
User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
দারুণ উপভোগ্য উপন্যাস
Was this review helpful to you?
or
#টিপিএ_বেনজিন #টিপিএ_বি_এম_পারভেজ_রানা_বইরিভিউ কেইগো হিগাশিনোর সাইকোলজিক্যাল ক্রাইম থ্রিলারে আমার দেখা এ যুগের অন্যতম সেরা একজন লেখক। কেইগো হিগাশিনোর “জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান” একটি থ্রিলার উপন্যাস হলেও এটি প্রচলিত গোয়েন্দা গল্পের থেকে আলাদা। এই বইটি ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা একটি জীবনের মতো, যেখানে রহস্যের সুতাগুলো হাজারো চরিত্রের জীবন ও তাদের সম্পর্কের মাধ্যমে বোনা হয়েছে। ৫৬০ পৃষ্ঠার এই দীর্ঘ উপন্যাসটি পড়তে গেলে পাঠককে ধৈর্য ধরতে হবে, কারণ এর গতি কখনো কখনো একটু ধীর মনে হতে পারে। তবে যারা গভীর চরিত্রায়ন এবং মানসিক উত্তেজনা পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়ে উঠবে। Higashino is known as the prince of detective fiction in Japanese literature, but in this novel he seems to have reached a new height. He has done the work of unraveling the mystery that has been entangled in the wheel of time for twenty years through patience, subtlety and deep psychological understanding. তার কাগা সিরিজ পড়ে আমি তার ভক্ত হয়েছি। এই বইটিও আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। ⛺ উপন্যাসের কাহিনী সংক্ষেপ গল্পের শুরু ওসাকার পরিত্যক্ত এক বিল্ডিংয়ে পাওয়া লাশ দিয়ে, যা দ্রুত একটি জটিল খুনের কাহিনীতে পরিণত হয়। ভিক্টিম ইউসুকে কিরিহারা একজন পনশপের মালিক, যাঁর কাছে হত্যাকাণ্ডের সময় এক মিলিয়ন ইয়েন ছিল। পুলিশ ও ডিটেকটিভ সাসাগাকি এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নামেন, কিন্তু দ্রুত কোনো স্পষ্ট তথ্য পায় না। সন্দেহভাজন একজন ব্যক্তি মারা যাওয়ার কারণে তদন্ত থমকে যায়, আর খুনের রহস্য অন্ধকারে ঢাকা পড়ে। এরপর সময় কাটতে থাকে, চরিত্রগুলো বড় হতে থাকে এবং গল্প ধীরে ধীরে টোকিওতে স্থানান্তরিত হয়। এই দীর্ঘসময় ধরে সাসাগাকি অবসর নিয়েও সেই রহস্যের পিছু ছাড়েন না। তিনিই মূল চরিত্র হলেও বইয়ে অনেক ছোট বড় চরিত্র প্রবেশ করে, যারা গল্পের বিভিন্ন দিককে জোরদার করে। ইউসুকে কিরিহারার ছেলে রিও ও ইউকিহোর মতো চরিত্রের জীবনযাত্রা, তাদের সম্পর্ক এবং তাদের চারপাশের মানুষদের গল্প বইটির প্রাণ। ২০ বছর সময়কে পেছনে রেখে এই চরিত্রগুলোতে পাঠকের এক ধরনের আবেগ ও আগ্রহ জন্মায়। তদন্তের পরিধি বাড়তে বাড়তে চলে যায় দুই কিশোর–কিশোরীর দিকে রিওজি, নিহত ব্যবসায়ীর ছেলে, আর ইউকি হো, একই স্কুলের মেয়ে। প্রথম দেখায় তাদের সংযোগ তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে না হলেও সাসাগাকির নজর এড়িয়ে যায় না যে এই দুজনের মধ্যে এক অদ্ভুত নীরব সম্পর্ক আছে। কিন্তু মামলাটি অমীমাংসিত অবস্থায় থেকেই বন্ধ হয়ে যায়, যেন সময়ই তদন্তের সবচেয়ে বড় শত্রু। তারপর শুরু হয় গল্পের দ্বিতীয় যাত্রা যেখানে সময় ক্রমে এগোয়, কিন্তু হত্যাকাণ্ডের ছায়া থেকে যায়। আমরা বছর বছর এগিয়ে যাই, কিন্তু গল্পের বয়ান বদলে যায়, প্রতিবার নতুন চরিত্র এসে আমাদের চোখ খুলে দেয় অন্য দিকের দিকে। কখনও সেটা রিওজির সহপাঠী, কখনও ইউকি হোর সহকর্মী, কখনও ব্যবসায়িক লেনদেনের সঙ্গী প্রতিটি মানুষ তাদের জীবনের কোনো না কোনো টুকরো দেখে গেছে, কিন্তু পুরো ছবিটা কেউই জানে না। রিওজি আর ইউকি হো দুজনই নিজেদের মতো করে জীবনে এগোয়। রিওজি নীরবে ছায়ায় মিলিয়ে যেতে চায়, কিন্তু তার চারপাশে যেন সবসময় এক অদৃশ্য জাল বোনা থাকে। অন্যদিকে ইউকি হো ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে মার্জিত, সফল, এবং সবাইকে মুগ্ধ করা এক নারী যেন অতীতের কোনও আঁচ তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। তবু তাদের জীবনের গতিপথে কোথাও না কোথাও আছে সেই পুরোনো ঘটনার অদৃশ্য সুতো। গোয়েন্দা সাসাগাকি, তিনি এক প্রকার গল্পের নেপথ্য ছায়া। বছরের পর বছর কেটে গেলেও তার মনে থাকে সেই এক প্রশ্ন: ওই খুনের আসল সত্যি কী? তিনি জানেন, সময় যতই পেরোক, সত্যি হারিয়ে যায় না, শুধু গভীরভাবে লুকিয়ে পড়ে। কাহিনী আমাদের ঘুরিয়ে নিয়ে যায় ওসাকা থেকে টোকিও, ছোট প্রাদেশিক শহরের জনশূন্য রাস্তাগুলো থেকে উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ী মহলের চকচকে দুনিয়ায়। প্রতিটি স্থান, প্রতিটি সময় যেন আরেকটি ক্লু, কিন্তু পাঠকও জানে, সব উত্তর একসঙ্গে মিলবে না। ধৈর্য ধরতে হবে, কারণ হিগাশিনো ধীরে ধীরে সব সুতো এক জায়গায় বাঁধবেন, যেখানে অতীতের অপরাধ আর বর্তমানের জীবন মুখোমুখি দাঁড়াবে। উপন্যাসের শেষটা কেমন হতে পারে এটা পড়তে পড়তে আমিও ভেবেছিলাম কিন্তু শেষটা আমি মেলাতে পারিনি। শেষটা কেমন হবে জানতে পড়ে ফেলুন বইটি। ⛺ পারসোনাল পাঠ প্রতিক্রিয়া সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো লেখকের বর্ণনার ধরন, যা শুরুতে একটু ধীর মনে হলেও বইয়ের মাঝামাঝি থেকে তা পাঠককে এক অনন্য যাত্রায় নিয়ে যায়। এখানেই হিগাশিনোর লেখার মূল সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। তিনি শিল্পীর মতো গল্পটা রচনা করতে পারেন। এটি শুধু একটি খুনের তদন্ত নয়, এটি সময়ের সাথে মানুষের পরিবর্তন, তাদের দুঃখ-কষ্ট, ভালোবাসা এবং সমাজের অন্ধকার দিক নিয়ে একটি জটিল, মানবিক প্রতিচ্ছবি। সবচেয়ে প্রশংসনীয় দিক হলো চরিত্রগুলোর জটিলতা। ইউকি হো, এক রহস্যময়ী নারী, যার জীবন যত দেখবেন, ততই মনে হবে তার চারপাশে এক অদৃশ্য দেয়াল দাঁড়িয়ে আছে। রিওজি নীরব, সংযত, কিন্তু নিজের ভেতরে বহন করছে এমন কিছু, যা থেকে মুক্তি নেই। তাদের জীবনের স্রোতে কখনও কাছাকাছি আসা, কখনও দূরে সরে যাওয়া পাঠককে ক্রমাগত কৌতূহলী করে তোলে। আর সাসাগাকি গোয়েন্দা হয়েও যেন সময়ের বিরুদ্ধে একা যুদ্ধ করা একজন মানুষ। তিনি উচ্চস্বরে চিৎকার করেন না, নাটকীয় পদক্ষেপ নেন না, কিন্তু তার ধৈর্য ও একাগ্রতা পুরো গল্পের ভিত গড়ে দেয়। "Journey Under the Midnight Sun" is a novel that will captivate the reader because of its tense construction. It is not a straightforward "who-did-it" type of crime thriller, but rather a much more complex, slow burn type of novel. People love to explore mysteries, mysteries attract and hold them. The mystery in the book was able to pull me in, that is the first interest of the book. লেখকের ভাষা ও পরিবেশচিত্র অসাধারণ। ৭০-এর দশকের ওসাকার রাস্তাঘাট, ৮০-এর দশকের টোকিওর ব্যবসায়িক চকচকে পরিবেশ, কিংবা ছোট প্রাদেশিক শহরের নিস্তব্ধতা—সবই এত জীবন্তভাবে আঁকা হয়েছে যে পড়তে পড়তে মনে হয়, আমরা সেখানে দাঁড়িয়ে আছি। প্রতিটি অধ্যায় যেন অন্য কারও চোখ দিয়ে দেখা এক টুকরো ছবি, আর এই ছবিগুলো মিলিয়ে ধীরে ধীরে পুরো ক্যানভাস তৈরি হয়। সবমিলিয়ে বইটিতে চরিত্রায়ন খুবই নিঁখুতভাবে করা হয়েছে। তবে, বইয়ের দীর্ঘ সময়কাল এবং অসংখ্য চরিত্রের কারণে নামগুলো মনে রাখা কিছু পাঠকের জন্য কঠিন হতে পারে। বিশেষ করে যারা জাপানি নামের সাথে স্বাভাবিকভাবেই পরিচিত নন, তাদের জন্য শুরুতে চরিত্রের নামগুলো মনে রাখা একটা চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তবে একবার নাম গেঁথে ফেললে গল্পের বিভিন্ন স্তর ও সম্পর্ক বুঝতে সমস্যা হয় না। এছাড়া অনেক পৃষ্ঠার বই জন্য বইয়ের কিছু অংশ ধীর গতির মনে হতে পারে। উপন্যাসের সমাপ্তিটা এমন ভাবে লেখক শেষ করবেন তা আমি ভাবতে পারিনি। শেষটা কি আরও ভিন্নভাবে করা যেতো? ⛺ অনুবাদ, সম্পাদনা ও বাঁধাই অনুবাদ সংক্রান্ত দিক থেকে বলা যায়, বি. এম. পারভেজ রানার সাবলীল এবং সহজবোধ্য অনুবাদ বইটিকে আরও প্রাণবন্ত করেছে। এত বড় ও জটিল একটি বই অনুবাদ করাটা সহজ কাজ নয়, কিন্তু পারভেজ রানা সেই কাজটি নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করেছেন। তার ভাষা অনেকটা বাংলা ভাষাভাষী পাঠকের কাছে অতি প্রাঞ্জল মনে হবে, যা পড়তে সহজ করে দিয়েছে। সামগ্রিকভাবে অনুবাদে তেমন কোন ত্রুটি আমি দেখতে পাইনি। বইটির সম্পাদনা অনেক ভালো হয়েছে। বেনজিন প্রকাশনীর বইয়ের সম্পাদনা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অনেক জায়গা থেকে যায়। কিন্তু এই বইতে তারা অনেক ভালো কাজ করেছে। বইটি মোটা হলেও খুব সহজে খুলে পড়া গিয়েছে। বইটির বাঁধাইও আশানুরূপ ভালো হয়েছে। ⛺ একটু পর্যালোচনা হিগাশিনোর এই বইটি অনেক জনপ্রিয়। আমার কাছেও বইটি ভালো লেগেছে। ব্যতিক্রম এন্ডিং দেখেও আমার বইটি খারাপ লাগেনি। সকল লেখকের এই সাহসটা থাকে না। কিন্তু হিগাশিনোর এই সাহসটা আছে বলেই আমি মনে করি। বইটির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হলো, এটা শুধু রহস্য বা গোয়েন্দা গল্প নয়, বরং মানব জীবনের বহুমাত্রিক ছবি তুলে ধরে। এই উপন্যাসে রয়েছে মানুষের মধ্যে বিদ্যমান ভালোর সাথে মিশ্রিত অন্ধকারের গভীর বিশ্লেষণ। গল্পে এমন অনেক চরিত্র রয়েছে যারা তাদের নিজেদের কারণে অন্যদের সঙ্গে জটিল সম্পর্ক তৈরি করে, আবার কেউ কেউ সমাজের অন্যায় ও অবিচারের শিকার। লেখক এমনভাবে চরিত্রগুলো গড়ে তুলেছেন যে তাদের অনুভূতি, মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব এবং বিকৃতি পাঠকের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলে। এখানে যে লেখকের লেখার কৃতিত্ব আছে সেটা কি আপনি পাঠক হিসেবে ধরতে পেরেছেন? অন্যদিকে, কিছু পাঠকের কাছে বইটির ধীর গতি একটু অসুবিধা মনে হতে পারে। কিন্তু চরিত্রগুলো স্ট্যাবলিশ করার জন্য লেখকের এটা করা ছাড়া উপায়ও ছিলনা। চরিত্রের ডিটেইলস না থাকলেও কিছু পাঠক সেটা নিয়ে চিল্লাপাল্লা করে, আবার চরিত্রের ডিটেইলস থাকলেও সেটা নিয়েও আলোচনা চলতে থাকে। যেখানে তার অন্য থ্রিলার উপন্যাসগুলো বেশি অ্যাকশন ও উত্তেজনায় ভরা থাকে, সেখানে “জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান” ধীরে ধীরে ঘটনা প্রকাশ করে। আরেকটি বিষয় যা পাঠকদের মনে প্রশ্ন জাগাতে পারে, তা হলো বইটির কিছু চরিত্রের অসম্পূর্ণ অবসান। অনেক চরিত্রের গল্প আংশিক থেকে যায়, যা কিছু পাঠকের কাছে অপ্রস্তুত বা অসম্পূর্ণ মনে হতে পারে। তবে, এটিকে লেখকের ইচ্ছাকৃত সিদ্ধান্ত হিসেবে নেওয়া যায়, যেখানে তিনি মূল কাহিনির ওপর বেশি জোর দিয়েছেন এবং অন্যান্য পাশের চরিত্রগুলোকে আংশিক রেখেছেন। কিছু চিন্তার জায়গা রাখাটা কি খারাপ? সবকিছু কেন লেখক তার বইতে বলে দিবে। এছাড়া, গল্পে টাকার প্রভাব এবং সমাজের দারিদ্র্যতা একটি গুরুত্বপূর্ণ থিম হিসেবে উঠে এসেছে। লেখক দেখিয়েছেন কিভাবে টাকা ও সম্পদ মানুষের জীবন ও সম্পর্ককে প্রভাবিত করে, এবং কখনো কখনো তা দুর্দশা ও সংঘাতের কারণও হয়ে দাঁড়ায়। ⛺ সমাপনী কিছু কথা “জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান” এমন একটি বই যা পাঠকের মধ্যে মনোযোগ ও আবেগের দাবি করে। তবে যারা এই ধৈর্য্য ধারণ করতে পারেন, তারা পাবেন এক অসাধারণ সাহিত্যকর্ম যা রহস্যের অতীত ঘুরে ফিরে জীবনের গভীরতর অর্থগুলো আবিষ্কার করে। এটি শুধু একটি খুনের তদন্ত নয়, বরং মানব জীবনের জটিলতা, অন্ধকার ও আলো, ভালোবাসা ও ঘৃণার গল্প। পাঠক যারা থ্রিলার সাহিত্যের সাথে পাশাপাশি চরিত্রের মনের গভীরতা ও জীবন জটিলতা বুঝতে চান, তাদের জন্য এই বই নিঃসন্দেহে পড়ার যোগ্য। কেইগো হিগাশিনোর লেখা ও পারভেজ রানার অনুবাদ একসাথে মিলেমিশে এক শক্তিশালী পাঠ অভিজ্ঞতা দিয়েছে। ⛺ বই পরিচিতি বইয়ের নাম[]জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান লেখক[]কেইগো হিগাশিনো অনুবাদক[]বি. এম. পারভেজ রানা প্রকাশনী[]বেনজিন প্রকাশন মুদ্রিত মূল্য[]৭৫০ টাকা পৃষ্ঠা []৫৬০
Was this review helpful to you?
or
#টিপিএ_বি_এম_পারভেজ_রানা_বইরিভিউ #টিপিএ_বেনজিন বইটার নাম প্রথম শুনেই মাথায় ভেসে উঠেছিল এক রহস্যময়, দীর্ঘ যাত্রার ছবি। কেইগো হিগাশিনো মানেই তো ধীরলয়ের এক গল্প, যেখানে প্রতিটি পাতায় লুকিয়ে থাকে মানুষের ভেতরের অন্ধকার।"জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান" পড়তে বসার পর বুঝলাম, এটা কেবল খুনি খুঁজে বের করার গল্প না, বরং সময়, সম্পর্ক আর ভাগ্যের জটিল খেলাগুলো দেখানোর এক অসাধারণ কৌশল। গল্পটা শুরু হয় একটা হত্যাকাণ্ড দিয়ে। কিন্তু এরপর সময় এগিয়ে চলে বছরের পর বছর, চরিত্ররা বড় হতে থাকে, বদলাতে থাকে। কোথাও মনে হয়, রহস্যটা হাতের মুঠোয়, আবার কোথাও যেন তা মিলিয়ে যায় কুয়াশায়। বি. এম. পারভেজ রানা’র অনুবাদ এতটাই সাবলীল যে ভুলে যাবেন এটা আসলে জাপানি ভাষার বই ছিল। সংলাপগুলো একদম জীবন্ত, বইটার অনুবাদ বইয়ের প্রতি আরো বেশি আকর্ষণ করেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে, বইটা ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে—তাড়াহুড়ো নেই, কিন্তু প্রতিটি অধ্যায় শেষে কেমন যেন টান লেগে থাকে। পড়া শেষ হওয়ার পরও গল্পটা মাথায় ঘুরতে থাকে, কিছু চরিত্রের প্রতি সহানুভূতি, কিছু চরিত্রের প্রতি ক্ষোভ জমে থাকে।আপনার মনে হবে যে,আপনি রহস্যের জটিলতায় জড়িয়ে যাচ্ছেন। কিছু বই আছে যেগুলো পড়ার পর ও রেশ থেকে যায়, এটা এমন একটি বই। রেটিং: (১০/১০) #টিপিএ_বেনজিন #টিপিএ_বি_এম_পারভেজ_রানা_বইরিভিউ বইটার নাম প্রথম শুনেই মাথায় ভেসে উঠেছিল এক রহস্যময়, দীর্ঘ যাত্রার ছবি। কেইগো হিগাশিনো মানেই তো ধীরলয়ের এক গল্প, যেখানে প্রতিটি পাতায় লুকিয়ে থাকে মানুষের ভেতরের অন্ধকার।"জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান" পড়তে বসার পর বুঝলাম, এটা কেবল খুনি খুঁজে বের করার গল্প না, বরং সময়, সম্পর্ক আর ভাগ্যের জটিল খেলাগুলো দেখানোর এক অসাধারণ কৌশল। গল্পটা শুরু হয় একটা হত্যাকাণ্ড দিয়ে। কিন্তু এরপর সময় এগিয়ে চলে বছরের পর বছর, চরিত্ররা বড় হতে থাকে, বদলাতে থাকে। কোথাও মনে হয়, রহস্যটা হাতের মুঠোয়, আবার কোথাও যেন তা মিলিয়ে যায় কুয়াশায়। বি. এম. পারভেজ রানা’র অনুবাদ এতটাই সাবলীল যে ভুলে যাবেন এটা আসলে জাপানি ভাষার বই ছিল। সংলাপগুলো একদম জীবন্ত, বইটার অনুবাদ বইয়ের প্রতি আরো বেশি আকর্ষণ করেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে, বইটা ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে—তাড়াহুড়ো নেই, কিন্তু প্রতিটি অধ্যায় শেষে কেমন যেন টান লেগে থাকে। পড়া শেষ হওয়ার পরও গল্পটা মাথায় ঘুরতে থাকে, কিছু চরিত্রের প্রতি সহানুভূতি, কিছু চরিত্রের প্রতি ক্ষোভ জমে থাকে।আপনার মনে হবে যে,আপনি রহস্যের জটিলতায় জড়িয়ে যাচ্ছেন। কিছু বই আছে যেগুলো পড়ার পর ও রেশ থেকে যায়, এটা এমন একটি বই। রেটিং: (১০/১০)
Was this review helpful to you?
or
"জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান" থ্রিলার প্রেমীদের মাস্ট রিড একটি বই।এই বইয়ের প্রতিটি চরিত্র পাঠককে আকর্ষণ করে। মাসুদ রানা পারভেজ চমৎকার ভাবে বইটিকে অনুবাদ করেছে।ভাষা অনেক সাবলীল, উনি সংলাপ গুলোকে অনেক প্রাণবন্তভাবে অনুবাদ করেছে।সাধারণ থ্রিলার পরে দ্রুত সমাধান খুঁজে মিতে চায়,তাদের কাছে এই বইটা হয়তো ভিন্ন লাগবে।মনে হবে, রহস্যের বেড়াজালে আপনিও জড়িয়ে গেছেন।কিছু বই পড়ার পর স্মৃতিতে থেকে যায়, এই বইটি এমন একটি বই। রেটিং:(১০/১০)
Was this review helpful to you?
or
#টিপিএ_বেনজিন #টিপিএ_বি_এম_পারভেজ_রানা_বইরিভিউ ওভারভিউ: গল্পের শুরু ওয়াসাকার এক পরিত্যক্ত বিল্ডিংয়ে স্থানীয় একজন পনশপ মালিকের রহস্যজনক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। তদন্তের দায়িত্ব আসে ডিটেকটিভ সাসাগাকির উপর। গতানুগতিকভাবেই সেটা চলতে থাকে। কোনোভাবেই সমাধানে পৌছানো সম্ভব হয় না। তারমধ্যে হঠাৎ রোড এক্সিডেন্টে প্রধান সন্দেহভাজনের মৃত্যু হয়। তদন্ত মন্থর হয়ে পড়ে, একসময় বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সাসাগাকি হাল ছাড়তে রাজি নন। সিদ্ধান্ত নেন এর একটা বিহিত করে ছাড়বেন। সেটা মোটেই সহজ কিছু ছিলো না। সময় গড়াতে থাকে। কেটে যায় দুই দশক। এর মধ্যে অনেক জীবনের উত্থান-পতন হয়। সময়ের সাথে কিছু মানুষ হারিয়ে যায়, আগমন ঘটে নতুন চরিত্রের। কারও জীবন চেয়ে যায় ঘোর অন্ধারে। কেউ আলোর খুঁজে ছুটে চলে আলেয়ায় পেছনে। আর সাসাগাকি ঠিকই খুজতে থাকে তার কেসের রহস্য। এতোগুলো চরিত্রের ভিড়ে, এতোটা সময় চলে যাওয়ার পর, অবশেষে পাজলের সবগুলো অংশ একত্র করতে সক্ষম হন তিনি। সত্যিই কি পুরোটা মিলাতে পেরেছিলেন? তাহলে কী ছিল সেই বাস্তবতা? যা অন্ধকারে থেকে প্রভাব বিস্তার করেছিলো এতগুলো জীবনে! বইয়ের ধরন ও বৈশিষ্ট্য: 'জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান' কেইগো হিগাশিনো'র অন্যান্য টিপিক্যাল বই থেকে খানিকটা ভিন্ন ধাচের। অন্যবইগুলো যেখানে ডিটেক্টিভ কেন্দ্রিক ধারালো ইনভেস্টিগেশন আর বড় টুইস্টে এন্ডিং সেখানে এটায় ধীরগতি, বিশাল সময়ের কাহিনি, একে অন্যকে নিয়ন্ত্রনের প্রবনতা, আসল মানুষের ভিতরের গল্প, নিরব ট্রমা আর শেষটা স্পস্ট হলেও, যেন শেষ হয়নি এমন অনুভুতি রয়ে যায়। মনে গেঁথে যায় একধরনের শূন্যতা। মোস্ট প্রবাবলি, এটা লেখকের সবচেয়ে বড় এবং দীর্ঘ টাইমলাইনের বই। দীর্ঘ বিশ বছর সময়ের এতোগুলো মানুষের জীবনের ট্রজেডি, চরিত্রগুলোর ভিতরের অন্ধকার দিক, তাদের মধ্যকার নীরব লড়াই, একে অন্যকে চাপিয়ে যাওয়ার আকাংখা সবকিছুই তিনি বাস্তবসম্মত উপায়ে তোলে ধরেছেন। মূল চরিত্র: মূল চরিত্র রিও এবং ইউকিহো। তাদেরকে কেন্দ্র করে অন্য চরিত্রগুলোর আগমন ঘটলেও প্রত্যেককে নিজস্ব মনে হয়, কোনো কৃত্রিমতা নেই। সবকিছু ঘটেচলে তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নিয়ন্ত্রনে। প্রভাবে। একজন আরেকজনের সাথে সরাসরি কোনো যোগাযোগ নেই অথচ একে অপরের উপর প্রভাব পাহাড় সমান। একজন আরেকজনকে ছায়ার মতো আগলে রাখে। এমনটা কেন? তারা আসলে কিসের বন্ধনে আবব্ধ? যে কারণে তারা দূরে থেকে এতোটা কাছে! প্রশ্নগুলোর উত্তর আছে বইয়ের একদম শেষ বাক্য অব্দি। নিশ্চিত থাকেন, একবার শুরু করলে এই আবেশ আপনাকে আকড়ে রাখবে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত। শেষ হওয়ার পরও ঘোর থেকে বের হতে পারবেন না! বব্যক্তিগত অনুভূতি: বইটা পড়েছিলাম ঈদের আগে। অর্ধেকটা পড়ার পর মনে হওয়া শুরু হয়, চরিত্রের বেশকিছু বিহেভিয়ার আমাদের জীবনের সাথে ছায়ার মতো ডিপলি কানেক্টেড। ইভেন আমার নিজের সাথেও একটা বিষয়ে প্রচন্ড মিল পাই। মনে হচ্ছিল, রিও-ইউকিহো সম্পর্কের ক্ষুদ্র একটা সংস্করণ আমার লাইফেও এক্সিস্ট করে। ওটা আড়ালে ছায়ার মতো আমারটা প্রকাশ্যে দিবালোকে। শিখর একই জায়গায়। শৈশবে। পার্থক্য কেবল ওদেরটা একটা নির্দিষ্ট ঘটনার পর থেকে, আমারটা ছোটবেলার সামগ্রিক অবস্থার উপর দাড়িয়ে। আরও পরিষ্কার করে বললে, আমি ছোটবেলা থেকে একটা সম্পর্কে (সেইম জেন্ডারের) একতরফাভাবে ইফোর্ট দিয়েছি— এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি যা আগে কল্পনাও করিনি। কিন্তু কেন সেগুলো করেছি! কোনো রিজন খুঁজে পাইনি। বইটা আমাকে সেই মানসিক টানাপোড়েনের উৎস খুঁজে দিয়েছে। রিয়ালাইজেশনের পর থেকে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টায় আছি। এবার কিছু খুচরো কথা বলি, অনুবাদ সাবলীল। বইয়ের বাঁধাই, প্রচ্ছদ, প্রিন্ট, সেটআপ সবই আপ টু দ্য মার্ক। অসন্তুষ্টির জায়গা নেই। বইয়ে এডাল্ট কিছু সিন আছে, কেইগো হিগাশিনোর বইগুলোতে সাধারণত এমন বর্ণনা থাকে না। এটা ব্যতিক্রম। বিষয়টা বিব্রতকর ছিলো। এইটা নিয়ে অবশ্য বইয়ে ডিসক্লেইমার দেয়া আছে। নাম: জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান লেখক: কেইগো হিগাশিনো অনুবাদক: বি. এম. পারভেজ রানা জনরা: সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার, মার্ডার মিস্ট্রি। প্রকাশনি: বেনজিন প্রকাশন পৃষ্ঠা: ৫৫৮ রেটিং: ৪/৫
Was this review helpful to you?
or
Good Book.
Was this review helpful to you?
or
#টিপিএ_বেনজিন #টিপিএ_বি_এম_পারভেজ_রানা_বইরিভিউ রহস্য, মনস্তত্ত্ব ও মানবজীবনের গভীর অন্ধকার অধ্যায় এই তিনের এক অনন্য মিশেলেই গঠিত কেইগো হিগাশিনোর বিশাল ক্যানভাসের উপন্যাস “জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান”। জাপানি সাহিত্যে ডিটেকটিভ ফিকশনের রাজপুত্র হিসেবে খ্যাত হিগাশিনো, তবে এই উপন্যাসে তিনি নিজেই যেন একটি নতুন উচ্চতাকে ছুঁয়েছেন। সময়ের চাকা ঘুরতে ঘুরতে যে রহস্যের পরত জমেছে বিশ বছর ধরে, তার জট ছাড়ানোর কাজটি তিনি করেছেন ধৈর্য, সূক্ষ্মতা আর গভীর মনস্তাত্ত্বিক উপলব্ধির মাধ্যমে। বইটি থ্রিলার হলেও এখানে নেই প্রচলিত অর্থে অ্যাকশন বা হঠাৎ বড় মোড় নেওয়া তেমন চমক। বরং প্রতিটি অধ্যায় ধীরে ধীরে পাঠককে টেনে নিয়ে যায় চরিত্রের অন্তর্নিহিত সত্যের দিকে, যেখানে খুনের রহস্যের চেয়েও বড় হয়ে ওঠে মানুষের ভেতরের অন্ধকার আর সমাজের নির্মম বাস্তবতা। এই বই এমন এক সাহসী গল্প বলে, যা পড়ার পর দীর্ঘসময় পাঠকের মনোজগতকে আলোড়িত করে রাখবে। একবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে লেখা হলেও উপন্যাসটি বারবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে তার সময়চেতনা, চরিত্র বিশ্লেষণ ও মানবমনের গহিন জটিলতা উপস্থাপনের জন্য। "You know how the sun rises and sets at a certain time each day? In the same way, all of our lives have a day and night. But it's not set like it is with the sun. Some people walk forever in the sunlight, and some people have to walk through the darkest night their whole lives. When people talk about being afraid, what they're afraid of is that their sun will set. That the light they love will fade." Keigo Higashino, Journey Under the Midnight Sun মধ্যরাতে সূর্য উঠলে যেমন আলো- আধারির রহস্য ছড়িয়ে পড়ে, তেমনি “জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান” উপন্যাসটিও পাঠকের মনে ছড়িয়ে দেয় প্রশ্ন, বিষণ্নতা আর ভাবনার দীর্ঘ ছায়া। 🎯 কাহিনির সংক্ষেপ শুরুটা হয় এক মৃতদেহ দিয়েই ,জাপানের পশ্চিমাঞ্চলের ওসাকা শহরের একটি পরিত্যক্ত পুরোনো ভবনে পাওয়া যায় ইউসুকে কিরিহারা নামের এক পনশপ মালিকের নিথর দেহ। সঙ্গে থাকার কথা ছিল এক মিলিয়ন ইয়েন, কিন্তু সে অর্থের কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। এই অপরাধের তদন্তে নামে ডিটেকটিভ জুনসুকে সাসাগাকি। তিনি একজন চুপচাপ স্বভাবের, পর্যবেক্ষণশীল ও দায়িত্ববান পুলিশ কর্মকর্তা। তদন্তের শুরুতে ইউসুকের ব্যবসায়িক ইতিহাস, ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং নিয়মিত ক্রেতাদের নিয়ে বিস্তৃত অনুসন্ধান চালানো হয়। চোখে পড়ে টেরাসাকি নামের এক ব্যক্তি, যিনি ঘটনার কিছুদিন আগে ইউসুকের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। পুলিশের ধারণা হয়, তিনিই হতে পারেন খুনের মূল সন্দেহভাজন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তিনি কিছুদিনের মধ্যেই দুর্ঘটনায় নিহত হন। তদন্ত থেমে পড়ে। প্রমাণ, ক্লু বা স্বাক্ষী কোনোটাই নিশ্চিতভাবে সাসাগাকির হাতে আসে না। তবে তদন্তে নাম লেখানোর দিন থেকেই সাসাগাকির চোখে ধরা পড়ে দুটি শিশু। একদিকে ইউসুকে কিরিহারার একমাত্র ছেলে রিও কিরিহারা যে হঠাৎই পিতৃহীন হয়ে যায়, আর অন্যদিকে রয়েছে ইউকিহো নিশিমোতো ইউসুকের দোকানের একজন গ্রাহকের মেয়ে, যার জীবনে গোপন এক অন্ধকার সেদিন থেকেই ছায়া ফেলতে শুরু করে। সময় গড়ায়, শহর বদলায়, চরিত্রের অবস্থান বদলায়, কিন্তু এই দুই শিশুর পথ এক অদৃশ্য সুতোয় যেন বেঁধে থাকে। বিশ বছর ধরে চলতে থাকে জীবনের এক গোপন জার্নি। রিও বড় হয়ে ওঠে এক উচ্চাভিলাষী যুবকে পরিণত হয়ে, জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন ব্যবসায়, এবং একসময় টোকিওর রঙিন দুনিয়ায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে। অন্যদিকে ইউকিহো এক চরম মেধাবী, সুন্দরী এবং রহস্যময়ী নারী হয়ে ওঠে। সমাজের চোখে পরিপাটি, ভদ্র ও উচ্চমানের জীবন যাপন করা ইউকিহো যেন কখনোই প্রশ্নবিদ্ধ হয় না। কিন্তু তাকে ঘিরে যে অস্বস্তিকর শীতলতা, তা পাঠকের মনে ধীরে ধীরে গেঁথে যায়। গল্পের পরতে পরতে উঠে আসে তাদের জীবনের কঠিন সময়, শৈশবের জখম, জীবনের অভিমান এবং সমাজের কালো দিক। এমনকি প্রেম, বিশ্বাস, প্রতারণা, ক্ষমা আর প্রতিশোধের সূক্ষ্ম দোলাচলে বাঁধা পড়ে গল্পের প্রতিটি চরিত্র। এরপর ধীরে ধীরে আরও অনেক নতুন চরিত্র এসে জটিল করে তোলে গল্পের জাল যাদের মধ্যে কেউ বন্ধু, কেউ প্রতিপক্ষ, কেউ বা শুধুই এক যাত্রাপথের অংশ। ডিটেকটিভ সাসাগাকি যদিও অবসরে চলে যান, তবুও ইউসুকের হত্যাকাণ্ড তাকে তাড়া করে ফেরে ঠিক এক অভিশাপের মতো। রিও ও ইউকিহোর জীবন পর্যবেক্ষণ করতে করতে, বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা ঘটনা, আত্মহত্যা, প্রতারণা, পারিবারিক ভাঙন, অর্থের জন্য নৈতিকতা বিসর্জন সব কিছু তাকে বারবার ফিরিয়ে আনে সেই পুরোনো লাশের কাছে। ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে ভেতরের গল্প। পাওয়া যায় কিছু সূত্র যা একত্র করলে সম্ভব হতে পারে হত্যার মূল কারণ উদঘাটন। সময়ের সাথে সাথে সত্য বদলায় না, কিন্তু তার চারপাশের মানুষ, বিশ্বাস, অনুভব এবং উপলব্ধি বদলায়। এক সময়, এক কাকতালীয় ঘটনাপ্রবাহে, ডিটেকটিভ সাসাগাকি মুখোমুখি হন সেই ব্যক্তির যার ছায়া তাড়া করে বেড়িয়েছে পুরো উপন্যাস জুড়ে। কিন্তু এই খুনি ঠান্ডা মাথার, ধীরচিন্তাশীল এবং অসম্ভব মেধাবী। তাকে ধরার জন্য শুধু যুক্তি আর প্রমাণ নয়, প্রয়োজন এক শ্বাসরুদ্ধকর মনের লড়াই। শেষের চমকটা জানতে কি খুব ইচ্ছে হচ্ছে আপনার পাঠক? তাহলে বইটা সংগ্রহ করে পড়ে ফেলুন। 🎯 পাঠ প্রতিক্রিয়া বইয়ের যে দিকগুলো ভালো লেগেছে 🎯 "জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান" এমন একটি উপন্যাস যা পাঠককে চুপিসারে আটকে ফেলবে তার টানটান নির্মাণশৈলীর কারণে। এটি কোনো সোজাসাপ্টা "হু-ডান-ইট" ধরনের ক্রাইম থ্রিলার নয়, বরং অনেক বেশি জটিল, স্লো বার্ন টাইপের উপন্যাস। রহস্যের অনুসন্ধান করতে মানুষ ভালোবাসে, রহস্য তাকে আকর্ষিত করে ধরে রাখে। বইটিতে থাকা রহস্য আমাকে টেনে ধরে রাখতে পেরেছে, এটাই বইটার প্রথম স্বার্থকতা। 🎯 এই উপন্যাসের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো এর গঠনশৈলী। একটি খুনের রহস্য বিশ বছরের পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রতিটি চরিত্রের জীবনের বিবর্তন দেখানো এটা অত্যন্ত ব্যতিক্রমী ও সাহসী সিদ্ধান্ত। হিগাশিনো প্রতিটি অধ্যায়ে সময় আর চরিত্র বিল্ডআপ করে গল্পটিকে ধাপে ধাপে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, পাঠক হিসেবে নিজেও একজন গোয়েন্দায় পরিণত হয়ে গিয়েছিলাম। 🎯 হিগাশিনো এই বইয়ে বিশেষভাবে মনোযোগ দিয়েছেন মানুষের অবচেতন, বিকৃত আবেগ, মানসিক ট্রমা ও সমাজের চাপ কিভাবে একটি শিশুকে ধীরে ধীরে অপরাধের জগতে ঠেলে দেয় সেসব বিষয়ের উপর। বিশেষ করে দুয়েকটি চরিত্রের নির্মাণ এতটাই সূক্ষ্ম ও জটিল যে তা পাঠককে ভাবতে বাধ্য করে অপরাধী জন্মায়, না সমাজ তাকে গড়ে তোলে? প্রতিটি চরিত্র আলাদা, বাস্তবসম্মত। বিশেষ করে ডিটেকটিভ সাসাগাওয়া একজন খাঁটি পুলিশ, যিনি শুধুমাত্র ন্যায়বোধের জন্য বিশ বছর ধরে এক রহস্যের পেছনে ছুটে চলেছেন। তার ধৈর্য, নিঃশব্দ ত্যাগ ও নৈতিক দৃঢ়তা বইয়ের প্রাণশক্তি। 🎯 বাংলায় অনূদিত সংস্করণটি যথেষ্ট ভালো হয়েছে। বইটি পড়ার সময়ে কখনো মনে হয়নি অনুবাদ বই পড়তেছি। মূল গল্পের গভীরতা বজায় রেখেই লিখেছেন অনুবাদক। অনুবাদের ভাষা সাবলীল হওয়াতে পড়তে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। বইয়ের কিছু দুর্বলতা বা সীমাবদ্ধতা 🎯 পাঠকদের অনেকের কাছে এই উপন্যাসটি অত্যন্ত ধীর গতির মনে হতে পারে, বিশেষ করে যারা চটজলদি উত্তেজনা ও চমকের অভ্যাসে অভ্যস্ত তাদের কাছে কিছু অংশ বোরিংও লাগতে পারে। রহস্য ধীরে ধীরে উন্মোচিত হয় এবং অনেক অধ্যায়ে কোনো দৃশ্যত অ্যাকশন বা বড় চমক নেই। ফলে কিছু পাঠক একঘেয়ে ভাবতে পারেন। 🎯 যারা আশা করেন যে গোটা উপন্যাসে তদন্ত চলবে ও শেষে ক্লাসিক টাইপের আগের দেখা কোনো ‘রিভিলিং সিন’ থাকবে তারাও কিছুটা হতাশ হতে পারেন। কারণ উপন্যাসটি মূলত এক ধরণের দীর্ঘ সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক পটভূমি তৈরি করে রহস্যের পেছনের কারণ বোঝাতে চেয়েছে। বহু বছর ধরে বহু চরিত্রের আবির্ভাব হওয়ায়, কখনো কখনো কিছু চরিত্রের প্রভাব বা ভূমিকা ঠিক স্পষ্ট হয়ে ওঠে না। ইউকো চরিত্রের মাঝে নেতিবাচক কোনো চিত্রায়ন বলে মনে করতে পারেন। 🎯 কেন আপনি বইটি পড়বেন? এটি শুধুমাত্র একটি খুনের রহস্য নয়, দুই জীবনের দীর্ঘ দু’দশকের ছায়াঘেরা যাত্রার গল্প। চরিত্রগুলোর মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা অসাধারণভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, যা পাঠককে গভীর চিন্তায় ফেলবে। প্রতিটি অধ্যায়ে থাকে নীরব উত্তেজনা অন্তর্নিহিত ভয় ও রহস্যের কুয়াশা। হিগাশিনোর অনন্য গল্প বলার কৌশল এই উপন্যাসে সর্বোচ্চ উৎকর্ষে পৌঁছেছে। রহস্য উন্মোচনের ধারা ধীরে হলেও প্রতিটি পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে আবেগ, ব্যথা আর অস্থিরতা। সমাজ, সম্পর্ক ও মানসিক আঘাতের বাস্তব প্রতিফলন পাওয়া যায় এই গল্পে। পাঠ শেষে দীর্ঘ সময় মনে গেঁথে থাকার মতো এক অভিজ্ঞতা দিবে বইটি। এজন্য বইটি আপনার পড়া উচিত। 🎯 বাঁধাই, প্রোডাকশন ও প্রচ্ছদ বেনজিন প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটির বাঁধাই ভালো হয়েছে। কাগজের মান ও মানসম্মত আর প্রচ্ছদটাও দারুণ একদম উপন্যাস এর সাথে মিলে গেছে। সম্পাদনায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, এজন্য বানান ভুল পাইনি তেমন। বইয়ের প্রোডাকশন ভালো হয়েছে। বইটির অনুবাদের ভাষা অনেক সাবলীল হয়েছে। অনুবাদ পড়ে মনে হয়নি, অনুবাদ বই পড়তেছি। 🎯 বই সম্পর্কিত পরিচিতি বই : জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান লেখক : কেইগো হিগাশিনো অনুবাদক : বি. এম. পারভেজ রানা প্রকাশনী : বেনজিন প্রকাশন মুদ্রিত মূল্য : ৭৫০ টাকা পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৫৬০ 🎯 উপসংহার "Mystery and suspense pierce the human mind because they awaken our oldest instincts, our need to know what hides in the shadows, our fear of the unknown, and our hunger for truth. They stir the silent corners of the imagination, making every heartbeat a question, every silence a scream, and every answer a revelation." একটু ধীরগতির, জটিল, কিন্তু গভীরভাবে আবেগতাড়িত উপন্যাস পড়তে চাইলে বইটি আপনার জন্য সুস্বাদু খাদ্য হয়ে উঠতে পারে। একটি খুনের রহস্যে আটকে না রেখে বরং তাদের টেনে নেয় জীবনের অন্ধকার গলিপথে, সম্পর্কের গোপন ফাটলে এবং শৈশবের দুঃসহ স্মৃতিতে। হিগাশিনোর লেখায় রয়েছে সাহিত্যিক সূক্ষ্মতা ও মানবিক গভীরতা, যা এই উপন্যাসকে একটি সাধারণ ক্রাইম থ্রিলার থেকে বহু দূরে নিয়ে যায়। এটি সেই ধরনের বই, যা পাঠককে ধীরে ধীরে গ্রাস করে এবং শেষ পৃষ্ঠার পরেও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ভাবনার জগতে বন্দি করে রাখে। রহস্য, মনস্তত্ত্ব, সম্পর্ক ও সমাজ সবকিছুর সম্মিলন ঘটেছে এতটাই নিখুঁতভাবে যে, এটি নিঃসন্দেহে হিগাশিনোর অন্যতম সেরা একটি উপন্যাস। রিভিউদাতা চৈতী
Was this review helpful to you?
or
#টিপিএ_বেনজিন #টিপিএ_বি_এম_পারভেজ_রানা_বইরিভিউ ⏰সূচনা বক্তব্য⏰ মানুষের অতীত কি কখনও তাকে ছেড়ে যায়? সময়ের পরতজুড়ে জমে থাকা একেকটা গোপন গল্প কি সত্যিই মুছে যায় স্মৃতির থেকে? কেইগো হিগাশিনোর জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান পড়তে পড়তে মনে হয়, কোনো কোনো অপরাধ কখনোই মুছে যায় না, সেগুলো শুধু রূপ বদলায়, চরিত্র বদলায়, কিন্তু রয়ে যায় জীবনের গভীরে, থাবা বসিয়ে। একটা দীর্ঘ সময়ব্যাপী গড়ে ওঠা রহস্যের গাঁথা, যেখানে অপরাধ আছে, কিন্তু তার চেয়েও বড় হয়ে উঠে আসে মানুষ, তার জটিল মন, সম্পর্কের গোপন সংকেত এবং সমাজের মুখোশধারী বাস্তবতা। "Mystery is the silent fire in the human mind it stirs an ancient longing within us, whispering that there is always more beyond what our eyes can see and our reason can grasp. It compels us to question, to seek, to chase shadows in the hope of finding light. Mystery fuels the imagination like wind feeds a flame, turning simple curiosity into an irresistible quest. It transforms the ordinary into the extraordinary, the known into the unknown, and reminds us that life’s greatest thrills often lie in the spaces where certainty ends and wonder begins." “জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান” একটি থমথমে সাসপেন্স উদ্রেককারী উপন্যাস, যেখানে আলোর পথ ধরে হাঁটলেও, পেছনে ছায়া লেগেই থাকে। পাঠক একসময় বুঝে যাবেন, এ গল্পে সত্য, মিথ্যা আর নৈতিকতার রেখা খুব সূক্ষ্ম আর সেই রেখা পার হওয়া মানুষগুলোও খুব চেনা, খুব আমাদের আশপাশের। ⏰বইয়ের কাহিনি সংক্ষেপ⏰ ১৯৭৩ সাল, ওসাকা শহরের এক পরিত্যক্ত গুদামে আবিষ্কৃত হয় এক প্রৌঢ় ব্যবসায়ীর মৃতদেহ, নাম তাকেউকি ওহারা। শরীরে ছুরির আঘাত, হত্যার মোটিভ অস্পষ্ট। তদন্ত ভার পড়ে গোয়েন্দা জুনসাই সাসাকি এবং তার তরুণ সহকর্মী কিয়োসুকে মাতসুঈয়ের ওপর। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সাধারণ এক খুন মনে হলেও, তারা শীঘ্রই বুঝতে পারেন, এখানে এমন কিছু লুকিয়ে আছে যা বাহ্যিকভাবে ধরা যায় না। তদন্ত চলতে থাকলেও হত্যার রহস্য অমীমাংসিত থেকেই যায়। কিন্তু সেদিন যে দুই কিশোর-কিশোরীর নাম পুলিশের রিপোর্টে উঠে এসেছিল, কাজুনারি শিনজি এবং ইউকি হিনো, তারা ভবিষ্যতের গল্পের মূল চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে। গল্প এরপর বিশ বছর ধরে এগিয়ে চলে। ওসাকা থেকে কিয়োটো, টোকিও থেকে কোবে শহর বদলায়, নাম বদলায়, কিন্তু ছায়ার মতো পেছনে লেগে থাকে সেই পুরনো খুনের রেশ। শিনজি হয়ে ওঠে এক দক্ষ, মেধাবী প্রযুক্তিবিদ, তার ভেতরে জমে থাকে গভীর নিঃসঙ্গতা। অপরদিকে ইউকি হিনো হয়ে ওঠে সৌন্দর্য আর রহস্যের মিশেলে গড়া এক নারী, যার চারপাশে সবসময়ই থাকে আকর্ষণ, বিতর্ক আর মৃত্যু। এদের জীবনে একে একে আসতে থাকে আরও কিছু চরিত্র প্রেমিক, স্বামী, সহকর্মী, যারা সবাই একভাবে অথবা অন্যভাবে আক্রান্ত হয় ইউকির জীবনে লুকিয়ে থাকা সেই রহস্যময় অন্ধকার দ্বারা। মৃত্যু, আত্মহত্যা, নিখোঁজ হওয়া ঘটনাগুলো যেন এক ধাঁচে গড়ে ওঠে, যার কেন্দ্রে ইউকির উপস্থিতি অস্বাভাবিকভাবে জড়িয়ে থাকে। কিন্তু শিনজি কখনোই ইউকিকে ভুলতে পারে না। সে ইউকিকে রক্ষা করতে চায় বিশ্বাস করে যে তার অতীতে এমন কিছু ঘটেছে যা তাকে এই ধ্বংসাত্মক পথে ঠেলে দিয়েছে। অথচ প্রশ্ন থেকেই যায় ইউকি কি নিছকই শিকার? নাকি সে-ই ছায়ার নিচে দাঁড়িয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে? পাশাপাশি এগিয়ে চলে গোয়েন্দা মাতসুঈয়ের নীরব অনুসন্ধান। বছর কেটে যায়, কিন্তু সে থামে না। ছোট ছোট সূত্র জড়ো করে সে একসময় পৌঁছাতে চায় সেই দিনটির কেন্দ্রে, ১৯৭৩ সালের সেই অন্ধকার গুদামের ভিতরে। কারণ সে জানে, সেই খুনের ভেতরেই লুকিয়ে আছে আজকের ভয়ানক সত্য। উপন্যাসের শেষভাগে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হয় সেই নির্মম শৈশব, যে শৈশব বদলে দিয়েছিল ইউকির জীবনের মানচিত্র। পাঠক বুঝতে পারবে, মানুষ শুধু খুনি বা শিকার নয়, তারা সময় ও পরিস্থিতির নির্মিত চরিত্র, আর সত্য সবসময়ই রৈখিক নয়। বইয়ের শেষে কি ঘটতে পারে, সেটা জানতে তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করে পড়ে শেষ করতে হবে বইটি। ⏰উপন্যাসের অসামান্যতা⏰ হিগাশিনোর লেখায় সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর বিষয় হলো চরিত্রগুলোর বাস্তবায়ন। প্রতিটি চরিত্র শুধু প্লটের অংশ হয়েই থাকে না, তারা যেন নিজেরাই জীবন্ত, পূর্ণাঙ্গ মানুষ। তাদের অতীত, তিক্ততা, ভালোবাসা, অবিশ্বাস সবকিছু বর্ণনাতে এত সাবলীল যে পাঠক সহজেই তাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ২০ বছরের দীর্ঘ সময়ে গল্প টানা সত্ত্বেও কোনো ধরনের গণ্ডগোল বা এলোমেলো ভাব পাওয়া যায় না। ওসাকা থেকে টোকিও পর্যন্ত সময় ও স্থান বদল হলেও গল্পের কাঠামো সুগঠিত, যা এক ধরণের বাস্তবতার গভীরতা ও স্থিতিশীলতা যোগ করে। লেখক নিখুঁতভাবে পাঠকের মনের সঙ্গে খেলেছে একসময় আপনি সাসপেন্সের খেলায় নিজেকে নিরাপদ মনে করলেও, হুট করেই গল্পের মোড় পরিবর্তন হয়ে যাবে। আর আপনারা তো জানেনই হিগাশিনো কেমন টুইস্ট দিতে পারেন। টুইস্ট এবং চরিত্রের অন্তর্দ্বন্দ্ব উপন্যাসটিকে অন্য রকম গভীরতা দিয়েছে। উপন্যাসে জাপানের সমাজের অভ্যন্তরীণ বিষয়, অর্থনৈতিক অবস্থা, মানুষের জীবনের ক্রমবর্ধমান চাপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নিঁখুতভাবে। এই বইতে বি. এম. পারভেজ রানা তার সবচেয়ে সেরা কাজটি করেছেন বললে ভুল হবে না। সাবলীল অনুবাদ উপন্যাসটিকে বাংলাভাষী পাঠকের জন্য অনেক সহজবোধ্য ও হৃদয়গ্রাহী করে তুলবে। ভাষার প্রয়োগে স্বচ্ছতা খেয়াল করেছি, যা মূল ভাবকে ক্ষুণ্ন করেনি বরং প্রসারিত করেছে। ⏰গঠনমূলক সমালোচনা⏰ উপন্যাসের প্রথম ২৫০-৩০০ পৃষ্ঠা পড়ার সময় কিছু পাঠকের কাছে গল্পটি ধীরগতি সম্পন্ন মনে হতে পারে। ছোট ছোট চরিত্র পরিচয় ও একাধিক সাবপ্লট পড়তে গিয়ে মনোযোগ হারানোর সম্ভাবনা থাকে। আমারও তেমনি লেগেছে কিছু অংশে। উপন্যাসে প্রচুর চরিত্র থাকলেও অনেকের জীবনপথ বা পরিণতি পরিস্কার করা হয়নি। বিশেষ করে ইউকিহোর বন্ধুদের ও রিওর সহকর্মীদের জীবনের অনেক তথ্য অসমাপ্ত থেকে গেছে। পাঠক হিসেবে আমার মনেও কিছু প্রশ্ন থেকে গিয়েছে। জাপানি নাম ও জায়গার নাম একাধিক হওয়ায় সেগুলো মনে রাখা কিছু পাঠকের জন্য কঠিন হতে পারে। এতে মাঝে মাঝে গল্পের ধারাবাহিকতায় মনোযোগ কমে যেতে পারে। আমারও এই সমস্যাতে পড়তে হয়েছে কিছু অংশে। উপন্যাসের এন্ডিংটা আরও অনেকভাবেই শেষ করা যেতো। লেখকের পছন্দের সাথে আমার পছন্দ মিলতেই হবে এমন কোনো মানে নেই। তবে এন্ডিংটা আরও সুন্দর হতে পারতো এটা বলার অধিকার আমার আছে। ⏰ বইটি কি হিগাশিনোর অন্য বইয়ের স্ট্যান্ডার্ড ম্যাচ করতে পেরেছে? কেইগো হিগাশিনো জাপানি থ্রিলার সাহিত্যের এক অনন্য নক্ষত্র। তার রচনাগুলো সাধারণত মানসিক গভীরতা, জটিল রহস্য এবং চমকপ্রদ টুইস্টে ভরপুর। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় বইগুলোর মধ্যে একটি হল "ম্যালিস"। এছাড়াও, "মিরাকল অব দ্য নামিয়া", "ডিটেকটিভ কাগা", "ডিটেকটিভ গ্যালিলিও" সিরিজও তার জনপ্রিয় কাজগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। “জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান” বইটি অবশ্য হিগাশিনোর অন্যান্য বইয়ের থেকে কিছুটা আলাদা স্বর ও এন্ডিং বয়ে এনেছে। যেখানে অধিকাংশ বইয়ে রহস্য-থ্রিলারের ছন্দ দ্রুত ও টানটান, সেখানে এই বইয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় গল্পের গতি, যা পাঠককে গভীরভাবে চরিত্রের ভেতরে নিয়ে যায়। ২০ বছর পেরিয়ে যাওয়ার সময়কাল এবং জটিল সম্পর্কের নকশা বইটিকে একটা জীবনগাঁথার মতো রূপ দিয়েছে। এই বইয়ের ধীর ও মনস্তাত্ত্বিক শৈলী প্রথমে একটু বোরিং লাগতে পারে, কারণ এখানে অ্যাকশন বা নাটকীয়তা কম, কিন্তু তা সত্ত্বেও বইয়ের রহস্য আর চরিত্রের গভীরতা থেকে কোনো বিচ্যুতি ঘটেনি, তাই স্ট্যান্ডার্ড ম্যাচ করতে পেরেছে বলেই আমার মনে হয়েছে। তাই, “জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান” হিগাশিনোর অন্যান্য জনপ্রিয় উপন্যাসের সাথে পাল্লা দিতে পারে কিন্তু ভিন্ন শৈলী ও রুপকে সামনে রেখে। এটি হিগাশিনোর সাহিত্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, একটি দীর্ঘ সময়কাল ও মানুষের জীবনের ছায়াপথ নিয়ে একটি জটিল এবং স্পর্শকাতর গল্প হিসেবে। ⏰সম্পাদনা, বাঁধাই ও অনুবাদ⏰ বইটি মোটা হওয়া সত্ত্বেও খুব সহজেই পড়তে পেরেছি, বাঁধাই এর কাজ ভালো হয়েছে বলতেই হয়। বইয়ের ভিতরে তেমন কোন বানান ভুল খুঁজে পাইনি। সম্পাদনার মান ভালো। অনুবাদের কাজ খুবই ভালো হয়েছে। এই বইতে বি. এম. পারভেজ রানা তার সবচেয়ে সেরা কাজটি করেছেন বললে ভুল হবে না। ⏰ব্যাক্তিগত রেটিং : ৪.৫/৫ ⏰বই পরিচিতি⏰ বই/জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান লেখক/কেইগো হিগাশিনো অনুবাদক/বি. এম. পারভেজ রানা প্রকাশনী/বেনজিন প্রকাশন পৃষ্ঠা সংখ্যা/৫৬০ মুদ্রিত মূল্য/৭৫০ টাকা ⏰উপসংহার⏰ কেইগো হিগাশিনো তার নিখুঁত চরিত্রায়ন ও ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা গল্পের মাধ্যমে পাঠককে এক গভীর ভ্রমণে নিয়ে যান, যেখানে প্রতিটি অধ্যায়ে সময় ও মানব মনের নানা স্তর ফুটে ওঠে। গল্পটিতে লেখক মূলত মনস্তাত্ত্বিক দিকটিকে সামনে এনেছেন। চরিত্রগুলোর মাধ্যমে সমাজের নানা স্তরের বৈপরীত্য, উঁচু নিচু সব পথ তিনি দেখাতে চেয়েছেন। "Some people live their whole lives in the sunshine, and there are some people who have to go through their lives in pitch black darkness." আমি নিজে পরে এটা উপলব্ধি করেছি, সব গল্পের পরিণতি এক ছাঁচে হয় না। পাঠক হিসেবে আমি যেমন এক চমকপ্রদ সমাপ্তি কল্পনা করেছিলাম, শেষ পর্যন্ত লেখক তেমন কিছু দেননি বরং বেছে নিয়েছেন ভিন্নধর্মী এক সমাপ্তি, যা বাস্তবতার সঙ্গেই মিলে যায়। সেই কারণেই এটা আমার কাছে ভালো লেগেছে। প্রতিটি বইয়ের সমাপ্তি একরকম না হওয়াই স্বাভাবিক, আর এই ভিন্ন পথে হাঁটার সাহসই লেখককে আলাদা করেছে। উপন্যাসটির এই অনুবাদটি বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয়। আমিও বইটি উপভোগ করেছি।
Was this review helpful to you?
or
#টিপিএ_বেনজিন #টিপিএ_বি_এম_পারভেজ_রানা_বইরিভিউ বই রিভিউ কিছু বই থাকে যা শেষ করার পরও তার রেশ মনের মধ্যে ঘুরপাক খায় দিনের পর দিন, ঘুম কেড়ে নেয় রাতের পর রাত। কেইগো হিগাশিনোর 'জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান' তেমনই একটি বই। জাপানি সাহিত্যের এই মাস্টারপিসটি বি.এম. পারভেজ রানার অনবদ্য অনুবাদে বাংলায় পড়ার সুযোগ পেয়ে আমি মুগ্ধ। গল্পের গভীরে এক ডুবে: বইটি শুরু হয় এক নির্মম হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এক তরুণের বাবাকে খুন করা হয়। আর এই ঘটনার মধ্য দিয়েই আমরা প্রবেশ করি দুটি প্রধান চরিত্রের জীবনে, রিয়োজি ও ইউকিকো (চরিত্র দুটির নাম উল্লেখ না করে তাদের জীবনচক্রের দিকে ইঙ্গিত)। কিন্তু এটি কোনো সাধারণ গোয়েন্দা গল্প নয়। এখানে কোনো প্রচলিত গোয়েন্দা নেই যে রহস্য সমাধান করবে। বরং, লেখক এক বিস্ময়কর বুননে আমাদেরকে প্রায় ২০ বছর ধরে বিস্তৃত এক গল্পের মাঝে টেনে নিয়ে যান, যেখানে আমরা দেখতে পাই এই হত্যাকাণ্ডের ছায়া কীভাবে রিয়োজি ওৎ ইউকিকোর জীবনকে অন্ধকারে ঢেকে দেয়। তাদের জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রতিটি পদক্ষেপ যেন সেই আদি রাতের ঘটনার সঙ্গে নিগূঢ়ভাবে বাঁধা। হিগাশিনোর লেখার স্টাইল এতটাই আকর্ষণীয় যে আপনি এক মুহূর্তের জন্যও বই থেকে চোখ সরাতে পারবেন না। প্রতিটি অধ্যায় আপনাকে নতুন তথ্যের সামনে দাঁড় করাবে এবং পরেরটা পড়ার জন্য তীব্র আগ্রহ তৈরি করবে। শেষ পর্যন্ত সাসপেন্স ধরে রাখার ক্ষমতা অসাধারণ। মনে হয় যেন এক গভীর চোরাবালিতে পা দিয়েছেন, আর যত এগোচ্ছেন ততই গভীরে তলিয়ে যাচ্ছেন। এই বইয়ের প্রধান আকর্ষণ এর চরিত্রগুলো। রিয়োজি এবং ইউকিকোর ভেতরের অন্ধকার আর আলোর এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব আপনাকে বিমোহিত করবে। তাদের জীবন, তাদের উত্থান-পতন, ভালোবাসাহীন সম্পর্কগুলো, বেঁচে থাকার জন্য তাদের মরিয়া চেষ্টা সবকিছু যেন পাঠকের মনে এক গভীর ছাপ ফেলে যায়। এখানে লেখক যে চমকপ্রদ কৌশল অবলম্বন করেছেন, তা হলো, গল্পের প্রধান দুটি চরিত্র একে অপরের সঙ্গে সরাসরি খুব কমই কথা বলে অথচ তাদের অদৃশ্য এক বন্ধন পুরো গল্পটিকে চালিত করে। 'জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান' কেবল একটি ক্রাইম ফিকশন নয়, এটি মানবমনের গভীরে ডুব দেওয়া এক যাত্রা। কেইগো হিগাশিনো খুব সূক্ষ্মভাবে দেখিয়েছেন কীভাবে একটি অপরাধের ছায়া যুগ যুগ ধরে মানুষকে তাড়া করে বেড়ায়, কীভাবে ভালোবাসার নামে বা বেঁচে থাকার স্বার্থে মানুষ অন্ধকারতম পথ বেছে নেয়। এই বইটি আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে মানুষ কেন এত অন্ধকার পথে হাঁটে? আলোর নিচে সবটুকু আলোকিত না হলে, কতটা আঁধার লুকিয়ে থাকতে পারে? বি.এম.পারভেজ রানার অনুবাদ এতটাই সাবলীল যে মনেই হবে না এটি একটি অনূদিত বই। প্রতিটি বাক্য, প্রতিটি শব্দ যেন মূল লেখকের ভাবকে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। বাংলা অনুবাদ এত যত্নশীল না হলে হয়তো মূল গল্পের এই গভীরতা অনুভব করা পাঠকের পক্ষে কঠিন হতো। সাধুবাদ জানাই অনুবাদককে। বইটি শেষ করার পর অনেকক্ষণ চুপচাপ বসেছিলাম। চরিত্রগুলো যেন মনের মধ্যে গেঁথে গেছে। এটি আপনাকে আনন্দ দেবে না, বরং এক বিষাদময় তৃপ্তি দেবে। এটি আপনাকে প্রশ্ন করতে শেখাবে, মানব চরিত্রের জটিলতা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে। বিশ্বাসঘাতকতা, ভালোবাসা, ঘৃণা, অপরাধবোধ, এবং বেঁচে থাকার জন্য মানুষের মরিয়া চেষ্টা সবকিছু যেন এক সুতোয় গাঁথা এই উপন্যাসে। যারা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার, ক্রাইম ফিকশন এবং গভীর মানবিক সম্পর্কের গল্প পছন্দ করেন, তাদের জন্য এই বইটি অবশ্য পাঠ্য। 'জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান' শুধু একটি বই নয়, এটি মানব জীবনের আলো-আঁধারের এক দীর্ঘ ও যন্ত্রণাদায়ক যাত্রা, যা আপনাকে মুগ্ধ করবে এবং একইসাথে ভাবাবে। সত্যি বলতে, এটি একটি মাস্টারপিস। বিশ্বাস করুন, এই বই আমার মন জয় করে নিয়েছে। রেটিং-৮/১০ বই : জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান লেখক: কেইগো হিগাশিনো অনুবাদক: বি. এম. পারভেজ রানা প্রকাশনী: বেনজিন প্রকাশন পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৫৬০
Was this review helpful to you?
or
অনুবাদ অসাধারণ। গল্পটাও মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ অনুবাদ! নতুন অনুবাদক হিসেবে চমৎকার অনুবাদ করেছেন! গল্পটাও অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
keigo higashinor best work bolai jay
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ অনুবাদ। সাবলীল ও প্রাসঙ্গিক। খুব ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
Best of Higashino
Was this review helpful to you?
or
বইটা আপনাকে গোলক ধাঁধায় ফেলে দিবে । ১৮+ উপযোগী আর রেকমেন্ডেট।
Was this review helpful to you?
or
বইঃ জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান মূলঃ কেইগো হিগাশিনো অনুবাদঃ বি. এম. পারভেজ রানা সম্পাদনাঃ আশরাফুল সুমন প্রচ্ছদঃ বি. এম. পারভেজ রানা প্রকাশনায়ঃ বেনজিন প্রকাশন ধরনঃ থ্রিলার, পুলিশ প্রসিডিওরাল পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৫৬০ মুদ্রিত মূল্যঃ ৮০০/- ফ্ল্যাপ থেকেঃ জাপানের পশ্চিম দিকের শহর ওসাকার পরিত্যক্ত এক বিল্ডিংয়ে খুঁজে পাওয়া যায় একটি লাশ। তদন্তে নামে স্থানীয় পুলিশ এবং ডিটেকটিভ সাসাগাকি। প্রত্যেকটা সন্দেহভাজনকে খতিয়ে দেখা হয়, পরখ করা হয় ভিক্টিমের সাথে পরিচিত সবাইকে। কিন্তু কোনোভাবেই কেসের সমাধান পাওয়া যায় না। এরমধ্যে কেসটার প্রধান সন্দেহভাজন মারা গেলে কেসও ঝিমিয়ে পড়ে। কিন্তু খটকা থেকে যায় সাসাগাকির মনে। সময় গড়িয়ে যেতে থাকে, একে একে কেটে যায় বিশটি বছর। এই পুরো সময় ধরে ডিটেকটিভ সাসাগাকি একটা উত্তরই খুঁজে যায়– সেদিন আসলে কী ঘটেছিলো? গল্প চলে আসে টোকিওতে। তদন্ত থামায় না সাসাগাকিও। চলতে থাকে ইঁদুর-বিড়াল খেলা। শেষমেশ কি উত্তর পেয়েছিলো এই ডিটেকটিভ? জানতে পেরেছিলো যে সেদিন কী হয়েছিলো আসলে? সব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে বইয়ের শেষ পাতা পর্যন্ত। রয়েছে প্রত্যেকটা অধ্যায়ে, প্রত্যেকটা সংলাপে। মধ্যরাতে উদিত হওয়া সূর্যের নিচে চলুন হাঁটা যাক কয়েক কদম। পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ আমরা সবাই জানি কিভাবে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে সূর্য ওঠে এবং অস্ত যায়। ঠিক একইভাবে, আমাদের সবার জীবনেও একটি দিন এবং রাত আছে। কিন্তু এটি সূর্যের মতো অস্ত যায় না। কিছু মানুষ সূর্যের আলোতে চিরকাল হাঁটে, আবার কিছু লোককে তাদের সারা জীবন অন্ধকার রাতের মধ্য দিয়ে চলতে হয়। লোকেরা যখন ভয় পাওয়ার কথা বলে, তখন তারা যেটা নিয়ে এত ভয় পায় তা হল তাদেরও একদিন সূর্য অস্ত যাবে। তারা যে আলো ভালোবাসে তা ম্লান হয়ে যাবে, তাই তারা ভীত। বলছিলাম 'জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান' এর কথা।একটি বই কতটা আকর্ষণীয় হতে পারে? কেইগো হিগাশিনো আপনার মনকে এমনভাবে টুকরো করে ফেলবে যে আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। এটা নিঃসন্দেহে একটি মাস্টারক্লাস। একটা জিনিস খেয়াল করেছি জাপানিজ লেখকদের মধ্যে দারুণ কিছু দক্ষতা আছে। আমাদের দৈনন্দিন ও জাগতিক জীবন থেকে একটি অতি সাধারণ দৃশ্যকেও যাদুকরী এবং অন্য-জাগতিক কিছুতে রূপান্তরিত করার অতুলনীয় ক্ষমতা তাদের রয়েছে। তারা যেমন সুন্দর করে সাধারণ চিত্রগুলোকে ভিজুয়াল করে, তার মাঝে গভীরভাবে বিষাদপূর্ণ কিন্তু শক্তিশালী অর্থপূর্ণ কিছু আছে। জাপানি লেখকদের মতো অসাধারণ পরাবাস্তব চিত্র তৈরি করতে অন্য কম লেখকই সক্ষম। গোয়েন্দা সাসাগাকিকে একটি হত্যা মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয় যা ঘটে জাপানের পশ্চিম দিকের শহর ওসাকার একটি পরিত্যক্ত বিল্ডিংয়ে। কিন্তু প্রমাণের অভাবে হত্যাকারীকে শনাক্ত করা যায়নি। যাইহোক, সাসাগাকি ফলাফলে সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট নন এবং প্রায় ২০ বছর ধরে মামলাটি চালিয়ে যান। তিনি অবসর নেওয়ার অনেক পরে। আখ্যানটি মসৃণভাবে সামনে আসতে থাকে এবং চলতে থাকে বিড়াল-ইঁদুর খেলা। সম্পর্কিত অনেক ব্যক্তি ও জটিল এক রহস্য সাসাগাকিকে নিয়ে আসে টোকিওতে। বইটি বলা যায় অনেকগুলো চরিত্রকে একসাথে করে ধীরে ধীরে চলতে থাকে। চরিত্রগুলিও লেখক তৈরি করেছেন, যাদের বেশিরভাগই রহস্যময় প্রকৃতির। Devotion of Suspect X" পড়ার পর আমি হিগাশিনোর ভক্ত হয়েছি। দুই দশক ধরে চলতে থাকা বিস্তৃত এক প্লটকে দুর্দান্ত একটি থ্রিলারে রূপান্তর করা বেশ কষ্টসাধ্য কাজ। শেষের দিকে এসে একেরপর এক প্লট টুইষ্টসহ নাটকীয় রহস্য উন্মোচন হতে থাকে। সত্যি বলতে, কেইগো হিগাশিনো এই থ্রিলার ঘরানার একজন মাস্টার। ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র বিবরণকেও তিনি এমনভাবে একত্রিত করেছেন যেটা একমাত্র হিগাশিনোর দ্বারাই সম্ভব। কেইগো হিগাশিনোর লেখা বইগুলি টুইস্ট, বুদ্ধিমান চরিত্রায়ন, এবং লিখনশৈলীর গভীরতাকে এক করে পাঠকদের বাকরুদ্ধ করে রাখে। বইটি জটিল, এমন পরিমাণে জটিল যে পাঠক জানেনা এই গোলকধাঁধার শেষ কোথায়? আমার এক পৃষ্ঠা রীতিমতো কয়েকবার করে পড়তে হয়েছে। অনুবাদ অসাধারণ ছিলো। বইটায় অনুবাদক দারুণ ডিটেলিং করে অনুবাদ করেছেন। অবাক করার মতো বিষয় হলো এটা অনুবাদক রানা ভাইয়ের প্রথম অনুবাদ করা কোন বই এবং উনার প্রকাশভঙ্গী, অনুবাদ ও সংলাপ পড়ে মনেই হচ্ছিল না যে নবীন কারো অনুবাদ। দারুণ প্রশংসনীয় অনুবাদ ছিল। একদম জোস ও পরিপক্ব। বেশ সাবলীল এবং ঝরঝরে। সবশেষ, বেনজিনের বইয়ের প্রডাকশন নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, ওরা আমাকে মুগ্ধ করে বারবারই।এবারও বইয়ের পৃষ্টার মান, রানা ভাইয়েট প্রচ্ছদ, ডাস্ট কভার, কালার কম্বিনেশন, ফন্ট সবকিছুই টপনচ, এককথায় অসাধারণ। প্রকাশনীর এমন কাজ সত্যিই প্রসংশার দাবীদার।
Was this review helpful to you?
or
কেইগো হিগোশিনো আমার প্রিয় লেখক.. কেইগো র থ্রিলার মানেই ডার্ক এর সাথে মাথা ঘোরানো টুইস্ট..! লেখকের প্রত্যেকটি বই অস্থির কাহিনীর।"জার্নি আন্ডার দা মিডনাইট সান" লেখকের সবচেয়ে বড় বই.. আলহামুলিল্লাহ বইটি বেনজিন প্রকাশনীর প্রিমিয়াম+চমৎকার প্রোডাকশন এবং সুন্দর প্রচ্ছদে আসছে!! ডেমো অনুবাদ পড়েছি! খুব ভালো লেগেছে....সহজ+সাবলীল




