ইতি, তোর বাড়ি (হার্ডকভার)

জীবনটি যে ঠিক কোথায় আসিয়া দাঁড়াইল, তাহা সঠিকভাবে অনুধাবন হইতেছে না। জীবন নিয়া একসময় বিস্তর ভাবিয়াছি। এখন আর ভাবি না। বলা ভালো ভাবনারা আসে না। তাহা হইলে কি জীবন নিয়া ভাবিবার কিছুই আর নাই? আছে বৈকি। বিস্তর আছে। কিন্তু ভাবিতেছি না। ভাবিতে কি ভয় পাইতেছি? জীবনের হাল ছাড়িয়া দিয়াছি? ভাবিতে ভাবিতে কি ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছি? তাহার কিছুই সঠিক জানা নাই। আসলে কিছু লইয়াই আজকাল ভাবিতেছি না। ভাবনা আসিতেছে না। মস্তিষ্কটিকে অতিশয় ক্ষুদ্র মনে হইতেছে। ভাবনারা দরজায় গিয়া কড়া নাড়িয়া বারংবার ফিরিয়া আসিতেছে। অন্দরমহলে প্রবেশ করিবার কোন রাস্তা তাহারা খুঁজিয়া পাইতেছে না।

জীবনের প্রারম্ভে জীবন নিয়া এক সময় বিস্তর ভাবিয়াছি। একদিন হঠাৎ করিয়া টের পাইলাম যে জীবনে শুধুমাত্রই বাঁচিতেছি। এই নিয়া আসলে বিশেষ কিছু ভাবিবার নাই। বলা ভাল, পূর্বেই ইহা নিয়া এত ভাবিয়াছি যে, সমস্ত শক্তি এতেই ব্যয় হইয়া গিয়াছে। এখন সত্যই ক্লান্ত।

তবে বাঁচিবার কথা ছিল। তাহা না করিয়া জন্মেই মরিয়া গিয়াছি। এমন হইবার কি কথা ছিল? হয়তবা ছিল, যাহা বুঝিতে পারি নাই। বুঝিতে পারিলে কী হইত? ইহা কি ঘটিত না? তাহা আটকাইতে পারিতাম? নাহ, কিছুই করিতে পারিতাম না। দর্শক বৈ আর কিছু নহে। তবুও প্রথম সারির আসনে কখনই জায়গা করিতে পারেন নাই ।

তবে মাঝে মাঝে যে ভাবনারা উঁকিঝুঁকি দেয় না, তাহা না বলিলে মিথ্যা বলা হইবে। এখনো কিছু ভাবনা আমাকে আশ্চর্য করিয়া অবশিষ্ট রহিয়া গিয়াছে। তাহারা নড়াচড়া করে। যখন করে তা তখন কাগজে টুকিয়ে রেখে দিই। এমন কিছু ভাবনার সন্নিবেশ এই বইয়ে কেমন করিয়া যেন ঘটিয়া গিয়াছে। এই বিষয়ে কিছু আপনজনের ভ‚মিকা উল্লেখযোগ্য। তাহারা সেই ভাবনাদের অতি আনন্দের সহিত উসকাইয়া দিয়াছেন। তাঁদেরই আগ্রহে এই বই।