অতঃপর চাঁদের পাহাড় (হার্ডকভার)

মানুষ মূলত কবি। কেউ প্রকাশ করতে পারে, কেউ পারে না। মানুষের অন্তর্নিহিত সৃষ্টির আবেগ, কল্পনাশক্তি, সৌন্দর্যচেতনা, শুভবোধ এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা যখন বিশিষ্ট প্রকরণে, পরিশীলিত কাব্যভাষায় প্রকাশিত হয়, তখনই তা কবিতা হয়ে ওঠে।

মননশীলতা, নান্দনিকতা, প্রকাশের বাগভঙ্গিমা, দার্শনিক বীক্ষা এবং বাণীর সারাৎসার হয়ে ওঠে কবিতার উৎকর্ষ বিচারের মানদণ্ড। কবিতাটি বা কবিতাসমূহ শিল্পোরসোত্তীর্ণ কি না সেসব বিচারে এই মানদণ্ড অপরিহার্য।

অন্যদিকে,জনপ্রিয়তা বিচারে এই মানদণ্ড সর্বাংশে মান্য না করলেও চলে।

জনপ্রিয়তা এবং শিল্পোরসোত্তীর্ণতা অভিন্ন হয়ে উঠলে সে তো সোনায় সোহাগা। কবিতার শিল্প হয়ে ওঠার ব্যাপারটি যে সহজসাধ্য নয়, তা ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন। কবিরা সাধারণভাবে খুবই আবেগপ্রবণ। এই আবেগের সঙ্গে শিক্ষা, মনস্বিতা এবং প্রকাশ- দক্ষতাকে যুক্ত করতে পারলেই কাব্যচর্চায় কাক্সিক্ষত সিদ্ধি অর্জন সহজ হয়।

বলা বাহুল্য, এর জন্যও প্রয়োজন হয় সাধনা। সাধনা বা চর্চার জন্য যে সময়, একাগ্রতা এবং পঠন-পাঠন প্রয়োজন তা ব্যস্ততার অন্তরায় থাকা সত্ত্বেও সীমিত সুযোগ ও সীমাবদ্ধ জ্ঞান-বুদ্ধি-শিক্ষা নিয়ে কাব্যকলা সাধনায় সিদ্ধিলাভ যে সম্ভব নয়, সে ব্যাপারে আমি সচেতন।

প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, তাহলে কোন আশায় কাব্যচর্চা? আমার উত্তর, আমার কবিতা, কতটা কবিতা হয়েছে এবং শিল্পের বিচারে এর টিকে থাকার সামর্থ্য আদৌ আছে কি নেই, সে বিবেচনা ভবিষ্যৎ করবে। লেখকের লেখনিতে থাকে মুক্তির ও সৃষ্টির আনন্দ যা সুখ দেয়, সুখী করে; পাঠকের মন ও মনন স্পর্শ করতে পারলেই আমার স্বার্থকতা। লেখালেখির মধ্যদিয়ে পাঠকের সাথে গড়তে চাই গভীর সখ্য।