এই বইয়ে চারটি গল্প স্থান পেয়েছে। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলো প্রত্যেকেই টিকে থাকার জন্য লড়াই করে। জীবনের আরেক নাম সংগ্রাম। সংগ্রাম থেমে গেলে জীবন থেমে যাবে। জীবনকে বয়ে নিয়ে যেতে হয়। এই সংগ্রামের মধ্যেই টুকরো টুকরো আনন্দ কুড়িয়ে নিতে হয়। যেমন মিরাজ নিয়েছে। প্রথম গল্পটা মিরাজকে কেন্দ্র করে। গল্পে আঠাশ বছর আগের কিছু স্মৃতি কল্পনায় আঁকতে চেষ্টা করেছি। গল্পে টুকরাংশ……………………………..।
লিটন ভাই ডাকে, মিরাজ আছো নাকি?
মিরাজ দরজা খুলে বাইরে মুখ বাড়িয়ে দেয়। বলে, কি ব্যাপার লিটন ভাই?
ভিসি স্যার ফোন করেছিল, এখনই যেতে হবে। ভাবলাম তোমাকে নিয়ে যায়। ব্যস্ত নাকি?
না! সামনে পরীক্ষা তো তাই লেখাপড়া করছিলাম।
পরীক্ষার জন্য অত পড়া লাগে নাকি? স্যারের কাছে গিয়ে বলবে স্যার, লেখাপড়া করার সময় পায়নি, একটু সাজেশন দেন, না হলে পাশ করতে পারব না। পরীক্ষা শেষ হলে রোল নম্বরটা দিয়ে আসবে। সব শেষ। এখন রেডি হও।
স্যার যদি কিছু না বলে?
না বললে আমাকে এসে জানাবে। ভিসি স্যারকে বলে দেব। তখন বুঝবে ঠ্যালা।
কিছুক্ষণ আগেও লেখাপড়া নিয়ে মিরাজ চোখে অন্ধকার দেখছিল। লিটন ভাই সব সহজ করে দিল। লিটন ভাইয়ের কোনো তুলনায় হয় না। সম্মানের সাথে লিটন ভাইয়ের দিকে তাকায় মিরাজ।
সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাছে ভিসি স্যারের বাসভবনে ঢোকা এক বিস্ময়কর ব্যাপার। সেখানে লোহার গেট আটকিয়ে প্রহরী সব সময় বসে থাকে। তাকে ডিঙানো যায় না। মিরাজের কাছে সে জায়গা এখন রীতিমতো ডাল ভাত। লিটন ভাইয়ের কথা বলা এখানে বাহুল্য। মাঝে মধ্যে লিটন ভাইকে ভিসি স্যারের সাথে গাড়িতেও দেখা যায়।
ভিসির বাসভবনের গেটম্যান লিটন ভাই আর মিরাজকে দেখে গেট খুলতে খুলতে বলে, মামা কেমন আছেন? স্যার একটু আগেই আসলো। যান, পাবেন।
তারা কোনো উত্তর না দিয়ে সোজা হেঁটে ঢুকে যায় ভিসির বাসভবনে। তাদের দেখে ভিসি স্যার বিরক্ত প্রকাশ করলেন। বললেন, তোমাদের সমস্যাটা কি, এখন পর্যন্ত সব হলগুলোতে তোমাদের দখল প্রতিষ্ঠা করতে পারনি। সরকার আমাদের, প্রশাসন আমাদের, তারপরও যদি না পারো তাহলে তোমাদের রাজনীতি না করাই ভালো। তোমরা তো জীবনে কিছুই করতে পারবে না দেখছি। শেষ পর্যন্ত আমাকেও ডোবাবে। এখন থেকেই তৎপরতা বাড়াও।