প্রযুক্তি মানুষের জীবনের মান উন্নয়নে বিভিন্ন পণ্য, যন্ত্রপাতি ও পদ্ধতির উদ্ভাবন করে। মানব জীবনে প্রতিনিয়তই প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর পাশাপাশি বিজ্ঞানের সহায়তায় নিত্য নতুন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আবিষ্কার হচ্ছে। বিজ্ঞানকে মানব কল্যাণে প্রয়োগ করার কৌশলে হচ্ছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তি মূলত মানুষের আবিষ্কার করা উপাদান বা উপকরণ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কারণেই আমরা আমাদের পৃথিবী এবং মহাকাশকে আরও ভালোভাবে জানি। মানুষের টিকে থাকা এবং বিকাশের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির অবদান অন্যতম। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের প্রথম চিহ্ন থেকে আদিম যুগ হতে বর্তমান আধুনিক সভ্যতা পর্যন্ত আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। মাত্র কয়েক দশক আগের তুলনায় বর্তমানে আমাদের জীবনযাপন সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে অনেক সহজ, দ্রুত এবং আরও সুবিধাজনক। আধুনিক যুগে যে জাতি তথ্যপ্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ, তাদের সার্বিক অবস্থাও তত বেশি উন্নত। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্ব পরিমণ্ডলে নিজ অবস্থান সুদৃঢ় ও উজ্জ্বল করতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই। কারণ একবিংশ শতাব্দীর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ দুইই আবর্তিত হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তিকে ঘিরে। শিল্প বিপ্লবের পর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন পৃথিবীতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নজিরবিহীন উন্নতির ফলে গোটা বিশ্ব আজ গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি দূরকে এনেছে চোখের সামনে, পরকে করেছে আপন, আর অসাধ্যকে করেছে সাধন। তথ্যপ্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বের সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মূল হাতিয়ার। এছাড়াও বিজ্ঞানের বর্তমান উৎকর্ষের সময়ে মহাকাশ প্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ অফুরন্ত সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। বর্তমানে সম্প্রচার, যোগাযোগ, আবহাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি মহাকাশ হয়ে উঠেছে প্রকৃতি সুরক্ষা ও খনিজসম্পদ অনুসন্ধানেরও বড় একটি মাধ্যম। প্রযুক্তি বিশ্নেষকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে আগামী দশকের মধ্যেই মহাকাশ বিজ্ঞান হয়ে উঠবে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, বিশ্ববাণিজ্য ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির মূল নিয়ামক। বিশ্বজুড়ে এখন মহাকাশ বিজ্ঞান পরিণত হয়েছে মহাকাশ বাণিজ্যে। এ ছাড়া বৈজ্ঞানিক গবেষণার উন্নতি, রাষ্ট্রীয় গৌরব ও সম্মান অর্জন, বিভিন্ন রাষ্ট্রের বন্ধুত্ব, মানুষের ভবিষ্যৎ অস্তিত্ব নিশ্চিত করা এবং সামরিক ও কৌশলগত সক্ষমতার উন্নয়ন ইত্যাদি মহাকাশ প্রযুক্তি প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বলে শেষ করা যাবেনা। সুতরাং আধুনিক বিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে সবাইকে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে।