মেধাতন্ত্র হলো এমন একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্থান যেখানে ব্যক্তির সফলতা, অবস্থান ও মর্যাদা নির্ভর করে ব্যক্তির মেধা, দক্ষতা ও সামর্থ্যরে ওপর। এখানে ব্যক্তির সামাজিক শ্রেণি, পারিবারিক ঐতিহ্য ও অর্জিত বা প্রাপ্ত সম্পদ কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে না। ন্যায্যতা ও দক্ষতার ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় ধারণাটি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে। ধারণাটির দার্শনিক ভিত্তি হলো ‘ব্যক্তির সামর্থ্যরে ওপর আস্থা’, নৈতিক ভিত্তি হলো ‘পক্ষপাতহীন প্রতিযোগিতা’ ও ‘সুযোগের সমতা’ এবং রাজনৈতিক ভিত্তি হলো ‘সকলের সমান অধিকার’। মেধাতান্ত্রিক সামাজিক সংস্থানে কোনো ব্যক্তি নিজেকে বঞ্চিত মনে করেন না। একটি আদর্শ মেধাভিত্তিক সমাজে সকল প্রকার দুর্নীতি পরিহার করে স্বচ্ছ, বিশুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ায় সামাজিক গতিময়তা অব্যাহত রাখা যায়। এটি বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার একটি প্রচলিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল লক্ষণা।
রাজনীতির ক্ষেত্রে মেধাতন্ত্র একটি কাঠামো ও উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে যাতে জনবান্ধব, প্রতিশ্রুতিশীল, ও দায়িত্ববান রাজনৈতিক কর্মী নির্বাচন করা যায়। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সর্বগ্রাসী ‘রাজনীতিতন্ত্র’ এমন একটি কৃষ্ণগহ্বর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে যা সকল প্রকার সামাজিক শুভ উদ্যোগকে গিলে খায়। এর থেকে মুক্তির একটি প্রয়োজনীয় ও বাস্তব উপায় হলো রাজনৈতিক মেধাতন্ত্রের প্রচলন।
এই দার্শনিক ভাবনার প্রকাশ রয়েছে মাসুদ আলমের বর্তমান গ্রন্থের প্রবন্ধগুলোতে। বিকাশমান যে-কোনো রাষ্ট্রের পরিস্থিতি বোঝার জন্য এই বই সহায়ক হবে বলে ধারণা করা যায়।
ছোটবেলায় রেডিও ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। যেকোনো খেলা হলেই ধারাবিবরণী শোনা চাই-ই চাই। তা সেই মেলবোর্ন-ডানেডিনে ক্রিকেট হোক, ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়াম বা আকাশবাণীর কল্যাণে কলকাতার ফুটবল। টিভিতে ক্রিকেট, ফুটবল ম্যাচ দেখে এবং রেডিওতে শুনতে শুনতে অন্য জগতে বুঁদ। আশির দশকে মাঠে বসে খেলা দেখার নেশা পেয়ে বসেছিল তাঁকে। মাসুদ আলমের জীবনে খেলার প্রভাব এমনই তীব্র। সেই আকর্ষণেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করার পর পেশাদার ক্রীড়া সাংবাদিকতায় আসা। তারপর তো লম্বা ভ্রমণ, সাংবাদিক হিসেবে ১৯৯৬ থেকে একটানা নিরবচ্ছিন্ন বিচরণ এ দেশের প্রায় সব খেলার মাঠেই। বর্তমানে দৈনিক প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত। পেশাগতভাবে ফুটবলের সঙ্গেই যোগাযোগটা বেশি, এখন তো তা জীবনেরই অংশ। মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর ঠিক আগের মাসে জন্ম, ৪৮ বছরে পা রেখেও মনে হয় ক্রীড়া সাংবাদিকতায় আজও নবীন! শুরুর মতোই উদ্দীপ্ত!