`লা তাহযান' পৃথিবীজুড়ে সাড়াজাগানো একটি বই। আরব কিংবা আজম, পূর্ব কিংবা পশ্চিম সব দেশেই রয়েছে এর সমান গ্রহণযোগ্যতা। কলমের কালির সাথে কলবের উত্তাপ মিশিয়ে লেখা এ বই যে-কোনো পাঠকের মনকে স্পর্শ করে গভীরভাবে। ভেতরের বন্ধ দুয়ার খুলে পৌঁছে যায় হৃদয়ের গভীরে। তাইতো আরববিশ্বের সর্বাধিক বিক্রীত বই হওয়ার বিরল সৌভাগ্য অর্জন করেছে এ গ্রন্থ।
এ গ্রন্থের এমন জনপ্রিয়তার রহস্য কী? কেন পাঠকের হৃদয়ে এত ভালোবাসার স্থান দখল করেছে? আর কেনইবা এমন বিপুল পরিমাণ কপি বিক্রি হয়েছে এ গ্রন্থের? তার উত্তর লুকিয়ে আছে এর পাতায় পাতায়।
সমস্যা ও সংকট এবং টেনশন ও দুশ্চিন্তা মানবজীবনের একটি স্বাভাবিক বিষয়। জীবনের পদে পদে রয়েছে সমস্যা ও সংকটের চোরাবালি। বিপদাপদের উত্তাল সাগরে জীবনতরি চালানো মাঝির সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে শান্ত ও নিস্তরঙ্গ পরিস্থিতির আশা করা। দেহে যত দিন প্রাণ থাকবে, বিপদাপদ ও সমস্যা-সংকটের ঢেউ ততদিন থাকবেই। সেই ঢেউগুলো পাড়ি দিয়েই এগিয়ে নিতে হয় জীবনতরিকে।
তবে অনেকেই জানে না বিপদকে কীভাবে মোকাবেলা করতে হয়। হতাশাকে কীভাবে পরাজিত করে বিজয় অর্জন করতে হয়। তাই বিপদের সামান্য ঝাঁকুনি খেয়েই তারা হারিয়ে যান হতাশা ও দুশ্চিন্তার গভীর সাগরে। এ বইয়ের পাতায় পাতায় উপরিউক্ত প্রতিটি সমস্যার সমাধান পেশ করা হয়েছে চমৎকারভাবে। লেখক পাঠকদের সামনে এঁকে দিয়েছেন সুখী জীবনের রঙিন মানচিত্র। পেশ করেছেন দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন লাভের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা। যে দিকনির্দেশনা মেনে চললে যে কেউ পৌঁছে যাবে আপন লক্ষ্যে, কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। প্রতিটি পাঠক এ গ্রন্থে নিজেদের জীবনের সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে পান। আর এটাই এ গ্রন্থের এমন বিপুল গ্রহণযোগ্যতা লাভের মূল রহস্য।
কেবল সাধারণ মানুষদের কাছেই নয় বরং আরব বিশ্বের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছেও এই গ্রন্থটি সমান জনপ্রিয়।
Dr. Ayez Al Karni ১৩৭৯ হিজরী মোতাবেক ১৯৫৯ ইং সনে দক্ষিণ সৌদী আরবের করন জেলার আশ-শুরাইহ নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন্ অল্প বয়সেই তিনি পবিত্র কুরআনের হিফজ সম্পন্ন করেন। মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন রিয়াদে। উচ্চতর পড়াশুনা করেন প্রাদেশিক শহর আবহায়। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত অধ্যায়নের পরিধি সুবিস্তৃত ও অতুলনীয়। ড. আয়েয আল করনী এ পর্যন্ত বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন। সেগুলোর মধ্যে আত-তাফসীরুল মুয়াসসার, আল-ফিকহুল মুয়াসসার, আশিক, লা তাহযান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ড. করনী দাওয়াতের উদ্দেশ্য লেখালেখি, বক্তৃতা-বিবৃতি ও গ্রন্থরচনার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, গুগলপ্লাস ও ইউটিউব ইত্যাদিতেও সমানভাবে সক্রিয়। তাঁর বক্তৃতার ক্যাসেটের সংখ্যা হাজার ছড়িয়ে গেছে।