জীবন যুদ্ধে চলার পথের গল্পটা হয়তো প্রত্যেকেরই আলাদা। যোদ্ধা জানে কিভাবে ভেঙে না পড়ে পরিস্থিতি সাথে খাপ খাইয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। আমাদের গল্পের নায়িকা মেঘলার মধ্যে আমরা একটা যোদ্ধাকে দেখতে পাই। বাবা মার প্রতি দায়িত্বশীল মেয়েটার ঘাড়ে যখন বাবার অপারেশনের টাকা জোগাড় করার দায়িত্ব এসে জুটলো তখন সে তার ভাইয়ের বন্ধুর পরিচয়ে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ঢুকলো। এর আগে মেঘলা একটি এনজিওতে চাকরি করতো। মূলত তাদের এনজিও অনাথ শিশুদেরকে নিয়ে কাজ করত আর মেঘলার এ ধরনের সমাজ সেবামূলক কাজের প্রতি আগ্রহ ছিল ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু পারিবারিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে যখন সে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ঢুকলো তখন সেখানে গিয়ে তাকে মুখোমুখি হতে হলো অনেক অপ্রীতিকর পরিস্থিতির। সেখানে অনেক মানুষের ভিড়ের মাঝে তার পরিচয় হলো আমাদের গল্পের নায়ক উৎসবের সাথে। উৎসব মেঘলাকে আত্মবিশ্বাসী হতে শিখিয়েছিল আর শিখিয়েছিল অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে। মেঘলা বই পড়তে ভীষণ ভালোবাসতো। সাহিত্য জগতে কাব্যগ্রন্থগুলোর প্রতি তার একটু বেশি আগ্রহ ছিল অন্যদিকে উৎসব সময় পেলেই তৈরি করে ফেলতো ছন্দ মেশানো কিছু বাক্যÑ যা মেঘলাকে তাক লাগিয়ে দিত প্রতিবার নতুন করে। উৎসব তার বাবাকে হারিয়েছিল খুব ছোটবেলায় তাই তার মা-ই ছিল তার একমাত্র পৃথিবী। উৎসবের জীবন যুদ্ধ লড়াইয়ে পিছনে ফেলে আসা স্বপ্নগুলোর কথা যখন জানতে পারলো মেঘলা, তখন সে আবার নতুন করে উজ্জীবিত করতে তাকে সাহায্য করল। উৎসব এবং মেঘলা প্রত্যেকেই নিজেদের স্বপ্নগুলোকে পূরণ করার পেছনে তাদের একে অপরের অবদানই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একটা সময় গিয়ে সময়ের স্রোতধারায় দুইজনকে আলাদা করে দিয়েছিল দুটি প্রান্তে। তাদের মাঝে ছিল একটা বিশ্বাস আর এক পৃথিবী ভালোবাসা, যা হয়তো কেউ কাউকে জানিয়ে যেতে পারেনি। বলা হয় ভালোবাসাকে ফুরিয়ে যেতে না দিয়ে বরং পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে রাখার নামই হয়তো ভালোবাসা। প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে একটি দীর্ঘ অপেক্ষার সমাপ্তি ঘটে গল্পের শেষ প্রান্তে। তখন আবারও দুজনের দেখা হয় তবে কিছুটা ভিন্ন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে।