মানসম্মত শিক্ষার জন্য শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিক্ষার উদ্দেশ্য ও চাহিদার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক নানান পরিবর্তন ও তথ্য-প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নের ফলে বিদ্যালয় ও শ্রেণিকক্ষের শিক্ষণ-শিখনেও পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। বিগত কয়েক দশক ধরে সবার জন্য শিক্ষা অর্জনে অনেক ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তবে ২০৩০ সালের মধ্যে মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের বিষয়টি খুবই গুরুত্ব পেয়েছে। এসডিজি লক্ষ্য-৪ মানসম্মত শিক্ষণ-শিখনের জন্য যোগ্য শিক্ষক নিশ্চিতকরণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। এসব প্রেক্ষাপটে সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা উন্নয়নের বিষয়টি অত্যন্ত সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে শ্রেণিকক্ষ-কেন্দ্রিক অ্যাকশন রিসার্চ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বাংলাদেশের চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) উপ-উপাদান ২.৬ (বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং প্রতিবন্ধকতা বা এসইএনডি) তে বাংলাদেশ সরকার চারটি প্রধান অগ্রাধিকার শনাক্ত করেছে: ১) পাঠ্যক্রম এবং মূল্যায়ন, যার মধ্যে আছে পাঠ্যক্রম মূল্যায়ন ও পুনর্বিবেচনা এবং শিখন উপকরণ অভিযোজন, ২) শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়ন, যার মধ্যে আছে প্রশিক্ষণ পর্যালোচনা ও পুনর্বিবেচনা, সবার অন্তর্ভুক্তিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশিক্ষণ উপকরণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অনুশীলনে শিক্ষকদের চলমান মেন্টরিং, ৩) নমনীয় পরীক্ষা পদ্ধতি এবং একাধিক মূল্যায়নের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের হালনাগাদ মড্যালিটি ও নীতিমালা প্রণয়ন এবং ৪) অতিরিক্ত সহায়ক সেবাগুলো সঙ্গে সংযুক্ত করা, যার মধ্যে আছে সহায়ক ডিভাইসগুলো, সংযুক্ত স্কুলগুলো যাদের সঙ্গে বাইরের সম্প্রদায়ের পরিষেবাদি প্রদানের সম্পর্ক আছে এবং যারা স্বতন্ত্র শিক্ষামূলক পরিকল্পনা (আইইপি) বাস্তবায়ন করেন। আমরা বিশ্বাস করি যে, এই অ্যাকশন রিসার্চ নির্দেশিকাটি বাংলাদেশের শিক্ষক ও শিক্ষা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সব শিক্ষার্থীর সাফল্যের আইইপিগুলো সফলভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে শিক্ষকরা বাংলা ভাষায় শিক্ষণ
পরিচালনা করেন তাঁদের জন্য GCFIL গাইডটি বাংলায় অনুবাদ ও অভিযোজন করেছে। আশা করি, এই গাইড বইটি অ্যাকশন রিসার্চ পরিচালনায় শিক্ষকদের সহায়তা ও তাদের পেশাগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। বিশেষ করে, পল্লী ও দুর্গম অঞ্চলের শিক্ষক, যাদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ কম, তাঁদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রিসোর্স। এটি শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার্থীদের মানসম্মত উন্নয়নেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করি।