রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আবির্ভাবের মহানিদর্শন যেভাবে সূর্যোদয়ের পূর্বে সুবেহ সাদিকের বিশ্বব্যাপী আলো ও প্রান্তের লালিমা পৃথিবীকে সূর্যোদয়ের সুসংবাদ দেয়, ঠিক সে ভাবে নবুওয়াতের সর্বশেষ সূর্য মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উদয় হবার সময় যখন ঘনিয়ে এল, তখন পৃথিবীর চার পার্শ্বে এমন অনেক ঘটনা প্রকাশ পেতে লাগল, যা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আবির্ভাবের মহানিদর্শনের বার্তা বহন করে।
হাদিস তত্ত্ববিদ ও ঐতিহাসিকদের পরিভাষায় এই মহানিদর্শনগুলোকে ইরহাসাত বলে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আবির্ভাবের পূর্বে প্রকাশিত ইরহাসাত বা মহানিদর্শনসমূহের মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য নিদর্শনের মধ্যে আসহাবে ফিল বা হস্তিবাহিনীর ঘটনা অন্যতম।
আসহাবে ফিল/হস্তিবাহিনীর ঘটনা
আবরাহা বিন সাবাহ হাবশি (যে নাজাশি বাদশাহ হাবশার পক্ষ থেকে ইয়ামানের গভর্নর ছিল) যখন দেখল, আরববাসী কাবা গৃহে হজ পালন করছে এবং একই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশের লোকজন সেখানে আগমন করছে। তখন আবরাহা ইয়ামানের রাজধানী সানআতে একটি বিরাট গির্জা নির্মাণ করল। আরব ঐতিহাসিক যাকে আল-কালিস বা আল কুলাইস আ আল কুল্লাইস এবং গ্রিকরা একলেসিয়া (Ekklesia) বলত। মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাকের বর্ণনায় রয়েছে, ওই গির্জা নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর সে হাবশার বাদশাহকে লিখে পাঠায়, আরবদের কাবার হজের পরিবর্তে যেন এ গির্জার দিকে ধাবিত হওয়ার আহ্বান জানায়।
ইয়ামান থেকে আবরাহার রওনা
হাফেজ ইবনে কাসির রহ. লিখেছেন, আবরাহা আল আশরাম ইয়ামানে ঘোষণা দিয়ে তার পরিকল্পনা প্রকাশ করে এবং ঘোষককে দিয়ে সর্বত্র ঘোষণা করায়। তার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে হেজাযের এক ব্যক্তি রাগান্বিত হয়ে যেকোনো উপায়ে গির্জায় প্রবেশ করে এবং মলত্যাগ করে ফিরে আসে। গির্জার এমন অবমাননায় আবরাহা ক্রোধান্বিত হয়ে কাবা ধ্বংসের শপথ গ্রহণ করে।