আমরা জানি হজরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়া (আঃ) উভয়ে জান্নাতে সুসজ্জিত বাগানে বসবাস করছিলেন। কিন্তু তাঁদের পিছু লাগলো ইবলিস এক পাপিষ্ঠ শয়তান। ইবলিস চাইলো তারা যেন সুখের জান্নাতে থাকতে না, পারে। যতটা না সুখের জান্নাত থেকে বিতাড়িত করার ইচ্ছে ছিল ইবলিসের, তার চেয়েও বেশি ইচ্ছে ছিল তারা যেন আল্লাহর। দেয়া আদেশ অমান্য করে তাঁকে নাখোশ করে। আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ)-কে আল্লাহ একটি বিশেষ গাছের ফল খাওয়ার ব্যাপারে নিষেধ করেছিলেন। ইবলিস বেছে ঐ বিশেষ ফলটিই টার্গেট করলো। দুজনকে প্ররোচিত করে ভুলিয়ে-ভালিয়ে ঐ গাছের ফল খাইয়ে দিলো। আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) দৃশ্যত পাপ করে বসলেন। জান্নাতের পাপের স্থান নেই, তাই শাস্তিস্বরূপ আল্লাহ তাঁদেরকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলেন। বলা হলো, পৃথিবীতে ভালো কাজ করে নিজেদের মার্জনা করতে পারলে তারা আবারো জান্নাতে ফিরে যেতে পারবে। কিন্তু অশান্তি তারপরও রয়ে গেল, কারণ পৃথিবীতেও অস্তিত্ব বিরাজমান সেই পাপিষ্ঠ শয়তান ইবলিসের। ইবলিস শয়তান তার শেষ চাওয়া হিসেবে আল্লহর কাছ থেকে বিশেষ কয়েকটি ক্ষমতা চেয়ে নিয়েছিল। অভিশপ্ত হবার আগেই ইবলিস আল্লাহর অনেক ইবাদত করেছিল। এই ইবাদতের প্রতিদানস্বরূপ আল্লাহ তাকে তার চাহিদা অনুসারে এই ক্ষমতাগুলো প্রদান করেছিলেন। প্রাপ্ত ক্ষমতাগুলোর মধ্যে একটি হলো, যে-কোনো সময় বিশ্বের যে কোনো স্থানে সে অবস্থান করতে পারবে। সে হিসেবে আদম-হাওয়ার পৃথিবীতে চলে আসার তার জন্য তেমন কঠিন কিছু নয়। যাহোক , পৃথিবীতে আগমনের পর হজরত (আঃ) ও বিবি হাওয়া (আঃ) এর সন্তান জন্ম হতে লাগলো পৃথিবীতে। বাড়তে লাগলো মানুষ কিন্তু এখানে দৃশ্যত একটি সীমাবদ্ধতা থেকে গেল। আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) যেহেতু পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবী, তাই তাদের পরের জন্ম যত সন্তানের জন্ম হবে তারা সকলেই হবে ভাই-বোন। ইসলামি নিয়ম অনুসারে, ভাই-বোনের মাঝে কখনো বিয়ে হয় না। সে হিসেবে এটিই হতো পৃথিবীর শেষ মানব প্রজন্ম। এর পর মানব জাতি বিলুপ্ত হয়ে যেত।
মানুষ কী?
মানুষ, কাদামাটি! কাদা-মাটি দিয়ে পুতুল তৈরি, যেমনঃ আমরা কাদা-মাটি দিয়ে পুতুল বানাইয়ে খেলাধুলা করেছি ছোটোবেলা। বা এখনও শিশুরা খেলে থাকেন এবং কুমোরা তৈরি করে থাকেন।ঠিক তেমনি ভাবে অথবা একটু ভিন্নতা ভাবে, আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী ফেরেশতাদের বললেন পুতুল বানাবার। ফেরেশতা হাত, পা, নাক চোখ, ঠোঁট, কান, লিঙ্গ, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ইত্যাদি। দিয়ে পুতুল আকার তৈরি করলেন। আর আমাদের সৃষ্টিকৌশল, সৃষ্টিকারী দয়াময়, খোদাবান নিজের হাতে আমাদের মুখমণ্ডল, মুখ তৈরি করেছেন। তারপর আমাদের দেহ, বুকের ভিতর পবিত্র রূহ, প্রবেশ করিয়ে ছিলেন। আল্লাহ কেমন করে সৃষ্টি করেছেন দেখছেন ভাবছেন! কাদা থেকে পুতুল, পুতুল থেকে মানব-মানবী আমরা কেমন করে নিজেরাই নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ করে থাকি। সারা শরীর কাদা, নরমাংসে পরিণত হলো চামড়া, খোদাবানের সবি কুদরত। চামড়ার উপর লোম, পশম, চুল, গজাই প্রতিমাসে এবং সপ্তাহ ছাটাই বা কামাই করতে হয় পুনরায় কিন্তু আবার গজাই। দেহ, এর ভিতর হাড়, তার ভিতর লালা যেটাকে হাত, পা শক্তিবল করে। শিরাই- শিরাই তাজা লালরক্ত, বুকের ভিতর দিল, কলিজা, নাড়ী ভুঁড়ি, ইত্যাদি। কত্ত সুন্দর দেহ, গঠন, মুখ, দাঁত, চোখ, কান, নাক, ঠোঁট, হাতপা, জিহ্বা, স্তন, লিঙ্গ।
চোখ দিয়ে আমরা আকাশ তারা, চাঁদ, চন্দ্র, সূর্য পৃথিবী প্রাকৃতি আশেপাশে যা কিছু দেখতে পাই সবিই চোখের সাহায্যে। দাঁত না থাকলে আল্লাহর নেয়ামত গোস্ত খেতে পারতাম না। কান দিয়ে আযানের সুর শুনতে বা কথাবার্তা শুনতে সাহায্য করে। হাত, পা দিয়ে চলতে ফিরতে, কাজকর্ম,