কিংবদন্তির দিন (হার্ডকভার)

সে এক চরম দুঃসময়ের দিন-রাত যখন অদৃশ্য এক মৃত্যুদূতের ভয়ে মানুষ ঘরের চার দেওয়ালের ভেতর বন্দি জীবন কাটায় আর প্রতীক্ষায় থাকে। মুক্তির প্রভাতের এই সাধারণনিয়মের ব্যতিক্রম হয়ে মানুষের কাফেলা হেঁটে আসে সারা বাংলাদেশের গ্রাম থেকে রাজধানীর দিকে বকেয়া মজুরি পাওয়ার আশায়। ঢাকায় এসে মজুরির পরিবর্তে তারা পায় মালিকের নির্দেশে গার্মেন্টসের নিরাপত্তাকর্মীদের প্রহার। আশ্রয়হীন এইসব নর-নারীর গার্মেন্টস শ্রমিক বিনিদ্র রাত রাজধানীর ফুটপাতে-পার্কে-স্টেশনে কাটিয়ে আবার পায়ে হেঁটে রওনা হয় দূরদূরান্তে নিজ গ্রামের উদ্দেশে।

এই উপন্যাস কোভিডের দুঃসময়কালে হাজার হাজার অভুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিকের পদব্রজে মাইলের পর মাইল হেঁটে বকেয়া টাকা পাওয়ার আশায় রাজধানীতে আসা। এবং বকেয়া টাকা না পেয়ে বঙ্গহৃদয়ে শেষ আশ্রয় গ্রামে ফিরে যাওয়ার কাহিনি। সেই সঙ্গে আছে সংসার সীমান্তের কিছু নারীর সমবেদনার উল্লেখ এবং বিত্তবান শ্রেণির স্বার্থপরতা ও উপেক্ষা।

উপন্যাসের কাহিনিকে ধরে রেখেছে ফেরির চালক। সুরুজ মাস্টারের নদীর তীরের জীবন। যার স্মরণীয় পর্ব শ্রান্ত-ক্লান্ত পোশাক শ্রমিকদের সরকারিভাবে বন্ধ ফেরি সারারাত চালিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া।

ছোট কলেবরে এই উপন্যাসে রয়েছে এপিকের বিস্তার। মানুষের নির্র্দয়-নিষ্ঠুরতার পাশাপাশি মানবিকতার জয়গানে মুখরিত উপন্যাসের দীনহীন চরিত্রের অন্তর।