অঙ্গদকে ফিরে পাবার হিসেব মিলিয়ে নিজের ভূমির দিকে এক গতিতে ফিরে আসছে অসিত। ভেতরে ভেতরে একটা আতঙ্ক দানা বেঁধে উঠছে তার। দেশ ছেড়ে এসেছে কম দিন তো হয়নি। গ্রামের কেউই তো তার সাফল্যের ব্যাপারে আশান্বিত ছিল না। যদি, রাধার মা এরই মধ্যে রাধার হাত অন্য কারো হাতে তুলে দিয়ে থাকেন, তাহলে তো সব পেয়েও কিছুই পাওয়া হবে না অসিতের। ক্রমাগত পথ চলছে সে রুদ্রদেবকে নিয়ে, সাথে জপছে ঈশ্বরের নাম। কিন্তু, অসিতের বিন্দুমাত্র ধারণা নেই, সে যেভাবে আর্যাবর্তকে রেখে গিয়েছিল, আর্যাবর্ত এখন আর সেই অবস্থায় নেই। রাজনীতি অনেক ভাবেই পাল্টে ফেলেছে নিজের গতি পথ। চেরা রাজা উথিয়ানের মৃত্যুর পর ভেরাপ্পন এখন রাজা হবার স্বপ্নে বিভোর। তার সেই পথে বাধা কেবল রানি নলিনী ও রাজপুত্র নিদাম। তবে সেসব বাধাকে সহজেই এড়িয়ে যাবার পরিকল্পনা চলছে ভেরাপ্পনের মাথায়। সিংহাসন কি আসলেই এতো সহজে হস্তগত হবে? চোলায় শান্তি ফিরে এসেছে। প্রজারা এবার চাইছে রাজা কারিকালার বামপাশের আসনে রানি লক্ষ্মী হয়ে বসুক। রানির সন্ধান করছে কারিকালা। তবে সেই সন্ধান কি আদৌ এত কণ্টক বর্জিত হবে? শকদের সম্পদের হাতছানিতে মহারাজ সাতকর্ণী অবস্থান করছেন উজ্জয়িনীতে। ওদিকে অবহেলায় পড়ে আছে তার রাজধানী প্রতিষ্ঠানা। শাসকের অনুপস্থিতিতে ধীরে ধীরে রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে অরাজকতা। মহাবলের কথা মনে আছে? যে সামন্ত যুবরাজ অঙ্গদকে আগুনে ফেলেছিল। সে পিতার মৃত্যুর পর রাজা হয়েছে। তারপর বসেছে অত্যাচারের পশরা সাজিয়ে। মহাপ্রস্থান সকল হিসেব মেলানোর পথ। সে হিসেবের কাছে পৃথিবীর সকল হিসেব গৌণ, এতো কঠিন গণিত কোন গণিতের বইয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে আশার কথা একটাই। ‘মহাকাল কখনও কোনও হিসেব বাকি রাখে না’।
দিবাকর দাস পেশাগত কারণে যন্ত্রের সাথে সখ্যতা রাখতে হলেও মন থেকে চেষ্টা করেন গল্পের সাথে সখ্যতা রাখতে। গল্পের মধ্যেই মানুষের সাথে আড্ডা দিতে চান, একসাথে সহস্র মানুষের সাথে আড্ডা দেবার ব্যাপারটা সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেন। লেখালেখি করার সময় পেরিয়ে গেছে দশ বছর। কিন্তু এখনো প্রতিটি শব্দ তার কাছে নতুনত্ব নিয়ে ধরা দেয়। প্রেয়সীর প্রথম স্পর্শের অনুভূতি দেয় একেকটা সমাপ্তি বাক্য। মানুষের মধ্যে মিলিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে থেকেই আগামীতে লেখালেখি করার ইচ্ছে। কালতন্ত্রের পর লাল মিয়া ফকির সিরিজের দ্বিতীয় বই অমানিশি। এই যাত্রা বহুদূর অব্যাহত রাখার ইচ্ছে আছে।