বিতাড়িত জিন তাদের রাজ্য ছেড়ে পৃথিবীতে এসে জাদুকরদের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। অনেক মানুষ কালো জাদুর অধিকারী। কালো জাদুর চর্চা করতে করতে একসময় তারা জিনদের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যম জেনে ফেলে। তখন তারা ডাকলেই জিন তাদের কাছে এসে হাজির হয়। এইভাবে অনেক মানুষের সাথে জিনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে পৃথিবীতে। জিন রাজ্য থেকে বিতাড়িত জিনদের কোনো আশ্রয় থাকে না। আশ্রয়হীন জিনেরা পৃথিবীতে মনুষ্য বসতিতে এসে আশ্রয় খোঁজে মানুষের কাছে।
পৃথিবী জিনদের বসবাস করার উপযোগী জায়গা নয়। তাদের বসবাসের স্থান আসমান। পৃথিবী থেকে দূরে বিশাল এক স্থানে তাদের বাস। আশ্চর্যজনক হলো তাদের খাদ্যের জোগান দেয় পৃথিবী। মাছ তাদের প্রধান খাদ্য। মানুষের মতো জিনেদের রান্নাবান্না করতে হয় না। সম্পূর্ণ প্রকৃতির উপর তারা নির্ভরশীল। তারা পানিতে নেমে মাছ ধরতে পারে না। তাজা মাছও খেতে পারে না। মাছ মরার জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয়। সমুদ্রের বিরাট বিরাট ঢেউয়ের সাথে মাছ তীরে উঠে আসে। ঢেউ সরে যাবার সময় অসংখ্য মাছ তীরে পড়ে থাকে। সেগুলো জিনদের খাবার হয়ে যায়। উন্মুক্ত জলাশয়, বিরাট বিল, হাওর, নদীর তটরেখায় তারা মাঝে মাঝে এসে চক্কর দিয়ে যায় খাবারের সন্ধানে। এসব জায়গায় মাছ সমুদ্রের মতো সহজে মেলে না। মানুষের উপর নির্ভর করতে হয়। মানুষ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। নির্জনে একা পেলে তারা ছল চাতুরীর আশ্রয় নেয়। জিনেরা ছলনায় বিরাট পারদর্শী।
পাহাড়ে ঘেরা নির্জন সমুদ্র দ্বীপগুলিতে জিনদের এক একটি টেরিটরি গড়ে ওঠে। গভীর পাহাড়ের গুহায় জিনরা অস্থায়ী প্রসাদ বানায়। সেখান থেকে তারা তাদের টেরিটরি পরিচালনা করে। মাঝে মাঝে জিনের বাদশাহ পৃথিবীর এই প্রাসাদে ঘুরতে আসে। জরুরি বৈঠক করে। আজ যেমন বসেছে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে। মহাসংকটে জিন রাজ্য। বৈঠকে জিনগুরু বিশেষ গণনা করে বলে, একমাত্র জুলিয়ানই পারবে জিন রাজ্যকে বাঁচাতে। জুলিয়ান মানুষ। সে বাস করে পৃথিবীর এক জীর্ণ কুটিরে। তাকে পৃথিবী থেকে জিন রাজ্যে আনা সহজ নয়। জিন রাজকন্যা এলিসা জিন রাজ্যকে বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অপূর্ব এক সুন্দরী নারী রূপে পৃথিবীতে নেমে আসে জুলিয়ানের খোঁজে। বহু বাধা বিঘ্ন আর জাদুকরের পাতা ফাঁদ পেরিয়ে খুঁজে পায় জুলিয়ানকে। তারপর শুরু হয় জিন রাজ্যকে বাঁচানোর অভিযান। এই অভিযানের সাথে থাকতে হলে আপনাকে শেষ পর্যন্ত যেতে হবে জুলিয়ান আর এলিসার সাথে।