“মহাভোজ রাজভোজ” বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ ভােজন মানে শুধু উদরপূর্তি নয়। পেটভরানাে কিংবা খিদে মেটানাের বাইরেও খাদ্য-পানীয়ের অন্য এক ভূমিকা আছে। তা হল রসনাতৃপ্তি। সব মানুষের মধ্যেই কমবেশি থাকে রসনাতৃপ্তির বাসনা। আর যাঁরা খাদ্যরসিক তাঁরা তাে এই রসনাতৃপ্তির ওপরেই জোর দেন সবচেয়ে বেশি। সাধারণ বা অসাধারণ যে-ধরনের আহার্যই হােক না কেন, তাঁরা সেসবের আস্বাদ গ্রহণ করেন জিভ, মন, স্থান, পাত্র, পরিপার্শ্ব, অভিজ্ঞতা ও স্মৃতি দিয়ে। এতগুলাে। বিষয়ের সংযােগে যে-কোনও আহারই হয়ে ওঠে অতি স্বাদু। এই গ্রন্থের ভােজনরসিক লেখক নানা কিসিমের খাদ্য ও পানীয় নিয়ে রচনা করেছেন এক একটি স্মৃতিমেদুর রচনা। কলকাতা থেকে পশ্চিমবাংলা হয়ে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ ছুঁয়ে তিনি চলে। গেছেন বিদেশে। নামী-অনামী ভােজনালয়ে, ফুটপাতের স্টলে, পাকশালায়, অভিজাত কিংবা সস্তাদরের সরাইখানায়, রেস্তোরাঁয় চেনা-অচেনা। নানাপদের আস্বাদ নিয়েছেন তিনি। লক্ষ করেছেন খাওয়ার জায়গার চেহারা-চরিত্র। জেনেছেন। পদটির ইতিহাস ও পাকপ্রণালী। খুঁটিয়ে দেখেছেন পরিবেশনের রীতি এবং অবশ্যই বলেছেন সেই। খাদ্যবস্তুটির ইন্দ্রিয়াতীত স্বাদের কথা। পাশাপাশি ফুচকা, ঝালমুড়ি, ডালমুট, তেলেভাজার মতাে অতি পরিচিত ও অকুলীন আহার্যও তাঁর রচনার গুণে হয়ে উঠেছে পরমলােভনীয়। ব্যস্ত জীবনযাত্রার চাপে রসনার যে-সুখ থেকে আমরা ক্রমশ বঞ্চিত, তারই কিছু সুখস্বাদ মনে ফিরিয়ে আনবে ‘মহাভােজ রাজভােজ। সরস। ভঙ্গি ও রম্য গদ্যে রচিত, স্মৃতি-উসকে-দেওয়া এই বই ভােজনবিলাসী তাে বটেই, সুখাদ্যসন্ধানী সকলের পক্ষেই অবশ্যপাঠ্য।