ভূমিকা প্রথম কখন পশু পালনের সূচনা হয়েছিলো, ইতিহাসে তেমন কিছু জানা যায় না। তবে পশু পালন করার প্রয়োজনীয় উদ্দেশ্যবলীর মধ্যে ছিল তার মাংস ভক্ষণ ও চামড়ার ব্যবহার। ছাগলকে গরিবের গাভী বলা হয়। যারা আর্থিক কারণে স্থায়ীভাবে গাভী কিনতে পারে না তারা গাভীর দুধের পরিপূরক হিসাবে ছাগল পালন করে। যারাবিদেশে পরিভ্রমণ করেছেন তারা জানেন অনেক উন্নত দেশে ছাগলের মাংস,গরিবের খাদ্য হিসাবে পরিচিত। ছাগলের প্রতি এই প্ৰবাদ তাই তার অবদানের সঠিক মূল্যায়ন হতে দেয়নি। এই প্রবাদ তার প্রতি উদাসীনতা ও তাকে হেয় করার জন্য ব্যবহৃত হয়। একটি ছাগল তার দেহের তুলনায় দৈনিক যে খাদ্য গ্ৰহণ করে সেই অনুপাতে একটি গাভীর চেয়ে অনেক বেশি উৎপাদনশীল। ছাগল তার খাদ্যবস্তুকে খুব দ্রুত ও দক্ষতার সাথে মাংস ও দুধে রূপান্তর ঘটাতে সক্ষম। এই ক্ষমতা যেখানে শতকরা ৩৫ থেকে ৩৮ ভাগ সেই তুলনায় ছাগলের শতকরা ৪৮ থেকে ৭১ ভাগ। আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, জার্মান, চীন, মিশর, ভারত, পাকিস্তান এবং পৃথিবীর আরো অনেক উন্নত দেশে বিগত কয়েক বছর ধরে ছাগল পালনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই প্রচেষ্টা ও গবেষণার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। "ব্লাক বোম্বল গোট" বাংলায় ঐতিহ্যবাহী “কালো ছাগল" বলে পরিচিত। এদের গায়ের লোম যে নিরেট কালো তা নয়। সাদা, ক্রিম, বাদামী, কালো বা মিশ্র রঙের হতে পারে। বাংলাদেশের কালো ছাগলের মাংস যেমন সুস্বাদুতেমনি এর চামড়া পৃথিবীবিখ্যাত। তাদের বংশবৃদ্ধি করার ক্ষমতা পৃথিবীর যে-কানো ছাগলের তুলনায় অনেক বেশি। বাংলাদেশের অন্যান্য জাতের ছাগলের মধ্যে যমুনা পাড়ী, বারবারী ও বিটল ইত্যাদিও কোন কোন অঞ্চলে দুএকটা দেখা যায়। ছাগলের দুধ পৃষ্টিমানে গভীর দুধের চেয়ে শ্ৰেষ্ঠ এবং শিশু খাদ্য হিসেবে মানুষের দুধের সমকক্ষ। ছাগলের দুধ সহজে হজমযোগ্য ফলে শিশু, বৃদ্ধ, রুগী এবং যাদের হজমশক্তি দুর্বল তাদের জন্য উপকারী। ছাগলের দুধ যক্ষ্মা রোগের প্রতিরোধক এন্টিবডি বিদ্যমান। তাছাড়া এলাৰ্জিনিত উপসর্গ যেমন এ্যাজম, একজিমা, বমি-বমি ভাবে ডাইরিয়া মাথাধরা, চর্মরোগইত্যাদি উপশমে ছাগলের দুধের জুড়ি নেই। ছাগলের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু ও উপাদেয় প্রাণীজ আমিষ খাদ্য। শরীরের পৃষ্টি, স্বাস্থ্য, কর্মক্ষমতা সৰ্বোপরি মেধার বিকাশ ঘটানোর জন্যে প্রাণীজ আমীষ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তু। খরা, বন্যা, অনুৰ্বতা ও বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগে যে শস্যহানি ঘটে তার পরিপ্রেক্ষিতে ছাগল পালন লাভজনক। ছাগল পালনের জন্য বাংলাদেশের প্রকৃতি অত্যন্ত অনুকূল। বাংলাদেশের অনেক অঞ্চল আছে যেখানে জমির একক ব্যবহার হয়। এইসমস্ত অঞ্চলে ছাগল পালন করে জমির ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব। মিজান রহমান পলাশবাড়ি গাইবান্ধা
মিজান রহমান, ১৯৬৪ সালে ২৭অক্টোবর বরিশাল জেলার বানারিপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নের সোনাহার গ্রামের হাওলাদার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আলী আহমেদ ও মা জোবাইদা বেগমের ৬ সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ১৯৮৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স শেষ করেন। ১৯৮৬ সালে ঢাকায় আসার পরে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন সম্পাদিত সাপ্তাহিক সমতল পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন। পরবর্তীতে ১৯৯২/৯৩ সালে দৈনিক সকালের খবর পত্রিকায় যোগ দেন। এর পরে ২০০০ সালে দৈনিক খবরে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। তিনি দৈনিক লালসবুজ, দৈনিক অর্থনীতির কাগজ, দৈনিক সবুজ সিলেট, দৈনিক ভোরের কাগজ-এ বিভিন্ন দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেন। তিনি দৈনিক বাংলাদেশ সময়-এ সিনিয়র সহ-সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছেন। স্বপ্নগুলো আকাশে উড়লো মিজান রহমানের দ্বিতীয় বই।