মানব জীবন নানা শাখা-প্রশাখায় বিস্তৃত। বেলা শেষে মানুষ হাসে তাদের প্রিয় জনদের হাসিতে। মানুষ একটু মায়ার জন্য বাঁচে। শুদ্ধতম ভালোবাসার মধ্যেই জীবনের অন্যতম সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে। “কলিজার আধখান ” কাল্পনিক কোন চরিত্র দিয়ে আঁকা নয়। বরং আমাদের সমাজ থেকে নেওয়া বাস্তব এক চিত্রকে রূপ দেওয়া হয়েছে এ গ্রন্থে। প্রতিটা সন্তানের জন্য পিতা-মাতার ছায়া আবশ্যক। সময়ের কোণঠাসায় পড়ে যদি কোনো অবুঝ শিশু পিতা-মাতা নামক ছায়া হারিয়ে ফেলে তখন সেই জানে জীবন নামক গল্পটা কতটা ভয়ংকর। তার বেড়ে উঠা অতটা সহজ নয় অন্য দশটা ছেলে মেয়ের মতো। আবার সন্তানহীন দম্পতি জানে; একটা পরিবার গঠনে সন্তানের ভূমিকা, প্রয়োজনীয়তা— ঠিক কতটুকু। জীবনের বাঁকে বাঁকে চেনা যায় মুখোশের আড়ালে থাকা বহু গুণের অধিকারী মানুষদের। যারা শুধু সু-সময়ে সঙ্গী হয়। গল্পের মেইন চরিত্রে থাকা আব্দুল্লাহ- জোবাইদা এ দম্পতির বিবাহিত জীবন ভালোবাসায় ভরপুর। পরিবার গঠন হলো। তাদের (পালক) একমাত্র সন্তান আদিবা কে নিয়ে বেশ ভালোই কাটছে দিনকাল। দিব্যি চলছে সবকিছু। নেই কোনো প্রতিবন্ধকতা। এমন একটা পরিবার মাঝ পথে যদি হোঁচট খায় সর্বনাশা কোনো প্রকাণ্ড কিংবা দানবের সাথে। যদি উত্তাল ঢেউয়ে বিশাল জাহাজ হারিয়ে যাওয়ার মতো কেড়ে নেয়— সন্তান নামক সুখ টুকু! ওই কঠিন মুহূর্তের সম্মুখীন হওয়া প্রতিটা বাবা-মা জানে তাদের মতো তখন আর কোনো অসহায় মানুষ থাকে না। উড়ে যায় স্বপ্ন, থেকে যায় কিছু স্মৃতি। রেখে যায় মায়া। শুধু ব্যথা দেওয়ার তরে। তবুও মানুষ বেঁচে রয় শেষ পরিণতি দেখার জন্য হলেও। অপেক্ষা করে কলিজার আধখান সন্তান'কে ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায়। কলিজার আধখানে প্রাপ্তি অ-প্রাপ্তির একটা জীবনের গল্প সাজানো হয়েছে— অজস্র শব্দের সমাহার থেকে কিছু উপযুক্ত শব্দ দিয়ে।
রাশেদুল ইসলাম। নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত রহমতপুর গ্রামে তাঁর জন্ম ও বেড়ে উঠা৷ বাবা জনাব বাহার উদ্দীন। শৈশব কৈশোর কাটিয়েছেন নিজ গাঁয়েই। পড়াশোনার জন্যে পাড়ি জমিয়েছেন জামিয়া রহমানিয়া মহব্বতপুর মাদরাসায়। সেখানেই নুরানি থেকে মিজান পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। এরপর চলে আসেন জামেয়া মাদানিয়া নোয়াখালী মাদরাসায়। পড়েন মিশকাত পর্যন্ত। অতঃপর জামিয়া ইসলামিয়া বাইতুল আমান আদাবর ঢাকায় পাড়ি জমান এবং এখানেই দাওরা শেষ করেন। তারপর থেকে লেগে আছেন কুরআন ও হাদিসের খেদমতে। রাশেদ। তরুণদের ভালোবাসার নাম। নিজে স্বপ্ন দেখেন। অপরকে স্বপ্ন দেখান। শুধু স্বপ্নচারী নন, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নও করেন আপন মনে, খুব সহজে। খুব কম সময়ে জায়গা করে নিয়েছেন মানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে। নিজের সম্মানের অবস্থান আরো স্পষ্টভাবে বুঝেন মানুষের ভালোবাসার তাড়নায়। এই ভালোবাসার শক্তিতেই একের পর এক দিগন্ত উন্মোচন করেন। নতুন কাজের ভরসা পান। বিনয়ী মনে এগিয়ে চলেন দুর্বার গতিতে, ঝড়ের স্রোতে। রাশেদ সেই মানুষ, যাঁর কথার ভাঁজে রয়েছে সত্যের সুর। সেই সুর বেজে ওঠে ভরসার তালে ক্ষণে ক্ষণে, হৃদয় পটে। রাশেদ। কেবল মাত্র একটি নামই নয়। ভরসা ও আস্থার বিশ্বস্ত ঠিকানা। মানুষের কথা বলেন, তাঁদের কথা শুনেন। নিজ গুরুত্বে আমলে নেন। সহজেই সমাধান করেন। তাঁর ভালোবাসায় সিক্ত পাঠক-লেখক-প্রকাশকপাড়া। এই ভালোবাসার ঠিকানা, ভরসার ছায়া আজীবন থেকে যাক। এবং আল্লাহ তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দিন, আমিন!