জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দেখি অনেক স্মৃতি, কিছু আনন্দময় এবং কিছু বেদনাময়। সব আমার মনের দ্বারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উঁকিঝুঁকি মারছে। কিন্তু সব স্মৃতিই মানব কৌতূহল নয়। মানব কৌতূহল না হলে কেহ পড়বে না। লিখতে চাই আমাদের প্রজন্মের জন্য। তাদের বংশের ইতিহাস জানা দরকার। আমার দাদা ও দাদি অনেক দাতব্য কাজ করেছেন। বিশেষ করে আমার দাদি যার সাক্ষী মাত্র আমি। তার দাতব্য কাজে সহকারী ছিলাম, আমার বাবা অথবা চাচা এ সম্বন্ধে কিছুই জানতেন না। আমার বড় ফুফু হয়তো কিছু জানতেন। পৃথিবীর অনেক দেশে ঘুরেছি, অনেক দেশে চাকরি করেছি, অনেক কিছু দেখেছি, অনেক লোকের সাথে দেখা হয়েছে, বন্ধুত্ব হয়েছে, বিচিত্র অভিজ্ঞতা। যার কিছু লেখা হয়ত কারো ভালো লাগতে পারে।
আর কি লিখেছি। খুন, ডাকাতি, রেপ, কি নাই। লোমহর্ষক অনেক কাহিনি। প্রেম ভালোবাসা সবই আছে। পড়ে দেখুন।
আমি আল্লাহ সোবাহানাতায়ালায় বিশ্বাস করি। বিদেশে যখনই বিপদে পড়েছি প্রথমে আল্লার কাছে হাত পেতেছি এবং উদ্ধার পেয়েছি। মনে হবে নাটকীয় কিন্তু সত্য। তাও লিখতে চাই।
১৯৭১-এর ২৫ মার্চের কাল রাত্রিতে আমরা ঢাকায় ছিলাম, তার কিছু কাহিনি লিখার চেষ্টা করব।
সবশেষে ভাষা নিয়ে। একটু চিন্তায় আছি আমরা যারা বিদেশে থাকি আমাদের কাছে ভাষা ও দেশ সেখানেই থেমে যায় যেখানে আমরা দেশ ছেড়েছি। একটা দিয়ে উদাহরণ দিলাম।
একদিন এ বি ব্যাংকের উত্তরা শাখা থেকে বেরিয়ে রিক্সা খুঁজছিলাম কারণ পকেটে অনেক টাকা। সাধারণত আমি হেঁটে যাতায়াত করি। সেদিনও হেঁটেগিয়েছিলাম। কিন্তু কেমন একটা থমথমে ভাব, কোনো রিক্সা নাই। ১৩ নম্বর রোডে হেঁটে চলে আসলাম। সেখানে বেশ ভিতরে একটা রিক্সা পেলাম। রিক্সাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে। বলল বিক্ষোভ। আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন? উত্তর হলো "একটি শিশুকে মেরে ফেলা হয়েছে। শিশুটিকে মেরে নর্দমায় ফেলা হয়েছে। পুলিশ আসামিকে ছেড়ে দিয়েছে।" আমি প্রায় রিকশা থেকে পড়ে যাচ্ছিলাম রিক্সাওয়ালার কথা শুনে। একটু পরে রিক্সাওয়ালা আমাকে বলল "স্যার আমি প্রতিবন্ধী, সিগন্যালটা আপনি দিলে ভালো হয়"। আমি তাকিয়ে দেখি ওর একটা হাত নাই। তখন বুঝলাম প্রতিবন্ধী কাকে বলে। আমি জানতাম না সে জন্যই বলছি ভাষা নিয়ে একটু চিন্তায় আছি আজকাল ভাষা শুনলে মনে হয় সংস্কৃত শুনছি।
বইটা লেখা ও সম্পাদনা করার সময় দেখলাম এক জায়গায় বেশ কিছু repeat হয়েছে। এক computer expertকে দিয়েছিলাম ঠিক করতে। সে আমার পুরো লেখাটাই delete করে দিয়েছে। উদ্ধার করতে পারলাম না। কাঠামো আরেক খানে ছিল, তার উপরে আবার লিখলাম। যা দুই বছর ধরে লিখেছিলাম, তা কয়েকদিনে লিখলাম। তাই কিছুটা খাপছাড়া হতে পারে। পাঠক, তার জন্য আমি দুঃখিত।
অনেকবার রিভিশন দেয়ার পরেও হয়ত বানান ভুল থাকতে পারে, তার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। আর বইতে বাংলাদেশিদের ছদ্মনাম দেয়া হয়েছে।