”মে, ২০০৩; সেদিন গুয়ানতানামো উপদ্বীপের ডেল্টা বন্দিশালায় আটক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুহাল আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে নেয়া হয়েছিলো গান শোনাতে!
সুতরাং প্রথমে কক্ষের মেঝেতে লাগানো লোহার রিং-এ তার পা’দুটি আটকে দেয়া হলো। সাথে হাত দুটোও জুড়ে দেয়া হলো একই রিং-এ পিছমুড়ে বেঁধে। একটু পরেই ঝলকে উঠলো খিঁচুনি।
এ অবস্থায় প্রতিদিন তাকে প্রশ্ন করা হয়—তিনি এবং তার বন্ধু বছর দুই আগে শরতে আফ..গানি..স্তানে কী করছিলেন?
. ছিয়াশি বর্গফুটের কক্ষটিতে সেদিন ভিন্নতার মধ্যে ছিলো প্রকাণ্ড একটা সাউন্ড বক্স, সাথে একটি সিডি প্লেয়ার। একজন সৈনিক এসে প্লেয়ারে সিডি ঢুকিয়ে তাতে সর্বোচ্চ সাউন্ড তুলে দিলো, তারপর দরজা বন্ধ করে চলে গেলো।
আহমদ বলছেন, আমি বুঝতে পারছিলাম না যে কী হতে যাচ্ছে। ভাবলাম, ওরা সাউন্ড বক্সের কথা ভুলে গেছে। সৈনিকটি যখন আবার ফিরলো আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, সে তাকালো ঠিকই আমার দিকে, কিন্তু কিছু বললো না। সাউন্ডের মাত্রা ছিল অসহ্য, কানফাটানো।
. এভাবে তাকে ঘন্টার পর ঘন্টা গান শুনতে বাধ্য করা হতো, কখনো এক নাগাড়ে কয়েক দিন রাখা হতো সেই ক্ষুদ্রকায় কক্ষে।
মাঝেমধ্যে তার মুখের ঠিক সামনে জ্বালিয়ে রাখা হতো ঝলসানো ফ্লাশলাইট। বাদবাকি ঘুটঘুটে অন্ধকার। অদৃশ্যে চলছে ভারী বাজনার ভূবনকাঁপানো সঙ্গীত। কক্ষের তাপমাত্রা কনকনে বরফ ঠাণ্ডা। অসহ্য যন্ত্র..ণায় খিঁচুনি খেতে খেতে এভাবে কবে কাকে সঙ্গীত উপভোগ করতে হয়েছে?”
সেই অমানবিক সঙ্গীত নির্যা..তনের নির্ম..ম শিকার গুয়ান..তানা..মোর বন্দীরা বিশ্বকে দিয়েছে অন্য এক অভাবিত নান্দনিক সুর-মূর্চ্ছনা। কেউ লিখেছেন কবিতা, তা নিয়ে হয়েছে বিখ্যাত বই। কেউ লিখেছেন কারা-জীবনের কাহিনি।
. এই বন্দি..জীবন তো আজকের না। ব..ন্দিত্ব বরণ তো আল্লার নবী সা.-এর সুন্নাহ। দীর্ঘ তিন বছর মরুভূমির শুষ্ক উপত্যকায় তাকে বন্দি রাখা হয়েছে পরিবারের সবার সাথে।
এরপর ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল, ইবনে তাইমিয়া থেকে নিয়ে কালাপানির দ্বীপে বন্দি থেকেছেন আমাদের পূর্বসূরীরা। কা..ফ..নে লিখে গেছেন তাদের বন্দি জীবনের কাহিনি।
. কী সেই কাহিনি; যা আমাদের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ? ইসলামি প্রতিষ্ঠায় সেকালে ও একালে আমাদের পূর্বসূরিরা দীর্ঘ লড়াই করতে গিয়ে কী শিখিয়েছেন