“তারা রাতের আঁধার শরীর জুড়ে মাখে,
তাদের অস্ত্রগুলোয় শান দিয়ে খুব যত্ন করে রাখে।
যখন ছিঁড়ল বাঁধন মধ্যরাতের পরে,
তখন বল্গাবিহীন ঘোড়ার মতো
প্রবল পায়ে ছুটল তারা বধ্যভূমির তরে।
হুক্কাহুয়া হুক্কাহুয়া সুরে,
ইতিহাসের পৃষ্ঠা থেকে
সহস্র সাল নাঙ্গা-ভুখা শেয়ালগুলো
উঠল কোথায় ডেকে!”
...
কবিতাংশ : আবরার ফাহাদ
কবি : তাজরিয়ান আলম আয়াজ।
আজ আবরার ফাহাদের ২৭ তম জন্মদিন৷ ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী মিছিলের প্রথম শহিদ আবরার। তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
উপকথা প্রকাশন থেকে আজ প্রকাশিত হলো তাজরিয়ান আলম আয়াজের প্রথম কাব্যগ্রন্থ “বর্ষাদ্রোহকাল”। মোট ৫৪টি কবিতা সংবলিত বইটিতে রয়েছে ‘আবরার ফাহাদ’ নামক কবিতাটি। এছাড়াও রয়েছে আমির আজিজের বিখ্যাত উর্দু কবিতা ‘সাব কুচ ইয়াদ রাখা যায়েগা’ অবলম্বনে ‘সকল কিছুই রাখছি মনে’।
“তোমরা যদি লাশ করে দাও, নাশ করে দাও কভু,
আত্মা আমার লিখবে তোমার খুনের প্রমাণ তবু।
অন্ধ চোখে দ্বন্দ্ব করো আদালতের কুমির,
সব দেয়ালে লিখব স্লোগান - ইনসাফ এবং ভূমির।
ঝংকার উঠুক, হুংকার উঠুক, শেকল ভাঙার গানও;
এমন স্লোগান উঠুক যেন, শুনবে বধির কানও!
কসম দিলাম প্রভুর -
সকল কিছুই রাখছি মনে, একটু করো সবুর!”
...
ফ্যাসিবাদী দানবের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা বিপ্লব, প্রতিরোধ, প্রতিবাদ মিশে আছে কবিতাগুলোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে। আছে রব কিংবা মানবীর প্রতি উৎসর্গিত প্রেম ও বিরহ। দ্রোহের উপস্থিতি আছে প্রতিটি কবিতার ছন্দে। আছে অগণিত শহিদের রক্তমূল্যে কেনা নতুন স্বাধীনতার আখ্যান। গত বর্ষায় ঘটে যাওয়া বাংলার অভ্যুত্থানকে, জাগরণকেও কবি আঁকতে চেয়েছেন কাব্যের রঙে। যুগ যুগ ধরে বাংলার বর্ষার মৌসুমগুলো যেন আসে এই প্রেম, বিরহ, বিপ্লব ও দ্রোহের মিশেল হয়ে। তাই তো কবি তার রচনার নাম দিয়েছেন “বর্ষাদ্রোহকাল”।
মাঝেমধ্যে কিছু কবিতার পংক্তি বা গানের কলি একবার পড়লে বা শুনলে আমাদের অবচেতন মনে বাসা বেঁধে নেয়। সুপাঠ্য এই কবিতাগুলোর মধ্যে বেশ কিছুদিন আমার মস্তিষ্ক দখল করে রেখেছিল যে পংক্তিগুলো: ‘রুবাইয়াৎ-এ-ইশক’ কবিতার -
“ইয়া ইলাহি, দাওনি আমায় জিবরাঈলের ডানা,
তুর পাহাড়ে কী দেখালে তাও বুঝি আনজানা;
নবুয়তের সিলসিলাতেও মোহর মেরে দিলে
দোহাই দোহাই, বোরাক পাঠাও - একসাথে হই ফানা।”