ঈমানের পর মুমিনের জন্য সবচেয়ে বড় ফরয ইবাদত হলো সালাত। ইসলামের পরিভাষায় সালাতের অর্থ হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেখানো নির্ধারিত পদ্ধতিতে রুকু-সিজদার মাধ্যমে আল্লাহর যিকির ও দোয়া করা। কুরআনে কারীমে প্রায় ৮০ স্থানে সালাতের নির্দেশ এসেছে। কেয়ামতের দিন বান্দাকে সর্বপ্রথম তার সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সালাত টিকলে তার অন্য সকল আমল টিকে যাবে। আর সালাতই যদি নষ্ট হয়, তবে সে নিরাশ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।
সালাত এমন এক ইবাদত, যার কোনো বিকল্প নেই। মুমিন যেভাবে পারবে, সালাত আদায় করবে। সম্ভব হলে পূর্ণ নিয়মানুসারে; না হলে দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে, দৌড়াতে দৌড়াতে, যানবাহনে আরোহণ করে, পোশাক পরে বা পোশাক ছাড়া—যেভাবে সম্ভব মুমিন তার প্রভুর দরবারে হাজিরা দেবে। কোনো সূরা-কেরাত বা দোয়া না জানা থাকলে শুধু আল্লাহু আকবার বলে বলে বা তাসবীহ-তাহলীলের মাধ্যমে নামায আদায় করতে হবে।
শরীয়তে যে আমলের গুরুত্ব যত, তার মাসায়েল ও পদ্ধতি শিক্ষা করার গুরুত্বও তত। নামাযের প্রতিটি রুকনে রয়েছে কিছু ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নত; সঠিকভাবে নামায আদায়ের নিমিত্তে যে-সম্পর্কে জানা থাকা সবার জন্য আবশ্যক। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, বর্তমানে নামাযের মাসায়েল সম্পর্কে প্রতিনিয়ত অস্পষ্টতা তৈরি হচ্ছে যে, নামাযের প্রকৃত পদ্ধতি কী? কেমন ছিল নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়েকেরাম রা.-এর নামায?! এবং সেই সাথে জন্ম নিচ্ছে অনিঃশেষ বিতর্ক এবং ভীষণ ধূম্রজাল, যা থেকে বের হওয়া এবং প্রশান্তচিত্তে নামায আদায় করা সাধারণ মানুষের জন্য দিন দিন প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সময়ের এই বিরাট প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে মাদরাসা বাইতুল উলূম ঢালকানগর-এর সিনিয়র মুহাদ্দিস ও সম্মানিত নায়েবে মুহতামিম মুফতী মুহাম্মাদ রফীউদ্দীন সাহেব দামাত বারাকাতুহুম আলোচ্য ‘সহীহ হাদীস ও আছারের আলোকে নামাযের মাসায়েল’ নামক বইটি রচনা করেছেন। লেখক এতে নামাযের গুরুত্বপূর্ণ সকল মাসআলা সহীহ হাদীস ও আছারের আলোকে অত্যন্ত প্রামাণিকভাবে তুলে ধরেছেন, যা অধ্যয়ন দ্বারা সাধারণ মানুষ সঠিক পথের সন্ধান পাবে বলে আমার ধারণা। আল্লাহ তায়ালা লেখকের ইলম ও আমলে খুব বরকত দান করুন এবং তার এই প্রচেষ্টাকে কবুল করুন।