অজ্ঞাত কিছু লোকের হামলায় আহত এক লোককে মৃত ভেবে একটা প্রকান্ড বাড়ির ভেতরে অর্ধশুষ্ক পুকুর পাড়ে মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়। বৃষ্টি শুরু হলে পানির স্পর্শে কাঁদামাটি হয়ে উঠে, ফলে কাঁদা সব পানিতে সরে যায়। আর তখনই মানসিক ভারসাম্যহীন এক মেয়ে দেখতে পায়। সে বাড়ির দারোয়ানকে জানাতে চাইলে দারোয়ান তার কথার কোনো পরোয়া করে না। পরদিন সকালে যখন দেখতে যায় তখন সে এক লোককে আবিষ্কার করে সেখানে। তার কথার কেউ গুরুত্ব দিবে না বলে কাউকে জানানোর প্রয়োজনবোধ মনে করে না সে। নিজেই ছেলেটার দায়িত্ব নিয়ে নেয়। এরপর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠে। তবে ছেলেটা জ্ঞান ফিরে আসার দৃশ্যগুলো ক্রমান্বয়ে রহস্যময় হয়ে উঠেছে। অজ্ঞাত কোনো কারণে কিংবা আঘাতে স্মৃতিশক্তি হারানো ছেলেটা খুবই কল্পনাপ্রবণ । সবকিছু নিয়ে নিজের মত করে কল্পনা করে তার রহস্য উদঘাটন করাই তার ধর্ম। আর সে রহস্য যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক হোক, যখন সে আলোচনা করবে তখন অযৌক্তিক সবই যৌক্তিক হয়ে উঠে। তার ভাবনার বিষয়গুলো প্রাকৃতিক, সামাজিক কিংবা ব্যক্তিকেন্দ্রিক। মনে হয় এইতো সে নতুন কিছু আবিষ্কার করে ফেলেছে।দ্বিতীয় অধ্যায়ে যে গাড়িতে অসুস্থ অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ে, একমাত্র মৃত সন্তানের নামে নামকরণ করে গাড়ির সত্ত্বাধিকারীর সন্তানের মর্যাদা পায় ছেলেটা। তারা ছেলেটার মাঝে নিজেদের মৃতসন্তান আনানকে খুঁজে পায়। সর্বস্ব বিক্রি করে দেয় তাকে সুস্থ করবে বলে। একটা পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেল, সেও সুস্থ হলো ঠিকই কিন্তু পুরো পরিবার শেষ হয়ে গেল। পরের অধ্যায়ে তার অজানা গন্তব্যের শেষ হয় ভিক্ষুকদের মাঝে। এরপর এক ভিক্ষুকের সাথে তার বাড়িতে আশ্রয় নিলে, সেখানকার রহস্য উদঘাটন করেই সে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। আর পরবর্তী অধ্যায়ে সেখান থেকে সুস্থ করতে এক শিল্পপতির বাড়িতে তুলে নেন। আর সেখানেই নিজের মেধার সর্বোচ্চ পরিচয় দিয়ে হয়ে যান সেখানকার অন্যতম সদস্য।
মুহাম্মদ ফাহিম উদ্দিন ২০০২ সালের ১লা জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলায় তার নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মুহাম্মদ আবদুল মালেক একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং মাতা হাফেজা ছেনোয়ারা আকলিমা একজন গৃহিণী। তাঁর পৈতৃক নিবাস একই জেলার বাঁশখালী উপজেলার বাঁশখালা গ্রামে। ২০১৮ সালে মিরসরাই সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি এবং ২০২০ সালে প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজ হতে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাস করেন৷ এরপর তিনি একটি মেডিকেল ট্রেনিং সেন্টার হতে ১ বছরের ডিপ্লোমা (প্যরামেডিকেল) শেষ করে বর্তমানে বিএসসি তে অধ্যয়নরত। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে লিখালিখি শুরু হলেও অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এ 'স্বরূপে প্রত্যাবর্তন' ও 'পাষাণী' নামে তাঁর দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে পাষাণী কাব্যগ্রন্থ ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়৷