শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ৩টি বক্তৃতার সংকলন "ইসলামী আন্দোলনঃ প্রেক্ষিত বাংলাদেশ"।
এই ভাষণগুলো লেখক লন্ডনে প্রদান করেন। প্রথমটি ২০০৭ সালে প্রবাসী বাংলাদেশি ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের এক সমাবেশে দেওয়া এবং ২য়টি একই বছরে বিশ্ব ইসলামী নেতৃৃবৃন্দের অংশগ্রহণে এক সেমিনারে প্রদত্ত।
শহীদ নিজামী ২০০৬ সালে মন্ত্রী থাকা অবস্থায় ৩য় ভাষণটি বিশ্বখ্যাত থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান চ্যাথম হাউসে প্রদান করেন, যেখানে যুক্তরাজ্যের শীর্ষ পলিসি বিশ্লেষকরা উপস্থিত ছিলেন। ১ম ভাষণটি শহীদ নিজামী বাংলায় দিয়েছিলেন আর অন্য দুটি ইংরেজিতে, (বই এ বাংলায় অনুবাদ করা) ।
১ম ও ২য় ভাষণের সময়কালে ইসলামী আন্দোলন তথা সমগ্র বাংলাদেশ একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছিল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তি ৪ দলীয় জোট সরকারের শেষ দিবসে যে লগি-বৈঠার অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামবিদ্বেষী দেশিয় ও আন্তর্জাতিক শক্তির মদদে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করা হয়।
এই সময়ে ইসলাম বিরোধী শক্তির মিডিয়া সন্ত্রাসে প্রভাবিত হয়ে ইসলামী আন্দোলনের কিছু নেতাকর্মীর মাঝে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের কিছু মৌলিক বিষয় নিয়ে হীনম্মন্যতার সৃষ্টি হয়। দেশে-বিদেশে আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মাঝে আলোচনা-পর্যালোচনা হতে থাকে যে, বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলাতে আন্দোলনের লক্ষ-উদ্দেশ্য, কর্মপদ্ধতি, কর্মসূচির আমূল পরিবর্তনের দরকার কিনা?
ইসলামবিদ্বেষী বিভিন্ন দেশি বিদেশি মহল থেকেও বোঝানো হতে থাকে যে, সংগঠন যদি ইসলামের কিছু মৌলিক বিষয়ে আপস করে, তাহলে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া সহজ হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী লন্ডনে আন্দোলনের শুভাকাক্সক্ষীদের উদ্দেশ্যে ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ-উদ্দেশ্য এবং বাংলাদেশে এর চ্যালেঞ্জসমূহ ও তার মোকাবেলার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেন।
ভাষণগুলো আজকের বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইসলামী আন্দোলন করেন, তাদের জন্য অনুকূল প্রতিকূল সকল অবস্থায় কেন কীভাবে দ্বীনের মৌলিক বিষয়ের উপর টিকে থাকতে হবে, যারা টিকে থাকতে পারেনি যুগে যুগে তাদের পরিণতি কী হয়েছিল - এ সকল বিষয়ে এই বক্তৃতাগুলোতে সংক্ষিপ্ত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রয়েছে। আশা করছি বইটি পাঠকগণ উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ।