কবিতা গান স্লোগানে দেশ-কাল-জীবন ৭৫০-২০২৪ (হার্ডকভার)

বাংলার মানুষের ইতিহাস মানে আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস। কখনো রাষ্ট্রীয় শোষণের বিরুদ্ধে, কখনো সামাজিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে, কখনো সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই মাটির মানুষ বারবার আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। আর সকল আন্দোলন-সংগ্রামে কবিতা, গান ও স্লোগান প্রতিরোধের ভাষা হয়ে উঠেছে। কবি তাপস মাহমুদের “কবিতা গান স্লোগানে দেশ-কাল-জীবন” সেইসব আন্দোলন-সংগ্রামেরই এক নিবিড় প্রতিফলন।

কৈবর্ত বিদ্রোহ থেকে শুরু করে ২০২৪ এর জুলাই আন্দোলন পর্যন্ত এই বইয়ে ধরা পড়েছে বাংলার প্রতিবাদী উচ্চারণ ও আন্দোলনের প্রেক্ষাপট। এইসব গণআন্দোলনের প্রতিটি ঢেউয়ে কবিতার পঙক্তিতে মানুষ গর্জে উঠেছে, স্লোগান রক্তে আগুন ধরিয়েছে, গান একাত্মতা ও উজ্জীবনের শক্তি জুগিয়েছে।

এই সংকলন শুধু আন্দোলনের প্রেক্ষাপটের দলিল নয়; এটি এক অর্থে সময়ের সাক্ষ্য, যেখানে কবিতার ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়েছে পথে, মিছিলে, দাবির কণ্ঠে। দেশ, কাল ও জীবনের যে টানাপোড়েন, যে নিপীড়ন, যে ক্ষোভ, তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে সংগ্রামী সাহিত্যে। ক্ষমতার পালাবদলের বৈচিত্র্য, বিদ্রোহের কথাও উদ্ভাসিত হয়েছে কবিতার জ্বলন্ত শিখার উদ্গিরণের মতো। এক কথায় বইটি চলমান আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিক চিত্রায়ণ।

যদিও ইতিহাস থেকে শোষক শাসকগোষ্ঠী শিক্ষা লাভ করে না। এক শোষক শাসকের পতনের পর যাদের ক্ষমতায়ন ঘটে, তারাই পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন শোষক শাসক। তবুও অতীত আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস মানুষের আত্মত্যাগ ও শোষকের পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয় বারবার- মানুষকে নতুন সংগ্রামের পথ দেখাবার জন্য, ভবিষ্যতের অনমনীয় চেতনাকে জাগ্রত রাখার জন্য।

-সাকিল মাসুদ