জীবনের বাঁকে বাঁকে অনন্তর মুগ্ধতার স্মৃতি অবিরল বাস্তবতা। সুখ আর দুঃখ দুটি বৈঠা জীবন মূহুর্তের শরীর বেয়ে সামনে এগিয়ে যায়। কথাশিল্পের আঙ্গিনায় শিল্পি মানেই এক স্বতন্ত্র স্বর অভিনব উচ্চারণ।
সোনালি সংকট জীবনে চলচ্ছবি। গল্প নয় নিরেট অভিজ্ঞ ভাস্করের সুনিপুণ বয়ন। অনেকগুলো জীবনের রস নিঙড়ে নিঙড়ে চোখের সামনে এবং বোধের গভীরে সংযুক্ত করে দেয়ার এক অনন্য আখ্যান। আবীরের গ্রাম থেকে শহুরে কর্পোরেট এলিট শ্রেণীতে অভিবাসন আর সুরাইয়ার গ্রামের দিকে ফিরে যাওয়ার ফাঁকে, বুড়োবুড়ি, জেসী, রীতা, লুৎফার ভিন্ন চিত্র জীবনের মধু শাহিন রিজভি তুলে এনে একই বোতলে বন্দী করেছেন সোনালি সংকটের প্যারায় প্যারায়।
শাহবাগ আজিজ মার্কেট একজন কবি শিল্পি এবং জীবনের এমন সংযোগ বাংলা সাহিত্যে বিরল এবং প্রতীক্ষিত।
জীবনবোধ এবং মিরাকলিক ইল্যুয়েশনের পরিমিত কম্বিনেশনে এবং গল্পের পরতে পরতে অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতার অনিন্দ্য মিসেল।
কবির কথাসাহিত্য অনবদ্য সুন্দর হয় এটা যেমন সত্য তেমনি কাব্যিকতার অত্যাচার পাঠককে গল্পের বারান্দা থেকে কবিতার মূলঘরে ঠেলে দেয়। শাহিন রিজভির গল্পে কবিতার বুনোট আছে তবে গল্পের একান্ত অবয়বে। তাই পাঠকের জন্য ক্লেশকর নয়।
পড়তে পড়তে এক সময় মনে হয়েছে আমিই আবীর, আমিই সোহান, আমি ফিরোজ খন্দকার। আমার সবকিছুই সুরাইয়া জোসী রীতাÑকিংবা মোহীনিকে ঘিরে।
সূর্য কিংবা আজিজের চিপা সিঁড়ি ধরে উপরে উঠতে উঠতে আমি আকাশ ছুঁতে পাইনি। মানুষ মূলত মাটির টানে ছুটে চলা মাটির পি-, এ থেকে রেহাই নেই। এ এক জলন্ত সংকট সোনারঙ ঝলমল করে জ্বলছে। তাই এ জীবন এক সোনালি সংকট। এই সংকট প্রকট হয়ে ছড়িয়ে পড়–ক পাঠকের বোধের দোরগোড়ায়। নাটক সিনেমার জীবনে উপন্যাসের সমান্তরাল পথচলার এক অনন্ত পরিক্রমা এই উপন্যাস পাঠকের মনিকোঠায় ঠাঁই করে নিক।