সূচীপত্র * অন্তর মম বিকশিত করো * অমন আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে * আকাশতলে উঠলো ফুটে * আছে আমার হৃদয় আছে ভরে * আজ ধানের ক্ষেতে রোদ্রছায়ায় * আর বরষার রূপ হেরি মানবের মাঝে * আজ বারি ঝরে ঝর ঝর * আজি গন্ধবিধুর সমীরণে * আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার * আজি রসন্ত জাগ্রত দ্বারে * আজি শ্রাবণ-ঘন-গহন-মোহে * আনন্দেরই সাগর থেকে * আবার এরা ঘিরেছে মোর মন * আবার এসেছে আসাঢ় আকাশ ছেয়ে * আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ, আমরা * আমার এ গান ছেড়েছে তার * আমার এ প্রেম নয় তো ভীরু * আমার একেলা ঘরের আড়াল ভেঙ্গে * আমার খেলা যখন ছিল তোমার সনে * আমার চিত্ত তোমায় নিত্য হবে * আমার নয়ন ভুলানো এলে * আমার নামটা দিয়ে ঢেকে রাখি যারে * আমার মাঝে তোমার লীলা হবে * আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার * আমার মিলন লাগি তুমি * আমারে যদি জাগালে আজি, নাথ * আমি চেয়ে আছি তোমাদের সবাপানে * আমি বহু বাসনায় প্রাণপণে চাই * আমি হেথায় থাকি শুধু * আর আমায় আমি নিজের শিরে * আর নাই রে বেলা, নামল ছায়া * আরো আঘাত সইবে আমার * আলোয় আলোকময় করে হে * আষাঢ় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল * আসনতরের মাটির পরে লুটিয়ে রব * উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে * এই করেছ ভাল, নিঠুর * এই জ্যোৎস্নারাতে জাগে আমার প্রাণ * এই তো তোমার প্রেম, ওগো * এই মলিন বস্ত্র ছাড়তে হবে * এই মোর সাধ যেন এ জীবনমাঝে * একটি একটি করে তোমার * একটি নমস্কারে, প্রভু * একলা আমি বাহির হলেম * একা আমি ফিরব না আর * এবার নীরব করে দাও হে তোমার * এসো হে, এসো সজল ঘন * ঐ রে তরী দিল ঘুলে * ওগো আমার এই জীবনের * ওগো মৌন, না যদি কও * ওরে মাঝি, ওরে আমার * ওগো আমার এই জীবনের * ওগো মৌন, না যদি কও * ওরে মাঝি, ওরে আমার * কত অজানারে জানাইলে তুমি * কথা ছিল এক তরীতে কেবল তুমি আমি * কবে আমি বাহির হলেম * কে বলে সব ফেলে যাবি * কোথায় আলো, কোথায় ওরে আলো * কোন আলোতে প্রানের প্রদীপ * গর্ব করে নিই নে ও নাম, জান অর্ন্তযামী * গান গাওয়ালে আমায় তুমি * গান দিয়ে যে তোমায় খুঁজি * গাবার মতো হয়নি কোন গান * গায়ে আমার পুলক লাগে * চাই গো আমি তোমারে চাই * চিত্ত আমার হারানো আজ * চিরজনমের বেদনা * ছাড়িস নে, ধরে থাক, এঁটে * ছিন্ন করে লও হে মোরে * জগৎ জুড়ে উদার সুরে * জগতে আনন্দ যজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ * জড়ায়ে আছে বাধা, ছাড়ায়ে যেতে চাই * জড়িয়ে গেছে সরু মোটা * জননী, তোমার করুণ চরণখানি * জানি জানি কোন আদিকাল হতে * জীবন যখন শুকায়ে যায় * জীবনে যত পূজা * জীবনে যা চিরদিন * ডাকো ডাকো আমারে * তব সিংহাসনের আসন হতে * তাই তোমার আনন্দ আমার পর * তারা তোমার নামে বাটের মাঝে * তারা দিনের বেলা এসেছিল * তুমি আমার আপন, তুমি আছ আমার কাছে * তুমি এবার আমায় লহো হে নাথ, লহো * তুমি কেমন করে গান কর যে গুণী * তুমি নব নব রুপে এসো প্রাণে * তুমি যখন গান গাহিতে বল * তুমি যে কাজ করেছ আমায় * তোমায় আমার প্রভু করে রাখি * তোমায় খোঁজা শেষ হবে না মোর * তোমার দয়া যদি * তোমার প্রেম যে বইতে পারি * তোমার সাথে নিত্য বিরোধ * তোমার সোনার থালায় আজ * তোরা শুনিস নি কি শুনিস নি তার * দয়া করে ইচ্ছা করে আপনি ছোটো হয়ে * দয়া দিয়ে হবে গো মোর * দাও হে আমায় ভয় ভেঙ্গে দাও * দিবস যদি সাঙ্গ হল, না যদি গাহে পাখি * দুঃখ স্বপন কোথা হতে এসে * দেবতা জেনে দুরে রই দাড়ায়ে * ধরে জনে আছি জড়ায়ে হায় * ধায় যেন মোর সকল ভালোবাসা * নদীপারের এই আষাঢ়ের * নামটা যেদিন ঘুচাবে নাথ * নামাও নামাও আমায় তোমার * নিন্দা দুঃখে অপমানে * নিভৃত প্রাণের দেবতা * নিশার স্বপনে ছুটল রে এই * পারবি না কি যোগ দিতে এই ছন্দে রে * প্রভু, তোমার লাগি আঁখি জাগে * প্রভুগৃহ গতে আসিলে যেদিন * প্রেমে প্রাণে গানে গন্ধে * প্রেমের দূতকে পাঠাবে, নাথ, কবে * প্রেমের হাতে ধরা দেব * ফুলের মতন আপনি ফুটাও গান * বজ্রে তোমার বাজে বাঁশি * বিপদে মোরে রক্ষা করো * বিশ্ব যখন নিদ্রামগ্ন * বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহার * ভজন পূজন সাধন আরাধনা * ভেবেছিনু মনে যা হবার তারি শেষে * মানকে, আমার কায়াকে * মনে করি এইখানে শেষ * মানের আসন, আরাম শয়ন * মুখ ফিরায়ে রব তোমার পানে * মেঘের পরে মেঘ জমেছে * মেনেছি, হার মেনেছি * যখন আমায় বাঁধ আগে পিছে * যতকাল তুই শিশূর মতো * যতবার আলো জ্বালাতে চাই * যদি তোমার দেখা না পাই, প্রভু * যা দিয়েছ আমার এ প্রাণ ভরি * যা হারিয়ে যায় তা আগলে বসে * যাত্রী আমি ওরে * যাবার দিনে এই কথাটি * যেথায় তোমার লুট হতেছে ভুবনে * যেথায় থাকে সবার অধম * যেন শেষ গানে মোর সব রাগিনী পুরে * রাজার মতো বেশে তুমি সাজাও যে শিশুরে * রূপসাগরে ডুব দিয়েছি * লেগেছে অমল ধবল পালে * শরতে আজ কোন অতিথি * শেষের মধ্যে অশেষ আছে * সংসারে আর যাহারা সবা হতে রাখব তোমার সবা যখন ভাঙ্গবে তখন * সীমার মাঝে, অসীম তুমি * সুন্দর তুমি এসেছিলেন আজ প্রাতে * সে যে পাশে এসে বসেছিল * হে মোর চিত্ত, পূণ্য তীর্থে * হে মোর দুর্ভাগ্য দেশ, যাদের করেছ অপমান * যে মোর দেবতা, ভরিয়া এ দেহ প্রাণ * হেথা যে গানে গাইতে আসা আমার * হেথায় তিনি কোল পেতেছেন * হেরি অহরহ তোমারি বিরহ * কেতকী, কাব্যগীতি ও শেফালি, যথাক্রমে স্বরবিতান গ্রন্থমালার একাদশ, ত্রয়সত্রিংশ ও * পঞ্চাশতম খন্ডরূপে বর্তমানে প্রচলিত রহিয়াছে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ১৮৬১ সালের ৭ মে (২৫ বৈশাখ ১২৬৮) কলকাতার জোড়াসাঁকোয়। বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ। বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ভারতীয় মনীষী এবং বিশ্ববিখ্যাত কবি। ছাপার অক্ষরে স্বনামে তাঁর প্রথম প্রকাশিত কবিতা ‘হিন্দু মেলার উপহার’ (৩০.১০.১২৮১ ব.)।
১৮ বছর বয়সের মধ্যে তিনি ‘বনফুল’, ‘কবিকাহিনী’, ‘ভানুসিংহের পদাবলী’, ‘শৈশব সংগীত’ ও ‘রুদ্রচণ্ডু’ রচনা করেন। ‘জ্ঞানাঙ্কুর’ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘ভুবনমোহিনী প্রতিভা’ তাঁর প্রথম গদ্য প্রবন্ধ। ‘ভারতী’র প্রথম সংখ্যায় তাঁর প্রথম ছোটগল্প ‘ভিখারিণী’ এবং প্রথম উপন্যাস ‘করুণা’ প্রকাশিত হয়। ২২ বছর বয়সে নিজেদের জমিদারি সেরেস্তার এক কর্মচারীর একাদশবর্ষীয়া কন্যা ভবতারিণীর (পরিবর্তিত নাম মৃণালিনী) সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয় (৯.১২.১৮৮৩)। পুত্র রথীন্দ্রনাথের শিক্ষা-সমস্যা থেকেই কবির বোলপুর ব্রহ্মচর্য আশ্রমের সৃষ্টি হয় (২২.১২.১৯০১)। সেই প্রতিষ্ঠানই আজ ‘বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়’-এ রূপান্তরিত হয়েছে।
১৯১২ সালের নভেম্বর মাসে গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ বা ‘ঝড়হম ঙভভবৎরহমং’ প্রকাশিত হয়। ১৯১৩ সালের অক্টোবরে প্রথম ভারতবাসী রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডক্টরেট (১৯১৪) এবং সরকার স্যার (১৯১৫) উপাধিতে ভূষিত করে।
রবীন্দ্রনাথের একক চেষ্টায় বাংলাভাষা সকল দিকে যৌবনপ্রাপ্ত হয়ে বিশ্বের দরবারে সগৌরবে নিজের আসন প্রতিষ্ঠা করেছে। কাব্য, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, গান প্রত্যেক বিভাগেই তাঁর অবদান অজস্র এবং অপূর্ব। তিনি একাধারে কবি, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, সুরকার, নাট্যপ্রযোজক এবং স্বদেশপ্রেমিক। তাঁর রচিত দুই হাজারের ওপর গানের স্বরলিপি আজো প্রকাশিত হচ্ছে। দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের (ভারত ও বাংলাদেশ) জাতীয় সংগীত-রচয়িতারূপে একমাত্র রবীন্দ্রনাথেরই নাম পাওয়া যায়।