ফ্যাসিস্ট আমলে দেশে অবস্থান করে শেখ হাসিনা, হাসিনা সরকার বা শেখ পরিবারের সমালোচনা করা মোটেও সহজ ছিল না। আরও কঠিন ছিল ভারতের সমালোচনা করা। দেশের স্বার্থে ভারতের সমালোচনা করলে 'ভারত বিদ্বেষী' তকমা লাগিয়ে দেওয়া হতো।
সে সময় হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে 'টু দ্যা পয়েন্টে' সমালোচনা করে লিখেছেন এমন লেখক খুঁজলে ৫/৭জনের বেশি পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে যারা লিখেছেন তারাও মূলত আবু সাঈদের মতোই বন্দুকের গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েই লিখেছেন বলা যায়। আর যারা ভারতের সঙ্গে হাসিনা সরকারের অযৌক্তিক সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে লিখেছেন, তারা নিজের জীবনের মায়া ছেড়ে দিয়েই লিখেছেন।
এমনই প্রকৃত একজন ত্যাগী দেশপ্রেমিক লেখক একেএম শামসুদ্দিন। তার বিভিন্ন লেখায় উঠে এসেছে কীভাবে ভারত বাংলাদেশকে গ্রাস করার নীল নকশা প্রায় সম্পন্নই করে ফেলেছিল...। সেই যৌক্তিক এবং তথ্যপ্রমাণ ভিত্তিক তার অনেক লেখাই বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির পত্রিকা তখন ছাপাতে সাহস করেনি। লেখকের কিছু লেখা এক পত্রিকা অফিস থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর আবার তিনি অন্য পত্রিকায় পাঠিয়েছেন, সেই পত্রিকা অফিস থেকেও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে প্রায় অনেক পত্রিকা তার লেখা ছাপতে অপারগতা জানিয়েছে, এবং সম্পাদকীয় পাতার দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেকে লেখককে বরং এতো ঝুঁকি নিতে বারণ করেছিলেন। কিন্তু তিনি কারো বারণ গ্রাহ্য করেননি। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেনি লেখকের এমন কয়েকটি লেখা এই বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শেখ হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, জীবনের মায়া বিসর্জন দিয়ে, একের পর এক বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী ভারতীয় পদক্ষেপের সমালোচনা করে লিখে গেছেন। এই বইয়ের প্রায় সব নিবন্ধ ফ্যাসিস্ট আমলে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি এবং পদক্ষেপ বিষয়ে লেখা। ভারত বাংলাদেশকে কি চোখে দেখে, বাংলাদেশি হয়েও কারা কখন কীভাবে ভারতের স্বার্থ রক্ষা করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নষ্টের চেষ্টা করেছে- সেই বিষয়গুলো গভীরভাবে উঠে এসেছে এই বইতে।