনা বইজুড়ে। লাভড্ ইট।
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারন একটা বই। এমন একটা বই আমার চোখে এতদিন কেনো পড়েনি সেটা ভেবেই দুঃখ পাচ্ছি।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগিতা পাহাড় কি কখনো নীল হয়? সবুজ হতে পারে, গাছ কেটে উজাড় করে ফেললে ধূসর হতে পারে, এমনকি মাটির কারণে ক্ষেত্র বিশেষে লালও হতে পারে, তাই বলে নীল! এমন পাহাড় কি কেউ কখনো দেখছে! হ্যা, একজন দেখেছেন। তার সাথে দেখিয়েছেন অগণিত পাঠককে। নিভৃতচারী লেখক ওবায়েদ হক “নীল পাহাড়” উপন্যাসটিতে পাঠকের সামনে তুলে এনেছেন এই অদ্ভুত দর্শনের পাহাড়টি। বর্তমান সময়ের তুমুল আলোচিত ও জনপ্রিয় লেখক ওবায়েদ হক তার সৃষ্টি দিয়ে পাঠক মহলে ইতিমধ্যে বেশ ভালো সাড়া ফেলেছেন। যদিও তাঁর শুরুটা হয় একটি গল্পগ্রন্থ দিয়ে, কিন্তু এরপরই তিনি পাঠকদের উপহার দেন স্বল্পপরিসরের অসাধারণ একটি উপন্যাস “নীল পাহাড়”। উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র একজন অনাথ ডাক্তার মানিক মিত্র। নোংরা পলিটিক্স ও ক্ষমতার অপব্যবহারে যার বদলী হয় বান্দরবনের থানচি উপজেলায়। সময়টা ছিলো ১৯৮৪ সাল। তখন পাহাড়ি ও বাঙ্গালীর দ্বন্দে পাহাড় সর্বদাই উত্তাল। মানিক মিত্র খুব সাধারণ একজন মানুষ, তার জীবনের একমাত্র আক্ষেপ ছিলো মায়ের ভালোবাসা না পাওয়া। মায়ের ভালোবাসা কি তা সে জানতো না। কারন- “মা এসেছিলো শ্লেটে ম এর পরে আকার দিয়ে” মানিক মায়ের ভালোবাসা অনুভব করতে চাইতো। তার সাথের কার্তিককে তাই সে একটি প্রস্তাব দেয়- “খাওয়ার সময় আমার ডাল আমি তোকেই দেবো, তুই আমাকে তোর মা দিস” ছোট্ট মানিকের কাছে তখন খাদ্যের চেয়েও মায়ের অভাবটাই বেশী প্রতিয়মান হয়, আর লেখক এই ছোট্ট একটি লাইন দিয়েই মানিকের মনের বিশাল আক্ষেপটা যথার্থ ভাবেই প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছেন। সবার উপরে মানুষ সত্য এই লক্ষে মানিক অশান্ত পাহাড়ের বাসিন্দাদের দিনরাত সেবা করে যাচ্ছে। পাহাড়িরা'ও মানিক ডাক্তারকে প্রবলভাবে বিশ্বাস করা শুরু করে। মানিক ডাক্তার হয়ে উঠে তাদের সকলের মাঝের একজন। ঠিক তখন মানিকের সাথে পরিচয় ঘটে ক্রাসিমার। ক্রাসিমা পাহাড়ের মানুষ হলেও খুব আধুনিক চিন্তাভাবনা ও চলাফেরায় সকলের নজর কাড়ে। এমনকি লেখকের বর্ণনা এতটাই পরিষ্কার ও নিখুঁত ছিলো যে পাঠক তাদের কল্পনায় ঠিকই এঁকে নেবে তাদের ক্রাসিমাকে। উপন্যাসটি এতটুকু পর্যন্ত খুব সুন্দর ভাবেই এগিয়েছে। হঠাৎ মানিক মিত্রের কাছে আসে একটি চিরকুট, আর সেই চিরকুট পেয়ে ঢাকা যাবার পথেই অপহৃত হয় সকলের প্রিয় ডাক্তার মানিক! কি ছিলো সেই চিরকুটে? আর কেনই বা অপহরণ করা হলো তাকে? ঠিক এই জায়গায় এসেই পাঠকের সকল মনোযোগ উপন্যাসটির গল্পে দৃঢ় ভাবে আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন লেখক। তারপরের ঘটনাগুলো ঝর্ণাধারার মতো কোনো প্রকার ভণিতা ছাড়াই বর্ণনা করে গেছেন ওবায়েদ হক। মানিক মিত্রের চোখেই লেখক বর্ণনা করেছেন সেই নীল পাহাড়ে'র। কেমন সেই নীল পাহাড়! কেনই বা সেই পাহাড়টি এত ব্যতিক্রম! কেনো সেটার প্রকাশে এত গোপনীয়তা! লেখক ওবায়েদ হক এর প্রকাশভঙ্গী অত্যন্ত পরিষ্কার । এই উপন্যাসটিকে তিনি হয়ত আরও বড় করতে পারতেন। অনেক ভনিতা করে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে হয়ত একটি ঢাউস সাইজের উপন্যাস লেখার ক্ষমতা উনার ছিলো। কিন্তু তিনি সে পথে না হেঁটে খুব সহজ ও সাবলীল ভঙ্গিতে পাঠককে দেখিয়েছেন এক আশ্চর্য জীবন, একটি পাহাড়ি জীবন ও নীল পাহাড়।
Was this review helpful to you?
or
ভাল রিভিউ শুনে কিনেছিলাম, লেখার স্টাইল পছন্দ হল না, পড়তে পারিনি পুরোটা।
Was this review helpful to you?
or
বইটা এক কথায় অসাধারণ। এই যুগের ঔপন্যাসিকদের মধ্যে ওবায়েদ হক সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল।
Was this review helpful to you?
or
ওবায়েদ হকের লেখনী শক্তি অসাধারণ। পাঠককে বইয়ের পাতায় ধরে রাখার অসাধারণ ক্ষমতা আছে তার। নীল পাহাড় বইটি এক বসায় শেষ করে উঠতে হবে, হাতে নীলে আর রাখতে ইচ্ছে করে না। কোথাও অপ্রয়োজনীয়ভাবে বইয়ের কলেবর বাড়ানো হয়নি। আশির দশকের উত্তাল পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে লেখা অসাধারণ এক উপন্যাস নীল পাহাড়। ছোট্ট করে রিভিউ দিতে গেলে বলব, অবশ্য পাঠ্য এটি। আর ওবায়েদ হক এই সময়ের সেরা লেখকদের একজন আমার মতে। তিনি পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগাতে থাকেন। আস্তে আস্তে পাতায় পাতায় উত্তর আসে। আবার প্রশ্ন জাগে। তাই প্রচন্ড আগ্রহে তার প্রতিটি লাইন পাঠক পড়ে যায়। যদিও খুব ছোট ছোট কিছু ভৌ বিষয়ে খটকা লেগেছে, তবে যেহেতু উপন্যাস, এগুলোকে গোনায় ধরা যাবে না। সবশেষে, অবশ্য পাঠ্য একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
বইটা পড়তে গিয়ে কোথাও হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে গেছে তো আবার কোথাও নিজের অজান্তেই চোখের কোণে জল এসে ভীড় জমিয়েছে। সবশেষে বলবো অসাধারন একটা বই। যারা এখনো পড়েন নি তারা বইটা সংগ্রহ করে হাতে ২/৩ ঘন্টা সময় নিয়ে বসে পড়ুন। ভালো লাগবে আশাকরি।




