ড. জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট কৃষি অর্থনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির এককালীন সভাপতি ছিলেন। ১৯৭৫ সালে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে কৃষি অর্থনীতি বিষয়ে এম. এসসি এবং ১৯৮৩ সালে নিউজিল্যান্ড-এর কেন্টারবারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে একই বিষয়ে পিএইচ.ডি ডিগ্রী লাভকরেন। ১৯৯৮ সালে তিনি নিউজিল্যান্ড-এর লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন।
একজন কৃতি গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সৃজনশীল লেখক হিসেবে ড. আলম অত্যন্ত সুপরিচিত। ইতিমধ্যে দেশে ও বিদেশে তার দেড় শতাধিক গবেষণা নিবন্ধ ও পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তিনি দুই শতাধিক জনপ্রিয় নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন এবং কয়েকটি গবেষণা জার্নাল ও কর্মশালার কার্যবিবরণী সম্পাদনা করেছেন। ১৯৮০ সালে তিনি কৃষি উন্নয়নে রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার এবং ২০০৪ সালে বাংলাদেশ একাডেমি অব এগ্রিকালচার প্রদত্ত ড. এস ডি. চৌধুরী স্বর্ণপদক লাভ করেন। গবেষণা ক্ষেত্রে গৌরবময় ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০২০ সালে 'একুশে পদক'- এ ভূষিত হন।
কর্মজীবনে ড. আলম শস্য খাত ও শস্য বহির্ভূত কৃষি খাতের উপর ব্যাপক আর্থ-সামাজিক গবেষণা পরিচালনা করেছেন। এছাড়া পল্লী উন্নয়ন, গ্রামীণ আয় বণ্টন, দারিদ্র্য বিমোচন, গ্রামীণ উন্নয়নে বেসরকারি সংস্থাসমূহের প্রভাব, ভূমি সংস্কার, সেচ ব্যবস্থাপনা, অর্থনৈতিক সংস্কার এবং গ্রামীণ মহিলাদের আয় ও কর্ম সংস্থান বিষয়ে অনেক সমীক্ষার কাজ সম্পন্ন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের একজন সদস্য-পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
গবেষণার পাশাপাশি তিনি শিক্ষকতার কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের তিনি কৃষি অর্থনীতি বিষয়ে পাঠদান করেছেন এবং উচ্চতর গবেষণার সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োজিত আছেন। তিনি মাহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ এর উপাচার্য হিসেবে চার বছর মেয়াদে কর্মরত ছিলেন।
ড. আলম ১৯৫২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আলহাজ্ব ছিদ্দিকুর রহমান খান এবং আলহাজ মোছাম্মাৎ তহুরা বেগম-এর একমাত্র সন্তান।