25

পঞ্চাশোর্ধ্ব গ্রন্থাগার পরিচিতি

পঞ্চাশোর্ধ্ব গ্রন্থাগার পরিচিতি (হার্ডকভার)

জুলাই জাগরণ ২৫ image

এই ই-বুক গুলোও দেখতে পারেন

বইটই

বইটির বিস্তারিত দেখুন

মোহাম্মদ হেমায়েত আলী (১৮৯৫-১৯৬৯) দিনাজপুরের লালবাগে ১৯৩১ সালে মুসলিম মঙ্গল পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন; যা ১৯৩৩ সালে খাজা নাজিমুদ্দিন মুসলিম হল এবং লাইব্রেরি নামকরণ করা হয়। সে সময়ের সামাজিক প্রেক্ষাপট, সহযোগিতায় আশায় এবং তৎকালীন বাংলার শিক্ষামন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের নামে নামকরণ করা হয়েছিলো। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম এর সভাপতিত্বে এই লাইব্রেরির নামকরণ করা হয় ‘হেমায়েত আলী পাবলিক লাইব্রেরি’।

হেমায়েত আলীর জন্মের মাত্র ২ বছর পর মা এবং ১০ বছর বয়সে বাবা মারা যান। হেমায়েত আলীর সৎ ভাই জসিমউদ্দিন এবং তার স্ত্রী তাঁর ভরণপোষনের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯২৪ সালে পাবনার এডওর্য়াড কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। প্রথমে কয়েক বছর দিনাজপুরে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক এবং ১৯৩১ সাল থেকে আজীবন দিনাজপুর সিভিল কোর্টে কেরানির চাকরি করেছেন।

হেমায়েত আলীর বই পড়া ছিলো নেশার মতো, কর্মজীবনে সারাদিন কাজ করে প্রতিদিন লাইব্রেরিতে যেতেন। তখন দিনাজপুর শহরে মুসলমানদের জন্য কোনো গ্রন্থাগার ছিলো না। একদিন কালিতলায় আর্য্য পাঠাগারে বসে একটি মাসিক পত্রিকা পড়ছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে লাইব্রেরির এক কর্তাব্যক্তি পত্রিকা ছিনিয়ে নিয়ে বললোÑ মুসলমান ছেলে আবার পত্রিকা পড়ে? এই ঘটনা তাকে মুসলমানদের জন্য একটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলো।

হেমায়েত আলী ঠাকুরগাঁও হাইস্কুলে লেখাপড়া করার সময় সেখানে একটি লাইব্রেরি গড়ে তুলেছিলেন। তিনি ১৯৩১ সালে দিনাজপুর লালবাগে মনিরউদ্দিন নামক এক চামড়া ব্যবসায়ীর পরিত্যাক্ত বাড়িতে মুসলিম মঙ্গল পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রংপুর কাকিনার কবি ফজলুল করীম ‘মুসলিম মঙ্গল পাঠাগার’ নামকরণ করেছিলেন। জমিরউদ্দিন ছিলেন প্রথম লাইব্রেরিয়ান। সদস্যদের মাসিক চাঁদা ছিলো ২৫ পয়সা। হেমায়েত আলী এবং তার সাথে আরো কয়েকজন বাড়ি বাড়ি ঘুরে বই সংগ্রহ করতেন। পাশ্ববর্তী রামনগরের আমির উদ্দিন পণ্ডিতের পারিবারিক গ্রন্থাগারের সব বই এই লাইব্রেরিতে দান করেছিলো। দুই/একটি বই সংগ্রহের জন্য তিনি অনেক দূর পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যেতেন। তিনি পত্র লিখে কলকাতা, করাচি, চট্টগ্রাম, লাহোর, মাদ্রাজ, টাঙ্গাইল প্রভৃতি স্থানের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিকট থেকেও মূল্যবান গ্রন্থ সংগ্রহ করেছেন। সে সময় দিনাজপুর শহর ও মফঃস্বলের প্রায় শতাধিক ব্যক্তি তাদের বই গ্রন্থাগারে দান করেছেন।

১৯৩৩ সালে মুসলিম মঙ্গল পাঠাগার দিনাজপুরের লালবাগ থেকে মুন্সিপাড়ায় স্থানান্তরিত করা হয়। এই জমি হেমায়েত আলী এবং তার শ্বশুর মৌলভী বদিউজ্জামান দান করেছিলেন। এখানে ভবন নির্মাণের জন্য খাজা নাজিমুদ্দিন ২৫০ টাকা, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ২৫০ টাকা এবং কামাল উদ্দিন সরকার ৪০০ টাকা দান করেছিলেন। ১৯৩৪ সালের ডিসেম্বর মাসে নতুন ভবনে লাইব্রেরির কাজ শুরু হয়। ১৯৩৬ সালে গ্রন্থাগারে বইসংখ্যা ছিলো ৩,৪৯০টি। ১৯৩৫ সালে লাইব্রেরি পরিচালনার নিয়মাবলী চূড়ান্ত করা হয় এবং হেমায়েত আলীকে আজীবন অবৈতনিক সম্পাদক নিযুক্ত করা হয়। ১৯৪০ সালে লাইব্রেরিতে রেডিও সেট স্থাপন করা হয়; এতে পাঠক ও শ্রোতারা দেশ-বিদেশের সংবাদ শুনতে পারতো। রেডিওটি ক্রয় ও স্থাপনে সহায়তা করেছিলেন ভি এন রাজন।

১৯৪১ সালে নাজিমুদ্দিন মুসলিম হল ও লাইব্রেরির মুখপত্র হিসেবে মাসিক নওরোজ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এই সাহিত্য পত্রিকায় মনসুর উদ্দিন আহমেদ, বেগম সুফিয়া কামাল, ড. এনামুল হক, ড. দীনেশ চন্দ্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র সেন, ড. আশরাফ সিদ্দিকী, রওশন ইজদানী, কবি কাদের নেওয়াজ, গাজী শামসুর রহমান প্রমুখ খ্যাতিমান ব্যক্তিদের লেখা প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৪৬ সালে লাইব্রেরির কর্মকর্তাদের উদ্যোগে নওরোজ প্রেস প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং এই প্রেস থেকে মাসিক নওরোজ পত্রিকা প্রকাশিত হতো। ১৯৪৬ সালে হেময়াতে আলী কলকাতায় অনুষ্ঠিত নিখিলবঙ্গ গ্রন্থাগার সম্মিলনে অংশগ্রহণ করে বক্তব্য প্রদান করেছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পত্রিকাটি কয়েক বছর বন্ধ ছিলো। ১৯৫০ সালে নওরোজ লেখকদের নিয়ে নওরোজ সাহিত্য মজলিশ গঠিত হয়। প্রতি মাসে সাহিত্য মজলিম অনুষ্ঠিত হতো। ১৯৫১ সালে নওরোজ সাহিত্য মজলিশ এর প্রচেষ্টা, শাহ মোহাম্মদ ইসহাক এর আর্থিক সহযোগিতা এবং হেমায়েত আলীর সম্পাদনায় নওরোজ পত্রিকাটি আবার প্রকাশিত হতে থাকে। তিনি ১৯৬৯ সালে মৃত্যুকাল পর্যন্ত পত্রিকাটি সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৫১ সালে নওরোজ সাহিত্য মজলিশ এর উদ্যোগে প্রথম সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় লিলি সিনেমা হলে জেলা প্রশাসক পানাউল্লাহ আহমেদের সভাপতিত্বে। ১৯৫১ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত প্রায় প্রতি বছরই নওরোজ সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতো। বিভিন্ন সম্মেলনে ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ড. কাজী দীন মোহাম্মদ, ড. এনামুল হক, অধ্যক্ষ ইব্রাহীম খাঁ, ড. গোবিন্দ চন্দ্র দে, কবি জসিম উদ্দিন, কবি গোলাম মোস্তফা প্রমুখ স্বনামধন্য সাহিত্যিকগণ উপস্থিত হয়েছেন।

১৯৫৪ সালে ভবন সম্প্রসারণ করা হয় এতে প্রায় ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। ১৯৫৭ সালে নাজিমুদ্দিন মুসলিম হল ও লাইব্রেরিতে আমেরিকান আর্ট এক্সিবিসান অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ১৯৬৮ সালে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক একেএম যাকারিয়ার উৎসাহ ও আগ্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্রহে লাইব্রেরির হলরুমটি মেরামত করে দিনাজপুর মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটি প্রতিষ্ঠায় ইতিহাসবিদ সৈয়দ মোশারফ হোসেন এবং মেহরাব আলীর সক্রিয় ভূমিকা ছিলো।

বর্তমানে হেমায়েত আলী পাবলিক লাইব্রেরিতে গ্রন্থাগার কার্যক্রমের পাশাপাশি সাহিত্য সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া দিনাজপুর মিউজিয়াম ও হলরুম পরিচালিত হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানের দ্বারা। বর্তমানে গ্রন্থাগারে বই সংখ্যা প্রায় ৪১ হাজার, প্রতিদিন ১০টি দৈনিক পত্রিকা রাখা হয়।



Title পঞ্চাশোর্ধ্ব গ্রন্থাগার পরিচিতি
Author
Publisher
ISBN 9789849921820
Edition 1st Published, 2025
Number of Pages 183
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)

Customers Also Bought

loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off

Recently Viewed

cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

পঞ্চাশোর্ধ্ব গ্রন্থাগার পরিচিতি

আশরাফুল আলম ছিদ্দিক

৳ 375 ৳500.0

Please rate this product