হতে পারে এটাই ত্রিপুরা ও কুমিল্লায় বসবাসকারী চট্টগ্রামী সম্পদায়ের প্রথম ইতিহাসের বই। এ সম্পর্কে ‘নিবিড় সম্পর্কিত’ কোন বই আমি বাজারে খুঁজে পাইনি। আর তাই ‘কাছাকাছি সম্পর্কিত’ বইতে উদ্ধৃত করা অনেক গুরুত্বপূর্ন তথ্য সংগ্রহ করে, স্বজনদের মৌখিক বিবৃতি থেকে এবং এসব তথ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত উপাথ্য থেকে এ বই সাজানো হয়েছে। আমি আমার বইতে ব্যবহৃত সকল প্রাথমিক (Primary), দ্বিতীয় (Secondary) এবং তৃতীয় (Tertiary) সকল উৎসের লেখক ও মৌখিক বিবৃতি প্রদানকারীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তাদের দেওয়া তথ্য উপাথ্য ছাড়া এ বই লেখা সম্ভব ছিল না।
স্বজন মুসলমানদের ইতিহাস বিচ্ছিন্ন কোন ইতিহাস নয়। আর তাই যেখানে যা পেয়েছি তাই স্বজনদের সঙ্গে সম্পর্ক নির্ণয় করে এ বই সাজানোর চেষ্টা করেছি। মোটা দাগে বলতে গেলে তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের ইতিহাসই স্বজনদের ইতিহাস।
এটা প্রথম বই, আরো সঠিক ভাবে বলতে গেলে, প্রথম ড্রাফট, তাই সঙ্গত কারণেই অনেক গ্যাপ থাকবে। এটা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি দিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ রইল।
আমার প্রায় চার বছর সময় লেগেছে এমন একটি ড্রাফট তৈরি করতে। তার কারণ দুর্ভাগ্যবশত কয়েকশ বছর আগেই কোনো এক সময় স্বজনদের ইতিহাস পুরোপুরি থেমে গিয়েছিল। কেউ কিছু বলতে পারছিল না। এমনও আছে যারা তাদের পূর্বপুরুষদের নামও বলতে পারেননি, কিংবা অনুমান করে বলেছেন।
সবাই নিজেদের বলছেন ‘চাটিগাঁইয়া’ বা ‘চাডিগাইয়া’, কিন্তু চট্টগ্রামের কোথায় আদি নিবাস ছিল কেউ বলতে পারেননি। আমি বলছি, আমরা শমসের গাজীর আমলে খণ্ডলে বাস করেছি, কিন্তু খণ্ডল তথা ছাগলনাইয়াতে আমাদের কোন আত্মীয় আছেন কি না তা বের করতে পারিনি।
আমি পাঠকদের বলব এই বই কোনো একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায় নিয়ে লিখলেও পুরো ভারতবর্ষের মুসলমানদের ইতিহাস পাবেন, ত্রিপুরার ইতিহাস পাবেন। অনেক মজার মজার তথ্য সংগ্রহ করে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি পড়তে পড়তে মজা পাবেন।
দয়া করে ধীরে ধীরে পড়ুন। একদিনে শেষ করার দরকার নেই। যেখানে অসংগতি পাবেন, নোট করুন। আমাদের বলুন। আশা করি আমি কিংবা আমাদের উত্তরসূরিরা তা ঠিক করে দিবেন।
স্বজনদের অনেক নাম আছে। কেউ বলেন চাটগাইয়া, কেউ বলেন চাটিগাঁইয়া, কেউ বলেন চট্টগ্রামী সম্প্রদায়, আর আমরা আমাদের স্থানীয়ভাবে বলি ‘চাডিগাঁইয়া’। সর্বশেষ আমরা নিজেদের ‘স্বজন’ নামে ডাকা শুরু করেছি। আর তাই এ বইতে সকল নামেই ডেকেছি।
স্বজন কল্যাণ সংস্থা, কুমিল্লার উদ্যোগে এই বই প্রকাশিত হচ্ছে। তাদের বিশেষ আগ্রহ ও উৎসাহের ফলেই আমি বই কাজ হাতে নিতে সমর্থ হয়েছি। চাডিগাঁইয়া সম্প্রদায়ের সকল সদস্য এই প্রজেক্ট হাতে নিতে আমাকে উৎসাহিত করেছে। তারা বিভিন্ন সময়ে তাদের মৌখিক ও লিখিত বিবৃতি দিয়ে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন। বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বজন কল্যাণ সংঘের নেতৃবৃন্দ্ব বিশেষ করে জাহাঙ্গীর হোসেন মজুমদার, ডাঃ মুজিবুর রহমান, ডাঃ আব্দুস সাত্তার ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।”
আমি প্রকাশনা সংস্থা সপ্তর্ষি’র স্বত্বাধিকারী জনাব শিবু ওঝার প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ। তাঁর আগ্রহ ও অক্লান্ত পরিশ্রমেই ফলেই এই বিশাল বইটি আলোর মুখ দেখতে সমর্থ হয়েছে।