14

বুক পকেটে আমার শহর

বুক পকেটে আমার শহর (হার্ডকভার)

TK. 400 TK. 344 You Save TK. 56 (14%)
জুলাই জাগরণ ২৫ image

এই ই-বুক গুলোও দেখতে পারেন

বইটই

বইটির বিস্তারিত দেখুন

সব শুরু শূন্য থেকে। কবে থেকে শুরু? আমার শহর সুনামগঞ্জ নিয়ে এমন এক তালাশ শেষে নির্ণয় ন জানি হয়ে ফেরা। তবে নির্ণয় নিশূন্য নয়। কবিতার শহর থেকে জলজোছনার শহর। তার আগে ভিলেজ টাউন। এটুকুই সীমাপরিসীমা। সীমানা পেরিয়ে খাসিয়া-জয়ন্তিয়া পাহাড় মাড়ানো যায়। ইতিহাস নোঙর করে না। যেতে যেতে শেষে জলের গর্জন শোনা হয়। সেই শোনা, কোনো এক কালে কালীদহ সাগর অথবা সাগর থেকে সায়র রূপ নেওয়া এই সুনামগঞ্জ। মানুষের মনে কতটা মধ্যমণি? প্রশ্ন প্রহেলিকায় মান-অভিমানে বলেছিলাম, এই শহরটা আসলে একটি জলের কুয়া! কেবল জলেই জ্বলে। আর কিছুতেই না! এরমধ্যে আরেক উপাখ্যান উচাটন। ‘আসমান ভাইঙ্গা জোছনা পড়ে’।

দশকটা শূন্য। নিশূন্য নয়। শূন্য দশকে জোছনাবাদ নামের তাক লাগানো তারুণ্য মতবাদ নির্মাণ নিমগ্ন কেড়ে নিয়েছিল একটি দুর্ঘটনা। নক্ষত্র নিয়ন্ত্রিত নিয়তি! চেয়ে চেয়ে দেখি, শহরের সুউচ্চ মনের মানুষগুলো অকালে-অকস্মাৎ হারিয়ে যান নক্ষত্রের মতো! এ যাওয়াও আরেক রেওয়াজ! সেটারও বা সূত্র কোন গোত্র থেকে?

জানা নেই! জানা-নাজানার এমন নির্বিবাদী শহরকে নিরাপদ রাখতে আমাদের সাংবাদিকতা শুরুর সময়ের প্রিয় অগ্রজ, গীতিকবি-অধ্যক্ষ সাব্রী সাবেরীন সকাতরে বলেছিলেন, গণপ্রার্থনা আয়োজনের। অকালপ্রয়াণের স্রোত যেন থামে। সেই সব শোকার্ত কথকতার কুহুতান কিছু সময়ের জন্য স্থির। জলের মতো শান্তসুমন্ত ভাব। ভবে ভাবের উদয় ঘটে রুপুুভাইয়ের স্মৃতির নুড়ীপাথরে যখন চোখ পড়ে, তখন। কী টানটান গহীন গল্প। নাড়া দেয়। নাড়িয়ে দেয় তার প্রেম-প্রীতি-স্মৃতি! এগুলো কোথায় থাকে? বুকে! বুক পকেটে!

শহর সুনামগঞ্জের সন্তান রুপুভাই যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। গীতিকবি ও লেখক ইশতিয়াক রুপুু নামে বেশি পরিচিত। কোনো কিছু বললে না বলার সাধ্য নেই। আবার অসাধ্য কোনো কিছু বলেনও না। আমাদের জলবৎ ঋষী ধ্রুবদার (প্রচ্ছদ শিল্পী ধ্রুব এষ) সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ফেসবুকে ঘোষণা দিলেন তার বইটির নাম ও সূচনা অংশে আমি কিছু লিখব। টাস্কি খাই! কী করে করব এ কাজটি! স্পন্দিত মনে এড়িয়ে যাওয়ার ফন্দি করি। এরই মধ্যে তাগাদা। পাণ্ডুলিপির প্রথম অংশ পড়তে চাইলাম। বলা মাত্র পাঠালেন। একটু পড়ি বলে পড়তে বসা। চুম্বকের টান। তড়িতাহতের মতো স্মৃতিতাড়িতও। তার লেখা থেকে বইটির নাম বের করলাম। মনে মনে আরও তিনটি নাম লিখে রাখলাম। সবকটির সৃষ্টি তার লেখা থেকে। যেন কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা।

‘সকল কাঁটা ধন্য করে’ প্রথম নামটিই পছন্দ হলো রুপু ভাইয়ের। আমেরিকা ফিরে যাবেন বলে হয়তো এই একুশে বইমেলার জন্য আগাম ছাপার কাজ করে যেতে চাইছেন। বইটির আখ্যানভাগ পড়ার পর বলছি, এই বইটিও পাঠককে টানবে তার ভালোবাসার নিউইয়র্ক-এর মতো। পাঠ-প্রতিক্রিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে যার যার শহরে। তখন হয়তো সমস্বরে সবাই বলবেন, বুকপকেটে আমার শহর!

গ্রামের আদলে গড়া উঠা শান্ত শহর আজকাল সবদিকে চঞ্চল আর প্রাণবন্ত। শহরের এক প্রান্তে এক আবাসিক এলাকায় থাকা অনেকের ভক্তি আর মানতের ভরসা ‘ডংকা শাহ মোকাম’। নিজ বাসা থেকে উত্তর দিকে তিন বাসা পর কলেজ রোডের পাশে। জননেতা হুসেন বখত চত্তর পেরিয়ে দক্ষিন দিকে এগুতে থাকলে হাতের ডান দিকে পড়ে মোকাম। ছোট বেলা দেখেছি মোকামটি বাঁশের বেড়া দিয়ে তিন দিক ঘেরা। শুধু পশ্চিম দিক খোলা। উপরে চৌচালা টিনের ছাউনি। ভিতরে একটি কবর। নিজ পিতা সহ শহরের বেশির ভাগ মুরুব্বীদের অভিমত, কবরটি ভূয়া। এখানে কোন পীর আউলিয়া কাউকে দাফন বা কবরস্থ করা হয় নি। কোন তথ্য বা কেউ দেখে গেছেন তেমন তথ্য ও পাওয়া যায় নি। কেউ কেউ গল্প ছলে বলেছিলেন, একটি বড়ই গাছের নীচে কয়েক জন পীর নামধারী ভন্ড প্রকৃতির লোক একত্র হয়ে গাঁজা সেবন করতো। পরে এটিকে ভন্ডপীররা কবর তৈরি করে মোকামের রূপ দেয়। শহরে পূর্ব দিকে সোনাখালী নদীর পূর্রপাড়ের বসতিতে স্থানীয় এবং বহিরাগতরা মিলে মিশে থাকতো কয়েক যুগ ধরে। সে এলাকায় বসতকারী হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে পীর ফকিরের প্রতি ভক্তি মানত একটু বেশি ছিলো। শহরের উত্তর পূর্ব কোনে মোহাম্মদপুর গ্রামে এক পীরের মাজারে প্রতি বছর হাজার হাজার ভক্ত আর আশেকানদের আগমন ঘটতো নিয়মিত। যা পরে পীরের জন্মতিথিতে ওরসে রূপান্তরিত হয়। ঢোল ঢফকি দুতারা সহযোগে রাত ব্যাপী ফকিরী গানের আসর বসে আজো। রাতব্যাপী এই মজমাতে স্থানীয় আশেকানদের সাথে কিছু ভোট শিকারী রাজনৈতিক নেতারা ও ভীড় জমান।’ [...]

‘মোকাম’ বলতেই চোখে ভাসে আমাদের মহল্লা মুহাম্মদপুরের দক্ষিণভাগের কথা। হযরত সৈয়দ উমেদ হারুন বোগদাদীর (রহ.) মাজার। ‘মাওনপুরের মোকাম’ নামে বেশি পরিচিত। ভাষা ও শব্দের আঞ্চলিকতায় ‘মুহাম্মদ’ উচ্চারণটি ‘মাওন’ হয়েছে। এতে আমি মজা পেতাম। ‘মাওন’ বলার সঙ্গে শহরসীমার ওপাশে ‘বাওন বিল’ মনে কিলবিল করতো। ছোটবেলায় আমার সেই দক্ষিণ খোলা জানালার জন্য কত যে ভৎর্সনা! মোকামে গেলে কী হয়? তা আরও অনেক পড়ে জানা হয়েছিল। সেই জানার পর বিরতি। তারপর শহরের দিকে পা বাড়ানো।

মিলে মিশে আছে যে শহর। তার নাম সুনামগঞ্জ। জল জোসনার শহর সুনামগঞ্জ। সুরমার পারে বসে দুরন্ত বর্ষায় পাহাড়ে থেকে নেমে আসা অজানা লতাপাতায় মোড়ানো ভালোবাসার রঙ্গিন খোয়াব দেখার শহর সুনামগঞ্জ। শহরের নানা জনপদ যেমন নিজ সত্তায় একেবারে সবার মিলে মিশে আছে। তেমনি শহরের নানা চরিত্রগুলি এখনো কারো কারো স্মরন সোপানে ভেসে বেড়ায়। সেই সঙ্গে রচিত হয়েছে আমাদের অনেকের রোজনামচা। শহর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রায় সব রিক্সা চালকরা পরিচিত এবং জানাশুনা কেউ কেউ আবার কোনো কোনো পরিবারের একটি অংশ। আমাদের পরিবারে উনার একটি অংশ আছে বলে দাবী করতেন একজন বয়স্ক রিক্সাচালক। তিনি আর কেউ না। প্রিয় রজ্জাক ভাই। শহরে পরিচিত ছিলেন আঞ্চলিক উচ্চারণে রজাখ ভাই। আদি বাড়ি মৌলভীবাজার শহর লাগোয়া কোন এক গ্রামে। রজ্জাক ভাইর মুখে তাই শুনেছি। বাবা নাকি এই শহরে এসেছিলেন পুরাতন কোর্ট বিল্ডিং তৈরির সময়কালে। কোন এক উস্তাদ মিস্ত্রীর সহযোগী রুপে। কাঠের মজবুত পাঠাতনের উপর সুদৃশ্য লাল রঙের টিনের ছাউনি দেয়া কোর্ট বিল্ডি তৈরি হলো। রজ্জাক ভাইর বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন। সুনামগঞ্জ থেকে যাবেন। রজ্জাক ভাইর ভাষ্য মতে, মোহাম্মদপুর মোকামের পাশে তার বাবা তৈরি করেন প্রথম বাড়ি। পরে অস্থায়ী ভাবে শহরের এখানে সেখানে অনেক জায়গায় থেকেছেন।

[...]

গ্রাম্য শহর, কবিতা ও জলজোছনার শহর সুনামগঞ্জ রিকশারও শহর। এক সময় রিকশা চালকদের সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করত স্থানীয় রাজনীতি। গণরাজনীতিবিদ আলফাত উদ্দিন আহমদ মোক্তার সাহেব সেই শহুরে শ্রমজীবীদের শ্রম-ঘামের অধিকার আদায়ে জীবনভর সোচ্চার ছিলেন। সেকালে শহরের প্রাণ রিকশা টান আমারও ছিল। নিয়মিত এক-দুই রিকশাচালক নির্ভর হয়ে চলাচলে শহরের সব খবর হাতের মুঠোতে থাকতো। এ নিয়ে সাংবাদিকতার সনাতন পদ্ধতি আমাকে তাড়িত করতো দূর অতীতের দিকে। হাসন রাজার সময়ে ঘোড়সওয়ার অথবা তারও আগে নাও-নদীর মাঝি-মাল্লারা বুঝি এক মুখ থেকে আরেক মুখ করে হতো সব খবরের ফেরিওয়ালা! গ্রাম্য হাটে ঢোল পিটিয়ে রটনা রটিয়ে দেওয়ার রেওয়াজকে আমি আমার জলোপাখ্যান সিরিজের বারকি, জন বারকি বইটিতে বলেছি ‘র-কাণ্ড’ আকারে। প্রায় ৩০০ বছর পেছনে ফিরে বর্তমানকে তুলে ধরেছি কর্তৃত্ববাদের করতল বা করায়ত্ব হিসেবে। ফেরার পিপাসায় ফিরি, চোখ রাখি বুক পকেটে।

সুরমা তীরের ছোট্ট শহর সুনামগঞ্জে ছিলো আমোদ আর আড্ডার বেশুমার গল্প। দেশ স্বাধীনের পূর্ব আর পরে দুই সময়ে মজার মজার গল্প আজো মধ্যাহ্নের অলস বেলা নয়তো জোসনা রাতের আলোর বন্যায় শহরের অলি গলিতে ভেসে বেড়ায়। শহর জুড়ে গান বাজনা, নাটক ও সিনেমা নিয়ে মেতে থাকা কয়জন যুবকের সিনেমা শুটিং এর মহড়ার গল্পটি আজো কয়জন পঞ্চাশর্ধো যুবকদের আড্ডার প্রধান খোরাক। সে কালের সমবয়সী বন্ধুদের চিন্তা ও মনন জুড়ে ছিলো সিনেমা বা নাটকে অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয় বনে যাওয়া। শহরের পশ্চিম এলাকার একজন সুদর্শন যুবক সহ পিটিআই স্কুল সংলগ্ন এক জাত অভিনেতা ভাগ্যক্রমে জুড়ে যান দেশের সেরা বিনোদন মাধ্যম সিনেমা জগতে। জানা যায় সেই সময়ের জনপ্রিয় ও দর্শক নন্দিত ভাওয়াল সন্যাসী সিনেমার মুল চরিত্র রাজার লাশ দাহের সময়, বৃষ্টি মুখর রাতে দুজন শশ্মান সঙ্গী চরিত্রে (কয়েক সেকেন্ড সময় কাল) অভিনয় করে ছোট্ট মফস্বল শহরে সাড়া ফেলে দেন। ভাগ্যক্রমে সেই দুজন অভিনেতার সিনেমা জগতে পদচারনা কালে তৎকালীন দামি ও প্রতিষ্ঠিত সিনেমা পরিচালকের নেক নজরে পড়ে যান বলে শহরে কথিত ছিলো। আমারও সৌভাগ্য হয় সেই বিখ্যাত সিনেমায় অভিনয় করা (হউক না তা কয়েক সেকেন্ড) নিপাট পোষাক পরে নায়কোচিত ভঙ্গিতে চলা ফেরার অভ্যস্ত সৌখিন অভিনেতার নিজমুখে সেই সিনেমায় অভিনয় করার গল্প শোনার।

[...]

সিনেমা-স্মৃতি! আমাদের সাংবাদিকতার হাতেখড়ির সময়ে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শাহনেওয়াজ জাহান সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সরব ছিলেন। সর্বশেষ মানবজমিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার থাকাকালে সিনেমার দিকে পা বাড়ান। আমাদের শহরে প্রেক্ষাগৃহ একটি। নাম ‘নূরজাহান’। শবেধননীলমণির এই সিনেমা হলটি নামবদল হয়। ‘মিতারা’। সর্বশেষ নামটি জপ করার মতো। শাহনেওয়াজ ভাইয়ের কোনো সিনেমা মিতারাতে আসেনি। কয়েকটি বাংলা সিনেমাতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ও করেছিলেন। এখনো ইউটিউবে দেখা যায়। এফডিসি তখন সরগরম। শাহনেওয়াজ ভাইয়ের কাছে সাংবাদিকতার চেয়ে সিনেমার গল্প বেশি। বলতেন, সেখানে সুরত ও বেসুরতের কদর! মাঝামাঝি কিছু নেই।

স্কুলে যাবার পথে পড়তো সেই তাল গাছ। গাছে ঝুলে থাকতো অসংখ্য বাবুই পাখির বাসা। তাল গাছটি উকিল পাড়ার ভিতর থেকে আসা পশ্চিমমুখি রাস্তার শেষ মাথায়। হোসেন বক্ত চত্তর থেকে উত্তর মুখী রাস্তার শেষ বরাবর কিন্ডারগার্ডেন স্কুলের সামান্য পূর্ব দিকে। স্বাধীনতা উত্তর বাসাটি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির অফিস ছিল। বর্তমানে একজন অবসর প্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার আবাস। বাসার সামনে লম্বা তাল গাছ। বাবুই পাখীর প্রজনন কাল গ্রীষ্মকাল। ঠিক সে সময় ওরা শুরু করত বাসা তৈরী করা। স্কুলে যাবার পথে দেখতাম শত শত বাবুই পাখী ভীষন ব্যস্থতায় সুউচ্চ তালগাছের প্রতি পাতায় বাসা তৈরী করছে। পরিশ্রমী পাখী ঠোঁট দিয়ে ঘাস ছিড়ে এনে মসৃন করে ধীরে ধীরে তার অনাগত সন্তানের আবাসস্থল তৈরী করছে। রাতের বেলা ছানাদের নিরাপত্তার জন্য জোনাকি পোকা ধরে এনে বাসায় আলো জ্বালাত বলে কথিত আছে। বাসা তৈরি তে সবুজ লম্বা ঘাস ব্যবহার করে বলে প্রথমে তা সবুজ দেখায় পরে আস্তে আস্তে ধূসর হয়ে যায়। কর্ম চঞ্চল আবাসটি বাতাসের তোড়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে প্রাকৃতিক নিয়মেই বৃস্টির জলে পঁচে গলে হারিয়ে যায়।

[...]

বাবুই পাখির বাসা! ছোটবেলার বড় বিস্ময়। বাসা হাত দিয়ে দেখার পর একদিন, সেই দিন বাবুই পাখিরে হাত দিয়ে দেখার কাকতাল মন আনচান করে। আচানক আনন্দ পূরণ করতে সেই দেখার সাধ সাধ্যের মধ্যে আসে। তখন থেকে উপলব্ধি, সবকিছু হাত দিতে নয়। চড়ুই আর বাবুই একই গোত্রের। দেখতেও অবিকল। একই দেখার মধ্যে কী সুনিপণ কর্মযজ্ঞ। এক পাখি পরের বাসায় বসবাস করে। আরেক পাখি নিজেই তৈরি বাসা। বড়াই এখানে নয়। বড়াই-লড়াই মানুষের মধ্যে। চড়ুই-বাবুই বয়ানটি প্রথম শুনেছিলাম ভোলা চাচার (ভোলা পাগল) কাছে। বছরের ছয় মাস ঘোর পাগল ভোলা চাচা আমার আব্বাকে ঠিকই চিনতেন। ষোলঘর পয়েন্টে ‘মেসার্স মডার্ণ ড্রাগ হাউস’ ঘিরে ছিল আমার আব্বাডা. আবদুল করিম খানের চিকিৎসা পেশার আরেক মায়াজাল। মানুষের মায়ায় সেখানে চেনা-অচেনায় আরেক হাঁকডাক এখনো কানে বাজে। ষোলঘরের চান মিয়া চাচা (চান্দু পাগলা) বলতেন, ‘বহুত চিনিরে...!’

শহর সুনামগঞ্জের অনিবার্য মুখের তারা দুজন নেই! স্বাভাবিক জীবনের মধ্যে অস্বাভাবিক যাপন তাদের দ্রুতগামী করেছে। হারানোর হাহাকারে রুপুভাইকে বলেছি, আপনার বুক পকেটে থাকা শহর আর আগের মতো নেই! শহরটা এখন আস্ত এক ভাতেরটেক। রাস্তাঘাটে ভাতের হোটেল। এহেন শহর ছেড়ে পালাচ্ছে সবাই! পলে পলে খসে পড়ছে পলেস্তারা। তবু ভালোবাসায় বুঁদ আপনার বুক-মুখ-চোখ! ভরা থাকুক, ভরপুর থাকুক বুকপকেট।

‘আমার শহর তুমি/ তোমাকে তো চিনতে পারি না/ সবুজের ঘোমটা খুলে হয়েছে ধূসর/ হয়েছো অচেনা...’। রুপু ভাইয়ের মতো বুক পকেটে যত্ন করে রাখা আমার শহরে যখনই যাই, তখনই অকালপ্রয়াত জোছনাবাদী কবি মমিনুল মউজদীনের কবিতার এই কয়েক লাইন পড়ে, দংশনও করে। সুতরাং শহর দংশিত যারে, এই বই পাঠ তার তরে।


Title বুক পকেটে আমার শহর
Author
Publisher
ISBN 9789849955320
Edition 1st Published, 2025
Number of Pages 128
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)

Customers Also Bought

loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off

Recently Viewed

cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

বুক পকেটে আমার শহর

ইশতিয়াক রূপু

৳ 344 ৳400.0

Please rate this product