সময় ও সমাজের সবকিছুতে সহমত হতে পারি না। এটা আমার অপারগতা বা অক্ষমতা নাকি সামর্থ্য বা সক্ষমতা তা জানি না। তবে এই সহমত হতে না পারার ভেতর একই সাথে আছে বেদনাবোধ এবং ভালো লাগা। পরস্পর বিরোধী এ দুই অনুভূতির রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে লেখাগুলোর জন্ম। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম ভাবনা এসেছে। আর দুর্বল লেখনিতে তা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। যদিও সাংবাদিকতা থেকে দূরে সরে আসার পর গদ্য আমার মূল চর্চার বিষয় নয়।
কোথাও প্রকাশের উদ্দেশে লেখিনি। নিছক নিকটজনের সাথেই শেয়ারিং হয়েছে। সবাই ভালোবেসেই লেখাগুলোকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন বলে বিশ্বাস। কেউ কেউ কখনো কখনো মতামত দিয়েছেন। কখনো দ্বিমত পোষণ করেছেন, কখনো সহমত হয়েছেন। কেউ কেউ নিরবে পড়ে গেছেন। তারা লেখাগুলোর প্রথম পাঠক। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
লেখাগুলোকে মলাটবন্দি করার দুর্বুদ্ধি প্রিয়ভাজন নজরুলের। ভাবনা থেকে হরফে রূপান্তর খুব কঠিন মনে হয় না। কিন্তু ল্যাপটপের লেখাকে বইয়ে রূপান্তরের যে জটিল প্রক্রিয়া তা আমার কাছে যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। যথেষ্ট উদ্যোগ ও উদ্যমের দাবিদার। তাই এ প্রক্রিয়ার মাঝে ঢোকার সাহস করিনি কখনো। সেজন্য বোধহয় নজরুল নিজেই ঢুকে গেছেন সে প্রক্রিয়ার মাঝে। আমি শুধু তার সাথে তাল মিলিয়ে চলেছি। তাকে ধন্যবাদ জানাবো নাকি বকাঝকা করব সে বিষয়ে মনস্থির করতে পারিনি এখনো।
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই সাহিত্য কুটির প্রকাশক রফিকুল ইসলাম ভাই ও তার টিমকে। আমাকে না দেখেই, না চিনেই বই প্রকাশের ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে। লেখাতে সময় দেওয়ার জন্যে কখনো কখনো হয়তো সময়বঞ্চিত হয়েছে আমার পরিবার ও বন্ধুরা। তাদের ত্যাগের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
লেখা বা লেখার প্রকাশ কোনোটিই বিতর্ক সৃষ্টি বা কাউকে আঘাত করার উদ্দেশে হয়নি। তবু যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন তো আগাম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। যে কোনো মতামত জানাতে চাইলে নির্দ্বিধায় জানানোরও অনুরোধ করছি। পারস্পরিক আলাপে হয়তো আমার ভাবনা বদলাতে পারে নয়তো আপনার। অথবা কারোটাই না বদলাতে পারে। আবার অন্য কোনো ভাবনায় উত্তরণও হতে পারে। যেটাই ঘটুক মানুষে মানুষে যে মানসম্মত শ্রদ্ধাবোধ থাকা জরুরি সেটা অটুট থাকবে বলে আশা রাখি। কোনো লেখাতে আমার অহম বা আর কোনো অনাকাঙ্খিত বর্জ্য-বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠলে সেজন্যও ক্ষমা চাইছি। কখনোই মনে করি না, অনেক কিছু বুঝে গেছি। বা যা বুঝেছি তাই স্বতঃসিদ্ধ। বরং জীবনের সাড়ে চার দশক পার করে নিজেকে মনে হয় সেই খেলোয়াড়ের মতো যে কিনা ক্রিকেট খেলার প্রস্তুতি ও সাজসরঞ্জাম নিয়ে মাঠে গিয়ে দেখে খেলাটা ফুটবল।
বইটি হাতে নিয়ে এই কথাটুকু পড়ছেন, সেজন্য আপনাকে অভিনন্দন জানাই। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনার জীবন সার্থক হোক পরার্থপরতায়।