User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
এই উপন্যাসে লেখক প্রেম, যুদ্ধ, বিরহ ও বিয়োগের কাহিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। বইটি পড়ার জন্য আমি রেকমেন্ড করছি।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ সুন্দর একটা বই। যারা রাজা, রাজ্য, যুদ্ধ, রণনীতি, রাজাদের বিভিন্ন কূটনীতি এসব ধরনের বই পছন্দ করেন, তাদের কাছে বইটা অনেক ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
সহজ সুন্দর সাবলীল লেখা... পড়ার সময় মনে হচ্ছিল যেন মুভি দেখছি! এজন্যই শেষটা অ্যান্টিক্লাইমেকটিক মনে হয়েছে! আরো কিছু চেয়েছিলাম! ওভার অল অনেক ভাল লেগেছে!
Was this review helpful to you?
or
Best THRILLER Novel to me...
Was this review helpful to you?
or
ধনুর্ধর- একটি ঐতিহাসিক থ্রিলার। যারা ভিন্ন রকম বইয়ের স্বাদ খুঁজছেন পড়তে পারেন বইটা। নিরাশ হবেন না। সাধারণত আমি একজন obsessive থ্রিলার প্রেমী। যদিও রাজা প্রজা যুদ্ধ কিংবা ঐতিহাসিক উপন্যাস জাতীয় কিছুই আমার পছন্দের মধ্যে পড়ে না কিন্তু তারপরও থ্রিলার পাঠকদের আসর গ্রুপে বইটার এতো উত্তেজনাপূর্ণ রিভিউ দেখে অবশেষে বইটা কিনে ফেলি। মাত্রই পড়ে শেষ করলাম। এক কথায় অসাধারণ একটি কাহিনী। সিদ্দিক আহমেদের লিখা এই প্রথম পড়লাম। দারুন ভালো লেগেছে আমার। গল্পটা এতো সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন লেখক যার প্রশংসা না করলেই না ♥️
Was this review helpful to you?
or
পাঞ্চালদেশের দুর্বৃত্ত রাজা প্রসেনজিৎ আক্রমন করে বসে কৌশল রাজ্য। বিপদের সময় নিজের হঠকারি সিদ্ধান্তে দক্ষ্য সেনাপতি সুধামাকে কে সরিয়ে দিয়ে নিজের বিপদ আরো নিকটতম করলেন কৌশল রাজা। আক্রমনের মুখে টিকতে না পেরে রাজ্য ছেড়ে পালাতে বাধ্য হলেন। কিন্তু পালানোর সময় রাজপুত্র সহ পালালেন একপথে আর অনীন্দ সুন্দরি রাজকন্যাকে পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিয়ে রাজ্য পার করে দেবার দায়িত্ব দিলেন সেনাপতি সুধামার ঔরসজাত পুত্র রুদ্রদামাকে। তীর চালনায় সুনিপুন ও অভূতপূর্ব ধর্ণূকৌশলি রুদ্রদামা অসিম সাহসিকতা ও বুদ্ধি প্রয়োগ করে পাঞ্চালরাজের পাঠানো একের পর এক আক্রমন রুখে দেয়। রুদ্রর দক্ষতায় মুগ্ধ হয় রাজকন্যা। কৌশলরাজ্যের সিমান্তে পৌছাবার পর সাথে থাকা আদেশ পত্র খুলে হতবাক হয়ে যায় রুদ্র। যে রাজকন্যার সুরক্ষায় এত প্রাননাশ হলো, এত রক্ত ঝড়লো, যাকে অক্ষত অবস্থায় নিরাপদে পৌছে দেবার কথা রুদ্রর সেই রাজকন্যাকেই সীমান্তে হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন স্বয়ং সম্রাট। একদিকে রাজ্যাদেশ অনুযায়ি কর্তব্য পালন অন্যদিকে রাজকন্যার প্রতি রুদ্রদামার ভালোবাসা। কোনদিকে যাবে রুদ্র। এইদিকে কৌশলে বারংবার শত্রুর চোখে ধোকা দেবার পরও কিভাবে যেন শত্রুসেনা বার বার তাদের অবস্থানের খোঁজ পেয়ে যাচ্ছে। তবে কি তার সৈন্যদলেই লুকিয়ে আছে বন্ধুবেশি কোন গুপ্তচর? ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের তখনও অনেক বাকি। কর্তব্য পালনে একসময় রুদ্রকে মুখোমুখি হতে হয় নিজেরই শিক্ষাগুরু কৌলিয়ের সামনে। যার শিক্ষায় আজকের ধনূর্ধর এই রুদ্র, আজ কিনা তারই প্রাণ নিতে হবে তকে। এ মহা ধর্মসংকট। রুদ্র কি পারবে এমন কঠিন পরীক্ষায় উতরোতে। বইটির ভূমিকায় লেখক লিখেছেন গল্পটি তিনি নাকি প্রথমে সিনেমার স্ক্রিপ্ট হিসেবে লিখেছিলেন। লেখার পর সেটা নিয়ে দৌড়েছেন নামিদামী পরিচালকদের পিছনেও। সবাই বলেছিল এই ধরনের সিনেমা আমাদের দেশে বানানো সম্ভব না। তারপর বহুদিন পরে তিনি এটাকে উপন্যাসে রূপ দেন। ভূমিকাটা পড়ার পর মনে হয়েছিল লেখক মনে হয় বাড়িয়ে বলেছেন। কিন্তু বইটা যখন শেষ করলাম বুঝতে পারলাম লেখক তিল পরিমান বানিয়ে বলেননি। আসলেই তিনি একটা মাস্টারপিস তৈরি করে ফেলেছেন। সত্যিই এই গল্পটাকে যদি সিনেমায় নেয়া যায় তাহলে সেই সিনেমা অনায়াসে বলিউডের বাহুবলির মতো সিনেমাকে টেক্কা দিতে পারবে। গল্পের নায়কের রণকৌশল, সাহসীকতা ও দক্ষতায় পাঠক মুগ্ধ হতে বাধ্য। রাজঘরানার কুটকৌশল ও তার উথানপতনের যে চিত্র কাহিনীতে উঠে এসেছে সেটাও বেশ চমৎকার। গল্পের প্রত্যেকটা চরিত্রের চরিত্রায়নে লেখক তার সৃষ্টিশিলতার ছাপ রেখেছেন। সিদ্দিক আহমেদ এর দশগ্রিব বইটি প্রথম পড়েছিলাম। সেটা পড়েই তার ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ধণুর্ধর পড়ার পর তার লেখনির প্রতি সম্মান আরো বেড়ে গেল। পয়সা উসুল করা একটা বই। ব্যাক্তিগত রেটিং ৯/১০।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ থ্রিলার।
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারন একটা ঐতিহাসিক থ্রীলার। হারিয়ে যাওয়া এক সময়ের ইতিহাস উঠে এসেছে এই বইটাতে। পাঞ্চাল আর কোশল নামক দুই রাজ্যের মধ্যকার যুদ্ধ আর তাকে কেন্দ্র করে দুই রাজ্যের মানুষদের পরিণতি, কূটকৌশল, ছলচাতুরী, যুদ্ধচালনা কিংবা বুদ্ধিমত্তা খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। বইয়ের প্রধান চরিত্র রুদ্রদামা কোশলের প্রধান সেনাপতির পুত্র যে কিনা ধনুক যুদ্ধে অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। সেখান থেকেই আসলে বইটার নামকরণটা এসেছে। রুদ্রদামার সাহসীকতা আর বৃদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে পুরো বই জুড়েই। যুদ্ধের বর্ণনা গুলো খুবই অসাধারন ছিলো। লেখকের লেখার হাতের প্রশংসা করতেই হবে। ধনুক বা তলোয়ারের যুদ্ধগুলো এতো সুন্দর করে লিখেছেন যে মনে হচ্ছিলো বাস্তবিকভাবেই আমার সামনে ঘটছে। সবকিছু মিলিয়ে দারুন একটা এতিহাসিক থ্রীলার বলা যায় বইটাকে। বইঃ- ধনুর্ধর লেখকঃ- সিদ্দিক আহমেদ প্রকাশনীঃ- বাতিঘর
Was this review helpful to you?
or
ভালো লেগেছে। গল্প বলার ভঙ্গিমা সুন্দর।
Was this review helpful to you?
or
এটা কি নিয়ে বই?
Was this review helpful to you?
or
মাঝে মাঝে কিছু বই পড়ে এতটাই ঘোরমিশ্রিত ভালোলাগা কাজ করে যে চাইলেও সেই বই সম্পর্কে মনমতো কিছু বলা হয়ে উঠে না। 'ধনুর্ধর' পড়ে ঠিক তেমনই অনুভূতি হচ্ছে।
Was this review helpful to you?
or
কাহিনী সংক্ষেপ:গল্পের পটভূমি গৌতম বুদ্ধের জন্মেরও ২৬৫ বছর আগে। তখন উপমহাদেশের কোশল আর পাঞ্চাল রাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। কোশল রাজের আবাস রাজধানী শ্রাবস্তীতে। ভীষণ এক যুদ্ধও হয়েছিল দুই রাজ্যের মধ্যে। ধনুর্ধর সেই হারানো সময়েরই উপাখ্যান। পরাভূত রাজ্য, উন্নাসিক রাজা, বিগ্রহের দামা, মানসিক দ্বন্দ্ব কিংবা আমূলে বিশ্বাসভঙ্গের এক বৈচিত্রময় কাহিনী।যুদ্ধে কোশলরাজ পরাজিত হয়ে বংশরক্ষায় তিনদিকে তিনদল নিয়ে যাত্রা করেন। এক দলে মহারাজা স্বয়ং, আরেক দলে যুবরাজ অভিরাজা এবং তৃতীয় দলে রাজকন্যা মল্লিকা।রাজকন্যা মল্লিকার নিরাপওার জন্য এক মহাশক্তিশালী ধনুর্বিদ রুদ্রদামা এবং ৫০জনের একটি ছোট্ট দল।এদিকে পান্চালরাজ প্রসেনজিৎ এর পাঠানো সৈন্য আসছে রাজকন্যা মল্লিকাকে হরন করতে। পাঠ প্রতিক্রিয়া:আমি বরাবরই ঐতিহাসিক উপন্যাস পড়তে পছন্দ করি।বিশেষ করে এমন ঐতিহাসিক উপন্যাস যেখানে একশন যুদ্ধবিগ্রহ আছে।অবশেষে ধনুর্ধর পড়ে মনে হল মনমত একটা ঐতিহাসিক উপন্যাস পড়লাম।আমার পড়া সবচেয়ে যুদ্ধময় ঐতিহাসিক কাহিনী এটা।বইটির অর্ধেক অংশেই যুদ্ধের সিকোয়েন্স।অনেক বিস্তারিতভাবে যুদ্ধের বর্ননা দেওয়া হয়েছে যা পড়ে সত্যিই থ্রিল অনুভব করেছি।এছাড়াও বইটাতে সেকালের রাজনীতি ও দেখতে পাওয়া যায় সঙ্গে প্রাসাদ ষড়যন্ত্র এবং বিশ্বাসঘাতকতা।বই এ একটা রোমান্টিক অ্যাংগেল ও আছে।বৌদ্ধদের ধর্মিয় দর্শন নিয়েও একটা অংশ আছে।মোট কথা বইটা একটা কমপ্লিট প্যাকেজ একের ভেতর সব।তবে অনেক সময় দেখা যায় প্লট দুর্দান্ত হওয়া সত্বেও শুধুমাএ লেখনী ভাল না হওয়ার জন্য পড়তে ভাল লাগে না।সৌভাগ্যবশত এক্ষেএে তা হয়নি লেখকের লেখনী সত্যিই অসাধারন।তবে আমার মনে হলো এই উপন্যাস টি লেখক খানিকটা বাহুবলী মুভি থেকে inspired হয়ে লিখেছেন।এমন নয় যে লেখক ডাইরেক্ট বাহবলী মুভি থেকে কপি করেছেন তবে বাহবলীর সাথে খুবই সুক্ষ একটা মিল যেন আছে বা বলা যায় বাহবলী ফিল আছে পাঠক খুঁটিয়ে পড়লেই বিষয়টা বুঝতে পারবেন বলে আমার ধারণা।বিশেষ করে পাহাড় থেকে লাফিয়ে পড়ার দৃশ্যটা আর যুদ্ধের অ্যাকশন গুলিতে সুক্ষভাবে একটা বাহুবলী ফিল।তবে উপন্যাস টা অবশ্যই বাহুবলী নয় ধনুর্ধর।লেখক অত্যন্ত ইউনিক এবং সুন্দর একটা ঐতিহাসিক উপন্যাস আমাদের উপহার দিয়েছেন এটুকু বলতে পারি।আমি অন্তত এত সুন্দর ঐতিহাসিক উপন্যাস আগে পড়িনি।
Was this review helpful to you?
or
ধনুর্ধর অসাধারণ মাইথলজিকাল উপন্যাস। লেখকের বর্ননায় সব যেন প্রানবন্ত ছিল।
Was this review helpful to you?
or
আগেই বলে নেই আমি ঐতিহাসিক কাহিনীর খুব ভক্ত, এবং প্রাচীন বাংলা ও ভারত উপমহাদেশের ইতিহাস নিয়ে প্রায়ই ঘাটাঘাটি করা হয়, তাই এই বইটির কাহিনীসংক্ষেপ পড়েই ভাবলাম এটা এখনি না পড়লেই হচ্ছে না। মাত্র শেষ করলাম বইটা, আর বসে গেলাম রিভিউ লিখতে। “ধনুর্ধর” এর কাহিনী প্রাচীন কোশল-পাঞ্চাল যুদ্ধের পটভূমিতে রচিত। তাই এখানে আমরা পরিচিত হই বিভিন্ন ঐতিহাসিক চরিত্রদের সাথে- যার একদিকে আছেন কোশলের রাজা উদ্বাহু, যুবরাজ অভিরাজা, অমাত্য সায়াহু, সেনাপতি সুধামা, আরেকদিকে পাঞ্চালের রাজা প্রসেনজিত আর তার সহযোগীরা। কিন্তু এঁরা কেউই এই কাহিনীর নায়ক নন, বরং এক সদ্যযুবক, পারঙ্গম ধনুর্ধর রুদ্রদামাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে এই কাহিনী। প্রথমত বলতে গেলে বইটি আমার অনেক ভাল লেগেছে, কিন্তু আমি বেশ ক্রিটিক্যাল পাঠক, তাই আমি এখানে প্রশংসা এবং সমালোচনা দুটোই করবো। প্রথমেই বলে নিই ভাললাগার দিকগুলি। লেখক প্রাচীন তাম্রযুগের সংস্কৃতি, ভাষা, ইতিহাস নিয়ে অনেক ঘাটাঘাটি করেছেন, সেটা প্রথম অধ্যায় থেকেই বোঝা যায়, তাই কোশল,পাঞ্চাল, উদ্বাহু, যুবরাজ অভিরাজা, অমাত্য সায়াহু, সেনাপতি সুধামা, আরেকদিকে পাঞ্চালের রাজা প্রসেনজিত, রুদ্রদামা, গুরু কৌলিয় প্রত্যেকেই ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠেছেন। তৎকালীন রাজনীতি আর প্রথাও খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। বইয়ের প্রায় অর্ধেকটা জুড়ে আমি যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম সেই যুগেই। আর সেই সময়ের অস্রসমূহের বর্ণনাও খুবই সুন্দর, বিশেষ করে ধনুর্বিদ্যা আর অসিচালনার কৌশল নিয়ে লেখক ভালই ঘেঁটেছেন বোঝা যায়। আর চরিত্রগুলোও জীবন্ত, সংলাপ গঠনও সেই সময়ের কথাই মনে করে দেয়, সাথে আছে প্রাকৃতিক বর্ণনা। চরিত্রের কথা বলতে গেলে রাজা প্রসেনজিতকে আমার অসাধারন লেগেছে- এমন বিপরীতমুখী চরিত্র কাহিনীকে দিয়েছে অন্য মাত্রা। এবার আসি সমালোচনার দিকে। প্রথমত, আমার কাছে কাহিনীর প্রেক্ষাপট অনুযায়ী, ব্যাপ্তি অনেক কম লেগেছে। প্রথম অর্ধেককে কাহিনী সুন্দরভাবে আগায়, প্রতিটি চরিত্র বিশেষ করে রুদ্রদামা, রাজা প্রসেনজিত, অমাত্য সায়াহুর মনের ভেতরের উত্থান-পতন আর রাজনীতির কূটকৌশল সবে যখন জানতে শুরু করি, তখনই কাহিনীর গতি দ্রুত হওয়া শুরু করে। কিন্তু আমি কাহিনী নিয়ে কোন সমালোচনা করব না, কারন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কাহিনী ছিল টানটান। আমার প্রধান সমালোচনা চরিত্র চিত্রণ আর অপচয়িত সম্ভাবনা নিয়ে। শেষের দিকে চরিত্রদের ভাবনা সম্পর্কে খুব কমই আলোকপাত করা হয়, তাই রুদ্রদামা আপন হতে গিয়েও হয় না, রাজা প্রসেনজিত, অমাত্য সায়াহুর মধ্যে চরিত্র হিসেবে অপার সম্ভাবনা থাকলেও কেমন যেন ফিকে লাগে। লেখক যুদ্ধের বর্ণনার উপরে যেমন জোর দিয়েছেন, তেমনই চরিত্রদের মনের ভেতরের উত্থান-পতন বর্ণনার উপরে তেমনই জোর দিতেন, বিশেষ করে রুদ্রদামার মনের ভেতরের দ্বিধা-দন্দ, রাজকুমারী মল্লিকার প্রতি আকর্ষণ, পিতার প্রতি তার মিশ্র মনোভাব, আরও গভীর, আরও বেশি আবেগী, আরো সময় নিয়ে লিখতেন, তাইলে ভাল হত। সেই জন্য রুদ্রদামার মধ্যে এক আকর্ষণীয় প্রধান চরিত্র হবার সব গুন থাকলেও সে আমাকে বেশি টানে না। তাই তার দুঃখের বর্ণনা পড়ে আমরা দুঃখিত হই, কিন্তু তার জন্য মন তেমনভাবে কাঁদে না, তার দ্বিধা-দন্দ আমরা তার সাথে সেভাবে অনুভব করি না। আরেকটি চরিত্র, যাকে লেখক একেবারেই গুরুত্ব দেন নাই, সে হল রাজকুমারী মল্লিকা, অথচ তার চরিত্রের ব্যাপ্তি আরেকটু বেশি হলে, তা রুদ্রদামার গল্পকে আরও গভীরতা দিতে পারত। রোমান্সটা যেন শুরু হতে গিয়েও, মনে দাগ কাটতে পারলনা তেমন, অথচ গল্পের শেষ তো এরই উপরে দাঁড়িয়ে। তাই শেষে গিয়ে আমরা দুঃখিত হই, কিন্তু কাঁদি না রুদ্রদামার সাথে। আমি জানি না কেন লেখক বইয়ের কলেবর এত ছোট রাখলেন, কিন্তু কমপক্ষে ৫০০ পৃষ্ঠা ব্যাপ্তি হলে মোটামুটি কাহিনীর জন্য যথেষ্ট পরিসর পাওয়া যেত, আর লেখক চরিত্রদের মনের ভেতরের ভাব বর্ণনার উপরে আরেকটু জোর দিতেন তাহলে একটা অসাধারণ বই হতে পারত এটা। তারপরেও লেখকের লেখনী সাবলীল ও সুখপাঠ্য, তাই নিমিষেই শেষ হয়ে যায়, এই কারনে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও একে ৪/৫ দিলাম। আর পেন্সিলস্কেচের আদলে করা প্রচ্ছদটা অসাধারণ, কিন্তু বইয়ের নামটা একটু অন্য রংয়ের হলে ভাল হত, বিশেষ করে স্পাইনের লেখাটা। শেলফে রাখলে দূর থেকে সহজে চোখে পড়ে না। শুনেছি এর নাকি সিকুয়েল হবে, আশা করি লেখক পরবর্তী বইয়ে কাহিনীর পাশাপাশি চরিত্রদের অভ্যন্তরীণ মনের ভাব বর্ণনাতেও জোর দিবেন। এতে বইয়ের কলেবর বড় হয় হোক, সুখপাঠ্য হলে হাজার পৃষ্ঠার বইও নিমিষেই শেষ হয়ে যায়।
Was this review helpful to you?
or
বই: ধনুর্ধর জনরা: ঐতিহাসিক থ্রিলার লেখা: সিদ্দিক আহমেদ প্রকাশনী : বাতিঘর প্রকাশনী প্রথম প্রকাশ : অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০ পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২৮৮ মুদ্রিত মূল্য : ৩২০ টাকা রেটিং: ৮.৫/১০ গল্পবাঁক --------- গুরুদক্ষিণা হিসেবে নিজের সবচেয়ে প্রিয় শিষ্য রুদ্রদামার কাছে অদ্ভুত এক জিনিস চাইলেন ভূভারতের শ্রেষ্ঠ ধনুর্ধর আচার্য কৌলিয় । বলেছিলেন, শত্রু মিত্র যে ই যুদ্ধক্ষেত্রে সামনে আসুক না কেন রুদ্র যেন তাকে কোনো দয়া না দেখায় । পূর্ণশক্তি দিয়ে শেষ অবধি যেন লড়ে যায় । গুরু হিসেবে এই প্রতিজ্ঞা শিষ্যের কাছে তার কাম্য । গুরুর হাতে হাত রেখে শপথ করেছিলো সেদিন রুদ্র, শত্রু মিত্র যার বিরুদ্ধেই সে অস্ত্র ধারণ করুক না কেন সে রণক্ষেত্রে তার সর্বোচ্চ দিয়ে লড়াই করবে । এরপর আচার্য কৌলিয় পরম স্নেহে শিষ্যের হাতে তুলে দেয় তার প্রিয় শাঙ্গ ধনুক । কোশল- শাক্য বংস শাসিত এক রাজ্য । রাজা বৃদ্ধ উদ্বাহু । সবদিক থেকে যখন ভালো অবস্থা বিরাজ করছে রাজ্যে তখনই দেখা দিল দূর্যোগের ঘনঘটা । অভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে রাজ্যের সবথেকে সাহসী যোদ্ধা, রাজ্যের মহাপ্রতিহারক এবং রুদ্রদামার বাবা সুধামাকে তার পদ থেকে পদত্যাগ করান রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী - সারায়ু । পাঞ্চাল- কোশলের গা ঘেষা আরেকটা রাজ্য । রাজার নাম প্রসেনজিত । অত্যন্ত ধূর্ত এই রাজার শ্যেনদৃষ্টি পড়ে কোশল রাজ্যের ওপর । কৌশলে তিনি একের পর এক আক্রমণ সাজাতে থাকেন কোশলের বিরুদ্ধে । এরইমধ্যে রুদ্রদামা অনাকাঙ্খিত ভাবে জড়িয়ে পড়ে কোশল-পাঞ্চাল লড়াইয়ে । কোশলের অন্তঃপুরের প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয় তাকে । কিন্তু সে একা কি পারবে কোশল বাঁচাতে? রক্ষা করতে পারবে রূপবতী রাজকুমারী মল্লিকাকে? জানতে হলে পড়তে হবে বইটা । আমার কথা ------------ সিদ্দিক আহমেদের লেখা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই । যারা 'দশগ্রীব' পড়েছেন তারা জানেন কতটা গুণী লেখক তিনি । 'দশগ্রীব' তাকে চিনিয়েছে, 'ধনুর্ধর' তাকে পূর্ণতা দিয়েছে । ইতিহাস ভালো কিংবা মন্দ লাগাটা অনেকাংশে স্টোরি টেলিং এর ওপর নির্ভর করে । আর এখানে সিদ্দিক ভাই প্রায় শতভাগ সফল । ২৮৮ পৃষ্ঠার বইটা কোনো জড়তা ছাড়া আমি এক বসাতেই শেষ করতে পেরেছি । যদিও 'দশগ্রীব'এর কারণে লেখকের লেখার প্রতি অতিরিক্ত একটা আকর্ষণ আমার ছিল । আগে ইতিহাস পড়তাম না, আর এখন রকমারি চষে ঐতিহাসিক উপন্যাস বের করি । আর এজন্য আমি লেখকের কাছে কৃতজ্ঞ । ঢাউস সাইজের বইটা এত জলদি শেষ করার পেছনে সেই ভালোলাগা হয়তো খানিকটা কাজ করেছে । এবং সত্যি বলতে বইটা আমায় হতাশ করেনি । বইয়ের ভালো-মন্দ ------------------ ● ভালো দিক ধনুর্ধর বইয়ের ভালো লাগার দিকগুলোর মধ্যে সবার প্রথমেই নজর কাড়ে এর প্রচ্ছদ । ধন্যবাদ ফরিদুর রহমান রাজীবকে এত সুন্দর প্রচ্ছদ উপহার দেওয়ার জন্য । এরপর ভালো লাগার কথা বলতে গেলে বলতে হয় স্টোরির কথা । বুদ্ধের জন্মেরও ২৬৫ বছর আগে গড়িয়েছে গল্প । বোঝাই যাচ্ছে লেখার পেছনে ভালো শ্রম লেখককে দিতে হয়েছে । কেননা এত পুরোনো ইতিহাস ঘাঁটা সহজ কথা নয় । সেজন্য অনেক রিসার্চ তাকে করতে হয়েছে । এরপর বলবো স্টোরি রিদম বা গল্পের ছন্দের কথা । ঐতিহাসিক থ্রিলারগুলোর স্টোরি একটু স্লো হলেই ভালো লাগে আমার কাছে । কেননা ইতিহাস টা ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ খোলাসা করে তারপর গল্প এগোতে হয় লেখককে । নয়তো পাঠকের মনে গল্পের চরিত্রগুলো নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে যায় । তাই ঐতিহাসিক থ্রিলারগুলোর স্টোরি একটু স্লো হলেই ভালো লাগে আমার কাছে । 'ধনুর্ধর' বইয়ে তার খুব একটা ব্যতিক্রম হয়নি । লেখক প্রথমে প্রত্যেকটা চরিত্র পাঠকের মনে গেঁথে দিয়ে তারপর গল্পটা এগিয়েছেন । এটা বেশ ভালো লেগেছে আমার । এরপর বলবো আমার পছন্দের ক্যারেক্টার বা গল্পের ভিলেন প্রসেনজিতের কথা । সত্যি বলতে লেখক এতটা নিপুণভাবে এবং বড় পরিসরে প্রসেনজিত চরিত্রটা খোলাসা করেছেন যে আমার তাকে একবারো ভিলেন বলে মনেই হয়নি । একজন যোগ্য শাসকের বাহুর আগে মস্তিষ্ক না চললে রাজ্যরক্ষা কঠিন হয়ে পড়ে । এছাড়া টুকটাক ভালো লাগার কথা বলতে গেলে বইয়ের বাইন্ডিং বেশ শক্তপোক্ত ই মনে হয়েছে আমার, পৃষ্ঠাও ভালো । ফন্ট যথেষ্ট স্পষ্ট । ● মন্দ দিক 'ধনুর্ধর' বইয়ে মন্দ লাগার দিকগুলোর কথা বলতে গেলে বলতে হয় প্রচ্ছদে এর নামের ফন্ট টা অস্পষ্ট । এরপর যে খারাপ লাগার দিকের কথা বলবো সেটা আমি বইমেলার শুরুতে কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম । 'ধনুর্ধর' প্রকাশিত হয় মেলার একদম শেষ দিকে । 'কবে প্রকাশিত হবে'- এই প্রশ্নটা সিদ্দিক ভাইকে করে বহুবার ত্যক্ত করেছি । আমি একটু শঙ্কায় ছিলাম যে বইটা তাড়াহুড়ো করে প্রকাশ করার ফলে প্রিন্টিং মিস্টেক না থেকে যায় । এবং ঠিক সেটাই হয়েছে । বেশ কিছু প্রিন্টিং মিসটেক চোখে পড়েছে । এছাড়া সুধামার এক সহস্র সৈন্য নিয়ে যে যুদ্ধটা ছিল ওটার বিশদ একটা বর্ণনা দেওয়া উচিত ছিল । সুধামার ক্যারেক্টারটা যতটা স্ট্রং ততটা স্ট্রংভাবে স্টোরি তে আসেনি । সবশেষে বলবো 'ধনুর্ধর' নিঃসন্দেহে লেখকের করা সেরা কাজগুলোর একটি । আর হ্যা, ধনুর্ধরের সিক্যুয়েল পরবর্তীতে আসবে । সেই অপেক্ষায় থাকবো । সিদ্দিক ভাইয়ের কাছে দশগ্রীবের সিক্যুয়েলও জমা পড়ে গেছে । 'ধনুর্ধর' নিয়ে দুটো হলো । অপেক্ষায় রইলাম।