মানব জীবনকে যদি এক একটি বৃত্তের সাথে তুলনা করি, তবে প্রত্যেক মানুষের জীবনের সময়কাল বৃত্তের পরিধির সাথে তূল্য।
জীবদ্দশায় একজন মানুষের কর্ম পরিধি যত প্রসারিত তার জীবন পরিধি তত বড় এবং ব্যাপক হয়। অসমানভাবে বিভক্ত বৃত্তের বৃহত্তর অংশই ওই বৃত্তের অধিবৃত্ত। আমার জীবনাংশে কবিতার অংশকে যতোভাবেই উপবৃত্তে সীমাবদ্ধ করতে চাই, উপবৃত্ত থাকে না বরং হয়ে যায় অধিবৃত্তাংশ। যতবার ছাড়তে চেয়েছি ছন্দকে, ছন্দ তত বহুগুণে আমাকে আরো নিবিড়ভাবে আলিঙ্গন করেছে। ছাড়তে চেয়েও বাঁচি না কবিতা তোমায় ছাড়া, অগোছালো বিষম ভাবনাসব ছন্দের দ্বন্দ্বে করছে কেবল আমায় তাড়া।
দু:খবোধ যখন ছেদক হয়ে আমার জীবনে ছেদ করে, আলতোভাবে স্পর্শক হয়ে কবিতা আবার নতুন বৃত্তে রূপ নেয় আমার নীলাভ আকাশে। এভাবে গণিতের মিশেলে কবিতা পেয়েছে গণিতের আকার-আকৃতি। প্রকৃতির পরতে পরতে গাণিতিক আকারের যে বহমান স্রোত আমি তা গভীরভাবে উপলব্ধি করি।
বিষমতার মাঝেই খুঁজে ফিরি সমতা। সমতার মাঝেই নিত্য খুঁজে পাই প্রতিসমতা। বহমান জীবন ধারায় সারাক্ষণ উপভোগ করি ছন্দ আর গণিতের সম্মিলিত রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ। বিফলতার অধিবৃত্ত ক্রমে হউক উপবৃত্ত। আকাশ রাজ্যে বিস্তৃত মেঘ আকাশকে বন্দি করতে পারে না। আমি দু:খ, দূর্দশা, হতাশায় ও প্রবাহমান নদী হতে চেয়েছি। তাই নদী হওয়ার মানসে কাব্যিক আকারে কালো অক্ষরে মলাটবন্দি করে আপনাদের সমীপে নিবেদন করলাম "অধিবৃত্তে প্রকৃতি" (ঐুঢ়বৎনড়ষধ ড়ভ ঘধঃঁৎব)। উক্ত বইয়ে আমার বাংলা কবিতার ইংরেজি সংস্করণ তথা অনুবাদও সন্নিবেশিত রয়েছে যাতে করে বাংলাভাষার পাঠকসহ বিদেশি পাঠকবৃন্দও আমার কাব্য পাঠ করে অনুভবে নিতে পারেন।
অন্যের উপকার করার জন্য হলেও মাঝে মধ্যে নিজে খারাপ হই। তাতে দু:খবোধে আক্রান্ত না হওয়ার চেষ্টায় থাকি অবিরত। এক পরাজয়ে হতোদ্যম না হয়ে, প্রতিদিনের সূর্যোদয়ে দেখি নতুন স্বপ্ন।
জীবন ও মরণের মাঝে সাঁতার কাটছি প্রতিনিয়ত নিজের বিভবশক্তি কাজে লাগিয়ে। দিন দিন আয়ু হচ্ছে ক্ষীণ, বেড়েই চলেছে মা-বাবা তোমাদের ভালোবাসার ঋণ।