সত্যের পৃথিবীতে মূলত সত্যই আদতে কতোটা সত্য আমার জানা নেই। সত্যের পকেট এত লম্বা আর দীর্ঘ যে, এর ভেতরে আরও সহস্র-কোটি সত্য অনায়সে লুকিয়ে থাকতে পারে। শুধু পারে না, বলা চলে এই সত্য লুকিয়ে রাখে নিজ দায়িত্বে জাতি-সত্য মানুষেরাই। কিন্তু কেন রাখে? এর উত্তর নেই। যার কারণে এই সত্যের সততা দিনদিন এতই দুর্নীতিগ্রস্ত এবং গরীব হয়ে গেছে যেখানে মানুষ নিজেই এখন কোনো সত্য শুনলে ভয় পায়, দ্বিধাগ্রস্ত হয়, সংশয়ে ভোগে, ভোগে বিশ্বাসের জ্বরে। অথচ এই সত্য তো ভয়ের কারণ ছিল না, ছিল না দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া, ছিল না মানুষ সত্যকে আকড়ে ধরে সংশয়বাদী প্রজন্মতে পরিণত হওয়া। সত্য তো সত্যই হওয়া উচিত। যেমন সত্য শিশুর জন্য মায়ের স্তন, তেমনই তো সত্য মানুষের চেতনার সূর্য। অথচ পৃথিবীর আদি-লগ্ন থেকেই মানুষ এই সত্যকে খুনীর মতো ভয় পায়। ডাকাতের মতো এড়িয়ে চলে। অনাত্মীয়র মতো আচরণ করে সরল ও সুন্দর সত্যের সাথে! কিন্তু কেন? এর কারণ কী? সত্য কি কোনো বিষধর সাপ, যা গ্রহণ করা মাত্রই মানুষের মাথায় বিষ উঠে তৎক্ষণাৎ মানুষটি মারা যায়? সত্য কি কোনো বংশানুক্রম নিকৃষ্ট জীবাণু, যা হাঁটিহাঁটি পা পা করে ক্রমান্বয়ে রোগ ছড়ায় মানুষের বিশ্বাস নামক শরীরে? সত্য কি কোনো জেলখানা, যে জেলখানায় মিথ্যার কয়েদি পুলিশ আর সত্যের কয়েদি রিফিউজি হিসেবে বসবাস করে? না, কোনটাই নয়। সত্য প্রকৃতির মতোই সত্য। নক্ষত্রের মতোই অটুট, জলের মতোই তরল, বৃত্তের মতোই গোল! সত্য চিরকাল সত্যই ছিল, চিরকাল সত্যই থাকবে। সত্যের এই সত্যতা না-টিকে থাকার বাজারে সত্যের কোনো হাত নেই।