নৈঃশব্দ্যের কবি ও কথাসাহিত্যিক অধ্যক্ষ ড. শাহনাজ পারভীন একজন নিভৃতচারী ও সব্যসাচী লেখক। এই লেখকের গল্পগুলোতে মূলত সমাজের পোড় খাওয়া পরিশ্রমী মানুষদের অন্তর্গত জীবন কাহিনী জড়িয়ে থাকে। জড়িয়ে থাকে শহর, নগর, বন্দর এবং এদেশ ছাড়িয়ে বিদেশ অতঃপর বিশ্বের নানান কাহিনীর দশ দিগন্ত। তিনি তাঁর গল্পের মাধ্যমে সমাজের নানান অসংগতি তুলে এনেছেন নিখুঁত নিপুণতায়। গ্রাম থেকে উঠে আসা জীবন নানা আবর্তে যখন শহরের ঝলকানিতে ঠিকরে ওঠে, তখন তাদের চোখে নানা বর্ণিল আলোর চৈতন্য জীবনের ফাঁক ফোকর গলিয়ে নিভৃতে উঁকি দেয়। অথচ রাষ্ট্রযন্ত্রের রাজনৈতিক কার্যকলাপের ঘেরাটোপ অন্ধকারে পাঠার বলি হয়ে অকালেই ঝরে পড়ে কত তরুণ, ছাত্র, চাকরীজীবি এবং সাধারণ জনগণ।
তারা তাদের জীবনের সহজ পথ হারিয়ে রব্যাব, রাজনীতির অন্ধকার গুহায় হাবুডুবু খেতে খেতে এক সময় স্থবির হয়ে যায়। তারপর এক সময় তুমুল অগ্নিস্ফুলিঙ্গে জেগেও ওঠে জনগণ। আমাদের চোখে ভাসে কালার রেভ্যুলেশন এর নানান ইতিহাস। সে ইতিহাসের অংশ হিসেবে একেক জন শাবিকের চোখে ফোটে সরষে ফুলের মতো আকাক্ষিত ভাতের থালা-এরকম একটি সাহসী গল্প 'ভাতের থালা'। গ্রন্থাবদ্ধ উনিশটি গল্পকে কেন্দ্র করেই গ্রন্থের শিরোনাম নির্বাচন করা হয়েছে ভাতের থালা।
বর্তমান সময়ের রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতির নানাবিধ ঘটনা, রটনা এবং কাহিনীকে কেন্দ্র করে লিখিত প্রতিটি গল্পই স্বতন্ত্র। যা পাঠের মাধ্যমে কথাসাহিত্যিক অধ্যক্ষ ড. শাহনাজ পারভীন এর গল্প বলার পারঙ্গমতা, কঠিন জীবনবোধ এবং তাঁর লেখার সাহিত্যিক গুণ সম্পর্কে পাঠক স্বচ্ছ ধারণা পাবেন। তাঁর প্রায় প্রতিটি গল্পেই নারীকে প্রধান চরিত্র হিসেবে নারীর শিক্ষা, কর্ম ও সুক্ষ ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে সমাজের এক উচ্চ অবস্থানে উপস্থাপন করা হয়েছে। লেখক ও গবেষক ড. শাহনাজ পারভীন এর সমকালীন ভাষা, জীবন্ত সংলাপ এবং প্রাণবন্ত উপস্থাপনা সহজেই একজন পাঠককে অবলীলায় পাঠের গভীরে নিয়ে যায়। যা একজন কথাসাহিত্যিকের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য।
নৈঃশব্দের কবি ড. শাহনাজ পারভীন। তিনি একজন সব্যসাচী লেখক। সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার বিচরণ রয়েছে। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গবেষণা, কলাম, গান, কিশোর কবিতা, ছড়া, শিশুতোষ গল্প সব বিষয়েই তিনি বিরামহীন ভাবে লিখে চলেছেন। নব্বই দশকের শক্তিমান এই কবির জন্ম ৭ই মে, ১৯৬৮, কামার খালী, ফরিদ পুর। পিতা মোহাম্মদ বজলুর রহমান, মাতা সামসুন্নাহার ফুল । স্বামী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জননী। শিক্ষা জীবন : তিনি ফরিদপুরের কামারখালী সরকারি গার্লস স্কুল থেকে ১৯৮৩ সালে মাধ্যমিক ও কামারখালী সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ আবদুর রউফ ডিগ্রী কলেজ থেকে ১৯৮৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর যশোর সরকারি সিটি কলেজ থেকে স্নাতক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৯০ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্বাবিদ্যালয় থেকে বিএড, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৩ সালে এ১২ সালে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। কর্মজীবন : প্রথমে তিনি না যোগাড়া মহিলা কলেজ, অভয়নগর, যশোর এ প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। তারপর উপহর ডিগ্রি কলেজে কর্মরত হন। সেখানে কর্মরত অবস্থায় এমফিল এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখান থেকে তিনি উপশহর মহিলা কলেজ, যশোর এর উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন আগে বর্তমানে তালবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজ, যশোরের অধ্যক্ষ হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্পাদনা: দ্যোতনা, নান্দনিক ধারার সাহিত্য কাগজ, যশোর : ছড়াঘর, ছড়া পত্রিকা, যশোর। সংশ্লিষ্টতা: সভাপতি- অগ্নিবীণা, কেন্দ্রীয় সংসদ, যশোর। এছাড়াও তিনি সামাজিক সংগঠন “গর্জে ওঠো” এর অন্যতম উপদেষ্টা ।