যখন সিজার তার প্রজাদের উপর খ্রিস্টধর্ম চাপিয়ে দেন, প্লেটো-অ্যারিস্টটলের যুক্তিবাদী দর্শনে লালিত এক যুবক তা প্রত্যাখ্যান করে। তার মতে, ধর্ম মানুষের আত্মিক সমর্পণের ফলশ্রুতি, যা কখনো কোনো স্বৈরশাসকের নির্দেশে আরোপিত হতে পারে না। এখানে এসে যুবকের সামনে আরো একটা বিষয় অসঙ্গতিপূর্ণ মনে হলো। সেটা হচ্ছে ধর্মের আধিবিদ্যক বাস্তবতা, যা প্রত্যক্ষ যুক্তিবাদের সরাসরি বিরোধী। যুবক সে বাস্তবতাকে তার যুক্তিবাদী দর্শনের আলোকে যাচাই করতে না পারায় ধর্মের অনুসরণে কোনো তাৎপর্য খুজে পেল না।
এমন সময় তার সাথে দেখা হলো এক বৃদ্ধ সন্ন্যাসীর। তিনি যুবককে সিজারের আরোপিত ধর্ম আর মসিহের ধর্মের মধ্যকার পার্থক্যের রেখা বুঝিয়ে দিলেন। আর তার যুক্তিবাদী গোঁড়ামির সামনে তুলে ধরলেন মুযেযার মহিমা- যে মুযিযা উপলব্ধির পর্যায় শুরু হয় যুক্তির ঊর্ধ্বে গিয়ে। বৃদ্ধ তাকে বড় এক মুযেযার কথা বললেন, নিকটবর্তী সময়ে যার প্রকাশ ঘটবে এবং কোনো বিবেকবান আত্মা তাকে অস্বীকার করতে পারবে না। যুবক খানিকটা তাড়িত হলো। সে সেই মহান মুযেযার মাহাত্ম্যকে ধারণ করল, আর তাকে প্রত্যক্ষ করার উদগ্র বাসনায় নির্লিপ্ত হলো।
কিন্তু তার গ্রীক যুক্তিবাদী মন, তা তো এত সহজে দমে যাওয়ার পাত্র নয়। ক্ষণে ক্ষণে তার মধ্যে জ্বলে উঠতে লাগল সংশয়ের আগুন। কখনো নিজের বিশ্বাসী উজ্জীবন দিয়ে সে আগুনকে নির্বাপিত করে, কিন্তু এমন দোটানার মধ্যে আর কতদিন! তাকে তো স্থির হতে হবে। বিশ্বাসপূর্ণ একটি জীবনও অতিবাহিত করতে হবে। সে বের হলো আত্মিক এক অভিযাত্রায়। হ্যাঁ, সে অভিযাত্রা পূর্ণমাত্রায় দৈহিকও। এতে আছে ভয়, উদ্বেগ, দ্বিধাবিভক্তি, বিশ্বাসবাদী ও যুক্তিবাদী মনের অন্তর্দ্বন্দ্ব, বিপর্যয় এবং সবশেষে দীর্ঘ এক দাসত্বজীবনের বিড়ম্বনা। এতসবের পর বিশ্বাসের গন্তব্যে পৌঁছানোর পথ আর কতটুকু বাকি থাকল- সেটাই পড়ুন ত্বহা হোসাইনের বুদ্ধিদীপ্ত এ দার্শনিক উপাখ্যানে।