ইভান বলে, এ পুরাতন বাড়ি কদিন পরে ভেঙে ফেলে নতুন বাড়ি তৈরি করা হবে। তখন কি হবে?
চমকে ওঠে তান্ত্রিক। তার মুখ শুকিয়ে যায়। বলে কি ছেলেটা! তান্ত্রিকের মুখ থেকে তৎক্ষণাৎ কোনো কথা বের হয় না।
কি হবে জানো না? তান্ত্রিককে জোর দিয়ে প্রশ্ন করে ইভান। তান্ত্রিকের মুখের অবস্থা দেখে সে মজা পায়। উত্তরের আশায় তান্ত্রিকের দিকে চেয়ে থাকে। ইভানের ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ঝুলে থাকে।
তান্ত্রিক ইভানের দিকে ভ্রূক্ষেপ করে না। কি যেন আপন মনে ভাবতে থাকে। তারপর বলে ওঠে, দেবী মনসার কোপানলে পড়ে চাঁদ সওদাগরের যে অবস্থা হয়েছিল তাই হবে। কথা বলার সময় তান্ত্রিকের মুখের ভাব বদলে যায়। তার চোখে ফুটে থাকে আত্মবিশ্বাস। যেন সে যা বলছে অবশ্যই ঘটবে।
সেই ঘটনার কিছুদিন পরে পরিত্যক্ত বাড়ির জায়গায় নতুন বাড়ি ওঠে। মনসা দেবীর রোষ এসে পড়ে ইভানদের পরিবারের উপর। তিন বছরে তান্ত্রিকের ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে ফলে যায়।
ইভানই এখন পরিবারের একমাত্র জীবিত ব্যক্তি। মাত্র মাস খানিক আগে ইভানের বাবা আকরাম হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের সবাই মরেছে সাপের কামড়ে। এটা হওয়ারই কথা ছিল। এসবই তান্ত্রিক বাবার কথা অগ্রাহ্য করার ফল।
ইভান এখন বিশ্বাস করে এবার তার পালা। হয়ত তার পালা আগেই এসেছিল, ভাগ্য সুপ্রসন্ন বলে সে এখনও বেঁচে আছে। এখন আর ইভানের বাঁচতে ইচ্ছা করে না। পরিবারের সবাইকে হারানোর কষ্ট সে আর বয়ে বেড়াতে পারছে না। হঠাৎ করেই তার মনে হতে থাকে দেবী মনসা কি এখনও বিজ্ঞানের যুগে এসে মানুষের মৃত্যু তার কারণ হয়? এর রহস্য কি? হতাশার জায়গায় রহস্য ভেদ করার চিন্তা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ইভান মুসকান যোসীর খোঁজ পেয়ে যায়। ঠিকানা: কাঠ ময়ূরী, বিল্ডিং নং-২১, FLAT-A, লিফটের লেভেল-৫, রোড-৩, উত্তরা, সেক্টর-১, ঢাকা।
অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে চলে আসে ইভান। সাক্ষাতের সময় ইভান হতাশ ভঙ্গিতে চুপচাপ চেয়ারে বসে থাকে। মুসকান যোসী তার দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। তার অন্তর্ভেদী দৃষ্টি দিয়ে ইভানের ভিতরটা পর্যন্ত পড়ে ফেলার চেষ্টা করে। এরপর ইভান ও মুসকান যোসীর সাথে শেষ পর্যন্ত থাকুন।