অদ্ভুত ক্ষ্যাপাটে টুনা মাতবরের চোখ পড়ে বিবিরোনের উপর। মিথ্যা অপবাদে গ্রাম্য বিচারে ডেকে এনে অন্যায়ভাবে মারধর করে তাকে। অসহায় বিবিরোনের কিছুই করার উপায় থাকে না। ঘটনায় পুরো গ্রামবাসী বিব্রত বিরক্ত হয়েও শুধু টুনা মাতবরের ভয়ে চুপ থাকে। কারণ এ গ্রামে টুনা মাতবরের কথাই শেষ কথা। কেননা গাঁয়ে টুনা মাতবরের ঝুটন চকিদার আর জোয়াদ্দার মতবরের শক্তিশালী হাত আছে। এরা অন্যায়কে ন্যায় করে উপস্থাপনে সদা সর্বদা কাজ করে চলছে। ভিতরে ভিতরে চলে গভীর ষড়যন্ত্র। অনেক আগেই বিবিরোনের স্বামীকে হত্যা করা হয় চায়ের সাথে বিষ মিশিয়ে। নরেশ পোদ্দার এ অন্যায়ে জড়িত। বিবিরোন আগুন লাগায়, তবু মারতে পারেনা নরেশ পোদ্দরের মতো নরপিচাশকে। প্রতিনিয়ত চলতে থাকে বিবিরোনকে মেরে ফেলার যড়যন্ত্র। অথছ টুনা মাতবরের মনে বড় খায়েস, বিবিরোন বিয়ে করে ঘরে তুলবে। তার ঘরখানা তো কবে থেকেই খালি। আবার এসব ভেবে একটু দ্বিধাও হয়, তার ঘরে তার বিয়ের যুগ্যি জোয়ান ছেলে! বিধিধাম, টুনা মাতবরের সেই ছেলের সাথেই বিবিরোনের অকাট্য ভাব। কখন কিভাবে যেন হয়ে গেছে তাহাদের মনের মিল। কাঠ কয়লার আগুনের মতো জ¦লতে থাকা দুঃখ কষ্টে ভরা জীবনে তার হঠাৎ করেই যেন রঙীন আশা জেগে উঠে। সোহানকে নিয়ে আবার স্বপ্ন দেখে সাহস করে।
এসব কি আর মেনে নেয়া যায়? ছি ছি গাঁয়ের ছোটলোকগুলো নিশ্চয় দাঁত কেলিয়ে হাঁসবে আর টুনা মাতবরের নামে খিস্তি কাটবে। টুনা মাতবরের রক্ত মাথায় উঠে আসে। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেনা। সোহান তোর সাহস হয় কি করে এই মেয়েকে ঘরে ঢুকানোর। হেসেল ঘরের মাচা থেকে দা তুলে নেয়, আজ এর এ একটা বিহিত করবোই করবো। সত্যি সত্যি দা চালিয়ে দেয় টুনা পাগল। ছেলে তার লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। সেই যে পালায়, আর ফিরে না গাঁয়ে। জেলে যেতে বিবিরোনকে। কিন্তু নির্দোষ বিবিরোনকে বাঁচানো যাবে কি? এস আই হাসান সেদিনের সেই ছোঁয়াটুকু জিইয়ে রাখে মনে। কেন ববিরোনকে ভুলতে পারেনি সে? সকল কিছুর পরও সেও বিবিরোনকেই চায়। বিবিরোন কি তবে পারবে এতকিছুর পরেও তার হাত ধরে জীবনের বাকিদিন গুলো কাটিয়ে দিতে।