দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শাসন আর বর্বর বন্দিশালা ‘আয়নাঘরে’র অন্ধকারের ইতি টেনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে গেছে শেখ হাসিনা। স্বৈরিণী হাসিনার অপশাসনের দহনকালে গণ-মানুষের বিশ্বাস ছুঁয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ইশতেহারে শৃঙ্খল মুক্তির গান গেয়েছেন লন্ডনে নির্বাসিত জীবনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তারেক রহমানের বক্তব্যে ধ্বনিত হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষকের স্বনির্ভর বাংলাদেশের বয়ান, গণ-মানুষের ইশতেহারের বাংলাদেশ পুনরুদ্ধার, মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন সংগ্রামীগাথা, শোষিত মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর পথনির্দেশনা আর তরুণ প্রজন্মের প্রতি গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বান।
ফ্যাসিবাদের আজ্ঞাবহ আদালত ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি দেশের গণমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য বিবৃতি প্রকাশ এবং প্রচার নিষিদ্ধ করে।
বক্তব্য নিষিদ্ধ হলেও নিশ্চুপ থাকেননি তারেক রহমান। আট হাজার মাইল দূরবর্তী টেমসের শহর থেকে তিনি জনগণের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ জনগণকে ফিরিয়ে দেয়ার স্বপ্নকে দেখেছেন ফিনিক্স পাখির চোখে। গণতন্ত্র মানবাধিকার ভোটাধিকারের পক্ষে সময়োচিত বক্তব্য দিয়ে স্বাধীনতাপ্রিয় বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন।
মানুষের কথাগুলো স্বৈরাচারের কানে বিদ্ধ করতে তাঁর সামনে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর সারাদেশে বিস্তৃত জাতীয়তাবাদী শক্তির নেটওয়ার্ক। দেশের গণমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য বিবৃতি প্রচারের নিষিদ্ধ সময়ের ৩৬টি নির্বাচিত বক্তব্য নিয়ে হচ্ছে একটি গ্রন্থ ‘তারেক রহমানের নিষিদ্ধ ভাষণ’। বইটি সম্পাদনা করেছেন লন্ডনপ্রবাসী সাংবাদিক ড. সালেহ শিবলী। বইটি হতে পারে ইতিহাসের এক অনন্য দলিল।
ড. সালেহ শিবলী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকায় ক্যাম্পাস রিপোর্টার হিসেবে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত হন। ছাত্র অবস্থায় পেশা হিসেবে সাংবাদিকতায় যুক্ত হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন লোক প্রশাসন বিভাগে। লোক প্রশাসন বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। তবে সাংবাদিকতা পেশা থেকে আর বিযুক্ত হওয়া হয়ে ওঠেনি। পর্যায়ক্রমে দৈনিক মানব জমিন, বেসরকারি সংবাদ সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি), রেডিও টুডে, চ্যানেল আইসহ গণমাধ্যমের প্রতিটি শাখায় কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে স্বল্পকালীন সময়ের জন্য ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাপান থেকে কিতাকিয়ুশু ফোরাম অন এশিয়ান উইমেন (কেএফএডাব্লিউ) প্রকাশিত ম্যাগাজিন ‘এশিয়ান ব্রিজ’-এ বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে তাঁর একাধিক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। প্রবাসজীবনে লন্ডনের বাংলাভাষী টেলিভিশন ‘চ্যানেল এস’-এ নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একইসঙ্গে তিনি গণমাধ্যম ও প্রশাসন সম্পর্কিত বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক রাজনৈতিক গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান ‘সিডনি পলিসি অ্যান্ড এনালাইসিস সেন্টার (স্প্যাক)-এর নন-রেসিডেন্ট ফেলো।