নারী মানে ধেয়ে আসা কৃষ্ণবিবর/অজানা রহস্যে ভরা অদৃশ্য ব্ল্যাকহোল/তাবৎ মহাবিশ্ব টেনে নেবে নিজের গহীনে/মায়াবী এক সম্মোহনী আকর্ষণে/ঘুটঘুটে অন্ধকার নারীর ভেতর/বৃথা তার তল খোঁজে পুরুষ পাগল ।<... See more
জন্ম : ৩১ জানুয়ারি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। বাবা : মৃত. আবু আশফাকুর রহমান অনু ।মা : তাহমিনা বেগম । লেখক ৩৫তম বিসিএস এর একজন ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী পদে কর্মরত আছেন। রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্নাতক । ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, বাগেরহাট এ প্রশিক্ষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করলেও অভিজ্ঞতাপ্রিয় লেখক পরবর্তিতে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কো¤পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানায় সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। লেখালেখির বহুমাত্রিক অঙ্গনে খেয়ালি লেখকের বিচরণ দীর্ঘদিনের। বাল্যকালেই তার সাহিত্যপ্রতিভার স্ফূরন। হাইস্কুলজীবন থেকেই তার গল্প, ছড়া-কবিতা, সায়েন্স ফিকশন, নিবন্ধ, কার্টুন ইত্যাদি দেশের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিক ও মাসিক পত্রিকাগুলোতে ছাপতে শুরু করে। ছাত্রজীবনে লেখালেখির পাশাপাশি আঁকাআঁকি, অভিনয়, আবৃত্তি, বক্তৃতা, বিতর্ক ইত্যাদি বিষয়েও পারদর্শিতার স্বাক্ষর রেখেছেন প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে । গত বইমেলার মাঝামাঝিতে এসে সময় প্রকাশন থেকেই প্রকাশিত হয় লেখকের প্রথম সায়েন্স ফিকশনের বই 'তৃতীয় অনুভূতি' । অল্প কয়েকদিনেই বইটি বিপুল পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করায় প্রথম মুদ্রণ নিঃশেষ হয়ে যায় । এইবছর প্রকাশিত হয় বইটির দ্বিতীয় মুদ্রণ ।
কাব্যগ্রন্থঃ 'কবিতা শুনে যে কাছে আসে সে কুৎসিত হতে পারে না'। কবিঃ তাসরুজ্জামান বাবু প্রকাশনীঃ সময় প্রকাশন প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
প্রকৌশল বিদ্যার মানুষ হয়েও প্রাণের স্পন্দনে সারা দিয়ে কবি তার মানসপটে যে আবেগের সঞ্চার করেছেন তারই প্রতিফলন এই কাব্যগ্রন্থ। প্রিয় শিক্ষকে সশ্রদ্ধ উৎসর্গ কবির তীব্র ভাবাবেগকে স্মরণ করিয়ে দেয়। কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা 'বিবাগী এক বিশাল আকাশ' এ উপমার পিঠে উপমার মেলবন্ধনের মাধ্যমে কবি যে ভাবের ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করতে চেয়েছেন তার সার্থক প্রয়াস দেখা যায় পরের প্রতিটি কবিতায়। আকাশের মিটি মিটি জ্বাজ্জল্যমান তারা, পুলি পিঠার মতো বাঁকা চাঁদ কিংবা জয়নুলের স্কেচের ব্যঞ্জনা সুমধুর ধ্বনির সুর তোলে যেন বিস্তীর্ণ তৃণভূমির মতো ভালোবাসা গোলাপ কুঁড়ির জন্ম দেয়। গভীর রাতের নীরব প্রকৃতি কিংবা সুদূর আকাশে কবি তাকে খুঁজে নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। সদ্য সাবালক হয়ে যাওয়ার অন্য রকম আওয়াজকে তুলে এনেছেন কবিতায়। স্থান দিয়েছেন সময়ের অভাবে কারো খোঁজ না রাখতে পারার আক্ষেপ। কবি গভীর মমতায় মায়ের স্নেহ ভালোবাসা তুলে ধরেছেন কবিতায়। কবিতার নেশা যে কবির আজন্ম লালিত নেশা সেটা কবিতাগুলো থেকে সহজেই অনুমান করা যায়। রহস্যময়ী নারীর মধ্যে যে সম্মোহনী আকর্ষণ থাকে তা তুলে ধরেছেন গভীর ভাবনার মাধ্যমে। কি নেই প্রতিটি পাতায়! সুখের হাতছানি, নিজের একাকিত্ব, নীরবে একা হেঁটে চলার অনুভূতি, আমাদের স্বাধীনতা ও বিজয়ের জয়ধ্বনি, অনুকাব্যের মাধ্যমে নতুন ভাবাবেগ সব কিছুই পাই কাব্যিক আবহে। ইসলামি কবিতাও বাদ যায়নি কবির ভাবনা থেকে। সুরা ইখলাস ও সুরা নাসর নিয়ে প্রাণবন্ত লেখনী, আযানের সুমধুর ধ্বনি যেন উচ্চারিত হয়েছে পবিত্র মহিমায়।
সব কিছু মিলিয়ে এক অনবদ্য ভাবের সংমিশ্রণ। কবিতাগুলো পড়ে এক অন্য রকম আবহে মন ভরে যায়। বইটি পাঠক নন্দিত হোক। লেখকের জন্য শুভকামনা রইলো।