প্রত্যেক মানুষ জীবনে সুখ চায়, শান্তি চায়। এ জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে। পরিশ্রম সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। যারা অলস, দুর্ভোগ তাদেরকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখে। উন্নতির সব পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। সততা আর পরিশ্রম মানুষকে সামনে এগিয়ে নেয়। এখানেই পাওয়া যায় মানুষের পরিচয়।
সমাজে নানা রকম বিশৃঙ্খলা চলছে, অশান্তি বিরাজ করছে, মানুষে মানুষে বিশ্বাস কমছে, সহসা কেউ কাউকে আস্থায় নিতে পারছে না। কোন না কোন বিষয় নিয়ে চলছে ঘরে ঘরে অশান্তি। ছোটখাটো বিষয়ে মত বিরোধ, মত পার্থক্য ঘটে, সেখান থেকে জল গড়িয়ে যায় আরও অনেক দূর। ভাল থাকতে চাইলেও পারিপার্শ্বিক অবস্থার জন্য ভাল থাকা যায় না। হিংসা-প্রতিহিংসার আগুনে দগ্ধ হচ্ছে অনেকেই। চাওয়া ও পাওয়ার মধ্যে রয়েছে বিরাট ফাঁরাক।
অর্থনৈতিক বৈষম্য দিন দিন প্রকট হচ্ছে। আয়-বৈষম্য বিরাজমান। যার যেখানে সুযোগ থাকে, ক্ষমতা থাকে তিনি যেনতেন প্রকারণে হোক অর্থ হাতিয়ে নিতে কালক্ষেপণ করেন না। অতিরিক্ত অর্থ আয়ের জন্য তারা অবৈধ পন্থা বেছে নেয়। ফলে কিছু মানুষের হাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদ কুক্ষিগত হচ্ছে, অন্য দিকে এক শ্রেণির মানুষ হাড়ভাঙ্গা খাটুনিতেও তিনবেলা অন্ন সংস্থান করতে পারছে না।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিভাজন প্রকট হওয়ায় অশান্তি দিন দিন বেড়ে চলছে। সকল প্রকার বৈষম্য থেকে সবাই পরিত্রাণ পেতে চায়। দেশ রসাতলে যাচ্ছে আর মানুষের নৈতিকতা তলানিতে নেমে যাচ্ছে, দুর্নীতিবাজদের লজ্জা-শরম নেই বললেই চলে। অনেকেই বেহায়াপানার চূড়ান্ত পর্যায়ে যেতে দ্বিধা করছে না। অশ্লীলতা আর কু-প্রবৃত্তির তাড়নায় এক শ্রেণির মানুষ মোহাবিষ্ট হয়ে পড়েছে। সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। মানব-মর্যাদার ক্রমাবনতি ঘটছে। এ থেকে পরিত্রাণ দরকার। তা না হলে সভ্যতা কলুষিত হতে থাকবে এবং একসময় সমাজ সভ্যতা আদিম যুগে ফিরে যাওয়া অম্ভব নয়।
এ থেকে পরিত্রাণের পথ কি? কোনো পথই কি খোলা নেই? ত্রাতার ভূমিকা নিয়ে আলোর মশাল জ্বালিয়ে কে এগিয়ে আসবে? কোনো মানুষ অন্ধকারে থাকতে চায় না, আলোর পথেই তার গন্তব্য। সততা ও ন্যায়নিষ্ঠা এবং পরিশ্রমী মানুষগুলোর যাত্রা সব সময় আলোর পথে।
সততার চেয়ে সুখ, সততার চেয়ে শান্তি পৃথিবীতে অন্য কিছুতে নেই। বাক্তি জীবনে এবং পারিবারিক জীবনে শান্তি চাইলে সৎ থাকতে হবে, সৎভাবে জীবন যাপন করতে হবে। সততা মানুষকে উজ্জ্বল করে, সততা মানুষকে আলোকিত করে। সততার বিকল্প কিছু নেই। সততার অনুশীলন নিজে নিজেই করতে হবে। প্রতিটি পরিবারের কর্তার চাল-চলন, আচার-ব্যবহার, নৈতিকতায় সৎ হলে সে পরিবারে সৎ লোকের সংখ্যা বাড়তে বাধ্য। প্রত্যেকের দায়িত্ব হবে নিজে সৎ থাকা এবং অন্যকেও সৎ পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করা। যে পরিবারে সৎ মানুষের সংখ্যা বেশি সে পরিবারে শান্তি বিরাজমান।
এই বইয়ে সত্য কথা বলা, সৎ পথে চলা, সৎ উপার্জন করা, সচ্চরিত্র হওয়া, অশ্লীলতামুক্ত জীবন যাপনে উদ্বুদ্ধ করার পথ দেখানো হয়েছে। অবৈধ অর্থ সম্পদ কুক্ষিগত করা, দুর্নীতি ও অন্যায় কার্য মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। সং মানুষ বিনয়ী ও আদর্শবান হয়।
একজন সৎ মানুষকে কি কি কাজ করতে হবে এবং কোন কোন কাজ বর্জন করতে হবে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে। আশা করি, সত্যানুসন্ধানী পাঠকদের এ বইটি ভাল লাগবে।