নিশ্চয়! গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের কালজয়ী উপন্যাস One Hundred Years of Solitude (Cien Años de Soledad) লাতিন আমেরিকার জাদুবাস্তবতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। নিচে বইটির একটি সাহিত্যিক আকারে সামারি দিলাম—ভাষায় যেন থাকে একটু কাব্যিকতার ছোঁয়া, আর পাঠকের মনে জেগে ওঠে সেই মোহময় ম্যাকন্ডোর গন্ধ।
মাকন্দো—পৃথিবীর কোলাহল থেকে দূরে, যেন স্বপ্নে গড়া এক জনপদ, যার প্রতিষ্ঠাতা হোসে আর্কাদিও বুয়েন্দিয়া। তিনি একজন স্বপ্নদ্রষ্টা, বৈজ্ঞানিক কৌতূহলে ভরা, যিনি স্বপ্ন দেখেন এক নিখুঁত সমাজের। তার স্ত্রী উরসুলা, স্থির, সহনশীল, এবং পরিবারের মূলভিত্তি। তাদের উত্তরসূরিদের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে বয়ে চলে শত বছরের গল্প—বংশানুক্রমে বারবার ফিরে আসে একই নাম, একই ভুল, একই নিঃসঙ্গতা।
প্রজন্ম পেরিয়ে দেখা মেলে প্রেমের, মৃত্যু ও পুনর্জন্মের। কেউ প্রেমে উন্মাদ, কেউ যুদ্ধবাজ, কেউ নিঃসঙ্গতায় আত্মহারানো। কর্নেল আওরেলিয়ানো বুয়েন্দিয়ার ৩২টি ব্যর্থ বিদ্রোহ যেন প্রতিফলন বহন করে এক জাতির রাজনৈতিক দুঃস্বপ্নের। বৃষ্টির অনন্ত ধারায় ভেসে যায় আশা, আবার শুকিয়ে যায় সময়ের গায়ে লেপ্টে থাকা দুঃখ।
মাকন্দোতে সময় চলে না সরল পথে; অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ—সব একাকার হয়ে যায়। বাস্তবতায় মিশে থাকে অলৌকিকতা—আকাশে উড়ে যাওয়া স্বর্গারোহণ, পাণ্ডুলিপির অক্ষর নিজেই জীবন্ত হয়ে ওঠে।
শেষ প্রজন্মের আওরেলিয়ানো যখন পাণ্ডুলিপির অর্থ উন্মোচন করে, তখন বুঝতে পারে—সবকিছু আগে থেকেই লেখা ছিল, ভবিষ্যতও। নিঃসঙ্গতার এই বৃত্ত ভেঙে বের হতে না পারা বুয়েন্দিয়া বংশের নিয়তি, আর সেই নিঃসঙ্গতাই যেন মানবতার চূড়ান্ত সত্য।
এই উপন্যাস কেবল কাহিনি নয়—এ এক ধ্রুপদী কবিতার মতোন, যেখানে ভাষা জাদুর মত মিশে যায় সময়ের গভীরতায়। “ওয়ান হানড্রেড ইয়ারস অব সলিচিউড” হলো নিঃসঙ্গতার মহাগাথা, যেখানে প্রতিটি চরিত্র একা, তবুও একে অপরের সঙ্গে গাঁথা—আলোর মতো, ছায়ার মতো।