প্রিয় অনি...
ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি যারা প্রেম করে ওরা খারাপ মানুষ,
আমিও ধরে নিয়েছিলাম তাই।
কখনও প্রেম করব এমনটা মাথায় আসেইনি কখনও।
জীবন চলছিল খুব সরলভাবেই হঠাৎ করেই বুকের মধ্যে
উত্তাল হাওয়ার মতো দোলা দিয়ে হাজির হলো অনিমেষ,
কী বেপরোয়া তেজি তরুণ, কোঁকড়ানো চুলে মাথা ভর্তি।
এমন দাপট যেন জ্বালিয়ে দেবে সবটা।
অথচ চোখে কি ভীষণ মায়া যেন পড়ে নিচ্ছে ভেতরের সবটা।
আমার চেয়ে চঞ্চল মানবী এ পৃথিবীতে খুব কম আছে।
কিন্তু অনিমেষ-এর আগমন যেন আমায় সবচেয়ে
লক্ষ্মী, শান্ত স্নিগ্ধ মেয়েটি বানিয়ে দিল।
না না তার সাথে আমার প্রেম ঘটেনি, হয়নি চোখে দেখাদেখি।
বিভাগ আলাদা হলেও ভবনটা একই ছিল আমাদের
চলতি পথে তাকে দেখতাম চুপি চুপি। কাছে এলেই চোখ সরিয়ে নিতাম।
অনিমেষকে কখনও আমার দিকে এক ঝলকও তাকাতে দেখিনি।
মাঝে মাঝে রাগ হতো ভীষণ।
আমি কি দেখতে এত্ত বিচ্ছিরি যে একবার তাকানোও যায় না!
তাকে দেখতে গিয়ে একটা সেমিস্টারে ডাব্বা দিলাম।
কী করে অনিমেষ টের পেল জানি না
একদিন সরাসরি সামনে এসে বলল— ‘এই মেয়ে শোনো!
অনেক পাকনামি করেছো এবার পড়াশোনায় মন দাও,
ভাগ্য ভালো হলে আমার মতো কাউকে পেয়েও যেতে পারো!’
নিজের কানকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল, অনিমেষ জানল
কী করে তার মতোই কাউকে আমার দরকার।
কিছু বলতে পারিনি সেদিন কিন্তু এরপর আর আমাকে কেউ
কাটিয়ে যেতে পারেনি।
অনিমেষ চলে গেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে, আমার আরো
একটা বছর লাগবে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে।
সে বলে গিয়েছে প্রেমে ট্রেমে সেও বিশ্বাস করে না।
বিয়ের পিঁড়িতে যদি বসার হিম্মত থাকে তবে যেন তাকে একটা চিঠি লিখি।
কেমন অদ্ভুত ছেলে বলুন তো, এই যুগে এসে কাউকে চিঠি লেখা যায়?
তবুও লিখতে বসেছি, প্রিয় অনি...