লেখা শেষ করে বা লেখার প্রাথমিক অবস্থায় একটা মূল্যবান গ্রন্থের নামকরণ করতে গিয়ে আমি কিংবা আপনারা অনেক সময়ই একটি দু'টি শব্দের মধ্যে শতাধিক পৃষ্ঠার বিষয়বস্তুর সুসংহত রূপ দিতে হিমশিম খাই। আমার মনে হয়, শুভজিতের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা দিয়ে বইয়ের নামকরণটি দুর্দান্ত কয়েছে-বেদ-বৈদিক বৈষ্ণব প্রবাহ। আমার খুব পছন্দ হয়েছে। মুদ্রণে যাওয়ার আগে আমি চোখ বুলিয়েছি বইটিতে। অত্যন্ত কঠিন বিষয়কে খুব সহজ করে লেখা হয়েছে। যাতে সাধারণ পাঠক বুঝতে পারে। যাইহোক, বৈষ্ণব কথাটি এসেছে বিষ্ণু থেকে। ভগবান শ্রীবিষ্ণু হলেন অনাদির্দেবতা। কাজেই অনাদির্দেবতা থেকে শুরু হয়ে বেদ, উপনিষদ, রামায়ণ, মহাভারত হয়ে অষ্টাদশ পুরাণ-প্রভৃতির মধ্যে প্রবাহিত হয়ে বৈষ্ণবধর্ম আজও বহমান। সেই ধারায় গড়ে উঠেছে গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়। এই সুদীর্ঘ ইতিহাসের কোলাজ ঠাঁই পেয়েছে শুভজিতের বইতে। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বর্ণিত হয়েছে সবকিছু। আমি মনে করি, ওর অনেক কষ্টার্জিত ফসল এই বইটি পাঠক-পাঠিকাদের কাছে গ্রহণযোগ্যা পাবে। আমার শুভেচ্ছা রইল। জয়া গৌর-গদাধর।
হিন্দুধর্মের সর্বশ্রেষ্ঠ যারা বৈষ্ণবধর্ম। এবং অবশ্যই তা বৈদিক। সৃষ্টির আদিতে যার উৎপত্তি। আজও সমানভাবে প্রবাহিত। ফলে, বৈষ্ণবধর্মের অতল ছোঁয়া চাট্টিখানি কথা নয়। শুভজিৎ নিষ্ঠার সঙ্গে সেই চেষ্টা করেছে। বৈষ্ণবধর্মের গোড়া থেকে শুরু করে চৈতন্য-নিত্যানন্দের হাতে প্রস্ফুটিত গৌড়ীয় সম্প্রদায় পর্যন্ত একটা সুদীর্ঘ পরিক্রমা বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে। বইটি মুদ্রণে যাওয়ার আগে আমি কিছু কিছু আংশ পড়েছি। খুব বেশি শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যায় না গিয়ে একেবারে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারাবে, এমন সহজ-সরল ভাষায় লেখা। আসলে, শুভজিৎ একজন সাংবাদিক। তার উপর প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে। ও বোঝে মানুষ কী চায়? সেই মতো বইটিকে সাজিয়েছে। শিরোনামটিও বেশ চমৎকার। 'বেদ-বৈদিক বৈষ্ণব প্রবাহ'। নিতাইচাঁদের কৃপায় বাংলার বৈষ্ণব সমাজের কাছে ওর পরিশ্রম সার্থক হোক। আমার অফুরান শুভেচ্ছা রইল। জয়-নিতাই।