-লেখক পরিচিতিঃ লেখক এস এম খাবীরুজ্জামান ১৯৪৭ সালে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার দেলুয়াবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি রাজশাহী থেকে এইচ এস সি শেষ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হতে বি এস সি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি লাভ করেন।তদানিন্তন পাকিস্তানি স্বৈরাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন।
-কাহিনী সংক্ষেপঃ মূলত মহান মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করেই রচিত হয় বইটি।আরও,স্পেসিফিকলি বলতে গেলে মুক্তিযুদ্ধের গোটা নয়মাসের প্রতিটি দিনেরই আলাদা আলাদা ঘটনাপঞ্জির সম্মিলন ঘটেছে বইটতে।পৃথিবীর ইতিহাসে শুধুমাত্র দু'টি দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিলো।একটি বাংলাদেশ এবং অপরটি আমেরিকা।বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল এদেশের মুক্তি সংগ্রামের মাইলফলক ও প্রেরণার উৎস।বিভিন্ন সময়ে একাধিক ব্যক্তিকর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া হলেও এর মূল কথা সবসময় একই ছিলো।উত্তাল মার্চের দিনগুলোতেই বাংলাদেশের ইতিহাসের নতুন মোড় নেয়।৭ ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমগ্র শোষণের বর্ণনা করে জাতিকে প্রস্তুত থাকতে বলেন।২৫ শে মার্চ ১.৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুকে হানাদাররা গ্রেফতার করে নিয়ে যান।বন্দি হবার পূর্বে ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া হয় ধানমন্ডি ৩২ থেকে।একজন রণাঙ্গনের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে লেখক সাবলীলভাবে বর্ণনা করেছেন পাকিস্তানি হানাদারদের পরিকল্পিত জেনোসাইডের এবং সে সাথে উঠে এসেছে বাঙালি জাতির রুখে দাঁড়াবার বীরত্বপূর্ণ কথামালার।অবশেষে ১৬ ই ডিসেম্বরের প্রায় নব্বই হাজার সৈনিকের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে শেষ হয় দীর্ঘ এই যুদ্ধের।আর বাংলার আকাশে উড়তে থাকে লাল-সবুজের পতাকা।
-পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ প্রথমেই বলতে হয়,৮ মাস ২ সপ্তাহের প্রতিটি দিনের এভাবে বর্ণনার জন্য বইটি সকলকে চুম্বকের ন্যায় আকর্ষণ করতে সক্ষম। গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো একসাথে পাওয়া অবশ্যই একটা পজিটিভ দিক।
-প্রচ্ছদঃ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে সোনালী মানচিত্র খচিত লাল সবুজের পতাকা দ্বারা প্রচ্ছদ সাজানো হয়েছে।পাঠক মাত্রই নজর কাড়বে...
-নামকরণঃ আমার কাছে মনে হয়েছে,যেহুতু প্রতিটি দিনেরই আলাদা আলাদা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।সুতরাং, বইটির নামকরণের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবার কোনো সুযোগই নেই।
বইটি কেন পড়বেনঃ প্রত্যক ইতিহাস সচেতন ব্যক্তি কিংবা আমার মুক্ত সংগ্রামের দিনগুলো সম্পর্কে যারা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জানতে ইচ্ছুক তারা অবশ্যই বইটি পড়তে পারেন।কারণ,বইটি লেখক বিস্তারিত আলোচনা করে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছেন বলে আমার ধারণা।